হাশেম ফুড ফ্যাক্টরী ও সজীব গ্রুপের মালিকের কঠোর শাস্তির দাবি মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৩:৫৫:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ জুলাই ২০২১
  • / ২০৮ Time View

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাশেম ফুড ফ্যাক্টরি ভবনে অবস্থিত সজীব গ্রুপের কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে নিহত শ্রমিকদের স্মরণের পাশাপাশি বিধিবহির্ভূত ভাবে ভবন নির্মাণ এবং শিশু শ্রম আইন লঙ্ঘন করে শিশুদের কাজে নিয়োজিত করার অপরাধে জড়িত হাশেম ফ্যাক্টরী ও সজীব গ্রুপের মালিককে দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।

শনিবার (১০ জুলাই) এক বিজ্ঞপ্তিতে এই দাবি জানানো হয়।

সংগঠনের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল ও সাধারণ সম্পাদক মো: আল মামুন স্বাক্ষরিত লিখিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে,”নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাশেম ফুড ফ্যাক্টরীতে অবস্থিত সজীব গ্রুপের কারখানায় মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডে নিহত শ্রমিকদের বিদেহী আত্মার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।

উক্ত মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আমরা গভীর ভাবে শোকাহত। বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে জেনে আমরা খুবই মর্মাহত হয়েছি যে, অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু। আমাদের দেশে শ্রম আইন রয়েছে। যেখানে সুস্পষ্ট ভাবে শিশু শ্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য দেশের সর্বত্র শিশুদের কাজ করতে দেখা যায়। বাসাবাড়ি, হোটেল, দোকান, গ্যারেজ, কলকারখানায়, বাস, ট্রাক লেগুনার হেলপার থেকে শুরু করে এমনকি অনেক সরকারি-বেসরকারী অফিসের ক্যান্টিনে চা এনে দেবার জন্য শিশুদের ব্যবহার করা হচ্ছে। এভাবে বাংলাদেশে কম করে হলেও ৫০ লক্ষাধিক শিশুদের উচ্চ শ্রেণীর সেবা করার দাস হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। শিশু শ্রম বন্ধ করার জন্য রাষ্ট্র দায়িত্ব নিয়ে এদেরকে দক্ষ জনসম্পদে রূপান্তর করতে পারতো। দেশে যে আইনের প্রয়োগ নেই সে আইনের দরকার কি? হয়তো আইনের যথাযথ প্রয়োগ হোক অন্যথায় ঐ আইন বাদ দেয়া হোক।

উক্ত ভবনে প্রয়োজনীয় অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ও ফায়ার এক্সিট না থাকার কারণে অগ্নিকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। এছাড়াও ভবনের ৪র্থ তলার কলাপসিবল গেটে তালা দিয়ে রাখায় শ্রমিকরা বের হতে পারেনি। ফলে দগ্ধ হয়ে ভবনের ফ্লোরেই প্রায় ৫০ জনের অধিক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। যথাযথ ভাবে বিল্ডিং কোড অনুসরণ না করার কারণেই এরকম মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাগুলো আমাদেরকে দেখতে হচ্ছে।

পুরান ঢাকার নিমতলীর ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা থেকে প্রশাসন শিক্ষা নিলে কখনোই এরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতো না বলে আমরা মনে করি। কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা এবং শিশু শ্রম বন্ধ করার জন্য শ্রম মন্ত্রণালয়কে আরোও কার্যকরী ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সঠিক মনিটরিংয়ের অভাবের কারণে বারবার এধরনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে।

বিল্ডিং কোড যথাযথভাবে অনুসরণ না করার অপরাধে অবিলম্বে হাশেম ফুড ফ্যাক্টরী ও সজীব গ্রুপের কারখানার মালিককে দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। পাশাপাশি নিহত ও আহত শ্রমিকদের পরিবারদেরকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

দেশের সকল কারখানাগুলোতে নিয়মিত মনিটরিং জোরদার করতে হবে। বিধিবহির্ভূত ভাবে নির্মাণকৃত সকল কারখানা বন্ধ করতে হবে। কারো দায়িত্বে গাফিলতির কারণে আর কোন শ্রমিকের জীবন হারানো দেখতে চায় না বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। অন্যথায় শ্রমিকদের সাথে নিয়ে কঠোর আন্দোলন যাবে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।”

Please Share This Post in Your Social Media

হাশেম ফুড ফ্যাক্টরী ও সজীব গ্রুপের মালিকের কঠোর শাস্তির দাবি মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের

Update Time : ০৩:৫৫:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ জুলাই ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাশেম ফুড ফ্যাক্টরি ভবনে অবস্থিত সজীব গ্রুপের কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে নিহত শ্রমিকদের স্মরণের পাশাপাশি বিধিবহির্ভূত ভাবে ভবন নির্মাণ এবং শিশু শ্রম আইন লঙ্ঘন করে শিশুদের কাজে নিয়োজিত করার অপরাধে জড়িত হাশেম ফ্যাক্টরী ও সজীব গ্রুপের মালিককে দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।

শনিবার (১০ জুলাই) এক বিজ্ঞপ্তিতে এই দাবি জানানো হয়।

সংগঠনের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল ও সাধারণ সম্পাদক মো: আল মামুন স্বাক্ষরিত লিখিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে,”নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাশেম ফুড ফ্যাক্টরীতে অবস্থিত সজীব গ্রুপের কারখানায় মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডে নিহত শ্রমিকদের বিদেহী আত্মার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।

উক্ত মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আমরা গভীর ভাবে শোকাহত। বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে জেনে আমরা খুবই মর্মাহত হয়েছি যে, অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু। আমাদের দেশে শ্রম আইন রয়েছে। যেখানে সুস্পষ্ট ভাবে শিশু শ্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য দেশের সর্বত্র শিশুদের কাজ করতে দেখা যায়। বাসাবাড়ি, হোটেল, দোকান, গ্যারেজ, কলকারখানায়, বাস, ট্রাক লেগুনার হেলপার থেকে শুরু করে এমনকি অনেক সরকারি-বেসরকারী অফিসের ক্যান্টিনে চা এনে দেবার জন্য শিশুদের ব্যবহার করা হচ্ছে। এভাবে বাংলাদেশে কম করে হলেও ৫০ লক্ষাধিক শিশুদের উচ্চ শ্রেণীর সেবা করার দাস হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। শিশু শ্রম বন্ধ করার জন্য রাষ্ট্র দায়িত্ব নিয়ে এদেরকে দক্ষ জনসম্পদে রূপান্তর করতে পারতো। দেশে যে আইনের প্রয়োগ নেই সে আইনের দরকার কি? হয়তো আইনের যথাযথ প্রয়োগ হোক অন্যথায় ঐ আইন বাদ দেয়া হোক।

উক্ত ভবনে প্রয়োজনীয় অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ও ফায়ার এক্সিট না থাকার কারণে অগ্নিকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। এছাড়াও ভবনের ৪র্থ তলার কলাপসিবল গেটে তালা দিয়ে রাখায় শ্রমিকরা বের হতে পারেনি। ফলে দগ্ধ হয়ে ভবনের ফ্লোরেই প্রায় ৫০ জনের অধিক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। যথাযথ ভাবে বিল্ডিং কোড অনুসরণ না করার কারণেই এরকম মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাগুলো আমাদেরকে দেখতে হচ্ছে।

পুরান ঢাকার নিমতলীর ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা থেকে প্রশাসন শিক্ষা নিলে কখনোই এরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতো না বলে আমরা মনে করি। কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা এবং শিশু শ্রম বন্ধ করার জন্য শ্রম মন্ত্রণালয়কে আরোও কার্যকরী ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সঠিক মনিটরিংয়ের অভাবের কারণে বারবার এধরনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে।

বিল্ডিং কোড যথাযথভাবে অনুসরণ না করার অপরাধে অবিলম্বে হাশেম ফুড ফ্যাক্টরী ও সজীব গ্রুপের কারখানার মালিককে দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। পাশাপাশি নিহত ও আহত শ্রমিকদের পরিবারদেরকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

দেশের সকল কারখানাগুলোতে নিয়মিত মনিটরিং জোরদার করতে হবে। বিধিবহির্ভূত ভাবে নির্মাণকৃত সকল কারখানা বন্ধ করতে হবে। কারো দায়িত্বে গাফিলতির কারণে আর কোন শ্রমিকের জীবন হারানো দেখতে চায় না বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। অন্যথায় শ্রমিকদের সাথে নিয়ে কঠোর আন্দোলন যাবে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।”