সেন্ট মার্টিন দ্বীপে আমেরিকার ঘাঁটি: সম্ভাবনা ও বাস্তবতা

  • Update Time : ০৮:১৪:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / 44
মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন:

বাংলাদেশের সেন্ট মার্টিন দ্বীপ আমেরিকাকে দিয়ে দেয়া হচ্ছে, এ কথা শুনছি যখন আমি কলেজে পড়ি, (১৯৯০-৯১) তখন থেকে কিংবা আরো আগে থেকে। সাম্প্রতিককালে এই শোরগোল আবার চাউর হয়েছে। এ-প্রসঙ্গে আমাদের কিছু বিষয় জানা থাকা দরকার।

বিশ্বে ৮০টি দেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৭৫০টি সামরিক ঘাটি আছে। এসব ঘাঁটির জন্য যতটুকু এলাকা প্রয়োজন তা হচ্ছে: কমপক্ষে ৪০,০০০ হেক্টর জমি। বর্হিবিশ্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৬৬,০০০ হেক্টর জমির সামরিক ঘাঁটিও আছে। উক্ত ঘাঁটিসমূহে ১০ থেকে ৪০,০০০ সৈন্য থাকে। একটি পূর্ণাঙ্গ বিমানবন্দর থাকে যার রানওয়ের দৈর্ঘ্য হবে কমপক্ষে ১০,০০০ ফুট যেন সি-১৩০ হারকিউলিস বিমান ফুল লোড হয়ে নামতে পারে। সি-১৩০ হারকিউলিস বিমান ফুল লোড হয়ে যখন নামে তখন এর ওজন থাকে ১,৫৫,০০০ পাউন্ড।

আমরা সেন্ট মার্টিন দ্বীপ সম্পর্কে আলোচনা করি : দ্বীপটির আয়তন ছেঁড়াদ্বীপ ও অন্যান্য চর সহ ৪.৩ বর্গকিলোমিটার অর্থাৎ ৪৩০০ হেক্টর (প্রয়োজন কমপক্ষে ৪০,০০০ হেক্টর)। দ্বীপটির মৃত্তিকা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, এর উপরিভাগে বালু থাকলেও অনধিক ৩ ফুট নিচেই মূলত প্রবাল ও শৈবাল স্তর। এ-কারণে ভবিষ্যতে এই দ্বীপের অস্তিত্ব নিয়েই ভূতাত্ত্বিকরা শংকিত। এমন দুর্বল ভূমিতে কিভাবে সি-১৩০ হারকিউলিস বিমান ১,৫৫,০০০ পাউন্ড ফুল লোড হয়ে ওঠানামা করবে? এই আয়তনের দ্বীপে কিভাবে ১০-৪০০০০ সৈন্য থাকবে তাদের অফিস, আবাসন, অস্ত্রাগার , মিসাইল লঞ্চার ও অন্তত ২ ডজন যুদ্ধ বিমান নিয়ে?

উপরন্তু এর মহীসোপানের গভীরতা এত কম যে এখানে ডেস্ট্রোয়ারের মতো বড়ো যুদ্ধজাহাজ দূরের কথা ফ্রিগেটও ভিড়তে পারবে না।

যা বলছেন তা কতটা সঠিক তথ্যভিত্তিক তা জেনে বলাই ভালো।

লেখক : সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা।

Please Share This Post in Your Social Media

সেন্ট মার্টিন দ্বীপে আমেরিকার ঘাঁটি: সম্ভাবনা ও বাস্তবতা

Update Time : ০৮:১৪:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন:

বাংলাদেশের সেন্ট মার্টিন দ্বীপ আমেরিকাকে দিয়ে দেয়া হচ্ছে, এ কথা শুনছি যখন আমি কলেজে পড়ি, (১৯৯০-৯১) তখন থেকে কিংবা আরো আগে থেকে। সাম্প্রতিককালে এই শোরগোল আবার চাউর হয়েছে। এ-প্রসঙ্গে আমাদের কিছু বিষয় জানা থাকা দরকার।

বিশ্বে ৮০টি দেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৭৫০টি সামরিক ঘাটি আছে। এসব ঘাঁটির জন্য যতটুকু এলাকা প্রয়োজন তা হচ্ছে: কমপক্ষে ৪০,০০০ হেক্টর জমি। বর্হিবিশ্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৬৬,০০০ হেক্টর জমির সামরিক ঘাঁটিও আছে। উক্ত ঘাঁটিসমূহে ১০ থেকে ৪০,০০০ সৈন্য থাকে। একটি পূর্ণাঙ্গ বিমানবন্দর থাকে যার রানওয়ের দৈর্ঘ্য হবে কমপক্ষে ১০,০০০ ফুট যেন সি-১৩০ হারকিউলিস বিমান ফুল লোড হয়ে নামতে পারে। সি-১৩০ হারকিউলিস বিমান ফুল লোড হয়ে যখন নামে তখন এর ওজন থাকে ১,৫৫,০০০ পাউন্ড।

আমরা সেন্ট মার্টিন দ্বীপ সম্পর্কে আলোচনা করি : দ্বীপটির আয়তন ছেঁড়াদ্বীপ ও অন্যান্য চর সহ ৪.৩ বর্গকিলোমিটার অর্থাৎ ৪৩০০ হেক্টর (প্রয়োজন কমপক্ষে ৪০,০০০ হেক্টর)। দ্বীপটির মৃত্তিকা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, এর উপরিভাগে বালু থাকলেও অনধিক ৩ ফুট নিচেই মূলত প্রবাল ও শৈবাল স্তর। এ-কারণে ভবিষ্যতে এই দ্বীপের অস্তিত্ব নিয়েই ভূতাত্ত্বিকরা শংকিত। এমন দুর্বল ভূমিতে কিভাবে সি-১৩০ হারকিউলিস বিমান ১,৫৫,০০০ পাউন্ড ফুল লোড হয়ে ওঠানামা করবে? এই আয়তনের দ্বীপে কিভাবে ১০-৪০০০০ সৈন্য থাকবে তাদের অফিস, আবাসন, অস্ত্রাগার , মিসাইল লঞ্চার ও অন্তত ২ ডজন যুদ্ধ বিমান নিয়ে?

উপরন্তু এর মহীসোপানের গভীরতা এত কম যে এখানে ডেস্ট্রোয়ারের মতো বড়ো যুদ্ধজাহাজ দূরের কথা ফ্রিগেটও ভিড়তে পারবে না।

যা বলছেন তা কতটা সঠিক তথ্যভিত্তিক তা জেনে বলাই ভালো।

লেখক : সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা।