পুঁজিবাজারে পতন: স্টেকহোল্ডারদের বৈঠকে ডেকেছে বিএসইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০১:১০:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ অক্টোবর ২০২১
  • / ১৯৭ Time View

আবারও অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে দেশের পুঁজিবাজার। দুই মাসের টানা উর্ধগতির পর বাজারে মূল্য সংশোধন শুরু হয়েছে। গত এক সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আড়াইশ পয়েন্টের বেশি কমেছে। এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। সূচকের পতনের কারণে অনেক বিনিয়োগকারী শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছে। এ পরিস্তিতিতে করণীয় নির্ধারণে শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ৩টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে সিকিউরিটিজ কমিশন ভবনে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন বিএসইসি কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ।

তথ্য মতে, এ বৈঠকে শীর্ষ ব্রোকারেজ হাউজ, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) এবং ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেবেন।

মূলত মূল্য সংশোধনের কারণে শেয়ারের দাম কমলেও একে ঘিরে নানা গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যে সবচেয়ে জোরালো গুজব ছিল অর্থবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক এবং পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে কিছু বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে। আর এর প্রভাব পড়েছে পুঁজিবাজারে। তবে দুটি সংস্থা-ই জোরালোভাবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি, পুঁজিবাজারসহ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে তারা সমন্বিতভাবে কাজ করছেন।

পুঁজিবাজারের গত কয়েকদিনের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত ১১ অক্টোবর থেকে পুঁজিবাজারে টানা পরপতন চলছে। ওই দিন লেনদেনের শুরুতে ডিএসইএক্সের অবস্থান ছিল ৭ হাজার ৩৬৭ দশমিক ৯৯ পয়েন্ট। সোমবার (১৮ অক্টোবর) তা কমে ৭ হাজার ৯৭ দশমিক ২৭ পয়েন্ট দাঁড়ায়। মাত্র ছয় কার্যদিবসে সূচকটি ২৭১ পয়েন্ট বা প্রায় পৌনে ৪ শতাংশ কমেছে। অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) প্রধান সূচক কমেছে ৩১৫ পয়েন্ট। সূচকের পাশাপাশি ডিএসই’র লেনদেন কমে প্রায় তিনমাসের মধ্যে সর্বনিম্ন স্থানে নেমে এসেছে।

যোগাযোগ করলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, এই ধরনের গুজবের কোনো ভিত্তি নেই। বরং বাংলাদেশ ব্যাংক সব সময়ই পুঁজিবাজারের উন্নয়নের জন্য সব ধরনের নীতি-সহায়তা দিয়ে আসছে। নিয়ন্ত্রণ সংস্থা হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোকে সীমার মধ্যে থেকে যেন পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করে সে বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে থাকে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসি সমন্বিত ও খুব ঘনিষ্টভাবে পুঁজিবাজার ও অর্থনীতির উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, বিএসইসি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যে এ যাবৎকালের সবচেয়ে ঘনিষ্ট সম্পর্ক এখন। দুটি সংস্থা পুঁজিবাজার ও আর্থিক খাতের উন্নয়নে সমন্বিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে। কিছু সুযোগসন্ধানী মানুষ নানা ধরনের বিভ্রান্তি ছড়িয়ে লাভবান হওয়ার চেষ্টা করে থাকে। এ বিষয়ে বিনিয়োগকারীসহ সবার সচেতন থাকা উচিত।

বিএসইসি মুখপাত্র বলেন, সামগ্রিক উন্নয়নের স্বার্থে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো নিয়মিত বৈঠক করে থাকে, যাতে সমন্বিতভাবে উন্নয়ন কার্যক্রমকে এগিয়ে নেওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে কখকনো কখনো দুয়েকটি ইস্যুতে মতভিন্নতা দেখা দিতেই পারে। ধারাবাহিক আলোচনার মাধ্যমে পরস্পর পরস্পরের যুক্তিগুলো তুলে ধরে ঐকমত্য ও সমাধানের দিকে যায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে দুয়েকটি ইস্যুতে মতভিন্নতার যে কথা প্রচার করা হয়, সেগুলো কিন্তু আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের কাছাকাছি চলে এসেছে।

Please Share This Post in Your Social Media

পুঁজিবাজারে পতন: স্টেকহোল্ডারদের বৈঠকে ডেকেছে বিএসইসি

Update Time : ০১:১০:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ অক্টোবর ২০২১

আবারও অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে দেশের পুঁজিবাজার। দুই মাসের টানা উর্ধগতির পর বাজারে মূল্য সংশোধন শুরু হয়েছে। গত এক সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আড়াইশ পয়েন্টের বেশি কমেছে। এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। সূচকের পতনের কারণে অনেক বিনিয়োগকারী শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছে। এ পরিস্তিতিতে করণীয় নির্ধারণে শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ৩টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে সিকিউরিটিজ কমিশন ভবনে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন বিএসইসি কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ।

তথ্য মতে, এ বৈঠকে শীর্ষ ব্রোকারেজ হাউজ, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) এবং ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেবেন।

মূলত মূল্য সংশোধনের কারণে শেয়ারের দাম কমলেও একে ঘিরে নানা গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যে সবচেয়ে জোরালো গুজব ছিল অর্থবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক এবং পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে কিছু বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে। আর এর প্রভাব পড়েছে পুঁজিবাজারে। তবে দুটি সংস্থা-ই জোরালোভাবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি, পুঁজিবাজারসহ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে তারা সমন্বিতভাবে কাজ করছেন।

পুঁজিবাজারের গত কয়েকদিনের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত ১১ অক্টোবর থেকে পুঁজিবাজারে টানা পরপতন চলছে। ওই দিন লেনদেনের শুরুতে ডিএসইএক্সের অবস্থান ছিল ৭ হাজার ৩৬৭ দশমিক ৯৯ পয়েন্ট। সোমবার (১৮ অক্টোবর) তা কমে ৭ হাজার ৯৭ দশমিক ২৭ পয়েন্ট দাঁড়ায়। মাত্র ছয় কার্যদিবসে সূচকটি ২৭১ পয়েন্ট বা প্রায় পৌনে ৪ শতাংশ কমেছে। অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) প্রধান সূচক কমেছে ৩১৫ পয়েন্ট। সূচকের পাশাপাশি ডিএসই’র লেনদেন কমে প্রায় তিনমাসের মধ্যে সর্বনিম্ন স্থানে নেমে এসেছে।

যোগাযোগ করলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, এই ধরনের গুজবের কোনো ভিত্তি নেই। বরং বাংলাদেশ ব্যাংক সব সময়ই পুঁজিবাজারের উন্নয়নের জন্য সব ধরনের নীতি-সহায়তা দিয়ে আসছে। নিয়ন্ত্রণ সংস্থা হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোকে সীমার মধ্যে থেকে যেন পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করে সে বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে থাকে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসি সমন্বিত ও খুব ঘনিষ্টভাবে পুঁজিবাজার ও অর্থনীতির উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, বিএসইসি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যে এ যাবৎকালের সবচেয়ে ঘনিষ্ট সম্পর্ক এখন। দুটি সংস্থা পুঁজিবাজার ও আর্থিক খাতের উন্নয়নে সমন্বিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে। কিছু সুযোগসন্ধানী মানুষ নানা ধরনের বিভ্রান্তি ছড়িয়ে লাভবান হওয়ার চেষ্টা করে থাকে। এ বিষয়ে বিনিয়োগকারীসহ সবার সচেতন থাকা উচিত।

বিএসইসি মুখপাত্র বলেন, সামগ্রিক উন্নয়নের স্বার্থে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো নিয়মিত বৈঠক করে থাকে, যাতে সমন্বিতভাবে উন্নয়ন কার্যক্রমকে এগিয়ে নেওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে কখকনো কখনো দুয়েকটি ইস্যুতে মতভিন্নতা দেখা দিতেই পারে। ধারাবাহিক আলোচনার মাধ্যমে পরস্পর পরস্পরের যুক্তিগুলো তুলে ধরে ঐকমত্য ও সমাধানের দিকে যায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে দুয়েকটি ইস্যুতে মতভিন্নতার যে কথা প্রচার করা হয়, সেগুলো কিন্তু আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের কাছাকাছি চলে এসেছে।