রোজার প্রতিদান দেবেন আল্লাহ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৩:৫৮:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ এপ্রিল ২০২২
  • / ২৩৪ Time View

ইসলাম ডেস্ক:

রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের বার্তা নিয়ে দুয়ারে হাজির পবিত্র মাহে রমজান। বছরের অন্যান্য মাস অপেক্ষা অধিক মর্যাদাশীল ও বরকতপূর্ণ মাস এটি। কোরআন ও হাদিসে এ মাসের অনেক ফজিলত উল্লিখিত হয়েছে। যেমন—

কোরআন নাজিল হওয়া

এ মাসেই মানুষ ও জিন জাতির মুক্তির সনদ কোরআন শরিফ একত্রে লওহে মাহফুজ থেকে প্রথম আসমানে বাইতুল ইজ্জতে অবতীর্ণ হয়। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে সর্বপ্রথম এ মাসেই অহি অবতীর্ণ হয়। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘রমজান মাসই হলো সে মাস, যাতে কোরআন নাজিল করা হয়েছে। যা মানুষের জন্য হেদায়াত এবং সত্য পথযাত্রীদের জন্য সুস্পষ্ট পথনির্দেশ।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৫)।

রহমতের দরোজা খোলা

এ মাসে রহমতের দরোজা উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘রমজান মাস শুরু হলেই রহমতের দরোজা খুলে দেওয়া হয়।’ (সহিহ মুসলিম : ১০৭৯/২)।

শয়তান শৃঙ্খলাবদ্ধ থাকে

রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘রমজান মাসের শুভাগমন উপলক্ষে জান্নাতের দরোজাসমূহ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। জাহান্নামের দরোজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। আর শয়তানকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয়।’ (সহিহ বোখারি : ১৮৯৯; সহিহ মুসলিম : ১০৭৯/১)।

জাহান্নাম থেকে মুক্তি

এ মাস জাহান্নাম থেকে নাজাত লাভের মাস। সুতরাং বেশি বেশি ইবাদত ও ইস্তেগফারের মাধ্যমে মুক্তির পরোয়ানা লাভ করার এটিই সুবর্ণ সুযোগ। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আল্লাহতায়ালা প্রত্যহ ইফতারের সময় অসংখ্য ব্যক্তিকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন।’ (মুসনাদে আহমদ : ২১৬৯৮)।

রমজানের ওমরা হজ সমতুল্য

ব্যবসায়ী মহলের একটি বিশেষ মৌসুম থাকে, যখন তাদের ব্যবসা খুব জমজমাট ও লাভজনক হয়। সে মৌসুমে বছরের অন্য সময়ের চেয়ে অনেক বেশি আয় হয়। আখেরাতের ব্যবসায়ীদের জন্য আখেরাতের সওদা করার উত্তম মৌসুম হলো রমজান মাস। কেননা, এ মাসে প্রতিটি আমলের অনেক গুণ বেশি সওয়াব পাওয়া যায়। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘রমজানের ওমরা হজ সমতুল্য।’ (তিরমিজি : ৯৩৯, সুনানে আবি দাউদ : ১৯৮৬)।

বহুগুণ সওয়াব

এ মাসে নফল আদায় করলে অন্য মাসের ফরজের ন্যায় সওয়াব হয়। আর এ মাসের এক ফরজে অন্য মাসের ৭০ ফরজের সমান সওয়াব পাওয়া যায়। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘রমজান মাসে যে ব্যক্তি একটি নফল আদায় করল, সে যেনো অন্য মাসে একটি ফরজ আদায় করল। আর যে এ মাসে একটি ফরজ আদায় করল, সে যেনো অন্য মাসে সত্তরটি ফরজ আদায় করল।’ (শুআবুল ঈমান : ৩/৩০৫-৩০৬)।

রমজানের রোজার অভিনব প্রতিদান

রমজানের রোজার প্রতিদান আল্লাহতায়ালা নিজ হাতে দেবেন। হাদিসে কুদসিতে এসেছে, আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘নিশ্চয়ই রোজা আমার জন্য। আর এর প্রতিদান স্বয়ং আমিই দেব।’ (সহিহ মুসলিম : ১১৫১/১৬৫)।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

রোজার প্রতিদান দেবেন আল্লাহ

Update Time : ০৩:৫৮:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ এপ্রিল ২০২২

ইসলাম ডেস্ক:

রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের বার্তা নিয়ে দুয়ারে হাজির পবিত্র মাহে রমজান। বছরের অন্যান্য মাস অপেক্ষা অধিক মর্যাদাশীল ও বরকতপূর্ণ মাস এটি। কোরআন ও হাদিসে এ মাসের অনেক ফজিলত উল্লিখিত হয়েছে। যেমন—

কোরআন নাজিল হওয়া

এ মাসেই মানুষ ও জিন জাতির মুক্তির সনদ কোরআন শরিফ একত্রে লওহে মাহফুজ থেকে প্রথম আসমানে বাইতুল ইজ্জতে অবতীর্ণ হয়। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে সর্বপ্রথম এ মাসেই অহি অবতীর্ণ হয়। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘রমজান মাসই হলো সে মাস, যাতে কোরআন নাজিল করা হয়েছে। যা মানুষের জন্য হেদায়াত এবং সত্য পথযাত্রীদের জন্য সুস্পষ্ট পথনির্দেশ।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৫)।

রহমতের দরোজা খোলা

এ মাসে রহমতের দরোজা উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘রমজান মাস শুরু হলেই রহমতের দরোজা খুলে দেওয়া হয়।’ (সহিহ মুসলিম : ১০৭৯/২)।

শয়তান শৃঙ্খলাবদ্ধ থাকে

রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘রমজান মাসের শুভাগমন উপলক্ষে জান্নাতের দরোজাসমূহ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। জাহান্নামের দরোজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। আর শয়তানকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয়।’ (সহিহ বোখারি : ১৮৯৯; সহিহ মুসলিম : ১০৭৯/১)।

জাহান্নাম থেকে মুক্তি

এ মাস জাহান্নাম থেকে নাজাত লাভের মাস। সুতরাং বেশি বেশি ইবাদত ও ইস্তেগফারের মাধ্যমে মুক্তির পরোয়ানা লাভ করার এটিই সুবর্ণ সুযোগ। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আল্লাহতায়ালা প্রত্যহ ইফতারের সময় অসংখ্য ব্যক্তিকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন।’ (মুসনাদে আহমদ : ২১৬৯৮)।

রমজানের ওমরা হজ সমতুল্য

ব্যবসায়ী মহলের একটি বিশেষ মৌসুম থাকে, যখন তাদের ব্যবসা খুব জমজমাট ও লাভজনক হয়। সে মৌসুমে বছরের অন্য সময়ের চেয়ে অনেক বেশি আয় হয়। আখেরাতের ব্যবসায়ীদের জন্য আখেরাতের সওদা করার উত্তম মৌসুম হলো রমজান মাস। কেননা, এ মাসে প্রতিটি আমলের অনেক গুণ বেশি সওয়াব পাওয়া যায়। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘রমজানের ওমরা হজ সমতুল্য।’ (তিরমিজি : ৯৩৯, সুনানে আবি দাউদ : ১৯৮৬)।

বহুগুণ সওয়াব

এ মাসে নফল আদায় করলে অন্য মাসের ফরজের ন্যায় সওয়াব হয়। আর এ মাসের এক ফরজে অন্য মাসের ৭০ ফরজের সমান সওয়াব পাওয়া যায়। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘রমজান মাসে যে ব্যক্তি একটি নফল আদায় করল, সে যেনো অন্য মাসে একটি ফরজ আদায় করল। আর যে এ মাসে একটি ফরজ আদায় করল, সে যেনো অন্য মাসে সত্তরটি ফরজ আদায় করল।’ (শুআবুল ঈমান : ৩/৩০৫-৩০৬)।

রমজানের রোজার অভিনব প্রতিদান

রমজানের রোজার প্রতিদান আল্লাহতায়ালা নিজ হাতে দেবেন। হাদিসে কুদসিতে এসেছে, আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘নিশ্চয়ই রোজা আমার জন্য। আর এর প্রতিদান স্বয়ং আমিই দেব।’ (সহিহ মুসলিম : ১১৫১/১৬৫)।