ময়মনসিংহে ৩০ ফুট উচ্চতা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি উদ্বোধন

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৬:৪৩:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২০
  • / ২০৩ Time View
রাসেল আহমেদ:

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি রক্ষার্থে ময়মনসিংহ নগরীর পাটগুদাম ব্রিজ এলাকায় ৩০ ফুট উচ্চতাসম্পন্ন বঙ্গবন্ধু ‘জয় বাংলা চত্বর’ উদ্বোধন করা হয়েছে। বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) বিজয় দিবসের সন্ধ্যায় ফিতা কেটে, বেলুন উড়িয়ে ‘জয় বাংলা’ চত্বরের উদ্বোধন করেন সিটি মেয়র ইকরামুল হক টিটু।

সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আমিনুল হক শামীম, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল, জেলা নাগরিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার নুরুল আমিন কালাম, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আনোয়ার হোসেন, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
.
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে নগরীর পাটগুদাম ব্রিজ সংলগ্ন ব্রহ্মপুত্র নদের তীর ঘেঁষে নির্মিত হয়েছে জয় বাংলা চত্বর। চত্বরে ৩০ ফুট উচ্চতার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন, ছয় দফা, ৭ মার্চের ভাষণ, মুক্তিযুদ্ধ, পাক হানাদারদের আত্মসমর্পণ, মুক্তিযুদ্ধের বিজয়গাঁথা নান্দনিকভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে জয় বাংলা চত্বরে। এর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস জানতে পারবেন মানুষ।
.
উদ্বোধনের পর মানুষের ঢল নামে জয় বাংলা চত্বরে। নান্দনিক এ স্থাপনা দেখে বিমোহিত হন দর্শনার্থীরা। বর্ণিল আলোকসজ্জা ও আতশবাজি বিজয়ের আনন্দের মাত্রা বাড়িয়েছে।
.
জয় বাংলা চত্বরের পরিকল্পনা, ও নির্মাণ করেছেন ভাস্কর অনুপম সরকার জনি।
.
চত্বরটির স্থাপত্য নকশা সম্পর্কে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির পেছনে রোপণ করা হয়েছে সাতটি পাম গাছ। যা সাত বীরশ্রেষ্ঠের আত্মত্যাগের স্মৃতি বহন করবে।
.
প্রতিকৃতির সামনে রয়েছে ১৬টি স্তম্ভ। যা ১৬ ডিসেম্বরের বিজয়ের চিহ্ন। দীর্ঘ নয় মাসে অর্জিত স্বাধীনতা অর্জনের বিষয়টি তুলে ধরতে প্রতিটি স্তম্ভের দৈর্ঘ্য রাখা হয়েছে নয় ইঞ্চি। চত্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির উচ্চতা ৩০ ফুট। যা ৩০ লাখ শহীদের কথা স্মরণ করা হয়েছে। প্রতিকৃতির ডান প্রান্তে বঙ্গবন্ধুর স্মরণীয় উক্তি, আর বাম পাশে বঙ্গবন্ধুর জীবনী লেখা আছে। চত্বরের বাম পাশে রয়েছে সাতটি সিঁড়ি। এর মাধ্যমে ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ বোঝানো হয়েছে। আর ডান পাশে রয়েছে ছয়টি সিঁড়ি ছয় দফা আন্দোলনের প্রতীক। চত্বরে ফাইবার আর মার্বেল ডাস্ট দিয়ে ১৭টি শাপলা ফুল নির্মাণ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনকে তুলে ধরার জন্য। বেদীর দুই পাশে টেরাকোটার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ থেকে পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণ পর্যন্ত ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে।
.
সিটি মেয়র ইকরামুল হক টিটু বলেন, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম স্লোগান জয় বাংলাকে ধারণ করে তরুণ প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরতে এবং স্মৃতি রক্ষার্থে “জয় বাংলা চত্বর” নির্মাণ করা হয়েছে।
.
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৩০ ফুট উচ্চতার প্রতিকৃতি নির্মাণের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস অঙ্কিত হয়েছে এখানে। মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের আত্মত্যাগ নান্দানিকভাবে এই চত্বরে তুলে ধরা হয়েছে। এই চত্বরটি নির্মাণ করতে পেরে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন গর্বিত।
.
এই চত্বরটি সুন্দর ও এর মর্যাদা রক্ষায় নগরবাসির সহায়তা চেয়েছেন সিটি মেয়র।
.
২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেস্বর জয় বাংলা চত্বর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। বাস্তবায়ন করতে ১৪ মাস সময় লেগেছে। ব্যয় হয়েছে  প্রায় ৪১ লাখ টাকা।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

ময়মনসিংহে ৩০ ফুট উচ্চতা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি উদ্বোধন

Update Time : ০৬:৪৩:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২০
রাসেল আহমেদ:

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি রক্ষার্থে ময়মনসিংহ নগরীর পাটগুদাম ব্রিজ এলাকায় ৩০ ফুট উচ্চতাসম্পন্ন বঙ্গবন্ধু ‘জয় বাংলা চত্বর’ উদ্বোধন করা হয়েছে। বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) বিজয় দিবসের সন্ধ্যায় ফিতা কেটে, বেলুন উড়িয়ে ‘জয় বাংলা’ চত্বরের উদ্বোধন করেন সিটি মেয়র ইকরামুল হক টিটু।

সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আমিনুল হক শামীম, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল, জেলা নাগরিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার নুরুল আমিন কালাম, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আনোয়ার হোসেন, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
.
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে নগরীর পাটগুদাম ব্রিজ সংলগ্ন ব্রহ্মপুত্র নদের তীর ঘেঁষে নির্মিত হয়েছে জয় বাংলা চত্বর। চত্বরে ৩০ ফুট উচ্চতার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন, ছয় দফা, ৭ মার্চের ভাষণ, মুক্তিযুদ্ধ, পাক হানাদারদের আত্মসমর্পণ, মুক্তিযুদ্ধের বিজয়গাঁথা নান্দনিকভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে জয় বাংলা চত্বরে। এর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস জানতে পারবেন মানুষ।
.
উদ্বোধনের পর মানুষের ঢল নামে জয় বাংলা চত্বরে। নান্দনিক এ স্থাপনা দেখে বিমোহিত হন দর্শনার্থীরা। বর্ণিল আলোকসজ্জা ও আতশবাজি বিজয়ের আনন্দের মাত্রা বাড়িয়েছে।
.
জয় বাংলা চত্বরের পরিকল্পনা, ও নির্মাণ করেছেন ভাস্কর অনুপম সরকার জনি।
.
চত্বরটির স্থাপত্য নকশা সম্পর্কে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির পেছনে রোপণ করা হয়েছে সাতটি পাম গাছ। যা সাত বীরশ্রেষ্ঠের আত্মত্যাগের স্মৃতি বহন করবে।
.
প্রতিকৃতির সামনে রয়েছে ১৬টি স্তম্ভ। যা ১৬ ডিসেম্বরের বিজয়ের চিহ্ন। দীর্ঘ নয় মাসে অর্জিত স্বাধীনতা অর্জনের বিষয়টি তুলে ধরতে প্রতিটি স্তম্ভের দৈর্ঘ্য রাখা হয়েছে নয় ইঞ্চি। চত্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির উচ্চতা ৩০ ফুট। যা ৩০ লাখ শহীদের কথা স্মরণ করা হয়েছে। প্রতিকৃতির ডান প্রান্তে বঙ্গবন্ধুর স্মরণীয় উক্তি, আর বাম পাশে বঙ্গবন্ধুর জীবনী লেখা আছে। চত্বরের বাম পাশে রয়েছে সাতটি সিঁড়ি। এর মাধ্যমে ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ বোঝানো হয়েছে। আর ডান পাশে রয়েছে ছয়টি সিঁড়ি ছয় দফা আন্দোলনের প্রতীক। চত্বরে ফাইবার আর মার্বেল ডাস্ট দিয়ে ১৭টি শাপলা ফুল নির্মাণ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনকে তুলে ধরার জন্য। বেদীর দুই পাশে টেরাকোটার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ থেকে পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণ পর্যন্ত ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে।
.
সিটি মেয়র ইকরামুল হক টিটু বলেন, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম স্লোগান জয় বাংলাকে ধারণ করে তরুণ প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরতে এবং স্মৃতি রক্ষার্থে “জয় বাংলা চত্বর” নির্মাণ করা হয়েছে।
.
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৩০ ফুট উচ্চতার প্রতিকৃতি নির্মাণের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস অঙ্কিত হয়েছে এখানে। মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের আত্মত্যাগ নান্দানিকভাবে এই চত্বরে তুলে ধরা হয়েছে। এই চত্বরটি নির্মাণ করতে পেরে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন গর্বিত।
.
এই চত্বরটি সুন্দর ও এর মর্যাদা রক্ষায় নগরবাসির সহায়তা চেয়েছেন সিটি মেয়র।
.
২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেস্বর জয় বাংলা চত্বর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। বাস্তবায়ন করতে ১৪ মাস সময় লেগেছে। ব্যয় হয়েছে  প্রায় ৪১ লাখ টাকা।