পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই মিরসরাইয়ে পাহাড়ের পাদদেশে ইটভাটা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০১:৪১:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ মার্চ ২০২২
  • / ১৬৮ Time View

মীরসরাই প্রতিনিধিঃ

মীরসরাই উপজেলার ১নং করেরহাট ইউনিয়নের সাবেনিখিল এলাকার পাহাড়, টিলা ও বনাঞ্চলে একাকার ছিল। সেই পাহাড়, টিলা ও বনের মধ্যেই এখন ইটভাটা। পাহাড় ও টিলার মাটি ব্যবহার করেই তৈরি করা হচ্ছে ইট। এতে সেখানকার সেই পাহাড়, টিলা ও বনাঞ্চলের অস্তিত্ব তেমন চোখে পড়ে না।

করেরহাট ইউনিয়নের সাবেনিখিল এলাকায় পাহাড়, টিলা ও বনের পাশেই গড়ে উঠেছে এই ইটভাটা। অভিযোগ আছে পরিবেশ অধিদপ্তরের কোন প্রকার ছাড়পত্র ছাড়া উৎপাদন করছে মেসার্স এমরানী ইন্ডাষ্ট্রিয়াল পার্ক লিঃ নামে এই ইটভাটা। স্থানীয়

লোকজনের ভাষ্য, এই ভাটা থেকে একসাথে দৈনিক ৫০ হাজার ইট তৈরি হয়। মৌসুমে পাহাড় ও টিলা থেকে মাটি কেটে নিয়ে ইটের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করছেন।
ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩ অনুসারে পাহাড় বা টিলা থেকে মাটি কেটে বা সংগ্রহ করে ইটের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। তা ছাড়া, কোনো পাহাড় বা টিলার উপরিভাগে, ঢালে বা তৎসংলগ্ন সমতলে এবং পাদদেশ হতে আধা কিলোমিটারের মধ্যে কোনো ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না।

স্থানীয় সাবেক এক জনপ্রতিনিধি বলেন, সরকারের আইন অনুসারে পাহাড়, টিলা ও বনাঞ্চলের পাদদেশে ইটভাটা স্থাপনে সম্পূর্ণ বিধিনিষেধ থাকলেও এসব কিছুর তোয়াক্কা না করে ইট ভাটামালিক তাঁদের অবৈধ কার্যক্রম পুরোদমে চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রশাসনের লোকজন অদৃশ্য কারণে আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

মেসার্স এমরানী ইন্ডাষ্ট্রিয়াল পার্ক লিঃ ইটভাটার মালিক মোঃ এমরান হোসেন লিটন বলেন, সব ধরনের লাইসেন্স মেনে আমরা পরীক্ষামূলক উৎপাদনে আছি । উনাকে পরিবেশ অধিদপ্তরের কোন প্রকার ছাড়পত্র কিংবা ডকুমেন্ট বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ডকুমেন্ট ছাড়া কি ফ্যাক্টরি চলে বলে উল্টো প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন।

মীরসরাই ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম খোকা জানান, মেসার্স এমরানী ইন্ডাষ্ট্রিয়াল পার্ক লিঃ নামে ইট ভাটা আমাদের ইটভাটা মালিক সমিতির কোন সদস্য নয়। ঐ ইটভাটা কিভাবে চলছে আমাদের জানা নাই।

মীরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিনহাজুর রহমান বলেন, পাহাড়ের পাদদেশে কোন ইটভাটা করা যাবে না। মেসার্স এমরানী ইন্ডাষ্ট্রিয়াল পার্ক লিঃ নামে যে ইটভাটাটি আছে পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে অবৈধ ইটভাটাগুলোতে শিগ্রই অভিযান পরিচালনা করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া
হবে।

পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো.ফেরদৌস আনোয়ার জানান, মেসার্স এমরানী ইন্ডাষ্ট্রিয়াল পার্ক লিঃ নামে একটি ইট ভাটা আবেদন করলে সরেজমিনে তদন্ত গিয়ে দেখা দেখা যায় এটি পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত। তাই এই ইটভাটাকে আমাাদের এখান থেকে অনুমোদন দেয়া হয়নি।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই মিরসরাইয়ে পাহাড়ের পাদদেশে ইটভাটা

Update Time : ০১:৪১:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ মার্চ ২০২২

মীরসরাই প্রতিনিধিঃ

মীরসরাই উপজেলার ১নং করেরহাট ইউনিয়নের সাবেনিখিল এলাকার পাহাড়, টিলা ও বনাঞ্চলে একাকার ছিল। সেই পাহাড়, টিলা ও বনের মধ্যেই এখন ইটভাটা। পাহাড় ও টিলার মাটি ব্যবহার করেই তৈরি করা হচ্ছে ইট। এতে সেখানকার সেই পাহাড়, টিলা ও বনাঞ্চলের অস্তিত্ব তেমন চোখে পড়ে না।

করেরহাট ইউনিয়নের সাবেনিখিল এলাকায় পাহাড়, টিলা ও বনের পাশেই গড়ে উঠেছে এই ইটভাটা। অভিযোগ আছে পরিবেশ অধিদপ্তরের কোন প্রকার ছাড়পত্র ছাড়া উৎপাদন করছে মেসার্স এমরানী ইন্ডাষ্ট্রিয়াল পার্ক লিঃ নামে এই ইটভাটা। স্থানীয়

লোকজনের ভাষ্য, এই ভাটা থেকে একসাথে দৈনিক ৫০ হাজার ইট তৈরি হয়। মৌসুমে পাহাড় ও টিলা থেকে মাটি কেটে নিয়ে ইটের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করছেন।
ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩ অনুসারে পাহাড় বা টিলা থেকে মাটি কেটে বা সংগ্রহ করে ইটের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। তা ছাড়া, কোনো পাহাড় বা টিলার উপরিভাগে, ঢালে বা তৎসংলগ্ন সমতলে এবং পাদদেশ হতে আধা কিলোমিটারের মধ্যে কোনো ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না।

স্থানীয় সাবেক এক জনপ্রতিনিধি বলেন, সরকারের আইন অনুসারে পাহাড়, টিলা ও বনাঞ্চলের পাদদেশে ইটভাটা স্থাপনে সম্পূর্ণ বিধিনিষেধ থাকলেও এসব কিছুর তোয়াক্কা না করে ইট ভাটামালিক তাঁদের অবৈধ কার্যক্রম পুরোদমে চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রশাসনের লোকজন অদৃশ্য কারণে আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

মেসার্স এমরানী ইন্ডাষ্ট্রিয়াল পার্ক লিঃ ইটভাটার মালিক মোঃ এমরান হোসেন লিটন বলেন, সব ধরনের লাইসেন্স মেনে আমরা পরীক্ষামূলক উৎপাদনে আছি । উনাকে পরিবেশ অধিদপ্তরের কোন প্রকার ছাড়পত্র কিংবা ডকুমেন্ট বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ডকুমেন্ট ছাড়া কি ফ্যাক্টরি চলে বলে উল্টো প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন।

মীরসরাই ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম খোকা জানান, মেসার্স এমরানী ইন্ডাষ্ট্রিয়াল পার্ক লিঃ নামে ইট ভাটা আমাদের ইটভাটা মালিক সমিতির কোন সদস্য নয়। ঐ ইটভাটা কিভাবে চলছে আমাদের জানা নাই।

মীরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিনহাজুর রহমান বলেন, পাহাড়ের পাদদেশে কোন ইটভাটা করা যাবে না। মেসার্স এমরানী ইন্ডাষ্ট্রিয়াল পার্ক লিঃ নামে যে ইটভাটাটি আছে পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে অবৈধ ইটভাটাগুলোতে শিগ্রই অভিযান পরিচালনা করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া
হবে।

পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো.ফেরদৌস আনোয়ার জানান, মেসার্স এমরানী ইন্ডাষ্ট্রিয়াল পার্ক লিঃ নামে একটি ইট ভাটা আবেদন করলে সরেজমিনে তদন্ত গিয়ে দেখা দেখা যায় এটি পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত। তাই এই ইটভাটাকে আমাাদের এখান থেকে অনুমোদন দেয়া হয়নি।