নোবিপ্রবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ,অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিতে শিক্ষকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৫:৩৪:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ জুন ২০২৪
  • / 13

এস আহমেদ ফাহিম, নোবিপ্রবি প্রতিনিধি

সর্বজনীন পেনশন স্কিম সংক্রান্ত ‘বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন’ প্রত্যাহারের দাবিতে আগামীকাল (১ জুলাই) থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রেখে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতিতে যাচ্ছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।

রোববার (৩০শে জুন) বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের আহ্বানে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন ও অবস্থান কর্মসূচিতে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন নোবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. বিপ্লব মল্লিক। এই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করেন।

বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রবর্তনের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছে নোবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি।

অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষক নেতারা বলেন,”বর্তমান সরকারের চলমান উন্নয়নকে রুখতে জগদ্দল পাথরের মতো একটি চক্রান্তকারী চক্র ষড়যন্ত্র করছে। এই শিক্ষা ব্যবস্থাকে যদি রক্ষা করতে হয়, উন্নয়নকে রক্ষা করতে হয়, কৃষিকে রক্ষা করতে হয়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার রূপকল্পকে রক্ষা করতে হয়, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশকে রক্ষা করতে হয় এই সমস্ত কালাকানুন থেকে আমাদের মুক্তি পেতে হবে। আর এই মুক্তি পেতে এই আন্দোলনে সবাইকে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করতে হবে।”

নোবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. বিপ্লব মল্লিক বলেন, “গত ১৩ই মার্চ ২০২৪ অর্থ মন্ত্রণালয়ের পেনশন স্কিম সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকে বিবৃতি প্রদান, গণস্বাক্ষর সংগ্রহ, মানববন্ধন, প্রতীকী কর্মবিরতি, স্মারকলিপি প্রদান এবং অবস্থান কর্মসূচি মতো শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়। এ সময়ে সরকারের তরফ থেকে কোনো ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় গত ২৫শে, ২৬শে ও ২৭শে জুন বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালিত হয় এবং আজ ৩০শে জুন পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালিত হচ্ছে।”

তিনি আরো জানান,”আমাদের এই আন্দোলন উচ্চ শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের চক্রান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলন। আমরা এখনও আশা করি সরকার অনতিবিলম্বে এই যৌক্তিক দাবি মেনে নেবেন যাতে আমরা ক্লাসে ফিরে যেতে পারি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ১লা জুলাই থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।”

দাবি আদায়ে আগামীকাল(১ জুলাই) থেকে নোবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে:

১। নোবিপ্রবির সকল বিভাগের সকল ক্লাশ (অনলাইন ও অফলাইন) বন্ধ থাকবে।

২। সকল পরীক্ষা বর্জন করা হবে। সিটি, টার্ম ফাইনাল, প্রেজেন্টেশন, মৌখিক, ল্যাব পরীক্ষাসহ কোনো পরীক্ষাই অনুষ্ঠিত হবে না।

৩ । বিভাগীয় চেয়ারম্যানগণ বিভাগীয় অফিস, ক্লাশরুম, সেমিনার, কম্পিউটার ল্যাব, গবেষণাগার
বন্ধ রাখবেন। একাডেমিক কমিটির সভা, প্রশ্নপ্রত্র সমন্বয় সভাসহ কোনো সভা অনুষ্ঠিত হবে না।

৪। অনুষদের ডিনবৃন্দ ডিন অফিস, ভর্তি পরীক্ষাসহ সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম বন্ধ রাখবেন। নবীনবরণ অনুষ্ঠানের কর্মসূচি গ্রহণ করা যাবে না। সিলেকশন বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হবে না।

৫। ইনস্টিটিউটের পরিচালকবৃন্দ ইনস্টিটিউটের অফিস, ক্লাশ ও পরীক্ষা বন্ধ রাখবেন। শুক্রবার ও শনিবারের ক্লাশ-পরীক্ষা, সান্ধ্যকালীন কোর্সসমূহ বন্ধ থাকবে।

৬। ডিন অফিস, ইনস্টিটিউট, বিভাগ থেকে কোনো ধরনের সেমিনার, কনফারেন্স ও কর্মশালা আয়োজন করা থেকে বিরত থাকবেন।

৭। হলের প্রভোস্টগণ প্রভোস্ট অফিস বন্ধ রাখবেন।

৮। এ ছাড়াও নোবিপ্রবির শিক্ষকগণ সব ধরনের প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকবেন।

৯। আন্দোলন চলাকালে প্রতিদিন বেলা ১১:৩০ মিনিট থেকে ১২:৩০ মিনিট পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি চলমান থাকবে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

নোবিপ্রবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ,অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিতে শিক্ষকরা

Update Time : ০৫:৩৪:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ জুন ২০২৪

এস আহমেদ ফাহিম, নোবিপ্রবি প্রতিনিধি

সর্বজনীন পেনশন স্কিম সংক্রান্ত ‘বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন’ প্রত্যাহারের দাবিতে আগামীকাল (১ জুলাই) থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রেখে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতিতে যাচ্ছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।

রোববার (৩০শে জুন) বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের আহ্বানে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন ও অবস্থান কর্মসূচিতে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন নোবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. বিপ্লব মল্লিক। এই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করেন।

বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রবর্তনের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছে নোবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি।

অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষক নেতারা বলেন,”বর্তমান সরকারের চলমান উন্নয়নকে রুখতে জগদ্দল পাথরের মতো একটি চক্রান্তকারী চক্র ষড়যন্ত্র করছে। এই শিক্ষা ব্যবস্থাকে যদি রক্ষা করতে হয়, উন্নয়নকে রক্ষা করতে হয়, কৃষিকে রক্ষা করতে হয়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার রূপকল্পকে রক্ষা করতে হয়, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশকে রক্ষা করতে হয় এই সমস্ত কালাকানুন থেকে আমাদের মুক্তি পেতে হবে। আর এই মুক্তি পেতে এই আন্দোলনে সবাইকে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করতে হবে।”

নোবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. বিপ্লব মল্লিক বলেন, “গত ১৩ই মার্চ ২০২৪ অর্থ মন্ত্রণালয়ের পেনশন স্কিম সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকে বিবৃতি প্রদান, গণস্বাক্ষর সংগ্রহ, মানববন্ধন, প্রতীকী কর্মবিরতি, স্মারকলিপি প্রদান এবং অবস্থান কর্মসূচি মতো শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়। এ সময়ে সরকারের তরফ থেকে কোনো ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় গত ২৫শে, ২৬শে ও ২৭শে জুন বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালিত হয় এবং আজ ৩০শে জুন পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালিত হচ্ছে।”

তিনি আরো জানান,”আমাদের এই আন্দোলন উচ্চ শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের চক্রান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলন। আমরা এখনও আশা করি সরকার অনতিবিলম্বে এই যৌক্তিক দাবি মেনে নেবেন যাতে আমরা ক্লাসে ফিরে যেতে পারি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ১লা জুলাই থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।”

দাবি আদায়ে আগামীকাল(১ জুলাই) থেকে নোবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে:

১। নোবিপ্রবির সকল বিভাগের সকল ক্লাশ (অনলাইন ও অফলাইন) বন্ধ থাকবে।

২। সকল পরীক্ষা বর্জন করা হবে। সিটি, টার্ম ফাইনাল, প্রেজেন্টেশন, মৌখিক, ল্যাব পরীক্ষাসহ কোনো পরীক্ষাই অনুষ্ঠিত হবে না।

৩ । বিভাগীয় চেয়ারম্যানগণ বিভাগীয় অফিস, ক্লাশরুম, সেমিনার, কম্পিউটার ল্যাব, গবেষণাগার
বন্ধ রাখবেন। একাডেমিক কমিটির সভা, প্রশ্নপ্রত্র সমন্বয় সভাসহ কোনো সভা অনুষ্ঠিত হবে না।

৪। অনুষদের ডিনবৃন্দ ডিন অফিস, ভর্তি পরীক্ষাসহ সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম বন্ধ রাখবেন। নবীনবরণ অনুষ্ঠানের কর্মসূচি গ্রহণ করা যাবে না। সিলেকশন বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হবে না।

৫। ইনস্টিটিউটের পরিচালকবৃন্দ ইনস্টিটিউটের অফিস, ক্লাশ ও পরীক্ষা বন্ধ রাখবেন। শুক্রবার ও শনিবারের ক্লাশ-পরীক্ষা, সান্ধ্যকালীন কোর্সসমূহ বন্ধ থাকবে।

৬। ডিন অফিস, ইনস্টিটিউট, বিভাগ থেকে কোনো ধরনের সেমিনার, কনফারেন্স ও কর্মশালা আয়োজন করা থেকে বিরত থাকবেন।

৭। হলের প্রভোস্টগণ প্রভোস্ট অফিস বন্ধ রাখবেন।

৮। এ ছাড়াও নোবিপ্রবির শিক্ষকগণ সব ধরনের প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকবেন।

৯। আন্দোলন চলাকালে প্রতিদিন বেলা ১১:৩০ মিনিট থেকে ১২:৩০ মিনিট পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি চলমান থাকবে।