রূপচর্চায় মধুর ব্যবহার

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ১১:৩১:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ মে ২০২১
  • / ১৬৬ Time View
লাইফস্টাইল ডেস্ক:
চীনকাল থেকেই মধুর গুণাগুণ প্রত্যেকের মুখে মুখে শুনে এসেছি। রূপচর্চা, স্বাস্থ্যগুণ, আতিথেয়তাসহ নানান কাজে মধুর জুড়ি মেলা ভার। এতে ম্যাগনেসিয়াম,ফসফেট,আয়রন,ক্যালসিয়াম,গ্লুকোজ,পটাশিয়াম-সহ অনেক জরুরী উপাদান রয়েছে।
.
মধু দুই ধরণের হয়, ফুলের মধু এবং মৌমাছির মধু। এই দুই ধরণের মধ্যে মৌমাছির খাঁটি চাকভাঙা মধুই বেশি চাহিদাসম্পন্ন। আজ আমরা জানব রূপচর্চায় মধুর ব্যবহার সম্পর্কে। ব্রণ দূরীকরণে মধুতে রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল উপাদান যা মুখের ব্রণ সমস্যা সমাধানে বেশ কার্যকরী। এক চা চামচ মধু এবং হাফ চা চামচ সিনামন ( Cinnamon ) একসাথে ভালভাবে মিশিয়ে নিন। তারপর এই মিশ্রণ টি কটন বাড অথবা তুলো দিয়ে ব্রণের জায়গায় লাগান এবং তা ১০মিনিট পর ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।
.
ব্রণের পাশাপাশি এটি মুখের অতিরিক্ত লাল ভাবও দূর করে। চুলের প্যাক হিসেবে একটি বাটিতে দুই ভাগ মধু এবং এক ভাগ অলিভ অয়েল ( সুবিধা অনুযায়ী অন্য তেল ) মিশিয়ে চুলের উপরিভাগে এবং নিম্নভাগে ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। চাইলে এই প্যাকটিতে একটি ডিমের সাদা অংশ আর পেঁয়াজের রস মিলিয়ে নিতে পারেন। এবার চুল ওপরের দিকে উঁচু করে বেঁধে রাখুন। ৩০মিনিট পর শ্যাম্পু করে ভালভাবে ধুয়ে ফেলুন। চুল হবে মজবুত, সিল্কি আর উজ্জ্বল।
.
শুষ্ক ঠোঁটের জন্য রুক্ষ ও প্রাণহীন ঠোঁটের জন্য এক ফোঁটা খাঁটি মধুই যথেষ্ট। প্রতিদিন অন্তত একবার ঠোঁটে তর্জনী অথবা তুলোর সাহায্যে মধু লাগিয়ে নিন। ১০-১৫ মিনিট পর হালকা গরম পানিতে তুলো বা নরম কাপড় ভিজিয়ে ঠোঁট মুছে ফেলুন। আর যদি কোন অস্বস্তি বোধ না হয়, তাহলে ধুয়ে ফেলার দরকার ও নেই।
.
ফেসিয়াল মাস্ক মুখের রোদে পোড়া কাল দাগ দূর করে চকচকে ভাব ফিরিয়ে আনতে মধুর তুলনা হয় না। বাইরে যাওয়ার ফলে যে ধুলো-ময়লা আমাদের মুখে নিয়মিত জমছে তা পরিষ্কার করাটা খুবই জরুরী। বাজারে যেসব স্ক্রাব পাওয়া যায় তা নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের নানান ক্ষতি সহ গর্তের সৃষ্টি হতে পারে। তাই ঘরোয়া পদ্ধতিতে এক টেবিল চামচ মধু এবং এক টেবিল চামচ ওটস মিশিয়ে মুখে ভালকরে ম্যাসেজ করুন। তারপর উষ্ণ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। বাসায় ওটস না থাকলে চালের গুঁড়োও ব্যবহার করতে পারেন। এই মাস্কটি আপনার ত্বকের মৃত কোষগুলো পরিষ্কার করবে, ব্ল্যাক হেডস দূর করবে এবং ত্বককে করবে আগের মতন প্রাণবন্ত।
.
ত্বক উজ্জ্বল করে এক টেবিল চামচ মধু, এক চা চামচ টকদই এবং অল্প পরিমাণে লেবুর রস মিশিয়ে ফেইস ব্রাশ দিয়ে মুখে লাগিয়ে নিতে হবে। যাদের এলারজির সমস্যা আছে তারা লেবু না দেয়াই ভাল। ২০মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হবে। শুধু মুখেই নয় গলায়, ঘাড়ে, হাতে, পায়েও এই মিশ্রণটি নিয়মিত ব্যবহারে ত্বক উজ্জ্বল হবে। সেক্ষেত্রে মিশ্রণটির পরিমাণটা বেড়ে যাবে। হাতের কাছে যদি দই বা অন্য কিছু না থাকে তাহলে কিন্তু শুধু মধুও ত্বকে লাগিয়ে নিতে পারেন। এটিও কম কার্যকরী নয়।
.
ছোট্ট কিছু টিপস- (১) উন্নতমানের ব্র্যান্ডের মধু ব্যবহার করবেন, বিশ্বস্ত সুত্রে আনিয়ে নিতে পারলে বেশি ভালো হবে। (২) মৌমাছির মধুতে অ্যালার্জি থাকলে ফুলের মধু ( যে ফুলে আপনার অ্যালার্জি নেই ) ব্যবহার করতে পারেন। (৩) মধু ত্বকে লাগানোর পাশাপাশি খেতে পারলে বেশি কাজে দিবে। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কুসুম কুসুম গরম পানির সাথে অল্প লেবু এবং এক চামচ মধু অথবা গ্রিন টি এর সাথে মধু আর লেবু মিলিয়ে খেতে পারেন। এতে ত্বক সুন্দর হওয়ার সাথে পেটের চর্বি কমবে এবং নানান অসুখ-বিসুখ থেকে মুক্তি লাভ করবেন। (৪) মধু পরিষ্কার কৌটোয় সংরক্ষণ করবেন এবং ফ্রিজে রাখার প্রয়োজন নেই।
Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

রূপচর্চায় মধুর ব্যবহার

Update Time : ১১:৩১:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ মে ২০২১
লাইফস্টাইল ডেস্ক:
চীনকাল থেকেই মধুর গুণাগুণ প্রত্যেকের মুখে মুখে শুনে এসেছি। রূপচর্চা, স্বাস্থ্যগুণ, আতিথেয়তাসহ নানান কাজে মধুর জুড়ি মেলা ভার। এতে ম্যাগনেসিয়াম,ফসফেট,আয়রন,ক্যালসিয়াম,গ্লুকোজ,পটাশিয়াম-সহ অনেক জরুরী উপাদান রয়েছে।
.
মধু দুই ধরণের হয়, ফুলের মধু এবং মৌমাছির মধু। এই দুই ধরণের মধ্যে মৌমাছির খাঁটি চাকভাঙা মধুই বেশি চাহিদাসম্পন্ন। আজ আমরা জানব রূপচর্চায় মধুর ব্যবহার সম্পর্কে। ব্রণ দূরীকরণে মধুতে রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল উপাদান যা মুখের ব্রণ সমস্যা সমাধানে বেশ কার্যকরী। এক চা চামচ মধু এবং হাফ চা চামচ সিনামন ( Cinnamon ) একসাথে ভালভাবে মিশিয়ে নিন। তারপর এই মিশ্রণ টি কটন বাড অথবা তুলো দিয়ে ব্রণের জায়গায় লাগান এবং তা ১০মিনিট পর ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।
.
ব্রণের পাশাপাশি এটি মুখের অতিরিক্ত লাল ভাবও দূর করে। চুলের প্যাক হিসেবে একটি বাটিতে দুই ভাগ মধু এবং এক ভাগ অলিভ অয়েল ( সুবিধা অনুযায়ী অন্য তেল ) মিশিয়ে চুলের উপরিভাগে এবং নিম্নভাগে ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। চাইলে এই প্যাকটিতে একটি ডিমের সাদা অংশ আর পেঁয়াজের রস মিলিয়ে নিতে পারেন। এবার চুল ওপরের দিকে উঁচু করে বেঁধে রাখুন। ৩০মিনিট পর শ্যাম্পু করে ভালভাবে ধুয়ে ফেলুন। চুল হবে মজবুত, সিল্কি আর উজ্জ্বল।
.
শুষ্ক ঠোঁটের জন্য রুক্ষ ও প্রাণহীন ঠোঁটের জন্য এক ফোঁটা খাঁটি মধুই যথেষ্ট। প্রতিদিন অন্তত একবার ঠোঁটে তর্জনী অথবা তুলোর সাহায্যে মধু লাগিয়ে নিন। ১০-১৫ মিনিট পর হালকা গরম পানিতে তুলো বা নরম কাপড় ভিজিয়ে ঠোঁট মুছে ফেলুন। আর যদি কোন অস্বস্তি বোধ না হয়, তাহলে ধুয়ে ফেলার দরকার ও নেই।
.
ফেসিয়াল মাস্ক মুখের রোদে পোড়া কাল দাগ দূর করে চকচকে ভাব ফিরিয়ে আনতে মধুর তুলনা হয় না। বাইরে যাওয়ার ফলে যে ধুলো-ময়লা আমাদের মুখে নিয়মিত জমছে তা পরিষ্কার করাটা খুবই জরুরী। বাজারে যেসব স্ক্রাব পাওয়া যায় তা নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের নানান ক্ষতি সহ গর্তের সৃষ্টি হতে পারে। তাই ঘরোয়া পদ্ধতিতে এক টেবিল চামচ মধু এবং এক টেবিল চামচ ওটস মিশিয়ে মুখে ভালকরে ম্যাসেজ করুন। তারপর উষ্ণ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। বাসায় ওটস না থাকলে চালের গুঁড়োও ব্যবহার করতে পারেন। এই মাস্কটি আপনার ত্বকের মৃত কোষগুলো পরিষ্কার করবে, ব্ল্যাক হেডস দূর করবে এবং ত্বককে করবে আগের মতন প্রাণবন্ত।
.
ত্বক উজ্জ্বল করে এক টেবিল চামচ মধু, এক চা চামচ টকদই এবং অল্প পরিমাণে লেবুর রস মিশিয়ে ফেইস ব্রাশ দিয়ে মুখে লাগিয়ে নিতে হবে। যাদের এলারজির সমস্যা আছে তারা লেবু না দেয়াই ভাল। ২০মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হবে। শুধু মুখেই নয় গলায়, ঘাড়ে, হাতে, পায়েও এই মিশ্রণটি নিয়মিত ব্যবহারে ত্বক উজ্জ্বল হবে। সেক্ষেত্রে মিশ্রণটির পরিমাণটা বেড়ে যাবে। হাতের কাছে যদি দই বা অন্য কিছু না থাকে তাহলে কিন্তু শুধু মধুও ত্বকে লাগিয়ে নিতে পারেন। এটিও কম কার্যকরী নয়।
.
ছোট্ট কিছু টিপস- (১) উন্নতমানের ব্র্যান্ডের মধু ব্যবহার করবেন, বিশ্বস্ত সুত্রে আনিয়ে নিতে পারলে বেশি ভালো হবে। (২) মৌমাছির মধুতে অ্যালার্জি থাকলে ফুলের মধু ( যে ফুলে আপনার অ্যালার্জি নেই ) ব্যবহার করতে পারেন। (৩) মধু ত্বকে লাগানোর পাশাপাশি খেতে পারলে বেশি কাজে দিবে। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কুসুম কুসুম গরম পানির সাথে অল্প লেবু এবং এক চামচ মধু অথবা গ্রিন টি এর সাথে মধু আর লেবু মিলিয়ে খেতে পারেন। এতে ত্বক সুন্দর হওয়ার সাথে পেটের চর্বি কমবে এবং নানান অসুখ-বিসুখ থেকে মুক্তি লাভ করবেন। (৪) মধু পরিষ্কার কৌটোয় সংরক্ষণ করবেন এবং ফ্রিজে রাখার প্রয়োজন নেই।