ঢাবি দিবসের কর্মসূচিতে যাবেনা ঢাবি শিক্ষক সমিতি, সর্বাত্মক আন্দোলনের ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০২:২৪:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ জুন ২০২৪
  • / 13

জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি

সর্বজনীন পেনশন স্কিম সংক্রান্ত ‘বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন’ প্রত্যাহারের দাবিতে ১ জুলাই থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনসহ সর্বাত্মক আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ১০৩ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কোনো কর্মসূচিতেও ঢাবি শিক্ষক সমিতি অংশ নেবে না বলে জানানো হয়েছে ৷

রবিবার (৩০ জুন) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোঃ নিজামুল হক ভূইয়া এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেয়া হয়।

একই দিন দুপুর ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের মূল ফটকে সর্বজনীন পেনশন স্কিম সংক্রান্ত ‘বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন’ প্রত্যাহারের দাবিতে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচিতে ঢাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা বলেন, আগামীকাল (১ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। দুঃখের বিষয়, এমন একটি দিনে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের রাজপথে থাকতে হবে। আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে উপাচার্য মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা তাকে জানিয়েছি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের কোনো কর্মসূচিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি অংশ নেবে না।

ঢাবি শিক্ষক সমিতির উক্ত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈষম্যমূলক ও মর্যাদাহানিকর প্রত্যয় স্কিম থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি প্রত্যাহার, শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রবর্তন, প্রতিশ্রুত সুপারগ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তির দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালিত হবে।

সর্বাত্মক আন্দোলনের কর্মসূচিগুলো নিন্মরূপ :

১। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগের সকল ক্লাশ বন্ধ থাকবে।

২। অনলাইন, সান্ধ্যকালীন ক্লাশ, শুক্র ও শনিবারের প্রফেশনাল কোর্সের ক্লাশ বন্ধ থাকবে।

৩। সকল পরীক্ষা বর্জন করা হবে। মিডটার্ম, ফাইনাল ও ভর্তি পরীক্ষাসহ কোন পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে না।

৪। বিভাগীয় চেয়ারম্যান বিভাগীয় অফিস, সেমিনার, কম্পিউটার ল্যাব ও গবেষণাগার বন্ধ রাখবেন। একাডেমিক কমিটি, সমন্বয় ও উন্নয়ন কমিটি, প্রশ্নপত্র সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হবে না।

৫। অনুষদের ডিনবৃন্দ ডিন অফিস, ভর্তি পরীক্ষাসহ সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম বন্ধ রাখবেন। নবীন বরণ অনুষ্ঠানের কর্মসূচি গ্রহন করা যাবে না। কোন সিলেকশন বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হবে না।

৬। বিভিন্ন ইন্সস্টিটিউটের পরিচালকবৃন্দ ইন্সস্টিটিউটের অফিস, ক্লাশ ও পরীক্ষা বন্ধ রাখবেন। সান্ধ্যকালীন, শুক্রবার ও শনিবারের ক্লাশ বন্ধ থাকবে।

৭। বিভিন্ন গবেষণাধর্মী সেন্টারের পরিচালকগণ কোন সেমিনার, কনফারেন্স ও ওয়ার্কশপের কর্মসূচি গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকবেন।

৮। বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষগণ প্রাধ্যক্ষ অফিস বন্ধ রাখবেন।

৯। প্রধান গ্রন্থাগারিক কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী বন্ধ রাখবেন।

শিক্ষকদের আহ্বান করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি কর্তৃক ঘোষিত এ সর্বাত্মক আন্দোলনে আপনারা সকলেই আমাদের সংগ্রামের সারথী। আপনাদের বিপুল সমর্থন ও ম্যানডেট নিয়ে শিক্ষক সমিতি এ সর্বাত্মক আন্দোলনের রূপরেখা প্রণয়ন করেছে। আমাদের এ আন্দোলন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজের সম্মান ও মর্যাদা রক্ষার আন্দোলন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্বশাসনে হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে আন্দোলন।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

ঢাবি দিবসের কর্মসূচিতে যাবেনা ঢাবি শিক্ষক সমিতি, সর্বাত্মক আন্দোলনের ঘোষণা

Update Time : ০২:২৪:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ জুন ২০২৪

জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি

সর্বজনীন পেনশন স্কিম সংক্রান্ত ‘বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন’ প্রত্যাহারের দাবিতে ১ জুলাই থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনসহ সর্বাত্মক আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ১০৩ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কোনো কর্মসূচিতেও ঢাবি শিক্ষক সমিতি অংশ নেবে না বলে জানানো হয়েছে ৷

রবিবার (৩০ জুন) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোঃ নিজামুল হক ভূইয়া এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেয়া হয়।

একই দিন দুপুর ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের মূল ফটকে সর্বজনীন পেনশন স্কিম সংক্রান্ত ‘বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন’ প্রত্যাহারের দাবিতে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচিতে ঢাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা বলেন, আগামীকাল (১ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। দুঃখের বিষয়, এমন একটি দিনে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের রাজপথে থাকতে হবে। আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে উপাচার্য মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা তাকে জানিয়েছি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের কোনো কর্মসূচিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি অংশ নেবে না।

ঢাবি শিক্ষক সমিতির উক্ত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈষম্যমূলক ও মর্যাদাহানিকর প্রত্যয় স্কিম থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি প্রত্যাহার, শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রবর্তন, প্রতিশ্রুত সুপারগ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তির দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালিত হবে।

সর্বাত্মক আন্দোলনের কর্মসূচিগুলো নিন্মরূপ :

১। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগের সকল ক্লাশ বন্ধ থাকবে।

২। অনলাইন, সান্ধ্যকালীন ক্লাশ, শুক্র ও শনিবারের প্রফেশনাল কোর্সের ক্লাশ বন্ধ থাকবে।

৩। সকল পরীক্ষা বর্জন করা হবে। মিডটার্ম, ফাইনাল ও ভর্তি পরীক্ষাসহ কোন পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে না।

৪। বিভাগীয় চেয়ারম্যান বিভাগীয় অফিস, সেমিনার, কম্পিউটার ল্যাব ও গবেষণাগার বন্ধ রাখবেন। একাডেমিক কমিটি, সমন্বয় ও উন্নয়ন কমিটি, প্রশ্নপত্র সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হবে না।

৫। অনুষদের ডিনবৃন্দ ডিন অফিস, ভর্তি পরীক্ষাসহ সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম বন্ধ রাখবেন। নবীন বরণ অনুষ্ঠানের কর্মসূচি গ্রহন করা যাবে না। কোন সিলেকশন বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হবে না।

৬। বিভিন্ন ইন্সস্টিটিউটের পরিচালকবৃন্দ ইন্সস্টিটিউটের অফিস, ক্লাশ ও পরীক্ষা বন্ধ রাখবেন। সান্ধ্যকালীন, শুক্রবার ও শনিবারের ক্লাশ বন্ধ থাকবে।

৭। বিভিন্ন গবেষণাধর্মী সেন্টারের পরিচালকগণ কোন সেমিনার, কনফারেন্স ও ওয়ার্কশপের কর্মসূচি গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকবেন।

৮। বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষগণ প্রাধ্যক্ষ অফিস বন্ধ রাখবেন।

৯। প্রধান গ্রন্থাগারিক কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী বন্ধ রাখবেন।

শিক্ষকদের আহ্বান করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি কর্তৃক ঘোষিত এ সর্বাত্মক আন্দোলনে আপনারা সকলেই আমাদের সংগ্রামের সারথী। আপনাদের বিপুল সমর্থন ও ম্যানডেট নিয়ে শিক্ষক সমিতি এ সর্বাত্মক আন্দোলনের রূপরেখা প্রণয়ন করেছে। আমাদের এ আন্দোলন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজের সম্মান ও মর্যাদা রক্ষার আন্দোলন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্বশাসনে হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে আন্দোলন।