ডিএনসিসি করোনা হাসপাতালের ৫০০ বেডে যুক্ত হচ্ছে সেন্ট্রাল অক্সিজেন

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ১২:৫৭:৫৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২ অগাস্ট ২০২১
  • / ১৬১ Time View

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মালিকানাধীন ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালের ৫০০টি বেডে যুক্ত হচ্ছে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন। বর্তমানে এই বেডগুলোতে সিলিন্ডারের মাধ্যমে অক্সিজেন সরবরাহ করে অপেক্ষাকৃত কম ঝুঁকিতে থাকা রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এধরনের রোগী কম থাকায় হাসপাতালটির বেডে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী ৪ আগস্টের মধ্যে এই কাজ শেষ হবে।

ডিএনসিসি হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে আইসিইউ’র চাহিদা বেড়েছে। আমাদের এসডিইউ যুক্ত বেডগুলোও ফাঁকা নেই। আইসিইউর প্রয়োজন এমন অনেক রোগী বেড খালি না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। যদিও সিলিন্ডারযুক্ত ৫০০ বেডের অধিকাংশই খালি। সে জন্য আমরা সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এরই মধ্যে কাজ শুরু হয়ে গেছে। আগামী ৪ আগস্টের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে। তখন কোনও রোগীকেই আর ফেরত দেওয়া লাগবে না।’

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ডিএনসিসির এই হাসপাতালে রয়েছে— ১১২টি আইসিইউ বেড, ২৫০ এইচডিইউ বেড। এ ছাড়াও ১৩৮টি আইসিইউ মানের বেড রয়েছে, যেগুলো কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সিস্টেমের সঙ্গে যুক্ত। হাসপাতালটিতে জরুরি ওয়ার্ডে ৫০টি বেড রাখা হয়েছে। মোট ৫৫০টি বেডের বাইরে আরও ৪৫০টি বেড থাকবে, সেখানে মারাত্মক আক্রান্ত নন— এমন রোগীদের রাখা হবে।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন হসপাতালের বর্তমান চিত্র তুলে ধরে বলেন, ‘আমাদের এখানে রবিবার সকালে ৫৬৪ জন রোগী ছিল। এখন (বিকালে) পর্যন্ত আরও রোগী ভর্তি হয়েছে। ২০৪ জন আইসিইউতে ছিল। ৪০ জনকে ছুটি দিয়েছি। আমাদের এখানে প্রতিদিনই রোগী ভর্তি হচ্ছে। কিছু রোগী মারাও যাচ্ছেন। আবার অনেকেই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের যে এইচডিইউ বেড আছে, সেগুলো পুরণ হয়ে যাওয়ায় সিরিয়াস রোগীদের সিলেকশন করতে একটু বেগ পেতে হচ্ছে। আশা করছি, এই সমস্যা থেকে দ্রুত কেটে উঠতে পারবো। কারণ, আমাদের প্রায় ৫০০ বেডে নতুন করে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন যুক্ত করছি। কাজ দ্রুত চলছে। এটা হাই কেয়ার এরিয়া হিসেবে তৈরি করা হবে। সেখানে আমরা হাই-ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা যুক্ত করতে পারবো। তখন যাদের আবস্থা সিরিয়াস তাদেরকে নিতে পারবো।’

ব্রিগেডিয়ার নাসির উদ্দিন বলেন, ‘এক হাজার বেডের মধ্যে সেন্ট্রাল অক্সিজেট যুক্ত থাকলে যে সুবিধা, সেটা হচ্ছে আমরা সিরিয়াস রোগীদের আলাদা আলাদা রুমে রেখে চিকিৎসা দিতে পারবো। তাতে আমাদের সক্ষমতা বাড়বে। আমরা ওই প্রক্রিয়াতেই আগাচ্ছি। এই মুহূর্তে অসুস্থ রোগী আসছে, আমরা চেষ্টা করছি তাদের সবাইকে গ্রহণ করতে। আমাদের এখান থেকে খুব কম রোগীই ফিরে যাচ্ছেন। দুই-চার জন রোগী চলে যাচ্ছেন, যাদের অবস্থা খুবই সিরিয়াস বা যাদের ইমিডিয়েট আইসিইউ দরকার, কিন্তু আমরা দিতে পারছি না। তারা অন্যত্র ট্রাই করছেন।’

ডিএনসিসির এই হাসপাতালে পানির সমস্যা রয়েছে। রোগীদের অভিযোগ, তারা পর্যাপ্ত পানি ও বাথরুম পাচ্ছেন না।এই অভিযোগের বিষয়ে পরিচালক বলেন, ‘আসলে এই ভবনটি আগে মার্কেট ছিল।সেখান থেকে হাসপাতালে রূপান্তর করা হয়েছে। তবে আমরা এই সমস্যা অনুভব করছি। আমাদের কাজ শুরু হয়েছে।আশা করছি, দ্রুত সমাধান হবে। আর পানির সমস্যা সমাধানেও কাজ শুরু হচ্ছে। আমরা নির্দেশনা পেয়েছি। যদিও এগুলো আমাদের হাতে নেই— এটা হাসপাতালের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ দেখাশুনা করছে।এখন পানি ও টয়লেটের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে।মোটা পাইপ লাগানো হচ্ছে।’

Please Share This Post in Your Social Media

ডিএনসিসি করোনা হাসপাতালের ৫০০ বেডে যুক্ত হচ্ছে সেন্ট্রাল অক্সিজেন

Update Time : ১২:৫৭:৫৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২ অগাস্ট ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মালিকানাধীন ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালের ৫০০টি বেডে যুক্ত হচ্ছে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন। বর্তমানে এই বেডগুলোতে সিলিন্ডারের মাধ্যমে অক্সিজেন সরবরাহ করে অপেক্ষাকৃত কম ঝুঁকিতে থাকা রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এধরনের রোগী কম থাকায় হাসপাতালটির বেডে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী ৪ আগস্টের মধ্যে এই কাজ শেষ হবে।

ডিএনসিসি হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে আইসিইউ’র চাহিদা বেড়েছে। আমাদের এসডিইউ যুক্ত বেডগুলোও ফাঁকা নেই। আইসিইউর প্রয়োজন এমন অনেক রোগী বেড খালি না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। যদিও সিলিন্ডারযুক্ত ৫০০ বেডের অধিকাংশই খালি। সে জন্য আমরা সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এরই মধ্যে কাজ শুরু হয়ে গেছে। আগামী ৪ আগস্টের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে। তখন কোনও রোগীকেই আর ফেরত দেওয়া লাগবে না।’

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ডিএনসিসির এই হাসপাতালে রয়েছে— ১১২টি আইসিইউ বেড, ২৫০ এইচডিইউ বেড। এ ছাড়াও ১৩৮টি আইসিইউ মানের বেড রয়েছে, যেগুলো কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সিস্টেমের সঙ্গে যুক্ত। হাসপাতালটিতে জরুরি ওয়ার্ডে ৫০টি বেড রাখা হয়েছে। মোট ৫৫০টি বেডের বাইরে আরও ৪৫০টি বেড থাকবে, সেখানে মারাত্মক আক্রান্ত নন— এমন রোগীদের রাখা হবে।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন হসপাতালের বর্তমান চিত্র তুলে ধরে বলেন, ‘আমাদের এখানে রবিবার সকালে ৫৬৪ জন রোগী ছিল। এখন (বিকালে) পর্যন্ত আরও রোগী ভর্তি হয়েছে। ২০৪ জন আইসিইউতে ছিল। ৪০ জনকে ছুটি দিয়েছি। আমাদের এখানে প্রতিদিনই রোগী ভর্তি হচ্ছে। কিছু রোগী মারাও যাচ্ছেন। আবার অনেকেই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের যে এইচডিইউ বেড আছে, সেগুলো পুরণ হয়ে যাওয়ায় সিরিয়াস রোগীদের সিলেকশন করতে একটু বেগ পেতে হচ্ছে। আশা করছি, এই সমস্যা থেকে দ্রুত কেটে উঠতে পারবো। কারণ, আমাদের প্রায় ৫০০ বেডে নতুন করে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন যুক্ত করছি। কাজ দ্রুত চলছে। এটা হাই কেয়ার এরিয়া হিসেবে তৈরি করা হবে। সেখানে আমরা হাই-ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা যুক্ত করতে পারবো। তখন যাদের আবস্থা সিরিয়াস তাদেরকে নিতে পারবো।’

ব্রিগেডিয়ার নাসির উদ্দিন বলেন, ‘এক হাজার বেডের মধ্যে সেন্ট্রাল অক্সিজেট যুক্ত থাকলে যে সুবিধা, সেটা হচ্ছে আমরা সিরিয়াস রোগীদের আলাদা আলাদা রুমে রেখে চিকিৎসা দিতে পারবো। তাতে আমাদের সক্ষমতা বাড়বে। আমরা ওই প্রক্রিয়াতেই আগাচ্ছি। এই মুহূর্তে অসুস্থ রোগী আসছে, আমরা চেষ্টা করছি তাদের সবাইকে গ্রহণ করতে। আমাদের এখান থেকে খুব কম রোগীই ফিরে যাচ্ছেন। দুই-চার জন রোগী চলে যাচ্ছেন, যাদের অবস্থা খুবই সিরিয়াস বা যাদের ইমিডিয়েট আইসিইউ দরকার, কিন্তু আমরা দিতে পারছি না। তারা অন্যত্র ট্রাই করছেন।’

ডিএনসিসির এই হাসপাতালে পানির সমস্যা রয়েছে। রোগীদের অভিযোগ, তারা পর্যাপ্ত পানি ও বাথরুম পাচ্ছেন না।এই অভিযোগের বিষয়ে পরিচালক বলেন, ‘আসলে এই ভবনটি আগে মার্কেট ছিল।সেখান থেকে হাসপাতালে রূপান্তর করা হয়েছে। তবে আমরা এই সমস্যা অনুভব করছি। আমাদের কাজ শুরু হয়েছে।আশা করছি, দ্রুত সমাধান হবে। আর পানির সমস্যা সমাধানেও কাজ শুরু হচ্ছে। আমরা নির্দেশনা পেয়েছি। যদিও এগুলো আমাদের হাতে নেই— এটা হাসপাতালের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ দেখাশুনা করছে।এখন পানি ও টয়লেটের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে।মোটা পাইপ লাগানো হচ্ছে।’