নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রের উদ্ভাবিত সফটওয়্যার দিয়ে শিক্ষকদের নির্বাচন

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ১২:২৭:১৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ মে ২০২১
  • / ১৯৩ Time View
মো: শুভ ইসলাম:
“সিকিউর ই-ভোটিং” নামে অনলাইন নির্বাচনের সফটওয়্যার তৈরি করলো জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাককানইবি) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৫-২০১৬ শিক্ষাবর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী রেজওয়ান আহমেদ।
.
ছাত্রের তৈরি “সিকিউর ই-ভোটিং” সফটওয়্যার ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইটি নির্বাচন পক্রিয়াও ইতিমধ্যে সম্পুর্ন হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘শিক্ষক সমিতির’ নির্বাচন এবং ‘বঙ্গবন্ধু-নীলদল কার্যনির্বাহী পরিষদ’ নির্বাচন।
.
এই সফটওয়্যারটির মুল সুবিধা হচ্ছে এটি ব্যবহার করে ঘরে বসে ভোটার নিজের পছন্দের প্রার্থীকে গোপনীয়তা বজায় রেখে ভোট দিতে পারবে৷ কে কোন প্রার্থীকে ভোট দিচ্ছে তা কারো জানার সুযোগ নেই। যারা ভোটার তাদের তালিকা এবং নির্বাচনের প্রার্থীদের তালিকা আগে থেকেই নির্বাচন কমিশন সফটওয়্যারে ইনপুট করে দিবে। তারপর যারা ভোটার তাদের সবার জন্য একটি করে আইডি জেনারেট হয়ে যাবে। এই আইডি নির্বাচন কমিশন সকল ভোটারদের ই-মেইলে পাঠিয়ে দিবে।
.
আর ওই আইডি দিয়েই ভোটাররা যে যার অবস্থানে থেকে ভোট দিতে পারবেন। এর মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন যে কোনো সময়ে যে কোনো নির্বাচনের আয়োজন করতে পারবেন। এই প্রক্রিয়ায় ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত থাকতে হবে না। এতে করে ভোটারদের অর্থ এবং সময় দুটোই বাঁচবে। জানাযায় যে সফটওয়্যার টি রেজওয়ান তার বিভাগের শিক্ষক ড. তুষার কান্তি সাহার সরাসরি তত্ত্বাবধানে এটি তৈরি করেন।
.No description available.
আরো জানাযায় যে ভবিষ্যতে এটি ব্যবহার করে বড় পরিসরে যে কোনো নির্বাচন পরিচালনা করা সম্ভব। সেই লক্ষ্যে সফটওয়্যারটিতে কাজ করা হচ্ছে।
.
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সফটওয়্যার তৈরিতে তত্ত্বাবধানে থাকা ড. তুষার কান্তি সাহা বলেন, ‘আমি ছোটোখাট প্রাতিষ্ঠানিক নির্বাচন (বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির নির্বাচন) অনলাইনে সম্পন্ন করার জন্য ‘সিকিউর ই-ভোটিং’ সফটওয়্যার তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। এই সফটওয়ার তৈরির জন্য আমি আমার চতুর্থ বর্ষের ছাত্র রেজওয়ান আহমেদ আমার ইচ্ছার কথা বলি। ও বেশ আগ্রহ সহকারে আমার প্রস্তাবটি নিয়ে প্রজেক্ট আকারে কাজ শুরু করে আমার সরাসরি তত্ত্বাবধানে।
.
পরবর্তীতে করোনা পরিস্থিতিতে ভোটারদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা চিন্তা করে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক সমিতির নির্বাচন সম্পন্ন করা অনিবার্য হয়ে দাঁড়ায়। আমার প্রস্তাবে শিক্ষক সমিতির নির্বাচনটি প্রথমবারের মতো ‘সিকিউর ই-ভোটিং’ সফটওয়ারের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়।এখন পর্যন্ত এই সফটওয়্যার দ্বারা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইটি নির্বাচন বেশ সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন হয়েছে।’
.
ড. তুষার কান্তি সাহা আরও বলেন, ‘এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে যে কোনো ভোটার খুব সহজে তার পছন্দের প্রার্থীকে অনলাইনে ভোট দিতে পারবেন। এখানে ভোটারের গোপনীয়তা সম্পূর্ণভাবে রক্ষা পাবে। সফটওয়্যারটির মাধ্যমে কমিশন ভোট শেষ হবার মাত্র দুই মিনিটের মধ্যে ফলাফল জানাতে পারবেন। আমাদের সফটওয়্যারটি এক থেকে দুই হাজার ভোটারের নির্বাচন খুব সহজে সম্পাদান করতে পারবে।’
.
সফটওয়্যারটির উদ্ভাবক শিক্ষার্থী রেজওয়ান আহমেদ বলেন, ‘করোনাকালে যখন খাবার, মার্কেটিং থেকে শুরু করে সব কিছুই ডিজিটালি হচ্ছে তখন ভোটগ্রহণ কেন নয়! করোনাকালে যেহেতু জনসমাগম করা নিষিদ্ধ ছিল, তাই এই সময়ে আটকে থাকা প্রাতিষ্ঠানিক বিভিন্ন নির্বাচনগুলো কীভাবে সম্পন্ন করা যায় সেই চিন্তা থেকেই ‘সিকিউর ই-ভোটিং সফটওয়্যার’ তৈরি।
.
তিনি বলেন, প্রযুক্তির এই যুগে বাংলাদেশ প্রযুক্তির সঙ্গে যেভাবে তাল মিলিয়ে চলছে তাতে আশা করছি বিভিন্ন সহযোগিতা পেলে এই সফটওয়্যারটি বৃহৎ আকারে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। সফটওয়্যার ভেরিফিকেশনের সঙ্গে আরও ছিলেন যুক্ত ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান, ড. আরিফুর রহমান ও তাদের টিমের সকল সদস্য।

Please Share This Post in Your Social Media

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রের উদ্ভাবিত সফটওয়্যার দিয়ে শিক্ষকদের নির্বাচন

Update Time : ১২:২৭:১৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ মে ২০২১
মো: শুভ ইসলাম:
“সিকিউর ই-ভোটিং” নামে অনলাইন নির্বাচনের সফটওয়্যার তৈরি করলো জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাককানইবি) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৫-২০১৬ শিক্ষাবর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী রেজওয়ান আহমেদ।
.
ছাত্রের তৈরি “সিকিউর ই-ভোটিং” সফটওয়্যার ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইটি নির্বাচন পক্রিয়াও ইতিমধ্যে সম্পুর্ন হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘শিক্ষক সমিতির’ নির্বাচন এবং ‘বঙ্গবন্ধু-নীলদল কার্যনির্বাহী পরিষদ’ নির্বাচন।
.
এই সফটওয়্যারটির মুল সুবিধা হচ্ছে এটি ব্যবহার করে ঘরে বসে ভোটার নিজের পছন্দের প্রার্থীকে গোপনীয়তা বজায় রেখে ভোট দিতে পারবে৷ কে কোন প্রার্থীকে ভোট দিচ্ছে তা কারো জানার সুযোগ নেই। যারা ভোটার তাদের তালিকা এবং নির্বাচনের প্রার্থীদের তালিকা আগে থেকেই নির্বাচন কমিশন সফটওয়্যারে ইনপুট করে দিবে। তারপর যারা ভোটার তাদের সবার জন্য একটি করে আইডি জেনারেট হয়ে যাবে। এই আইডি নির্বাচন কমিশন সকল ভোটারদের ই-মেইলে পাঠিয়ে দিবে।
.
আর ওই আইডি দিয়েই ভোটাররা যে যার অবস্থানে থেকে ভোট দিতে পারবেন। এর মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন যে কোনো সময়ে যে কোনো নির্বাচনের আয়োজন করতে পারবেন। এই প্রক্রিয়ায় ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত থাকতে হবে না। এতে করে ভোটারদের অর্থ এবং সময় দুটোই বাঁচবে। জানাযায় যে সফটওয়্যার টি রেজওয়ান তার বিভাগের শিক্ষক ড. তুষার কান্তি সাহার সরাসরি তত্ত্বাবধানে এটি তৈরি করেন।
.No description available.
আরো জানাযায় যে ভবিষ্যতে এটি ব্যবহার করে বড় পরিসরে যে কোনো নির্বাচন পরিচালনা করা সম্ভব। সেই লক্ষ্যে সফটওয়্যারটিতে কাজ করা হচ্ছে।
.
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সফটওয়্যার তৈরিতে তত্ত্বাবধানে থাকা ড. তুষার কান্তি সাহা বলেন, ‘আমি ছোটোখাট প্রাতিষ্ঠানিক নির্বাচন (বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির নির্বাচন) অনলাইনে সম্পন্ন করার জন্য ‘সিকিউর ই-ভোটিং’ সফটওয়্যার তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। এই সফটওয়ার তৈরির জন্য আমি আমার চতুর্থ বর্ষের ছাত্র রেজওয়ান আহমেদ আমার ইচ্ছার কথা বলি। ও বেশ আগ্রহ সহকারে আমার প্রস্তাবটি নিয়ে প্রজেক্ট আকারে কাজ শুরু করে আমার সরাসরি তত্ত্বাবধানে।
.
পরবর্তীতে করোনা পরিস্থিতিতে ভোটারদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা চিন্তা করে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক সমিতির নির্বাচন সম্পন্ন করা অনিবার্য হয়ে দাঁড়ায়। আমার প্রস্তাবে শিক্ষক সমিতির নির্বাচনটি প্রথমবারের মতো ‘সিকিউর ই-ভোটিং’ সফটওয়ারের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়।এখন পর্যন্ত এই সফটওয়্যার দ্বারা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইটি নির্বাচন বেশ সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন হয়েছে।’
.
ড. তুষার কান্তি সাহা আরও বলেন, ‘এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে যে কোনো ভোটার খুব সহজে তার পছন্দের প্রার্থীকে অনলাইনে ভোট দিতে পারবেন। এখানে ভোটারের গোপনীয়তা সম্পূর্ণভাবে রক্ষা পাবে। সফটওয়্যারটির মাধ্যমে কমিশন ভোট শেষ হবার মাত্র দুই মিনিটের মধ্যে ফলাফল জানাতে পারবেন। আমাদের সফটওয়্যারটি এক থেকে দুই হাজার ভোটারের নির্বাচন খুব সহজে সম্পাদান করতে পারবে।’
.
সফটওয়্যারটির উদ্ভাবক শিক্ষার্থী রেজওয়ান আহমেদ বলেন, ‘করোনাকালে যখন খাবার, মার্কেটিং থেকে শুরু করে সব কিছুই ডিজিটালি হচ্ছে তখন ভোটগ্রহণ কেন নয়! করোনাকালে যেহেতু জনসমাগম করা নিষিদ্ধ ছিল, তাই এই সময়ে আটকে থাকা প্রাতিষ্ঠানিক বিভিন্ন নির্বাচনগুলো কীভাবে সম্পন্ন করা যায় সেই চিন্তা থেকেই ‘সিকিউর ই-ভোটিং সফটওয়্যার’ তৈরি।
.
তিনি বলেন, প্রযুক্তির এই যুগে বাংলাদেশ প্রযুক্তির সঙ্গে যেভাবে তাল মিলিয়ে চলছে তাতে আশা করছি বিভিন্ন সহযোগিতা পেলে এই সফটওয়্যারটি বৃহৎ আকারে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। সফটওয়্যার ভেরিফিকেশনের সঙ্গে আরও ছিলেন যুক্ত ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান, ড. আরিফুর রহমান ও তাদের টিমের সকল সদস্য।