পরমাণু নিয়ে লেকচার দিতে আসবেন না: যুক্তরাষ্ট্রকে রাশিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ১১:২৫:০১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ মে ২০২৩
  • / ৮৮ Time View

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, রাশিয়া বেলারুশে তাদের কৌশলগত পরমাণু অস্ত্র মোতায়েনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সামনে অগ্রসর হচ্ছে, এই খবরে তার ‘মারাত্মক নেতিবাচক’ প্রতিক্রিয়া হয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও রাশিয়ার এই পরিকল্পনার সমালোচনা করা হয়েছে।

জবাবে রাশিয়া বলেছে, ‘‘আমাদের অত লেকচার দিতে আসবেন না।‘‘ওয়াশিংটন দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে ইউরোপে এ ধরনের পরমাণু অস্ত্র মোতায়েন করে রেখেছে।”

১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর এই প্রথম রাশিয়া নিজ ভূখণ্ডের বাইরে কোথাও পরমাণু অস্ত্র মোতায়েনের পরিকল্পনা করেছে। গত বৃহস্পতিবার মস্কোর পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা তাদের সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অগ্রসর হচ্ছে।

এদিকে, বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্ক বলেছেন, কৌশলগত পরমাণু অস্ত্রগুলো এরইমধ্যে রওয়ানা করেছে।

জবাবে যুক্তরাষ্ট্রে রাশিয়ার দূতাবাস থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাশিয়া ও বেলারুশের সার্বভৌম অধিকার। আমাদের বিরুদ্ধে ওয়াশিংটনের শুরু করা একটি বৃহৎ আকারের হাইব্রিড যুদ্ধের মধ্যে এটার প্রয়োজন রয়েছে বলেও আমরা মনে করি।

‘‘আমরা যে ব্যবস্থা গ্রহণ করছি তা আমাদের আন্তর্জাতিক আইনি মেনে চলার বাধ্যবাধকতার সাথে সম্পূর্ণ সামঞ্জস্যপূর্ণ।”

যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, ইউক্রেন যুদ্ধের সময় প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মন্তব্যের কারণে ১৯৬২ সালে কিউবান ক্ষেপণাস্ত্র সংকটের পর বিশ্ব সবচেয়ে বড় পারমাণবিক বিপদের মুখোমুখি হয়েছে।

আর মস্কো বলেছে, তাদের অবস্থানের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। পুতিন প্রথম থেকেই ইউক্রেন যুদ্ধকে পশ্চিমা আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই বলে আসছেন। তিনি বার বার সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, নিজেদের রক্ষা করতে তারা সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। রাশিয়ার হাতে যত পরমাণু অস্ত্র আছে তা বিশ্বের আর কোনো দেশের হাতে নেই।

মস্কোর কৌশলগত পরমাণু অস্ত্র মোতায়েনের পরিকল্পনা নিয়ে ওয়াশিংটনের সমালোচনাকে ‘ভণ্ডামি’ বলে উল্লেখ করে রুশ দূতাবাস থেকে আরো বলা হয়, ‘‘অন্যকে দোষারোপ না করে ওয়াশিংটনের আগে কিছুটা হলেও আত্মদর্শন করা উচিত।

‘‘যুক্তরাষ্ট্র কয়েক দশক ধরে পশ্চিম ইউরোপে তাদের পারমাণু অস্ত্রের বিশাল অস্ত্রাগার বানিয়ে রেখেছে। নেটো মিত্রদের সাথে তারা পরমাণু অস্ত্র ভাগাভাগি করার চুক্তিতেও অংশ নিয়েছে এবং পারমাণবিক অস্ত্রের এই সারি আমাদের দেশের বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্যই করা।”

স্নায়ু যুদ্ধের সময় সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের কাছ থেকে যুক্তরাষ্ট্র যে হুমকি অনুভব করেছিল তা মোকাবেলার প্রস্তুতি হিসেবে তৎকালীন ‍মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোয়াইট ডি. আইজেনহাওয়ার পশ্চিম ইউরোপে পারমাণবিক অস্ত্র স্থাপনের অনুমোদন দেন। ইউরোপের দেশ হিসেবে ১৯৫৪ সালে যুক্তরাজ্যে প্রথম পরমাণু অস্ত্র মোতায়েন করে যুক্তরাষ্ট্র।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

পরমাণু নিয়ে লেকচার দিতে আসবেন না: যুক্তরাষ্ট্রকে রাশিয়া

Update Time : ১১:২৫:০১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ মে ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, রাশিয়া বেলারুশে তাদের কৌশলগত পরমাণু অস্ত্র মোতায়েনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সামনে অগ্রসর হচ্ছে, এই খবরে তার ‘মারাত্মক নেতিবাচক’ প্রতিক্রিয়া হয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও রাশিয়ার এই পরিকল্পনার সমালোচনা করা হয়েছে।

জবাবে রাশিয়া বলেছে, ‘‘আমাদের অত লেকচার দিতে আসবেন না।‘‘ওয়াশিংটন দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে ইউরোপে এ ধরনের পরমাণু অস্ত্র মোতায়েন করে রেখেছে।”

১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর এই প্রথম রাশিয়া নিজ ভূখণ্ডের বাইরে কোথাও পরমাণু অস্ত্র মোতায়েনের পরিকল্পনা করেছে। গত বৃহস্পতিবার মস্কোর পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা তাদের সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অগ্রসর হচ্ছে।

এদিকে, বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্ক বলেছেন, কৌশলগত পরমাণু অস্ত্রগুলো এরইমধ্যে রওয়ানা করেছে।

জবাবে যুক্তরাষ্ট্রে রাশিয়ার দূতাবাস থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাশিয়া ও বেলারুশের সার্বভৌম অধিকার। আমাদের বিরুদ্ধে ওয়াশিংটনের শুরু করা একটি বৃহৎ আকারের হাইব্রিড যুদ্ধের মধ্যে এটার প্রয়োজন রয়েছে বলেও আমরা মনে করি।

‘‘আমরা যে ব্যবস্থা গ্রহণ করছি তা আমাদের আন্তর্জাতিক আইনি মেনে চলার বাধ্যবাধকতার সাথে সম্পূর্ণ সামঞ্জস্যপূর্ণ।”

যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, ইউক্রেন যুদ্ধের সময় প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মন্তব্যের কারণে ১৯৬২ সালে কিউবান ক্ষেপণাস্ত্র সংকটের পর বিশ্ব সবচেয়ে বড় পারমাণবিক বিপদের মুখোমুখি হয়েছে।

আর মস্কো বলেছে, তাদের অবস্থানের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। পুতিন প্রথম থেকেই ইউক্রেন যুদ্ধকে পশ্চিমা আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই বলে আসছেন। তিনি বার বার সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, নিজেদের রক্ষা করতে তারা সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। রাশিয়ার হাতে যত পরমাণু অস্ত্র আছে তা বিশ্বের আর কোনো দেশের হাতে নেই।

মস্কোর কৌশলগত পরমাণু অস্ত্র মোতায়েনের পরিকল্পনা নিয়ে ওয়াশিংটনের সমালোচনাকে ‘ভণ্ডামি’ বলে উল্লেখ করে রুশ দূতাবাস থেকে আরো বলা হয়, ‘‘অন্যকে দোষারোপ না করে ওয়াশিংটনের আগে কিছুটা হলেও আত্মদর্শন করা উচিত।

‘‘যুক্তরাষ্ট্র কয়েক দশক ধরে পশ্চিম ইউরোপে তাদের পারমাণু অস্ত্রের বিশাল অস্ত্রাগার বানিয়ে রেখেছে। নেটো মিত্রদের সাথে তারা পরমাণু অস্ত্র ভাগাভাগি করার চুক্তিতেও অংশ নিয়েছে এবং পারমাণবিক অস্ত্রের এই সারি আমাদের দেশের বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্যই করা।”

স্নায়ু যুদ্ধের সময় সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের কাছ থেকে যুক্তরাষ্ট্র যে হুমকি অনুভব করেছিল তা মোকাবেলার প্রস্তুতি হিসেবে তৎকালীন ‍মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোয়াইট ডি. আইজেনহাওয়ার পশ্চিম ইউরোপে পারমাণবিক অস্ত্র স্থাপনের অনুমোদন দেন। ইউরোপের দেশ হিসেবে ১৯৫৪ সালে যুক্তরাজ্যে প্রথম পরমাণু অস্ত্র মোতায়েন করে যুক্তরাষ্ট্র।