নিত্যপণ্যের বাজার সিন্ডিকেটে জিম্মি

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৫:০৩:০১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ অক্টোবর ২০২০
  • / ১৭৬ Time View
সাইফুল আলম:

১.
দ্রব্যমূল্যকে এখন আর ‘পাগলা ঘোড়া’ বলে খবরের কাগজের হেডিং করা যায় না। এটা এখন ‘পাগলা হাতি’তে পরিণত হয়েছে। লেখা যায় না ‘ঊর্ধ্বগতি’ বলেও। তাই একে ‘আগুনে’র মতো উত্তপ্ত বলে অনুভূত হচ্ছে। উন্মাদের হাতে আগুন যেমন বিধ্বংসী, তেমনই বিধ্বংসী হয়ে উঠেছে নিত্যপণ্যের বাজার। অর্থনীতি, সমাজনীতি, বাজারনীতি কোনো কিছুই ধার ধারছে না নিত্যপণ্যের বাজার এবং এর ব্যবসায়ীরা। চাহিদা ও জোগানের যে সূত্র- চাহিদা বাড়লে মূল্য বাড়বে, মূল্য বাড়লে সরবরাহ বাড়ে, সরবরাহ বাড়লে মূল্য কমে- অর্থনীতির এসব কেতাবি তত্ত্ব বাংলাদেশের বাজারে অচল মুদ্রায় পরিণত হয়েছে। মুক্তবাজার অর্থনীতি আমাদের এখানে কিছু অসাধু সিন্ডিকেটের হাতে দুর্বৃত্তপনা তথা অপরাধের হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। তাদের ইচ্ছা-খুশির গিলোটিনে বলি হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। নিত্যপণ্যের বাজারের প্রতিটি জিনিসের- চাল, ডাল, তেল, লবণ, আলু, পেঁয়াজ, মরিচ, আদা থেকে শাকসবজি পর্যন্ত মূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে হিমশিম খাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এই অসাধু অপরাধী সিন্ডিকেট শুধু জনগণকেই নয়, জিম্মি করে ফেলছে সরকারকেও। সরকার সংকট সামাল দিতে পণ্যমূল্য নির্ধারণ করে দিলেও তারা সেটা মানছে তো নাই-ই, উপরন্তু কৃত্রিম সংকট তৈরি করে প্রতারিত করছে সবাইকে।

২.
পেঁয়াজ নিয়ে দেশে প্রায়ই যা ঘটছে তা রীতিমতো ‘ডাকাতি’ বলা চলে। অতি সম্প্রতি পেঁয়াজ নিয়ে যা ঘটছে তা সব যুক্তি-তর্ক-বোধ-বুদ্ধিকে লা-জবাব করে দেয়ার জন্য যথেষ্ট। হরবছর এমনিতেই রোজার সময় পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়, ইফতারে পিয়াজুর চাহিদা বাড়ে বলে, তার সঙ্গে ছোলা, চিনি, ডাল, মটরের দামও। সারা পৃথিবীতে ধর্মীয় উৎসবের সময় সব রকম নিত্যপণ্যসহ বিলাসসামগ্রীর পর্যন্ত মূল্য হ্রাসের চল- সেখানে আমাদের দেশে ধর্মীয় পালাপার্বণে ঘটে উল্টোটা। সব পণ্যের মূল্যে বরং লাগামেরই পাখা গজায়। পেঁয়াজের দাম কেন বাড়ল? দেশে তিন মাসের পেঁয়াজের চাহিদা মেটানোর মতো জোগান থাকা সত্ত্বেও? আমদানির জন্য পাইপলাইনে অপেক্ষমাণ ছিল পরবর্তী চাহিদা পূরণের মতো পর্যাপ্ত পরিমাণ জোগানও। ছিল দেশীয় উৎপাদনের জোগানও। সীমান্তের ওপারে থাকা শত শত ট্রাক সীমান্তের এপারে প্রবেশের আগেই খুচরা বাজারে তিন-চার গুণ বেশি দামে বিক্রি শুরু হয়ে গেল যে পেঁয়াজ; তার দাম এখনও কমেনি। বরং বাড়ছে। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মরিচ। বলা হচ্ছে ঝাঁজ কমেনি পেঁয়াজ-মরিচের- যাকে বলে ‘ছিল্লা-কাইট্টা-লবণ-লাগিয়ে দেয়া’- সাধারণ ক্রেতা ও ভোক্তারা পড়েছেন সেই কসাইদের হাতে।

৩.
‘দুধ আর ঘির দাম সমান হলে’ নাকি সে দেশে বিনা অপরাধে শূলে চড়তে হয়- সেই বাস্তবতাই যেন তৈরি করছে অসাধু অপরাধী অতিমুনাফাখোররা। বিনা অপরাধে জনগণকে শূলে চড়িয়ে দিচ্ছে তারা প্রতিদিন, প্রতি মুহূর্তে।

বাজারে মুরগির চেয়ে সবজির দাম বেশি। শিম বাজারে ১৩০ থেকে ১৬০ টাকা। আলু ৫০-৫৫ টাকা কেজি, ধনেপাতা, কাঁচামরিচের দাম ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। যেখানে ব্রয়লার মুরগির কেজি ১২০ থেকে ৩০ টাকা। বাংলাদেশের ধনেবীজ গবেষণার জন্য মহাশূন্যে পৌঁছার আগেই ধনেপাতার মূল্য আকাশচুম্বী হয়ে গেছে! বাজারে তেলেসমাতি চলছে।

৪.
‘চোরায় না শোনে ধর্মের কহিনী’- তার আলামত শুরু হয়েছে চালের মূল্যে। ‘কারও সর্বনাশ’কে পুঁজি করে কিছু লোক নিজেদের জন্য ‘পৌষ মাস’ তৈরির নির্লজ্জ প্রয়াসে লিপ্ত হয়। মানুষের দুর্যোগ এবং দুঃসময়ে তার মাথায় বাড়ি দিয়ে, কোমর ভেঙে দিয়ে আখেরে যে লাভের গুড়কে পিঁপড়ের খাদ্যে পরিণত করা হয় সেটা অতিমুনাফাখোর সিন্ডিকেটের তথাকথিত ব্যবসায়ী নামধারী মজুদদাররা বোঝে না। কারণ তাদের মধ্যে না আছে মানবতা, না আছে দেশের মানুষের প্রতি ন্যূনতম দায়িত্ববোধ। এসব অতিমুনাফালোভী চালের মিল মালিক, পাইকার, মজুদদার এভাবে কোটি কোটি টাকা ফাও আয় করে মানুষকে জিম্মি করে। সত্যিকার অর্থে যা চরমভাবে অনৈতিক ও অসততাই কেবল নয়, বলা প্রয়োজন দণ্ডনীয় ও ঘৃণিত অপরাধও বটে।

৫.
এদের সেই অপরাধের লাগাম টেনে ধরতে সরকারের পক্ষ থেকে চালের দাম বেঁধে দেয়ার পরও সেটা তারা মানেনি। তারা যে সেটা মানবে না এর আগেও তার নজির রয়েছে। পাশাপাশি সরকারের মুখপাত্রদের এমন ঘোষণাতেও কোনো কাজ হয়নি যে, দাম না কমালে চাল আমদানি করা হবে- এই উভয় ব্যবস্থাকেই বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অসাধুরা তাদের জনস্বার্থবিরোধী অসাধু তৎপরতা তথা মূল্যবৃদ্ধি অব্যাহত রেখেছে।

৬.
সচেতন পর্যবেক্ষক মহলের মতে, এ রকম ‘হোমিওপ্যাথিক ঘোষণা’য় দুর্বৃত্তদের দুর্বৃত্তপনার নিবৃত্তি ঘটবে না। নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ে সিন্ডিকেটের লাগাতার ফাটকাবাজারি আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে যে, আমাদের বাজার ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতা রয়েছে। ভোক্তার অধিকার নিশ্চিতকরণে, ভোক্তার স্বার্থরক্ষায় আমাদের আইনি ব্যবস্থা কার্যকর নয়। তাই জনগণের স্বার্থরক্ষা, ভোক্তার অধিকার রক্ষায় সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। জনস্বার্থ ও রাষ্ট্রবিরোধী এসব মজুদদার, মুনাফাখোরকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনে শাস্তি প্রদানের নজির স্থাপন করতে হবে।

৭.
আমরা দেখেছি, যারা অন্যায্য ও অন্যায় দামে পেঁয়াজ বিক্রি করে মুনাফা লুটেছে তারা গুদামজাত পেঁয়াজ পচিয়ে নষ্ট করে নদী-খাল দূষিত করেছে সেগুলো রাতের আঁধারে ফেলে দিয়ে। এই অর্থলোভী অমানুষদের কারসাজি থেকে দেশের মানুষকে বাঁচাতে কঠোর আইন প্রয়োগের পাশাপাশি সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে এদের বয়কট ও ঘৃণা করার সময় এসেছে।

এদের হাত থেকে দেশের মানুষকে, দেশকে বাঁচাতে হবে। এদের শায়েস্তা করা না গেলে সংকট কাটিয়ে আমরা এগিয়ে যেতে পারব না। আমাদের সব অর্জনকে নস্যাৎ করে দিচ্ছে এদের সীমাহীন অর্থলালসা। কারণ এদের চিন্তায়- সব দ্রব্যের মূল্য আছে, কেবল মানুষেরই দাম নেই।

লেখক : সম্পাদক, দৈনিক যুগান্তর

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

নিত্যপণ্যের বাজার সিন্ডিকেটে জিম্মি

Update Time : ০৫:০৩:০১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ অক্টোবর ২০২০
সাইফুল আলম:

১.
দ্রব্যমূল্যকে এখন আর ‘পাগলা ঘোড়া’ বলে খবরের কাগজের হেডিং করা যায় না। এটা এখন ‘পাগলা হাতি’তে পরিণত হয়েছে। লেখা যায় না ‘ঊর্ধ্বগতি’ বলেও। তাই একে ‘আগুনে’র মতো উত্তপ্ত বলে অনুভূত হচ্ছে। উন্মাদের হাতে আগুন যেমন বিধ্বংসী, তেমনই বিধ্বংসী হয়ে উঠেছে নিত্যপণ্যের বাজার। অর্থনীতি, সমাজনীতি, বাজারনীতি কোনো কিছুই ধার ধারছে না নিত্যপণ্যের বাজার এবং এর ব্যবসায়ীরা। চাহিদা ও জোগানের যে সূত্র- চাহিদা বাড়লে মূল্য বাড়বে, মূল্য বাড়লে সরবরাহ বাড়ে, সরবরাহ বাড়লে মূল্য কমে- অর্থনীতির এসব কেতাবি তত্ত্ব বাংলাদেশের বাজারে অচল মুদ্রায় পরিণত হয়েছে। মুক্তবাজার অর্থনীতি আমাদের এখানে কিছু অসাধু সিন্ডিকেটের হাতে দুর্বৃত্তপনা তথা অপরাধের হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। তাদের ইচ্ছা-খুশির গিলোটিনে বলি হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। নিত্যপণ্যের বাজারের প্রতিটি জিনিসের- চাল, ডাল, তেল, লবণ, আলু, পেঁয়াজ, মরিচ, আদা থেকে শাকসবজি পর্যন্ত মূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে হিমশিম খাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এই অসাধু অপরাধী সিন্ডিকেট শুধু জনগণকেই নয়, জিম্মি করে ফেলছে সরকারকেও। সরকার সংকট সামাল দিতে পণ্যমূল্য নির্ধারণ করে দিলেও তারা সেটা মানছে তো নাই-ই, উপরন্তু কৃত্রিম সংকট তৈরি করে প্রতারিত করছে সবাইকে।

২.
পেঁয়াজ নিয়ে দেশে প্রায়ই যা ঘটছে তা রীতিমতো ‘ডাকাতি’ বলা চলে। অতি সম্প্রতি পেঁয়াজ নিয়ে যা ঘটছে তা সব যুক্তি-তর্ক-বোধ-বুদ্ধিকে লা-জবাব করে দেয়ার জন্য যথেষ্ট। হরবছর এমনিতেই রোজার সময় পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়, ইফতারে পিয়াজুর চাহিদা বাড়ে বলে, তার সঙ্গে ছোলা, চিনি, ডাল, মটরের দামও। সারা পৃথিবীতে ধর্মীয় উৎসবের সময় সব রকম নিত্যপণ্যসহ বিলাসসামগ্রীর পর্যন্ত মূল্য হ্রাসের চল- সেখানে আমাদের দেশে ধর্মীয় পালাপার্বণে ঘটে উল্টোটা। সব পণ্যের মূল্যে বরং লাগামেরই পাখা গজায়। পেঁয়াজের দাম কেন বাড়ল? দেশে তিন মাসের পেঁয়াজের চাহিদা মেটানোর মতো জোগান থাকা সত্ত্বেও? আমদানির জন্য পাইপলাইনে অপেক্ষমাণ ছিল পরবর্তী চাহিদা পূরণের মতো পর্যাপ্ত পরিমাণ জোগানও। ছিল দেশীয় উৎপাদনের জোগানও। সীমান্তের ওপারে থাকা শত শত ট্রাক সীমান্তের এপারে প্রবেশের আগেই খুচরা বাজারে তিন-চার গুণ বেশি দামে বিক্রি শুরু হয়ে গেল যে পেঁয়াজ; তার দাম এখনও কমেনি। বরং বাড়ছে। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মরিচ। বলা হচ্ছে ঝাঁজ কমেনি পেঁয়াজ-মরিচের- যাকে বলে ‘ছিল্লা-কাইট্টা-লবণ-লাগিয়ে দেয়া’- সাধারণ ক্রেতা ও ভোক্তারা পড়েছেন সেই কসাইদের হাতে।

৩.
‘দুধ আর ঘির দাম সমান হলে’ নাকি সে দেশে বিনা অপরাধে শূলে চড়তে হয়- সেই বাস্তবতাই যেন তৈরি করছে অসাধু অপরাধী অতিমুনাফাখোররা। বিনা অপরাধে জনগণকে শূলে চড়িয়ে দিচ্ছে তারা প্রতিদিন, প্রতি মুহূর্তে।

বাজারে মুরগির চেয়ে সবজির দাম বেশি। শিম বাজারে ১৩০ থেকে ১৬০ টাকা। আলু ৫০-৫৫ টাকা কেজি, ধনেপাতা, কাঁচামরিচের দাম ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। যেখানে ব্রয়লার মুরগির কেজি ১২০ থেকে ৩০ টাকা। বাংলাদেশের ধনেবীজ গবেষণার জন্য মহাশূন্যে পৌঁছার আগেই ধনেপাতার মূল্য আকাশচুম্বী হয়ে গেছে! বাজারে তেলেসমাতি চলছে।

৪.
‘চোরায় না শোনে ধর্মের কহিনী’- তার আলামত শুরু হয়েছে চালের মূল্যে। ‘কারও সর্বনাশ’কে পুঁজি করে কিছু লোক নিজেদের জন্য ‘পৌষ মাস’ তৈরির নির্লজ্জ প্রয়াসে লিপ্ত হয়। মানুষের দুর্যোগ এবং দুঃসময়ে তার মাথায় বাড়ি দিয়ে, কোমর ভেঙে দিয়ে আখেরে যে লাভের গুড়কে পিঁপড়ের খাদ্যে পরিণত করা হয় সেটা অতিমুনাফাখোর সিন্ডিকেটের তথাকথিত ব্যবসায়ী নামধারী মজুদদাররা বোঝে না। কারণ তাদের মধ্যে না আছে মানবতা, না আছে দেশের মানুষের প্রতি ন্যূনতম দায়িত্ববোধ। এসব অতিমুনাফালোভী চালের মিল মালিক, পাইকার, মজুদদার এভাবে কোটি কোটি টাকা ফাও আয় করে মানুষকে জিম্মি করে। সত্যিকার অর্থে যা চরমভাবে অনৈতিক ও অসততাই কেবল নয়, বলা প্রয়োজন দণ্ডনীয় ও ঘৃণিত অপরাধও বটে।

৫.
এদের সেই অপরাধের লাগাম টেনে ধরতে সরকারের পক্ষ থেকে চালের দাম বেঁধে দেয়ার পরও সেটা তারা মানেনি। তারা যে সেটা মানবে না এর আগেও তার নজির রয়েছে। পাশাপাশি সরকারের মুখপাত্রদের এমন ঘোষণাতেও কোনো কাজ হয়নি যে, দাম না কমালে চাল আমদানি করা হবে- এই উভয় ব্যবস্থাকেই বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অসাধুরা তাদের জনস্বার্থবিরোধী অসাধু তৎপরতা তথা মূল্যবৃদ্ধি অব্যাহত রেখেছে।

৬.
সচেতন পর্যবেক্ষক মহলের মতে, এ রকম ‘হোমিওপ্যাথিক ঘোষণা’য় দুর্বৃত্তদের দুর্বৃত্তপনার নিবৃত্তি ঘটবে না। নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ে সিন্ডিকেটের লাগাতার ফাটকাবাজারি আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে যে, আমাদের বাজার ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতা রয়েছে। ভোক্তার অধিকার নিশ্চিতকরণে, ভোক্তার স্বার্থরক্ষায় আমাদের আইনি ব্যবস্থা কার্যকর নয়। তাই জনগণের স্বার্থরক্ষা, ভোক্তার অধিকার রক্ষায় সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। জনস্বার্থ ও রাষ্ট্রবিরোধী এসব মজুদদার, মুনাফাখোরকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনে শাস্তি প্রদানের নজির স্থাপন করতে হবে।

৭.
আমরা দেখেছি, যারা অন্যায্য ও অন্যায় দামে পেঁয়াজ বিক্রি করে মুনাফা লুটেছে তারা গুদামজাত পেঁয়াজ পচিয়ে নষ্ট করে নদী-খাল দূষিত করেছে সেগুলো রাতের আঁধারে ফেলে দিয়ে। এই অর্থলোভী অমানুষদের কারসাজি থেকে দেশের মানুষকে বাঁচাতে কঠোর আইন প্রয়োগের পাশাপাশি সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে এদের বয়কট ও ঘৃণা করার সময় এসেছে।

এদের হাত থেকে দেশের মানুষকে, দেশকে বাঁচাতে হবে। এদের শায়েস্তা করা না গেলে সংকট কাটিয়ে আমরা এগিয়ে যেতে পারব না। আমাদের সব অর্জনকে নস্যাৎ করে দিচ্ছে এদের সীমাহীন অর্থলালসা। কারণ এদের চিন্তায়- সব দ্রব্যের মূল্য আছে, কেবল মানুষেরই দাম নেই।

লেখক : সম্পাদক, দৈনিক যুগান্তর