পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর আর্থিক প্রতিবেদনে স্বচ্ছতার অভাব এই বাজারের বিকাশ ও উন্নয়নে অন্যতম বড় বাধা। সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ- তালিকাভুক্ত বেশির ভাগ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন নির্ভরযোগ্য নয় ও সেগুলোতে স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে। এ কারণে দেশি-বিদেশী বিনিয়োগকারীরা কোম্পানিগুলোর উপর আস্থা রাখতে পারেন না। তাই পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ব্যাপারেও তাদের আগ্রহ কম। এই অবস্থায় পুঁজিবাজারের টেকসই উন্নয়নে আর্থিক প্রতিবেদনের স্বচ্ছতা ও বস্তুনিষ্ঠতা নিশ্চিত করার বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল (এফআরসি)।
মঙ্গলবার রাজধানীর পল্টনের ফারস হোটেলে ফাইন্যান্সিয়াল রিপোটিং অ্যাক্টের ওপর আয়োজিত এক কর্মশালায় বক্তারা এসব কথা বলেন। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) যৌথভাবে এই কর্মশালার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলের (এফআরসি) চেয়ারম্যান সিকিউকে মুস্তাক আহমেদ,ডিএসইর চেয়ারম্যান প্রফেসর আবুল হাশেম,ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেএমএ মাজেদুর রহমান,ডিএসইর পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন,সিএমজেএফের সভাপতি হাসান ইমাম রুবেল এবং এফআরসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ।
মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন,একটি কোম্পানি শেয়ারবাজারে আসার জন্য আর্থিক হিসাব ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখায়। ওই সময় বছরের ব্যবধানে কয়েকগুণ বিক্রয় ও মুনাফা বেড়ে যায়। যে কোম্পানিগুলো শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির ২-৩ বছরেই লোকসানে ও ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে নেমে যায়। অথচ আইপিওতে আসার সময় নিরীক্ষক সঠিকভাবে নিরীক্ষা করত,তাহলে এমনটি হওয়ার সুযোগ তৈরি হতো না। তিনি বলেন,যে কোনো কোম্পানির আর্থিক হিসাবে সমস্যার ক্ষেত্রে সবাই নিরীক্ষককে দায়ী করে। স্টক এক্সচেঞ্জ বলে আর্থিক হিসাব তো নিরীক্ষক দ্বারা নিরীক্ষা করা হয়েছে। এখানে আমাদের কি করার আছে,ইস্যু ম্যানেজার বলে নিরীক্ষার ওপর ভিত্তি করে ফাইল দাখিল করা হয় এবং বিএসইসি বলে তাদের কাছে যে কাগজপত্র দাখিল করা হয়,তার ভিত্তিতেই আইপিও (প্রাথমিক শেয়ার) দেয়া হয়। এ থেকে বোঝা যায়,একটি কোম্পানির শেয়ারবাজারে আসার সময় সবার প্রথম দায়-দায়িত্ব হচ্ছে নিরীক্ষকের। তবে অন্যরা দায় এড়াতে পারে না।
সিকিউকে মুস্তাক আহমেদ বলেন,সবার সচেতনতার মাধ্যমে কারচুপি লাঘব হবে। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য যে,সবাই আর্থিক হিসাব বুঝতে চায় না। অথচ শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের জন্য এ জাতীয় মৌলিক জ্ঞানের দরকার আছে। তিনি বলেন,শেয়ারবাজারে ঝুঁকি আছে। তবে সেই ঝুঁকি জ্ঞানের ভিত্তিতে নিতে হবে। তাহলে সবাই লাভবান হবে। ডিএসইর চেয়ারম্যান ড. আবুল হাশেম বলেন,শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যালেন্স শিট (আর্থিক প্রতিবেদন) বুঝতে হবে। একটি ব্যালেন্স শিট কোম্পানির সূচক। আর যেসব নিরীক্ষকরা রুলস মানে না,তাদের এফআরসি সঠিক রাস্তায় আনতে পারবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাজেদুর রহমান বলেন,শেয়ারবাজারে তথ্য সরবরাহ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
Leave a Reply