ট্রাম্পের মৃত্যু কামনা করে পোস্ট দিলে ব্যবস্থা নেবে টুইটার

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ১২:৪২:৫৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৪ অক্টোবর ২০২০
  • / 187

তথ্য প্রযুক্তি ডেস্কঃ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প করোনাভাইরাসে আক্রান্তের পর টুইটারসহ অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে নেতিবাচক মন্তব্য, কিংবা মৃত্যু কামনা করলে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

করোনাভাইরাসের রিপোর্ট পজিটিভ আসার পর চিকিৎসকরা ট্রাম্পের বেশকিছু স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা বলেছেন। তাই ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে তাকে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। তার সুস্থতা কামনা করে টুইট করেছেন অনেকেই।

বিরোধীদের কেউ কেউ ট্রাম্পের মৃত্যু কামনা করেছেন। তবে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নেতিবাচক মন্তব্য কিংবা তার মৃত্যু কামনা করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে টুইটার কর্তৃপক্ষ।

গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের মৃত্যু কামনা করলে তা ‘টুইটার পলিসি’র সঙ্গে হবে সাংঘর্ষিক এবং তা বাতিল করা হবে।

এতে বলা হয়, শুক্রবার এক টুইটে তাদের নতুন ‘পলিসি’র কথা জানিয়েছে টুইটার। এতে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে উসকানি বা ক্ষতি কামনা করে টুইট করা যাবে না। এ ধরনের টুইট সঙ্গে সঙ্গেই সরিয়ে ফেলা হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের করোনা সংক্রমণের খবর প্রকাশ হওয়ার পরই ব্যবহারকারীরা বিভিন্ন মন্তব্য করে টুইট করছেন। ট্রাম্পের প্রধান রাজনৈতিক বিরোধী ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেনও টুইটারে তার আরোগ্য কামনা করেছেন। তবে বিরোধীদের কেউ কেউ বলছেন, ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন যুক্তরাষ্ট্রে করোনা ভাইরাসে দুই লাখেরও বেশি মানুষ মারা গেছে। আশা করি ট্রাম্পও এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাবেন।

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এমন মন্তব্যকে টুইটার পলিসির সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে জানিয়েছে জনপ্রিয় এই সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম। টুইটারের এক মুখপাত্র বলেন, ‘টুইটারের এ নীতিটি গত এপ্রিল থেকে প্রযোজ্য ধরা হয়েছে। এটি কেবল ট্রাম্পের ক্ষেত্রেই নয়, সকল ব্যবহারকারীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।’

তবে টুইটারের এ সিদ্ধান্তে অবাক হয়েছেন অনেক ব্যবহারকারী। বিশেষভাবে নিম্নবর্ণ, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে বৈষম্যের শিকার হওয়া ভুক্তভোগীরা দাবি করেছেন, তারা বিভিন্ন সময়ে টুইটারে নানাভাবে আক্রমণের শিকার হয়েছেন। তাদেরকে নানাভাবে হেয় করা হয়েছে।

‘ফাইট ফর দ্য ফিউচার’ এর মুখপাত্র ইভান গ্রেয়ার বলেন, ‘ট্রান্স উইমেন’ নারী হওয়ায় টুইটারে সপ্তাহে একবার কখনো বা প্রতিদিনই মৃত্যুর হুমকি পেতেন। আচমকা টুইটারের এ ধরনের সিদ্ধান্ত কেবল প্রভাবশালীদের অধিকার রক্ষা করে এবং সমাজের বৈষম্যের শিকার মানুষদেরকে দমিয়ে রাখে।

তবে টুইটারের একজন মুখপাত্র ‘মাদারবোর্ড ম্যাগাজিন’কে বলেন, ‘টুইটারের এ পলিসি সকল টুইটের জন্য প্রযোজ্য হবে না। কেবল নীতিভঙ্গকারী কিছু ব্যবহারকারীর জন্য প্রযোজ্য হবে। মূলত বাস্তবিক পৃথিবীর কোনো ক্ষতি সাধন করে এমন বার্তা সরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে কাজ করবে টুইটার।’

তবে ব্যবহারকারীদের অনেকেই টুইটারে এ সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক ও অনুমাননির্ভর বলেছেন। তারা বলেন, টুইটারে ছোটখাটো বিষয় নিয়ে তারা বিভিন্ন সময় হত্যার হুমকিও পেয়েছেন। তাই বিশেষ সময়ে টুইটারের এ নীতি প্রয়োগ ব্যবহারকারীদের জন্য বৈষম্যমূলক।

করোনায় সংক্রমিত ডোনাল্ড ট্রাম্পকে স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে তিনি সুস্থ আছেন বলে টুইটারে জানিয়েছেন নিজেই।

ইউনিভার্সিটি অব পিটার্সবার্গের চিকিৎসা বিষয়ক বিভাগের প্রধান ডেভিড এ নেস মনে করেন, ট্রাম্পের জ্বরের মাত্রা অল্প। তবে নাকে সমস্যা আছে। সেইসঙ্গে কাশিও আছে। তিনি বলেন, ‘আমার বড় আশঙ্কা হলো প্রেসিডেন্টের সংক্রমণের পরিমাণ অপেক্ষাকৃত বেশি।’

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

ট্রাম্পের মৃত্যু কামনা করে পোস্ট দিলে ব্যবস্থা নেবে টুইটার

Update Time : ১২:৪২:৫৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৪ অক্টোবর ২০২০

তথ্য প্রযুক্তি ডেস্কঃ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প করোনাভাইরাসে আক্রান্তের পর টুইটারসহ অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে নেতিবাচক মন্তব্য, কিংবা মৃত্যু কামনা করলে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

করোনাভাইরাসের রিপোর্ট পজিটিভ আসার পর চিকিৎসকরা ট্রাম্পের বেশকিছু স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা বলেছেন। তাই ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে তাকে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। তার সুস্থতা কামনা করে টুইট করেছেন অনেকেই।

বিরোধীদের কেউ কেউ ট্রাম্পের মৃত্যু কামনা করেছেন। তবে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নেতিবাচক মন্তব্য কিংবা তার মৃত্যু কামনা করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে টুইটার কর্তৃপক্ষ।

গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের মৃত্যু কামনা করলে তা ‘টুইটার পলিসি’র সঙ্গে হবে সাংঘর্ষিক এবং তা বাতিল করা হবে।

এতে বলা হয়, শুক্রবার এক টুইটে তাদের নতুন ‘পলিসি’র কথা জানিয়েছে টুইটার। এতে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে উসকানি বা ক্ষতি কামনা করে টুইট করা যাবে না। এ ধরনের টুইট সঙ্গে সঙ্গেই সরিয়ে ফেলা হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের করোনা সংক্রমণের খবর প্রকাশ হওয়ার পরই ব্যবহারকারীরা বিভিন্ন মন্তব্য করে টুইট করছেন। ট্রাম্পের প্রধান রাজনৈতিক বিরোধী ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেনও টুইটারে তার আরোগ্য কামনা করেছেন। তবে বিরোধীদের কেউ কেউ বলছেন, ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন যুক্তরাষ্ট্রে করোনা ভাইরাসে দুই লাখেরও বেশি মানুষ মারা গেছে। আশা করি ট্রাম্পও এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাবেন।

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এমন মন্তব্যকে টুইটার পলিসির সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে জানিয়েছে জনপ্রিয় এই সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম। টুইটারের এক মুখপাত্র বলেন, ‘টুইটারের এ নীতিটি গত এপ্রিল থেকে প্রযোজ্য ধরা হয়েছে। এটি কেবল ট্রাম্পের ক্ষেত্রেই নয়, সকল ব্যবহারকারীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।’

তবে টুইটারের এ সিদ্ধান্তে অবাক হয়েছেন অনেক ব্যবহারকারী। বিশেষভাবে নিম্নবর্ণ, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে বৈষম্যের শিকার হওয়া ভুক্তভোগীরা দাবি করেছেন, তারা বিভিন্ন সময়ে টুইটারে নানাভাবে আক্রমণের শিকার হয়েছেন। তাদেরকে নানাভাবে হেয় করা হয়েছে।

‘ফাইট ফর দ্য ফিউচার’ এর মুখপাত্র ইভান গ্রেয়ার বলেন, ‘ট্রান্স উইমেন’ নারী হওয়ায় টুইটারে সপ্তাহে একবার কখনো বা প্রতিদিনই মৃত্যুর হুমকি পেতেন। আচমকা টুইটারের এ ধরনের সিদ্ধান্ত কেবল প্রভাবশালীদের অধিকার রক্ষা করে এবং সমাজের বৈষম্যের শিকার মানুষদেরকে দমিয়ে রাখে।

তবে টুইটারের একজন মুখপাত্র ‘মাদারবোর্ড ম্যাগাজিন’কে বলেন, ‘টুইটারের এ পলিসি সকল টুইটের জন্য প্রযোজ্য হবে না। কেবল নীতিভঙ্গকারী কিছু ব্যবহারকারীর জন্য প্রযোজ্য হবে। মূলত বাস্তবিক পৃথিবীর কোনো ক্ষতি সাধন করে এমন বার্তা সরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে কাজ করবে টুইটার।’

তবে ব্যবহারকারীদের অনেকেই টুইটারে এ সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক ও অনুমাননির্ভর বলেছেন। তারা বলেন, টুইটারে ছোটখাটো বিষয় নিয়ে তারা বিভিন্ন সময় হত্যার হুমকিও পেয়েছেন। তাই বিশেষ সময়ে টুইটারের এ নীতি প্রয়োগ ব্যবহারকারীদের জন্য বৈষম্যমূলক।

করোনায় সংক্রমিত ডোনাল্ড ট্রাম্পকে স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে তিনি সুস্থ আছেন বলে টুইটারে জানিয়েছেন নিজেই।

ইউনিভার্সিটি অব পিটার্সবার্গের চিকিৎসা বিষয়ক বিভাগের প্রধান ডেভিড এ নেস মনে করেন, ট্রাম্পের জ্বরের মাত্রা অল্প। তবে নাকে সমস্যা আছে। সেইসঙ্গে কাশিও আছে। তিনি বলেন, ‘আমার বড় আশঙ্কা হলো প্রেসিডেন্টের সংক্রমণের পরিমাণ অপেক্ষাকৃত বেশি।’