বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের ৩৩ তম ব্যাচকে সহকারী অধ্যাপক পদে দ্রুত পদোন্নতির দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৪:০১:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • / ৫১৭ Time View

নিজস্ব প্রতিবেদক:

গত ৭ আগস্ট ৩৩তম বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাগণ ৮ বছরে পদার্পণ করলেও এখন পর্যন্ত এ ব্যাচের কোনো কর্মকর্তার পদোন্নতি হয়নি। ইতোঃপূর্বে এ বিষয়ে তাঁরা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মহোদয়ের কাছে লিখিতভাবে ও আলোচনা সভার মাধ্যমে জোরালো দাবি জানিয়েছে। একই বিসিএস’র সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার ব্যতীত অন্যান্য ক্যাডারে আরও দু বছর আগে প্রায় সবার পদোন্নতি হয়েছে। অথচ একই সাথে যোগদান করা সত্ত্বেও এই ব্যাচের সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কারও পদোন্নতি না হওয়ায় বিষয়টি তাদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করেছে, কর্মস্পৃহা নষ্ট করছে।

উল্লেখ্য যে, ২০০৯ জাতীয় বেতন স্কেল অনুসারে একজন সরকারি কর্মচারী সময়মতো পদোন্নতি না পেলেও সিলেকশন গ্রেড থাকায় আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতো না। কিন্তু বর্তমানে জাতীয় বেতন স্কেল-২০১৫ তে সিলেকশন গ্রেড না থাকায় একজন সরকারি কর্মচারী সময়মতো পদোন্নতি না পেলে ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। তাই ৩৩ তম বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারের পদোন্নতিযোগ্য অনেক কর্মকর্তাগণ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন।

একইসাথে চাকুরিতে যোগদানসত্ত্বেও সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার ব্যতীত ৩৩ বিসিএসের অন্যান্য ক্যাডার কর্মকর্তাগণ বহুপূর্বেই পদোন্নতি পেয়েছে। যে কারণে তাদের সাথে সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাগণের আর্থিক সম্মানগত বৈষম্য সৃষ্টি হচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনের উদ্যোগকে ব্যাহত করছে।

৩৩তম বিসিএস সাধারণ শিক্ষা এসোসিয়েশনের সভাপতি মোঃ মাঈন উদ্দিন বলেন “ গত ৩ বছরের অধিক সময় ধরে প্রভাষক হতে সহকারী অধ্যাপক পর্যায়ে পদোন্নতি হয়নি। সহকারী অধ্যাপক/৬ষ্ঠ গ্রেডে পদোন্নতির জন্য চাকরিকাল ৫ বছর প্রয়োজন, সে মোতাবেক গত ৬ আগস্ট ২০১৯ পদোন্নতির যোগ্যতা অর্জন করেছে আমাদের ব্যাচ। বর্তমানে আমাদের ৮ বছর চলছে, আমরা পদোন্নতি চাই ”।

৩৩ বিসিএসের আরেক কর্মকর্তা মোঃ রুহুল আমিন বলেন “ ইনক্রিমেন্ট পেয়ে আমাদের বর্তমান বেতন ৬ষ্ঠ গ্রেড এর কাছাকাছি। এ অবস্থায় আমাদের সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি বা ৬ষ্ঠ গ্রেড দিলে সরকারের অর্থনৈতিক তেমন কোনো চাপ পড়বে না। পদোন্নতি হলে সম্মান বৃদ্ধি পাবে। মুজিব বর্ষে যোগ্য সবার পদোন্নতি হবে বলে আমাদের বিশ্বাস”।

অন্যান্য অনেক ক্যাডারের ৩৩ বিসিএস কর্মকর্তাগণকে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস নিয়োগ বিধিমালা ১৯৮১ এর বিধি ৫(বি) অনুযায়ী ৬ষ্ঠ গ্রেডে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। সেই বিধি অনুযায়ী ৩৩ বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাগণকেও ৬ষ্ঠ গ্রেডে পদোন্নতি দেয়া যেতে পারে।

এই ছাড়াও ২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন সচিব কর্তৃক বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারে ১২,৫৮৮টি পদ সৃষ্টির প্রস্তাব অনুমোদিত হলেও তা আজও আলোর মুখ দেখেনি। সেই পদের মধ্যে শুধু সহকারী অধ্যাপকের নতুন পদের সংখ্যাই ৪,২৮৬ আর সম্প্রতি প্রকাশিত সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি যোগ্য খসড়া তালিকায় সর্বসাকুল্যে আছেন ২,৫০৮ জন। তাই যোগ্য সকলকে পদোন্নতি প্রদানের মাধ্যমে পদোন্নতি বঞ্চিত কর্মকর্তাগণের বঞ্চনা দূর করা যায়। বর্তমান সরকারের ভিশন ও মিশন বাস্তবায়নে ও এসডিজি-৪ অর্জনের লক্ষ্যে জাতীয় শিক্ষা নীতি-২০১০ অনুসারে কাজ করা তরুণ কর্মকর্তাগণ যোগ্যতা সত্ত্বেও পদোন্নতি বঞ্চিত হলে ও অন্যান্য ক্যাডার কর্মকর্তাগণের সাথে বৈষম্যের শিকার হলে তা তাদের কর্মস্পৃহায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন শিক্ষাবিদরা।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের ৩৩ তম ব্যাচকে সহকারী অধ্যাপক পদে দ্রুত পদোন্নতির দাবি

Update Time : ০৪:০১:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক:

গত ৭ আগস্ট ৩৩তম বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাগণ ৮ বছরে পদার্পণ করলেও এখন পর্যন্ত এ ব্যাচের কোনো কর্মকর্তার পদোন্নতি হয়নি। ইতোঃপূর্বে এ বিষয়ে তাঁরা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মহোদয়ের কাছে লিখিতভাবে ও আলোচনা সভার মাধ্যমে জোরালো দাবি জানিয়েছে। একই বিসিএস’র সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার ব্যতীত অন্যান্য ক্যাডারে আরও দু বছর আগে প্রায় সবার পদোন্নতি হয়েছে। অথচ একই সাথে যোগদান করা সত্ত্বেও এই ব্যাচের সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কারও পদোন্নতি না হওয়ায় বিষয়টি তাদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করেছে, কর্মস্পৃহা নষ্ট করছে।

উল্লেখ্য যে, ২০০৯ জাতীয় বেতন স্কেল অনুসারে একজন সরকারি কর্মচারী সময়মতো পদোন্নতি না পেলেও সিলেকশন গ্রেড থাকায় আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতো না। কিন্তু বর্তমানে জাতীয় বেতন স্কেল-২০১৫ তে সিলেকশন গ্রেড না থাকায় একজন সরকারি কর্মচারী সময়মতো পদোন্নতি না পেলে ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। তাই ৩৩ তম বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারের পদোন্নতিযোগ্য অনেক কর্মকর্তাগণ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন।

একইসাথে চাকুরিতে যোগদানসত্ত্বেও সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার ব্যতীত ৩৩ বিসিএসের অন্যান্য ক্যাডার কর্মকর্তাগণ বহুপূর্বেই পদোন্নতি পেয়েছে। যে কারণে তাদের সাথে সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাগণের আর্থিক সম্মানগত বৈষম্য সৃষ্টি হচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনের উদ্যোগকে ব্যাহত করছে।

৩৩তম বিসিএস সাধারণ শিক্ষা এসোসিয়েশনের সভাপতি মোঃ মাঈন উদ্দিন বলেন “ গত ৩ বছরের অধিক সময় ধরে প্রভাষক হতে সহকারী অধ্যাপক পর্যায়ে পদোন্নতি হয়নি। সহকারী অধ্যাপক/৬ষ্ঠ গ্রেডে পদোন্নতির জন্য চাকরিকাল ৫ বছর প্রয়োজন, সে মোতাবেক গত ৬ আগস্ট ২০১৯ পদোন্নতির যোগ্যতা অর্জন করেছে আমাদের ব্যাচ। বর্তমানে আমাদের ৮ বছর চলছে, আমরা পদোন্নতি চাই ”।

৩৩ বিসিএসের আরেক কর্মকর্তা মোঃ রুহুল আমিন বলেন “ ইনক্রিমেন্ট পেয়ে আমাদের বর্তমান বেতন ৬ষ্ঠ গ্রেড এর কাছাকাছি। এ অবস্থায় আমাদের সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি বা ৬ষ্ঠ গ্রেড দিলে সরকারের অর্থনৈতিক তেমন কোনো চাপ পড়বে না। পদোন্নতি হলে সম্মান বৃদ্ধি পাবে। মুজিব বর্ষে যোগ্য সবার পদোন্নতি হবে বলে আমাদের বিশ্বাস”।

অন্যান্য অনেক ক্যাডারের ৩৩ বিসিএস কর্মকর্তাগণকে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস নিয়োগ বিধিমালা ১৯৮১ এর বিধি ৫(বি) অনুযায়ী ৬ষ্ঠ গ্রেডে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। সেই বিধি অনুযায়ী ৩৩ বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাগণকেও ৬ষ্ঠ গ্রেডে পদোন্নতি দেয়া যেতে পারে।

এই ছাড়াও ২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন সচিব কর্তৃক বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারে ১২,৫৮৮টি পদ সৃষ্টির প্রস্তাব অনুমোদিত হলেও তা আজও আলোর মুখ দেখেনি। সেই পদের মধ্যে শুধু সহকারী অধ্যাপকের নতুন পদের সংখ্যাই ৪,২৮৬ আর সম্প্রতি প্রকাশিত সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি যোগ্য খসড়া তালিকায় সর্বসাকুল্যে আছেন ২,৫০৮ জন। তাই যোগ্য সকলকে পদোন্নতি প্রদানের মাধ্যমে পদোন্নতি বঞ্চিত কর্মকর্তাগণের বঞ্চনা দূর করা যায়। বর্তমান সরকারের ভিশন ও মিশন বাস্তবায়নে ও এসডিজি-৪ অর্জনের লক্ষ্যে জাতীয় শিক্ষা নীতি-২০১০ অনুসারে কাজ করা তরুণ কর্মকর্তাগণ যোগ্যতা সত্ত্বেও পদোন্নতি বঞ্চিত হলে ও অন্যান্য ক্যাডার কর্মকর্তাগণের সাথে বৈষম্যের শিকার হলে তা তাদের কর্মস্পৃহায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন শিক্ষাবিদরা।