টেকনাফে টানা বৃষ্টিতে পাহাড় ধসের আশঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ১২:৫৮:৩৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩ জুলাই ২০২১
  • / ১৬২ Time View

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ

একটানা বৃষ্টিতে কক্সবাজারের টেকনাফে পাহাড় ধসের আশঙ্কা রয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে থেমে থেমে বৃষ্টি হলেও শুক্রবার একটানা বর্ষণে পাহাড় ধসের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। এমনকি বৃষ্টির কারণে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের প্রাণহানির শঙ্কা রয়েছে।

এদিকে, পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টির কারণে বেড়েছে নাফ নদীর পানি। এইভাবে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে প্লাবিত হবে নিম্নাঞ্চল। পাহাড় ধস মোকাবিলায় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রেখেছে স্থানীয় প্রশাসন।

সরেজমিন দেখা যায়, টেকনাফের বাহারছড়া হোয়াইক্যং, হ্নীলা, টেকনাফ সদর ও পৌরসভার পুরাতন পল্লান পাড়াসহ বেশ কিছু এলাকায় স্থানীয় ও রোহিঙ্গারা ঝুঁকিপূর্ণভাবে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস করে আসছেন। মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরত বেশ কয়েকজন বাসিন্দা জানান, ‘এখানে আমরা বছরের পর বছর বসবাস করছি। অন্য কোথাও আমাদের থাকার জায়গা নেই।’

বিগত কয়েক বছর আগে টেকনাফের পাহাড় ধসে অনেক প্রাণহানির ঘটনা ঘটলেও পাহাড় ধস রোধে নেই কোনো স্থায়ী ব্যবস্থাপনা বা পরিকল্পনা। ফলে প্রতি বছরই পাহাড় ধ্স বা পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে। পাহাড় কর্তন করে পাদদেশে কিংবা পাহাড়ের ওপর বসবাসরতদের বেশির ভাগই উপজাতি ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষ। বিকল্প উপায় না পেয়ে বছরের পর বছর তারা এখানে বসবাস করে আসছেন।

পাহাড়ে বসবাসরত নুর কবির জানান, মৃত্যুর ঝুঁকি জেনেও বাধ্য হয়ে এখানে তারা বসবাস করছেন। প্রতি বছর বর্ষা এলে পাহাড়ে বসবাসরতদের মাঝে আতঙ্ক বাড়ে। গত কয়েকদিন ধরে পাহাড় ধসের ভয়ে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছি।

কক্সবাজার পরিবেশ আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ জানান, গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে টেকনাফসহ কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। কক্সবাজার জেলায় অবৈধ পাহাড় কাটার প্রবণতা বেশি। এতে বিভিন্ন জায়গায় কর্তনকৃত পাহাড় ধসে পড়বে। পাহাড়ে বসবাসরত নাগরিকদের সকল সুবিধা বন্ধ রাখলে কেউ বসতি স্থাপন করবে না।

হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আহম্মদ আনোয়ারী জানান, সরকারিভাবে এখনো কোনো নির্দেশনা আসে নাই। তারপরও ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সতর্ক করা হয়েছে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার পারভেজ চৌধুরী জানান, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকে সরে যেতে প্রতিনিয়ত সিপিপি সদস্যরা মাইকিং, দুর্গতদের প্রয়োজনীয় সহায়তা এবং জনসচেতনতায় কাজ করে যাচ্ছেন।

Please Share This Post in Your Social Media

টেকনাফে টানা বৃষ্টিতে পাহাড় ধসের আশঙ্কা

Update Time : ১২:৫৮:৩৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩ জুলাই ২০২১

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ

একটানা বৃষ্টিতে কক্সবাজারের টেকনাফে পাহাড় ধসের আশঙ্কা রয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে থেমে থেমে বৃষ্টি হলেও শুক্রবার একটানা বর্ষণে পাহাড় ধসের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। এমনকি বৃষ্টির কারণে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের প্রাণহানির শঙ্কা রয়েছে।

এদিকে, পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টির কারণে বেড়েছে নাফ নদীর পানি। এইভাবে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে প্লাবিত হবে নিম্নাঞ্চল। পাহাড় ধস মোকাবিলায় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রেখেছে স্থানীয় প্রশাসন।

সরেজমিন দেখা যায়, টেকনাফের বাহারছড়া হোয়াইক্যং, হ্নীলা, টেকনাফ সদর ও পৌরসভার পুরাতন পল্লান পাড়াসহ বেশ কিছু এলাকায় স্থানীয় ও রোহিঙ্গারা ঝুঁকিপূর্ণভাবে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস করে আসছেন। মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরত বেশ কয়েকজন বাসিন্দা জানান, ‘এখানে আমরা বছরের পর বছর বসবাস করছি। অন্য কোথাও আমাদের থাকার জায়গা নেই।’

বিগত কয়েক বছর আগে টেকনাফের পাহাড় ধসে অনেক প্রাণহানির ঘটনা ঘটলেও পাহাড় ধস রোধে নেই কোনো স্থায়ী ব্যবস্থাপনা বা পরিকল্পনা। ফলে প্রতি বছরই পাহাড় ধ্স বা পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে। পাহাড় কর্তন করে পাদদেশে কিংবা পাহাড়ের ওপর বসবাসরতদের বেশির ভাগই উপজাতি ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষ। বিকল্প উপায় না পেয়ে বছরের পর বছর তারা এখানে বসবাস করে আসছেন।

পাহাড়ে বসবাসরত নুর কবির জানান, মৃত্যুর ঝুঁকি জেনেও বাধ্য হয়ে এখানে তারা বসবাস করছেন। প্রতি বছর বর্ষা এলে পাহাড়ে বসবাসরতদের মাঝে আতঙ্ক বাড়ে। গত কয়েকদিন ধরে পাহাড় ধসের ভয়ে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছি।

কক্সবাজার পরিবেশ আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ জানান, গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে টেকনাফসহ কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। কক্সবাজার জেলায় অবৈধ পাহাড় কাটার প্রবণতা বেশি। এতে বিভিন্ন জায়গায় কর্তনকৃত পাহাড় ধসে পড়বে। পাহাড়ে বসবাসরত নাগরিকদের সকল সুবিধা বন্ধ রাখলে কেউ বসতি স্থাপন করবে না।

হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আহম্মদ আনোয়ারী জানান, সরকারিভাবে এখনো কোনো নির্দেশনা আসে নাই। তারপরও ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সতর্ক করা হয়েছে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার পারভেজ চৌধুরী জানান, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকে সরে যেতে প্রতিনিয়ত সিপিপি সদস্যরা মাইকিং, দুর্গতদের প্রয়োজনীয় সহায়তা এবং জনসচেতনতায় কাজ করে যাচ্ছেন।