ভয়াবহ রুপ নিয়েছে তিস্তা, বিপদসীমার ৩১ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি
![](https://bdsomachar24.com/wp-content/uploads/2023/11/icon.png)
- Update Time : ০১:২০:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জুন ২০২২
- / 145
মশিয়ার রহমান, নীলফামারী প্রতিনিধিঃ
উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে ভয়াবহ রুপ নিয়েছে ।সোমবার (২০ জুন) দুপুর ৩টায় দেশের সর্ববৃহৎ তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৩১সেন্টিমিটার উপর দিয়ে তিস্তার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা অববাহিকার চরাঞ্চল ও আশপাশের লোকালয়ের বাড়ীগুলোতে পানি প্রবেশ করে কোথাও হাঁটু পরিমাণ আবার কোথাও কোমর সমান পানি দেখা গেছে। তিস্তা বেষ্টিত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
প্রচন্ড শব্দে নদীর দুই কুল ফাঁপিয়া ফুলিয়া অঅনেক ফসলি জমি ও মাছের ঘের নষ্ট করে দিয়েছে। সোমবার সকাল ৬টা তিস্তার পানি ছিল ৭ সেন্টিমিটার ও সকাল ৯টায় বিপদসীমার ৪ সেন্টিমিটার নিচে। কিন্তু বেলা বাড়ার সাথে সাথে হু হু করে পানি বাড়া শুরু করে। বিকেল ৩টায় বিপদসীমার ৩১ সেঃমিঃ উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এরফলে নতুন করে পশ্চিম ছাতনাই ইউনিয়নের কালীগঞ্জ, পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের ঝাড়সিংহেশ্বর, ছাতনাই কলোনি, খগাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের কিসামতের চড়সহ টেপাখড়িবাড়ী, গয়াবাড়ী, খালিশা চাপানী, ঝুনাগাছ চাপানী, জলঢাকা উপজেলার ডাউয়াবারী, গোলমুন্ডা, কৈমারী, শৌলমারী ইউনিয়নের প্রায় ১০ হাজার লোক পানিবন্দী হয়ে পরেন।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা উদ দৌলা দৈনিক ভোরের দর্পণ পত্রিকাকে জানান, ভুটানের অতিভারী বৃস্টি নেমে আসায় ও উজানের গজলডোবার লকগেট খুলে দেয়ায় ঢল নেমেছে। যারফলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা সবসময় সজাগ রয়েছি। আমাদের সকল কর্মকর্তা কর্মচারী মাঠ পর্যায়ে কাজ করছি। ব্যারেজের সবকটি জলকপাট খোলা রয়েছে ।
এদিকে একটি সুত্র জানায় গজলডোবার জলকপাটগুলো উন্মুক্ত করে প্রতি সেকেন্ডে পানি ছাড়া হয় দুই হাজার ৪৫৭ কিউসেক করে। মাত্র কুড়ি মিনিটে পানি ছাড়া হয় প্রায় সাড়ে ১৫ লাখ কিউসেক। ফলে ভয়ঙ্কর রূপে গর্জে ওঠে তিস্তা নদী। ভারতের দো-মোহনী পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদসীমার (৮৫.৯৫ মিটার) চেয়ে ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। প্রবল স্রোতে শোঁ শোঁ শব্দে রাক্ষুসীরূপে রুদ্রমূর্তি ধারণ করে তিস্তা অববাহিকা এলাকা কাঁপিয়ে তুলছে।
হঠাৎ তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তিস্তা পাড়ের মানুষ বড় বন্যার আশঙ্কা করলেও বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্রের দাবি, তিস্তায় বড় ধরনের বন্যার কোনো আশঙ্কা নেই। বৃষ্টির কারণে উজানের ঢেউয়ের ফলে পানির প্রবাহ বেড়েছে। ভারতে পানির প্রবাহ কমে যাচ্ছে। তাই ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানির প্রবাহ কমে যাবে বলে দাবি করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া শাখা। পলি ও বালু জমে তিস্তা ভরাট হওয়ায় সামান্য পানির প্রবাহ লোকালয়ে ঢুকে বন্যার সৃষ্টি করে। তবে আতঙ্কিত না হতে পরামর্শ দিয়েছেন বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ বেলায়েত হোসেন দৈনিক ভোরের দর্পণকে বলেন, ইত্যোমধ্যে পানি বেষ্টিত লোকজনের মাঝে শুকনো খাবার ও চাল বিতরণ করা হয়েছে।
এদিকে নীলফামারী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন জানান, তিস্তা চরের সকল সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আমরা সর্বক্ষণ পর্যবেক্ষন করছি। শুকনা খাবার মজুদ আছে। কিছু ত্রাণ দুর্গতদের মধ্যে দেওয়া হয়েছে।