মেয়েদের বিয়ের বয়স বাড়ানোর পরিকল্পনা নরেন্দ্র মোদির

  • Update Time : ০৫:৫৯:২০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২০
  • / 151

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স নির্ধারণে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার শিগগিরই নতুন সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শুক্রবার এক ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্য রাখার সময় একথা জানান তিনি।

মোদি বলেন, মেয়েদের বিয়ের বয়স কত হওয়া উচিত তা নিয়ে জরুরি পরামর্শ চলছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সচেতন নারীরা আমাকে চিঠি পাঠান। এ বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে বলেন। আমি সবাইকে আশ্বস্ত করতে চাই, প্রতিবেদন আসার সঙ্গে সঙ্গে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে সরকার।

ভারতে মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স প্রথমবার নির্ধারিত হয়েছিল ১৯২৯ সালে সারদা আইনের মাধ্যমে। তখন মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স ছিল ১৪ ও ছেলেদের ১৮। ১৯৪০ ও পরে ১৯৭৮ সালে ওই আইনে পরিবর্তন আনা হয়। ১৯৭৮ সালে বিয়ের ন্যূনতম বয়স মেয়েদের ১৮ ও ছেলেদের ২১ ঠিক করা হয়।

সম্প্রতি রাজ্যসভায় এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে ভারতের নারী ও শিশুকল্যাণমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি জানিয়েছেন, মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স কত হওয়া উচিত, তা পর্যালোচনার জন্য একটি টাস্কফোর্স গঠন করেছে কেন্দ্র। বিয়ে এবং মাতৃত্বের মধ্যে সময়ের গড় ব্যবধান, এই দুই বিষয়ের সঙ্গে স্বাস্থ্য ও পুষ্টির যোগ, জন্মের সময়ে শিশু ও মায়ের মৃত্যুর হার, সন্তানধারণ ক্ষমতা ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করে প্রতিবেদন জমা দেবে ওই কমিটি।

ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, কমিটির সেই প্রতিবেদন আসলেই নতুন সিদ্ধান্ত জানাবে কেন্দ্রীয় সরকার।

তবে সমালোচকদের অনেকেরই প্রশ্ন, শুধু বিয়ের বয়স বাড়িয়ে কতটা লাভ হবে? ভারতে এখনই ১৮ বছরের নিচে মেয়েদের বিয়ে নিষিদ্ধ হলেও আর্থ-সামাজিক কারণে তার কমবয়সী অনেকের বিয়ে হচ্ছে নিয়মিত। বিশেষত গ্রামে এবং আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা পরিবারগুলোতে। কোথাও কোথাও মেয়েদের বোঝা ভাবার প্রবণতাও রয়েছে।

এছাড়া মেয়ে বড় হলেই তার সঙ্গে ধর্ষণ কিংবা শ্লীলতাহানির শঙ্কা থেকেও দ্রুত বিয়ে দিয়ে দেয় অনেক পরিবার। তাই বিয়ের বয়স বাড়ানোর আগে সবখানে মেয়েদের নিরাপত্তা নিশ্চিত জরুরি বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

তবে শুক্রবারের বক্তব্যে এসব বিষয় তোলেননি নরেন্দ্র মোদি। এর বদলে সরকারের নানা প্রকল্পের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, বাড়িতে টয়লেট তৈরি বা সুপেয় পানির ব্যবস্থা হলে তাতে সুবিধা হবে মেয়েদেরই।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

মেয়েদের বিয়ের বয়স বাড়ানোর পরিকল্পনা নরেন্দ্র মোদির

Update Time : ০৫:৫৯:২০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২০

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স নির্ধারণে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার শিগগিরই নতুন সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শুক্রবার এক ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্য রাখার সময় একথা জানান তিনি।

মোদি বলেন, মেয়েদের বিয়ের বয়স কত হওয়া উচিত তা নিয়ে জরুরি পরামর্শ চলছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সচেতন নারীরা আমাকে চিঠি পাঠান। এ বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে বলেন। আমি সবাইকে আশ্বস্ত করতে চাই, প্রতিবেদন আসার সঙ্গে সঙ্গে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে সরকার।

ভারতে মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স প্রথমবার নির্ধারিত হয়েছিল ১৯২৯ সালে সারদা আইনের মাধ্যমে। তখন মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স ছিল ১৪ ও ছেলেদের ১৮। ১৯৪০ ও পরে ১৯৭৮ সালে ওই আইনে পরিবর্তন আনা হয়। ১৯৭৮ সালে বিয়ের ন্যূনতম বয়স মেয়েদের ১৮ ও ছেলেদের ২১ ঠিক করা হয়।

সম্প্রতি রাজ্যসভায় এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে ভারতের নারী ও শিশুকল্যাণমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি জানিয়েছেন, মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স কত হওয়া উচিত, তা পর্যালোচনার জন্য একটি টাস্কফোর্স গঠন করেছে কেন্দ্র। বিয়ে এবং মাতৃত্বের মধ্যে সময়ের গড় ব্যবধান, এই দুই বিষয়ের সঙ্গে স্বাস্থ্য ও পুষ্টির যোগ, জন্মের সময়ে শিশু ও মায়ের মৃত্যুর হার, সন্তানধারণ ক্ষমতা ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করে প্রতিবেদন জমা দেবে ওই কমিটি।

ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, কমিটির সেই প্রতিবেদন আসলেই নতুন সিদ্ধান্ত জানাবে কেন্দ্রীয় সরকার।

তবে সমালোচকদের অনেকেরই প্রশ্ন, শুধু বিয়ের বয়স বাড়িয়ে কতটা লাভ হবে? ভারতে এখনই ১৮ বছরের নিচে মেয়েদের বিয়ে নিষিদ্ধ হলেও আর্থ-সামাজিক কারণে তার কমবয়সী অনেকের বিয়ে হচ্ছে নিয়মিত। বিশেষত গ্রামে এবং আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা পরিবারগুলোতে। কোথাও কোথাও মেয়েদের বোঝা ভাবার প্রবণতাও রয়েছে।

এছাড়া মেয়ে বড় হলেই তার সঙ্গে ধর্ষণ কিংবা শ্লীলতাহানির শঙ্কা থেকেও দ্রুত বিয়ে দিয়ে দেয় অনেক পরিবার। তাই বিয়ের বয়স বাড়ানোর আগে সবখানে মেয়েদের নিরাপত্তা নিশ্চিত জরুরি বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

তবে শুক্রবারের বক্তব্যে এসব বিষয় তোলেননি নরেন্দ্র মোদি। এর বদলে সরকারের নানা প্রকল্পের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, বাড়িতে টয়লেট তৈরি বা সুপেয় পানির ব্যবস্থা হলে তাতে সুবিধা হবে মেয়েদেরই।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা