৩ লাখ ৮৭ হাজার পশু বিক্রির মধ্য দিয়ে শেষ হলো ডিজিটাল হাট

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৬:৫৬:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ জুলাই ২০২১
  • / ১২৭ Time View

নিজস্ব প্রতিনিধি:

কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে চালু হওয়া দেশব্যাপী অনলাইন কোরবানির পশুর হাট থেকে মোট পশু বিক্রি হয়েছে ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৫৭৯ টি। যার মোট মূল্য ২৭শ ৩৫ কোটি ১১ লাখ, ১৫ হাজার ৬৭৮ টাকা। গরু ও মহিষ বিক্রি হয়েছে ২ লাখ ৯৬ হাজার ৭১০টি এবং ছাগল ও ভেড়া বিক্রি করা হয়েছে ৯০ হাজার ৮৬৯টি। এবারের ঈদ উল আযহার আগের দিন (২০ জুলাই) পর্যন্ত ডিজিটালহাটসহ ১৮৪৩টি অনলাইন হাট থেকে এই পশু বিক্রি হয়।

প্রথমবারের মত বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক চালু করা স্ক্রো সেবার মাধ্যমে এবার ডিজিটাল হাট থেকে সরাসরি ২৪টি পশু বিক্রি হয়েছে এবং ২৬৫টি পশু স্লটারিং করে ক্রেতার বাসায় পৌঁছে দেয়া হয়েছে। স্লটারিং এর জন্য বুক করা পশুগুলোকে জবাই ও মাংস প্রকিয়াকরণ করে সিডিউল মোতাবেক ঈদের দিন ক্রেতার বাসায় ডেলিভারী দেয়া হয়। অন্যান্য পশু ক্রেতাদের বাসায় সরাসরি ডেলিভারী করা হয়। ৮০ ভাগ পশু ঈদের ১ দিন আগে ডেলিভারী দেয়া হয় বাকী ২০ ভাগ পশু ঈদের আগেরদিন সফলভাবে ডেলিভারী সম্পন্ন করা হয়।

ডিজিটাল হাট থেকে সরাসরি ১ হাজার ৫৬৫টি পশু বিক্রি হয়েছে। যার মধ্যে ১ হাজার ৪৫৭ টি গরু ও মহিষ এবং ১০৮ টি ছাগল ও ভেড়া ছিলো। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ ও ই-ক্যাবের যৌথ উদ্যোগে এবং এটুআই এর কারিগরি সহায়তায় চালু করা হয়েছিলো ডিজিটাল হাট। যেখান থেকে ঈদ উল আযহার আগের দিন পর্যন্ত কোরবানির পশু বেচাকেনার সুযোগ ছিলো।

ই-ক্যাবের সেক্রেটারী জেনারেল মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, গতবার আমরা ২৭ হাজার পশু বিক্রি করেছি। এবার আমাদের লক্ষ্য ছিল কমপক্ষে ১ লক্ষ্য পশু বিক্রি করা। সারাদেশের ১৮৪৩টি অনলাইন হাট থেকে আমরা ৩ লক্ষ ৮৭ হাজার পশু বিক্রি হয়েছে যার মুল্য ২৭শ ৩৫ কোটি টাকা। এতে করে প্রান্তিক কৃষক ও খামারীরা যেমনি লাভবান হয়েছে তেমনি ন্যায্য মূল্যে পশু ক্রয় করতে পেরেছে ক্রেতারা। ডিজিটাল কোরবানির হাট করোনাকালীন চাপে থাকা গ্রামীণ অর্থনীতিতে কিছুটা হলেও প্রাণ সঞ্চার করেছে।

বাংলাদেশ ডেইরী ফার্মাস এসোসিয়েশন এর সেক্রেটারী জেনারেল শাহ মোহাম্মদ ইমরান বলেন, ক্রেতারা পশুকে সঠিকভাবে জবাই ও মাংস প্রসেস করে সময়মতো বাসায় পৌঁছে দেয়া একটা চ্যালেঞ্জিং কাজ। এই কাজটি এবারো আমরা কোনো ধরনের সমস্যা ছাড়া করতে পেরেছি এটাই বড়ো কথা। নগরবাসী আমাদের উপর যে আস্থা রেখেছে আমরা সবসময় তার মূল্য দেয়ার চেষ্টা করেছি। ২৬৫ জন গ্রাহক এবার স্লটারিং সেবা নিয়েছেন। আমরা ১২ তারিখের মধ্যে স্লটারিং বুকিং সম্পন্ন করেছি ফলে অনেকে স্লটারিং সেবা নিতে পারেননি, ভবিষ্যতে আমরা বিষয়টি বিবেচনা করব।

গত ৪ জুলাই ঢাকা মহানগরী ভিত্তিক ডিজিটাল হাট উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী জনাব তাজুল ইসলাম এমপি। এসময় মন্ত্রী নিজে একটি পশু ক্রয় করেন। পরে জাতীয় পর্যায়ে ডিজিটাল হাটের সম্প্রসারণ করা হয় ১৩ জুলাই এবং উদ্বোধন করেন মৎস ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী জনাব শম রেজাউল করিম এমপি।

এ সময় এস্ক্রো পেমেন্ট এর মাধ্যমে একটি গরু ক্রয় করে ই-ক্যাবের মানবসেবা ফাউন্ডেশন এর মাধ্যমে গরিবদের মাঝে বিতরণ করার ঘোষণা দেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলম এমিপি। ঈদের দিন গরুটি কোরবানী করা হয় বঙ্গবন্ধু পরিবারের ৭ সদস্যের নামে। সদস্যরা হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান, বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব, শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, শেখ জামাল, শেখ কামাল ও শেখ রাসেল। পরে এটি যথারীতি রায়ের বাজার এলাকায় গরিব মানুষদের মাঝে বিতরণ করা হয়। মানবসেবা ও স্বেচ্চাসেবী সংস্থা ব্লাডম্যান বিতরণ কার্যক্রমে সহযোগিতা করেন। প্রতিমন্ত্রীর গরু ছাড়াও ই-ক্যাবের প্রেসিডেন্ট শমী কায়সারের দেয়া গরুর মাংস এবং ই-ক্যাবের জয়েন্ট সেক্রেটারী নাসিমা আক্তার নিশার দেয়া একটি ছাগলের মাংসও এই গরিবদের মাঝে বিতরণ করা হয়।

গত ৩০ জুন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত একটি গাইডলাইন প্রকাশ করে। ই-ক্যাব, আইসিটি বিভাগ, বাংলাদেশ ডেইরী ফার্মাস এসোসিয়েশন ছাড়াও ডিজিটাল হাট বাস্তবায়ন সহযোগিতায় ছিল মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়, আইসিটি বিভাগ, বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল, একশপ, ফুড ফর ন্যাশন। অন্যান্য সহযোগিদায় দারাজ বাংলাদেশ, এসএসএল কমার্জ, এবি ব্যাংক, মাস্টার কার্ড, ধানসিড়ি কমিউনিকেশনস, ফিউচার স্কাই লিমিটেড ও মানবসেবা ফাউন্ডেশন।

Please Share This Post in Your Social Media

৩ লাখ ৮৭ হাজার পশু বিক্রির মধ্য দিয়ে শেষ হলো ডিজিটাল হাট

Update Time : ০৬:৫৬:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ জুলাই ২০২১

নিজস্ব প্রতিনিধি:

কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে চালু হওয়া দেশব্যাপী অনলাইন কোরবানির পশুর হাট থেকে মোট পশু বিক্রি হয়েছে ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৫৭৯ টি। যার মোট মূল্য ২৭শ ৩৫ কোটি ১১ লাখ, ১৫ হাজার ৬৭৮ টাকা। গরু ও মহিষ বিক্রি হয়েছে ২ লাখ ৯৬ হাজার ৭১০টি এবং ছাগল ও ভেড়া বিক্রি করা হয়েছে ৯০ হাজার ৮৬৯টি। এবারের ঈদ উল আযহার আগের দিন (২০ জুলাই) পর্যন্ত ডিজিটালহাটসহ ১৮৪৩টি অনলাইন হাট থেকে এই পশু বিক্রি হয়।

প্রথমবারের মত বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক চালু করা স্ক্রো সেবার মাধ্যমে এবার ডিজিটাল হাট থেকে সরাসরি ২৪টি পশু বিক্রি হয়েছে এবং ২৬৫টি পশু স্লটারিং করে ক্রেতার বাসায় পৌঁছে দেয়া হয়েছে। স্লটারিং এর জন্য বুক করা পশুগুলোকে জবাই ও মাংস প্রকিয়াকরণ করে সিডিউল মোতাবেক ঈদের দিন ক্রেতার বাসায় ডেলিভারী দেয়া হয়। অন্যান্য পশু ক্রেতাদের বাসায় সরাসরি ডেলিভারী করা হয়। ৮০ ভাগ পশু ঈদের ১ দিন আগে ডেলিভারী দেয়া হয় বাকী ২০ ভাগ পশু ঈদের আগেরদিন সফলভাবে ডেলিভারী সম্পন্ন করা হয়।

ডিজিটাল হাট থেকে সরাসরি ১ হাজার ৫৬৫টি পশু বিক্রি হয়েছে। যার মধ্যে ১ হাজার ৪৫৭ টি গরু ও মহিষ এবং ১০৮ টি ছাগল ও ভেড়া ছিলো। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ ও ই-ক্যাবের যৌথ উদ্যোগে এবং এটুআই এর কারিগরি সহায়তায় চালু করা হয়েছিলো ডিজিটাল হাট। যেখান থেকে ঈদ উল আযহার আগের দিন পর্যন্ত কোরবানির পশু বেচাকেনার সুযোগ ছিলো।

ই-ক্যাবের সেক্রেটারী জেনারেল মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, গতবার আমরা ২৭ হাজার পশু বিক্রি করেছি। এবার আমাদের লক্ষ্য ছিল কমপক্ষে ১ লক্ষ্য পশু বিক্রি করা। সারাদেশের ১৮৪৩টি অনলাইন হাট থেকে আমরা ৩ লক্ষ ৮৭ হাজার পশু বিক্রি হয়েছে যার মুল্য ২৭শ ৩৫ কোটি টাকা। এতে করে প্রান্তিক কৃষক ও খামারীরা যেমনি লাভবান হয়েছে তেমনি ন্যায্য মূল্যে পশু ক্রয় করতে পেরেছে ক্রেতারা। ডিজিটাল কোরবানির হাট করোনাকালীন চাপে থাকা গ্রামীণ অর্থনীতিতে কিছুটা হলেও প্রাণ সঞ্চার করেছে।

বাংলাদেশ ডেইরী ফার্মাস এসোসিয়েশন এর সেক্রেটারী জেনারেল শাহ মোহাম্মদ ইমরান বলেন, ক্রেতারা পশুকে সঠিকভাবে জবাই ও মাংস প্রসেস করে সময়মতো বাসায় পৌঁছে দেয়া একটা চ্যালেঞ্জিং কাজ। এই কাজটি এবারো আমরা কোনো ধরনের সমস্যা ছাড়া করতে পেরেছি এটাই বড়ো কথা। নগরবাসী আমাদের উপর যে আস্থা রেখেছে আমরা সবসময় তার মূল্য দেয়ার চেষ্টা করেছি। ২৬৫ জন গ্রাহক এবার স্লটারিং সেবা নিয়েছেন। আমরা ১২ তারিখের মধ্যে স্লটারিং বুকিং সম্পন্ন করেছি ফলে অনেকে স্লটারিং সেবা নিতে পারেননি, ভবিষ্যতে আমরা বিষয়টি বিবেচনা করব।

গত ৪ জুলাই ঢাকা মহানগরী ভিত্তিক ডিজিটাল হাট উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী জনাব তাজুল ইসলাম এমপি। এসময় মন্ত্রী নিজে একটি পশু ক্রয় করেন। পরে জাতীয় পর্যায়ে ডিজিটাল হাটের সম্প্রসারণ করা হয় ১৩ জুলাই এবং উদ্বোধন করেন মৎস ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী জনাব শম রেজাউল করিম এমপি।

এ সময় এস্ক্রো পেমেন্ট এর মাধ্যমে একটি গরু ক্রয় করে ই-ক্যাবের মানবসেবা ফাউন্ডেশন এর মাধ্যমে গরিবদের মাঝে বিতরণ করার ঘোষণা দেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলম এমিপি। ঈদের দিন গরুটি কোরবানী করা হয় বঙ্গবন্ধু পরিবারের ৭ সদস্যের নামে। সদস্যরা হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান, বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব, শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, শেখ জামাল, শেখ কামাল ও শেখ রাসেল। পরে এটি যথারীতি রায়ের বাজার এলাকায় গরিব মানুষদের মাঝে বিতরণ করা হয়। মানবসেবা ও স্বেচ্চাসেবী সংস্থা ব্লাডম্যান বিতরণ কার্যক্রমে সহযোগিতা করেন। প্রতিমন্ত্রীর গরু ছাড়াও ই-ক্যাবের প্রেসিডেন্ট শমী কায়সারের দেয়া গরুর মাংস এবং ই-ক্যাবের জয়েন্ট সেক্রেটারী নাসিমা আক্তার নিশার দেয়া একটি ছাগলের মাংসও এই গরিবদের মাঝে বিতরণ করা হয়।

গত ৩০ জুন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত একটি গাইডলাইন প্রকাশ করে। ই-ক্যাব, আইসিটি বিভাগ, বাংলাদেশ ডেইরী ফার্মাস এসোসিয়েশন ছাড়াও ডিজিটাল হাট বাস্তবায়ন সহযোগিতায় ছিল মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়, আইসিটি বিভাগ, বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল, একশপ, ফুড ফর ন্যাশন। অন্যান্য সহযোগিদায় দারাজ বাংলাদেশ, এসএসএল কমার্জ, এবি ব্যাংক, মাস্টার কার্ড, ধানসিড়ি কমিউনিকেশনস, ফিউচার স্কাই লিমিটেড ও মানবসেবা ফাউন্ডেশন।