সিলেটে সব ধরনের পরিবহন ধর্মঘটের ডাক

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ১০:৫২:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২২
  • / ১৮৫ Time View

নিজস্ব প্রতিবেদক:

পর্যায়ক্রমে সিলেট বিভাগের চার জেলায় বাস ধর্মঘট ডাকার পর এবার সিলেট জেলায় সব ধরনের পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবারে বিকেলে জেলায় সব ধরনের পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয় জেলা পরিবহন শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। এর আগে দুপুরে হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ জেলায় বাস ধর্মঘট ডাকা হয়।

বিকেলে নগরের দক্ষিণ সুরমার হুমায়ূন রশীদ চত্বর এলাকায় শ্রমিক সংগঠনের নেতারা বৈঠকে বসেন।

বৈঠকে ধর্মঘট ডাকার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। সব ধরনের পরিবহন ধর্মঘটের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা পরিবহন শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি মইনুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমরা চার দফা দাবিতে ধর্মঘট ডেকেছি। শনিবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এ ধর্মঘট চলবে।

তিনি বলেন, ‘শনিবার সিলেটে মাইক্রোবাস, অটোরিকশাসহ সব ধরনের যানবাহন বন্ধ থাকবে। ’

সিলেটের সব কয়টি পাথর কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলনের অনুমতি, সিএনজিচালিত অটোরিকশার নতুন রেজিস্ট্রেশন প্রদান, সিলেটের লামাকাজী ও শ্যাওলা সেতুতে টোল আদায় বন্ধ, হাইওয়েতে টমটম ও নসিমন চলাচল বন্ধ করার দাবিতে এই ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। তবে বিএনপির দাবি, গণসমাবেশে লোকসমাগম বাধাগ্রস্ত করতে এই কর্মসূচি।

এ বিষয়ে মইনুল ইসলাম বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট দাবিতে আমাদের এই ধর্মঘট। এর সঙ্গে অন্য কিছুর সম্পৃক্ততা নেই। ’

সুনামগঞ্জে শুক্র ও শনিবার পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয় সুনামগঞ্জ বাস মালিক সমিতি। দুপুরে সমিতির বৈঠক শেষে বিষয়টি জানান সমিতির সাধারণ সম্পাদক জুয়েল মিয়া। তিনি বলেন, ‘সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের লামাকাজি সেতু থেকে টোল আদায় বন্ধ, জেলায় রেজিস্ট্রেশনবিহীন সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধ এবং সুনামগঞ্জ বাস টার্মিনাল সংস্কারের দাবিতে আমরা ধর্মঘট ডেকেছি। ’

প্রায় একই সময়ে হবিগঞ্জে সংবাদ সম্মেলন করে ধর্মঘটের ঘোষণা দেয় হবিগঞ্জ মোটর মালিক গ্রুপ। সিলেট ছাড়া অন্য জেলাগুলোতে দুই দিনের ধর্মঘট ডাকা হলেও হবিগঞ্জে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট ডাকা হয়েছে।

মোটর মালিক গ্রুপের সভাপতি ফজলুর রহমান বলেন, ‘হবিগঞ্জ-নবীগঞ্জ সড়কে বাস চলাচলের ক্ষেত্রে নবীগঞ্জ প্রশাসন বাধা প্রদান করছে। যানজটের অজুহাতে সরকার নির্ধারিত স্থান ছালামতপুরে বাস নিয়ে যেতে দিচ্ছে না। এ ছাড়া সড়কে অবৈধ যানবাহনের কারণেও বাসগুলো বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছে। এসবের প্রতিকার চেয়ে শুক্রবার সকাল থেকে জেলা মোটর মালিক গ্রুপের আওতাধীন সব বাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। ’গতকাল বুধবার সিলেট জেলায় শনিবার এক দিনের এবং মৌলভীবাজার জেলায় শুক্র ও শনিবার দুই দিনের পরিবহন ধর্মঘট ডাকে সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি।

সিলেটে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ আগামী ১৯ নভেম্বর (শনিবার)। পরিবহন ধর্মঘটের বিষয়ে সিলেট মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব মিফতাহ্ সিদ্দিকী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা মনে করেছিলাম তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে। এটা পরিবহন ধর্মঘট নয়, সরকারি ধর্মঘট। আমরা প্রস্তুত যেকোনো পরিস্থিতির জন্য। আমাদের নেতাকর্মী এসব প্রতিবন্ধকতা পার হয়ে ১৯ নভেম্বরের গণসমাবেশ সফল করবে। কারণ তারা মুক্তিগামী নেতাকর্মী। হেঁটে, সাইকেলে যেভাবেই হোক তারা এসে পৌঁছবে। ’

এর আগে খুলনা, বরিশাল, রংপুর, ফরিদপুরে বিএনপির মহাসমাবেশে থ্রিহুইলার বন্ধের দাবিতে বাস ধর্মঘট ডেকেছিল স্থানীয় মালিক সমিতি।

বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সরকার বিএনপির সমাবেশে লোকসমাগম ঠেকাতে কৌশলে মালিক সমিতিকে দিয়ে পরিবহন ধর্মঘট করাচ্ছে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

সিলেটে সব ধরনের পরিবহন ধর্মঘটের ডাক

Update Time : ১০:৫২:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক:

পর্যায়ক্রমে সিলেট বিভাগের চার জেলায় বাস ধর্মঘট ডাকার পর এবার সিলেট জেলায় সব ধরনের পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবারে বিকেলে জেলায় সব ধরনের পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয় জেলা পরিবহন শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। এর আগে দুপুরে হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ জেলায় বাস ধর্মঘট ডাকা হয়।

বিকেলে নগরের দক্ষিণ সুরমার হুমায়ূন রশীদ চত্বর এলাকায় শ্রমিক সংগঠনের নেতারা বৈঠকে বসেন।

বৈঠকে ধর্মঘট ডাকার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। সব ধরনের পরিবহন ধর্মঘটের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা পরিবহন শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি মইনুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমরা চার দফা দাবিতে ধর্মঘট ডেকেছি। শনিবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এ ধর্মঘট চলবে।

তিনি বলেন, ‘শনিবার সিলেটে মাইক্রোবাস, অটোরিকশাসহ সব ধরনের যানবাহন বন্ধ থাকবে। ’

সিলেটের সব কয়টি পাথর কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলনের অনুমতি, সিএনজিচালিত অটোরিকশার নতুন রেজিস্ট্রেশন প্রদান, সিলেটের লামাকাজী ও শ্যাওলা সেতুতে টোল আদায় বন্ধ, হাইওয়েতে টমটম ও নসিমন চলাচল বন্ধ করার দাবিতে এই ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। তবে বিএনপির দাবি, গণসমাবেশে লোকসমাগম বাধাগ্রস্ত করতে এই কর্মসূচি।

এ বিষয়ে মইনুল ইসলাম বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট দাবিতে আমাদের এই ধর্মঘট। এর সঙ্গে অন্য কিছুর সম্পৃক্ততা নেই। ’

সুনামগঞ্জে শুক্র ও শনিবার পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয় সুনামগঞ্জ বাস মালিক সমিতি। দুপুরে সমিতির বৈঠক শেষে বিষয়টি জানান সমিতির সাধারণ সম্পাদক জুয়েল মিয়া। তিনি বলেন, ‘সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের লামাকাজি সেতু থেকে টোল আদায় বন্ধ, জেলায় রেজিস্ট্রেশনবিহীন সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধ এবং সুনামগঞ্জ বাস টার্মিনাল সংস্কারের দাবিতে আমরা ধর্মঘট ডেকেছি। ’

প্রায় একই সময়ে হবিগঞ্জে সংবাদ সম্মেলন করে ধর্মঘটের ঘোষণা দেয় হবিগঞ্জ মোটর মালিক গ্রুপ। সিলেট ছাড়া অন্য জেলাগুলোতে দুই দিনের ধর্মঘট ডাকা হলেও হবিগঞ্জে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট ডাকা হয়েছে।

মোটর মালিক গ্রুপের সভাপতি ফজলুর রহমান বলেন, ‘হবিগঞ্জ-নবীগঞ্জ সড়কে বাস চলাচলের ক্ষেত্রে নবীগঞ্জ প্রশাসন বাধা প্রদান করছে। যানজটের অজুহাতে সরকার নির্ধারিত স্থান ছালামতপুরে বাস নিয়ে যেতে দিচ্ছে না। এ ছাড়া সড়কে অবৈধ যানবাহনের কারণেও বাসগুলো বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছে। এসবের প্রতিকার চেয়ে শুক্রবার সকাল থেকে জেলা মোটর মালিক গ্রুপের আওতাধীন সব বাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। ’গতকাল বুধবার সিলেট জেলায় শনিবার এক দিনের এবং মৌলভীবাজার জেলায় শুক্র ও শনিবার দুই দিনের পরিবহন ধর্মঘট ডাকে সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি।

সিলেটে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ আগামী ১৯ নভেম্বর (শনিবার)। পরিবহন ধর্মঘটের বিষয়ে সিলেট মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব মিফতাহ্ সিদ্দিকী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা মনে করেছিলাম তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে। এটা পরিবহন ধর্মঘট নয়, সরকারি ধর্মঘট। আমরা প্রস্তুত যেকোনো পরিস্থিতির জন্য। আমাদের নেতাকর্মী এসব প্রতিবন্ধকতা পার হয়ে ১৯ নভেম্বরের গণসমাবেশ সফল করবে। কারণ তারা মুক্তিগামী নেতাকর্মী। হেঁটে, সাইকেলে যেভাবেই হোক তারা এসে পৌঁছবে। ’

এর আগে খুলনা, বরিশাল, রংপুর, ফরিদপুরে বিএনপির মহাসমাবেশে থ্রিহুইলার বন্ধের দাবিতে বাস ধর্মঘট ডেকেছিল স্থানীয় মালিক সমিতি।

বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সরকার বিএনপির সমাবেশে লোকসমাগম ঠেকাতে কৌশলে মালিক সমিতিকে দিয়ে পরিবহন ধর্মঘট করাচ্ছে।