হামলায় আহত সাংবাদিককে হাসপাতালে ঢুকে কুপিয়ে জখম

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ১২:০০:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ অগাস্ট ২০২১
  • / ১৪৯ Time View

নিজস্ব প্রতিবেদক:

চুয়াডাঙ্গায় স্থানীয় সাংবাদিককে কুপিয়ে জখমের অভিযোগ সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে আটক করেছে পুলিশ।

সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সাকিল আরসালান জানান, ধারালো অস্ত্রের আঘাতে সোহেল রানার পিঠ, বুক ও হাতে গভীর ক্ষত হয়েছে। প্রচুর রক্তক্ষরণও হয়েছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গায় স্থানীয় সাংবাদিক সোহেল রানা ডালিমকে দুই দফা কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতার বিরুদ্ধে।

শহরের ইমার্জেন্সি রোড এলাকায় সোমবার রাত ১০টার দিকে তার ওপর প্রথমে হামলা করা হয়। আহত অবস্থায় সদর হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে জরুরি বিভাগে ঢুকে আবার তাকে কুপিয়ে জখম করা হয়।

ঘটনার পর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা রাজু আহমেদকে আটক করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান।

আহত সাংবাদিক সোহেল রানা ডালিম জাতীয় দৈনিক আমাদের নতুন সময়ে জেলা প্রতিনিধি ও স্থানীয় দৈনিক সময়ের সমীকরণের নিজস্ব প্রতিবেদক হিসেবে কর্মরত। তার বাড়ি পৌর এলাকার সিএন্ডবি পাড়ায়।

তার ওপর হামলার অভিযোগে আটক রাজু আহমেদ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক স্কুল ও ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক এবং জেলা ছাত্রলীগের প্রস্তাবিত কমিটির অন্যতম সদস্য।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সোহেল রানা জানান, রাতে সংবাদ সংগ্রহ শেষে শহরের ইমার্জেন্সি রোড হয়ে সময়ের সমীকরণ পত্রিকার অফিসের দিকে যাচ্ছিলেন তিনি।

এ সময় আব্দুল্লাহ সিটির সামনে পৌঁছালে তার মোটরসাইকেলের সঙ্গে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রাজুর মোটরসাইকেলের ধাক্কা লাগে। এতে রাজু ক্ষিপ্ত হয়ে সোহেল রানার মোটরসাইকেলের চাবি কেড়ে নেয়। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা চলে।

হামলায় আহত সাংবাদিককে হাসপাতালে ঢুকে কুপিয়ে জখম
সোহেল রানা বলেন, ‘তখন হঠাৎ করে একজন পেছন থেকে আমার পিঠে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। আমি কোনো রকমে হেলমেট দিয়ে তাদের প্রতিহত করে একটি চলন্ত ইজিবাইকে করে দ্রুত সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আসি। জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আমাকে আবারও কুপিয়ে জখম করে তারা।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্মরত এক স্বেচ্ছাসেবক বলেন, ‘সাংবাদিক সোহেল রানাকে গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসার পর আমরা তার ক্ষতস্থানে সেলাই দিচ্ছিলাম। এর কিছুক্ষণ পর তিনজন যুবক এসে তাকে আবারও ধারালো অস্ত্র (চাপাতি) দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। আমরা ভয়ে কিছু বলতে পারিনি। আমরা তাদের চিনিও না। পুলিশ আসার খবর শুনে পালিয়ে যায় তারা।’

সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সাকিল আরসালান জানান, ধারালো অস্ত্রের আঘাতে সোহেল রানার পিঠ, বুক ও হাতে গভীর ক্ষত হয়েছে। প্রচুর রক্তক্ষরণও হয়েছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তিনি এখনও আশঙ্কামুক্ত নন।

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) এএসএম ফাতেহ আকরাম বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা পুলিশকে বিষয়টি জানিয়েছি। পরে দ্রুত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।’

তিনি আরও জানান, জরুরি বিভাগের সিসি ক্যামেরাটিতে সমস্যা থাকায় সেটি অচল। তবে আশপাশের ক্যামেরার ফুটেজ দেখে অভিযুক্তদের শনাক্ত করেছে পুলিশ।

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান জানান, ঘটনার পর অভিযান চালিয়ে একজনকে আটক করা হয়েছে। হামলায় জড়িত বাকিদের ধরতে অভিযান চলছে।

Please Share This Post in Your Social Media

হামলায় আহত সাংবাদিককে হাসপাতালে ঢুকে কুপিয়ে জখম

Update Time : ১২:০০:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ অগাস্ট ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক:

চুয়াডাঙ্গায় স্থানীয় সাংবাদিককে কুপিয়ে জখমের অভিযোগ সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে আটক করেছে পুলিশ।

সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সাকিল আরসালান জানান, ধারালো অস্ত্রের আঘাতে সোহেল রানার পিঠ, বুক ও হাতে গভীর ক্ষত হয়েছে। প্রচুর রক্তক্ষরণও হয়েছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গায় স্থানীয় সাংবাদিক সোহেল রানা ডালিমকে দুই দফা কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতার বিরুদ্ধে।

শহরের ইমার্জেন্সি রোড এলাকায় সোমবার রাত ১০টার দিকে তার ওপর প্রথমে হামলা করা হয়। আহত অবস্থায় সদর হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে জরুরি বিভাগে ঢুকে আবার তাকে কুপিয়ে জখম করা হয়।

ঘটনার পর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা রাজু আহমেদকে আটক করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান।

আহত সাংবাদিক সোহেল রানা ডালিম জাতীয় দৈনিক আমাদের নতুন সময়ে জেলা প্রতিনিধি ও স্থানীয় দৈনিক সময়ের সমীকরণের নিজস্ব প্রতিবেদক হিসেবে কর্মরত। তার বাড়ি পৌর এলাকার সিএন্ডবি পাড়ায়।

তার ওপর হামলার অভিযোগে আটক রাজু আহমেদ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক স্কুল ও ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক এবং জেলা ছাত্রলীগের প্রস্তাবিত কমিটির অন্যতম সদস্য।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সোহেল রানা জানান, রাতে সংবাদ সংগ্রহ শেষে শহরের ইমার্জেন্সি রোড হয়ে সময়ের সমীকরণ পত্রিকার অফিসের দিকে যাচ্ছিলেন তিনি।

এ সময় আব্দুল্লাহ সিটির সামনে পৌঁছালে তার মোটরসাইকেলের সঙ্গে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রাজুর মোটরসাইকেলের ধাক্কা লাগে। এতে রাজু ক্ষিপ্ত হয়ে সোহেল রানার মোটরসাইকেলের চাবি কেড়ে নেয়। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা চলে।

হামলায় আহত সাংবাদিককে হাসপাতালে ঢুকে কুপিয়ে জখম
সোহেল রানা বলেন, ‘তখন হঠাৎ করে একজন পেছন থেকে আমার পিঠে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। আমি কোনো রকমে হেলমেট দিয়ে তাদের প্রতিহত করে একটি চলন্ত ইজিবাইকে করে দ্রুত সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আসি। জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আমাকে আবারও কুপিয়ে জখম করে তারা।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্মরত এক স্বেচ্ছাসেবক বলেন, ‘সাংবাদিক সোহেল রানাকে গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসার পর আমরা তার ক্ষতস্থানে সেলাই দিচ্ছিলাম। এর কিছুক্ষণ পর তিনজন যুবক এসে তাকে আবারও ধারালো অস্ত্র (চাপাতি) দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। আমরা ভয়ে কিছু বলতে পারিনি। আমরা তাদের চিনিও না। পুলিশ আসার খবর শুনে পালিয়ে যায় তারা।’

সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সাকিল আরসালান জানান, ধারালো অস্ত্রের আঘাতে সোহেল রানার পিঠ, বুক ও হাতে গভীর ক্ষত হয়েছে। প্রচুর রক্তক্ষরণও হয়েছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তিনি এখনও আশঙ্কামুক্ত নন।

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) এএসএম ফাতেহ আকরাম বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা পুলিশকে বিষয়টি জানিয়েছি। পরে দ্রুত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।’

তিনি আরও জানান, জরুরি বিভাগের সিসি ক্যামেরাটিতে সমস্যা থাকায় সেটি অচল। তবে আশপাশের ক্যামেরার ফুটেজ দেখে অভিযুক্তদের শনাক্ত করেছে পুলিশ।

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান জানান, ঘটনার পর অভিযান চালিয়ে একজনকে আটক করা হয়েছে। হামলায় জড়িত বাকিদের ধরতে অভিযান চলছে।