সাংবাদিকদের সাত দিনের আল্টিমেটাম

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০২:২৩:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • / ১৪৫ Time View

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বৈশাখী টেলিভিশনের প্রধান বার্তা সম্পাদক সাইফুল ইসলাম এবং প্রতিবেদক কাজী ফরিদকে হত্যার হুমকিদাতাদের আইনের আওতায় আনতে সাত দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা।

শুক্রবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর কাওরানবাজারের সার্ক ফোয়ারার মোড়ে ‘সাধারণ সাংবাদিকবৃন্দ’ ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে তারা এ আল্টিমেটাম দেন।

সাংবাদিক নেতারা জানান, হুমকিদাতাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা না হলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ঘেরাওসহ কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে।

মানববন্ধনে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু বলেন, আজকে আমাদের সহকর্মী সাইফুল ইসলাম ও কাজী ফরিদের বিরুদ্ধে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এতে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা যেমন তাদের পরিবারে ছড়িয়ে পড়েছে, তেমনি সমাজ এবং রাষ্ট্রেও ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। আমরা এই মৃত্যু পরোয়ানা নিয়ে সাংবাদিকতা করতে আসিনি। এ ধরনের মৃত্যু পরোয়ানা জারি করে, হুমকি-ধামকি দিলে এক ধরনের মনস্তাত্ত্বিক চাপ হয়তো তৈরি করা সম্ভব। কিন্তু স্বাধীন সংবাদপত্র এবং সংবাদ বিকাশের পথ রুদ্ধ করা কঠিন। স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলন, জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িক, অপশক্তির বিরুদ্ধে আন্দোলনে সাংবাদিক সমাজ বরাবরই লড়াকু ভূমিকা পালন করেছেন। কোনো ধরনের রক্তচক্ষু আমাদের অগ্রযাত্রাকে স্তব্ধ করতে পারেনি। আগামীতেও পারবে না।

.

May be an image of 9 people, including Sheikh Jamal and people standing

.

তিনি আরও বলেন, এখনও আমরা দেখি সেই ঘোড়াঘাট থেকে শুরু করে সুনামগঞ্জ পর্যন্ত দুর্বৃত্ত চক্র সাংবাদিকদের কণ্ঠ বন্ধ করতে চায়। রাজধানীতেও তারা তাদের অভয়ারণ্য তৈরি করেছে। গাজীপুর থেকে চিঠির মাধ্যমে মৃত্যু পরোয়ানার চিঠি পাঠিয়ে দেওয়া হয়, আমরা এর ধিক্কার জানাই।

মানববন্ধনে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের কোষাধ্যক্ষ দীপ আজাদ বলেন, রাজাকার, খুনি-সন্ত্রাসীদের তালিকা হয়। এখন গণমাধ্যমের শত্রুদের তালিকা হওয়া দরকার। মানুষ জানুক কারা স্বাধীন গণমাধ্যমকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়, কারা অনিয়ম-দুর্নীতির খবর বন্ধ করতে চায়। তাদের নামগুলো মানুষ জানুক।

তিনি আরও বলেন, বৈশাখী টিভির সাইফুল আলম ও কাজী ফরিদকে যারা কাফনের কাপড় পাঠিয়েছে তাদের ব্যাপারে দৃশ্যমান ব্যবস্থা না নেয়া হলে আমরা আবার কর্মসূচি দেব। সে কর্মসূচি এমন হতে পারে যে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ঘেরাও করব, আইজি ও সংশ্লিষ্টদের কাছে যাবো। আমরা বিচারের জন্য এখানেই কিন্তু থেমে থাকব না।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হারুন অর রশিদের দুর্নীতি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে বৈশাখী টেলিভিশন। এর পর পরই কাফনের কাপড় পাঠিয়ে জীবন নাশের হুমকি দেওয়া হয় টেলিভিশনটির প্রধান বার্তা সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ও প্রতিবেদক কাজী ফরিদকে। যার প্রতিবাদে ক্ষোভে ফেটে পড়ে সাংবাদিক সমাজ। তারই ধারাবাহিকতায় এই কর্মসূচি পালিত হয়।

মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিল করেন সাংবাদিকরা। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, ডিইউজের যুগ্ম সম্পাদক খায়রুল আলম, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আকতার হোসেন, সাবেক নির্বাহী পরিষদ সদস্য গোলাম মুজতবা ধ্রুব, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক মাইনুল ইসলাম সোহেল, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক হাসিবুর রহমান, একুশে টেলিভিশনের চিফ রিপোর্টার দীপু সারওয়ার, ৭১ টেলিভিশনের রিপোর্টার নাদিয়া শারমিন প্রমুখ।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

সাংবাদিকদের সাত দিনের আল্টিমেটাম

Update Time : ০২:২৩:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বৈশাখী টেলিভিশনের প্রধান বার্তা সম্পাদক সাইফুল ইসলাম এবং প্রতিবেদক কাজী ফরিদকে হত্যার হুমকিদাতাদের আইনের আওতায় আনতে সাত দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা।

শুক্রবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর কাওরানবাজারের সার্ক ফোয়ারার মোড়ে ‘সাধারণ সাংবাদিকবৃন্দ’ ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে তারা এ আল্টিমেটাম দেন।

সাংবাদিক নেতারা জানান, হুমকিদাতাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা না হলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ঘেরাওসহ কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে।

মানববন্ধনে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু বলেন, আজকে আমাদের সহকর্মী সাইফুল ইসলাম ও কাজী ফরিদের বিরুদ্ধে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এতে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা যেমন তাদের পরিবারে ছড়িয়ে পড়েছে, তেমনি সমাজ এবং রাষ্ট্রেও ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। আমরা এই মৃত্যু পরোয়ানা নিয়ে সাংবাদিকতা করতে আসিনি। এ ধরনের মৃত্যু পরোয়ানা জারি করে, হুমকি-ধামকি দিলে এক ধরনের মনস্তাত্ত্বিক চাপ হয়তো তৈরি করা সম্ভব। কিন্তু স্বাধীন সংবাদপত্র এবং সংবাদ বিকাশের পথ রুদ্ধ করা কঠিন। স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলন, জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িক, অপশক্তির বিরুদ্ধে আন্দোলনে সাংবাদিক সমাজ বরাবরই লড়াকু ভূমিকা পালন করেছেন। কোনো ধরনের রক্তচক্ষু আমাদের অগ্রযাত্রাকে স্তব্ধ করতে পারেনি। আগামীতেও পারবে না।

.

May be an image of 9 people, including Sheikh Jamal and people standing

.

তিনি আরও বলেন, এখনও আমরা দেখি সেই ঘোড়াঘাট থেকে শুরু করে সুনামগঞ্জ পর্যন্ত দুর্বৃত্ত চক্র সাংবাদিকদের কণ্ঠ বন্ধ করতে চায়। রাজধানীতেও তারা তাদের অভয়ারণ্য তৈরি করেছে। গাজীপুর থেকে চিঠির মাধ্যমে মৃত্যু পরোয়ানার চিঠি পাঠিয়ে দেওয়া হয়, আমরা এর ধিক্কার জানাই।

মানববন্ধনে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের কোষাধ্যক্ষ দীপ আজাদ বলেন, রাজাকার, খুনি-সন্ত্রাসীদের তালিকা হয়। এখন গণমাধ্যমের শত্রুদের তালিকা হওয়া দরকার। মানুষ জানুক কারা স্বাধীন গণমাধ্যমকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়, কারা অনিয়ম-দুর্নীতির খবর বন্ধ করতে চায়। তাদের নামগুলো মানুষ জানুক।

তিনি আরও বলেন, বৈশাখী টিভির সাইফুল আলম ও কাজী ফরিদকে যারা কাফনের কাপড় পাঠিয়েছে তাদের ব্যাপারে দৃশ্যমান ব্যবস্থা না নেয়া হলে আমরা আবার কর্মসূচি দেব। সে কর্মসূচি এমন হতে পারে যে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ঘেরাও করব, আইজি ও সংশ্লিষ্টদের কাছে যাবো। আমরা বিচারের জন্য এখানেই কিন্তু থেমে থাকব না।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হারুন অর রশিদের দুর্নীতি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে বৈশাখী টেলিভিশন। এর পর পরই কাফনের কাপড় পাঠিয়ে জীবন নাশের হুমকি দেওয়া হয় টেলিভিশনটির প্রধান বার্তা সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ও প্রতিবেদক কাজী ফরিদকে। যার প্রতিবাদে ক্ষোভে ফেটে পড়ে সাংবাদিক সমাজ। তারই ধারাবাহিকতায় এই কর্মসূচি পালিত হয়।

মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিল করেন সাংবাদিকরা। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, ডিইউজের যুগ্ম সম্পাদক খায়রুল আলম, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আকতার হোসেন, সাবেক নির্বাহী পরিষদ সদস্য গোলাম মুজতবা ধ্রুব, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক মাইনুল ইসলাম সোহেল, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক হাসিবুর রহমান, একুশে টেলিভিশনের চিফ রিপোর্টার দীপু সারওয়ার, ৭১ টেলিভিশনের রিপোর্টার নাদিয়া শারমিন প্রমুখ।