নিহত সৈনিক জাহাঙ্গীর আলমের দাফন সম্পন্ন

  • Update Time : ০৫:৩৩:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ অক্টোবর ২০২২
  • / 255

মশিয়ার রহমান, নীলফামারী প্রতিনিধি: 

মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে মাইন বিস্ফোরণে নিহত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সৈনিক জাহাঙ্গীর আলমের (২৬) মরদেহ তার ডিমলার বাড়িতে এসে পৌঁছেছে। শনিবার দুপুর ১২টার দিকে তাঁর মরদেহ নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার সদর ইউনিয়নে দক্ষিণ তিতপাড়া গ্রামে তাঁর নিজ বাড়িতে পৌঁছায়। দুপুর ১টার দিকে সম্পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় এই শহীদের দাফন সম্পন্ন হয়। এর আগে সকাল ১১টার দিকে তাঁর মরদেহ নিয়ে আকাশপথে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার ডিমলার আরবিআর সরকারি বিদ্যালয় মাঠে এসে পৌঁছায়।
জাহাঙ্গীরের মরদেহ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স বাড়িতে পৌঁছানোর পরে সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। মরদেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনেরা। বিশেষ করে তাঁর মা গোলেনুর বেগম এবং বাবা লতিফর রহমান ও স্ত্রী শিমু আকতার মরদেহ দেখে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। স্বামীর মরদেহ বাড়িতে পৌঁছানোর পরে শোকে জাহাঙ্গীরের স্ত্রী শিমু শুধু প্রিয় মানুষটির মুখটি খুঁজছিলেন। সকাল থেকেই জাহাঙ্গীরকে শেষবারের মতো দেখতে হাজারো মানুষের ভিড় জমতে থাকে। এসেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
জাহাঙ্গীরের মা বিলাপ করতে করতে বলেন, ‘আমার ছেলে আমাকে কেন ডাকে না/ সে কি আমাকে আর ডাক দেবে না/ বাবা আমার জীবনে অনেক কষ্ট করেছে। এমন তো হওয়ার কথা ছিল না।
স্থানী সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আফতাব উদ্দিন সরকার বলেন, ‘জাহাঙ্গীর আমাদের এলাকার গর্ব। তার মৃত্যুতে আমরা শোকাহত।’ শহীদ জাহাঙ্গীর সড়ক নামে এই এলাকার সড়কটির নামকরণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সংসদ সদস্য আফতাব উদ্দিন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন জানান, দুপুর ১২টার দিকে জাহাঙ্গীরের মরদেহ নিজ বাড়িতে পৌঁছায়। সাড়ে ১২টায় বাড়িসংলগ্ন মাঠে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। তারপর পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে শান্তিরক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার সময় গত ৪ অক্টোবর মাইন বিস্ফোরণে জাহাঙ্গীর আলমসহ তিন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত হন।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


নিহত সৈনিক জাহাঙ্গীর আলমের দাফন সম্পন্ন

Update Time : ০৫:৩৩:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ অক্টোবর ২০২২

মশিয়ার রহমান, নীলফামারী প্রতিনিধি: 

মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে মাইন বিস্ফোরণে নিহত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সৈনিক জাহাঙ্গীর আলমের (২৬) মরদেহ তার ডিমলার বাড়িতে এসে পৌঁছেছে। শনিবার দুপুর ১২টার দিকে তাঁর মরদেহ নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার সদর ইউনিয়নে দক্ষিণ তিতপাড়া গ্রামে তাঁর নিজ বাড়িতে পৌঁছায়। দুপুর ১টার দিকে সম্পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় এই শহীদের দাফন সম্পন্ন হয়। এর আগে সকাল ১১টার দিকে তাঁর মরদেহ নিয়ে আকাশপথে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার ডিমলার আরবিআর সরকারি বিদ্যালয় মাঠে এসে পৌঁছায়।
জাহাঙ্গীরের মরদেহ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স বাড়িতে পৌঁছানোর পরে সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। মরদেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনেরা। বিশেষ করে তাঁর মা গোলেনুর বেগম এবং বাবা লতিফর রহমান ও স্ত্রী শিমু আকতার মরদেহ দেখে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। স্বামীর মরদেহ বাড়িতে পৌঁছানোর পরে শোকে জাহাঙ্গীরের স্ত্রী শিমু শুধু প্রিয় মানুষটির মুখটি খুঁজছিলেন। সকাল থেকেই জাহাঙ্গীরকে শেষবারের মতো দেখতে হাজারো মানুষের ভিড় জমতে থাকে। এসেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
জাহাঙ্গীরের মা বিলাপ করতে করতে বলেন, ‘আমার ছেলে আমাকে কেন ডাকে না/ সে কি আমাকে আর ডাক দেবে না/ বাবা আমার জীবনে অনেক কষ্ট করেছে। এমন তো হওয়ার কথা ছিল না।
স্থানী সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আফতাব উদ্দিন সরকার বলেন, ‘জাহাঙ্গীর আমাদের এলাকার গর্ব। তার মৃত্যুতে আমরা শোকাহত।’ শহীদ জাহাঙ্গীর সড়ক নামে এই এলাকার সড়কটির নামকরণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সংসদ সদস্য আফতাব উদ্দিন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন জানান, দুপুর ১২টার দিকে জাহাঙ্গীরের মরদেহ নিজ বাড়িতে পৌঁছায়। সাড়ে ১২টায় বাড়িসংলগ্ন মাঠে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। তারপর পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে শান্তিরক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার সময় গত ৪ অক্টোবর মাইন বিস্ফোরণে জাহাঙ্গীর আলমসহ তিন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত হন।