টিউশনি চাকুরির প্রস্তুতিতে সাহায্য করেছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৩:৪৭:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ অক্টোবর ২০২১
  • / ১৯৫ Time View

মেহেদী হাসান মুন্না ব্যাংক চাকুরির পরীক্ষায় বাংলাদেশ ব্যাংকে উত্তীর্ণ হন। তিনি পিরোজপুর সদর উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। বাবা মৃত রুস্তম আলী বেপারী পেশায় কৃষক ছিলেন ও মা মনোয়ারা বেগম গৃহিণী। তিনি ২০১০ সালে জুজখোলা সম্মিলিত মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ২০১২ সালে আমানউল্লাহ কলেজ থেকে বিজ্ঞানে এইচএসসি পাস করেন। পরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।

বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকে অফিসার(জেনারেল) পদে কর্মরত। সম্প্রতি তার ব্যাংক চাকুরি, ভবিষ্যৎ স্বপ্ন, ব্যর্থতা ও সফলতার গল্প শুনিয়েছেন বিডি সমাচারকে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আনিসুল ইসলাম নাঈম-

বিডি সমাচার: আপনার শৈশবের গল্প দিয়ে শুরু করতে চাই
মেহেদী হাসান মুন্না: আমি এমন একটা এলাকা থেকে উঠে এসেছি যেখানে শিক্ষার জন্য একটু সংগ্রাম করতে হয়। তখন গ্রাম অঞ্চলে শিক্ষার সুযোগ খুব সহজ ছিলনা। অধিকাংশ শিক্ষার্থীর খাবার ও শিক্ষা একই সাথে পেতে সংগ্রাম করতে হত। ছোট থেকেই চ্যালেন্জ নিয়ে পড়াশোনা করেছি। আমি ২/১ টা ক্লাস ছাড়া সবসময় ক্লাসের প্রথম হতাম। এজন্য স্যাররা আমাকে পছন্দ করতেন। সকল প্রয়োজনে শিক্ষকদের পাশে পেতাম। স্কুলে থাকতেই বির্তক করতাম। ক্লাস ফাইভে স্কুল থেকে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেলাম। তারপর এসএসসিতে আমাদের স্কুল থেকে প্রথম বারের মতো গোল্ডেন এ+ পেলাম। প্রথম আলোতে আমাকে নিয়ে “আঁধার ফুরে আলোর পানে যাত্রা” শিরোনামে একটা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটা অনেকের নজর কেড়েছে। তখন আমার পড়াশোনা এগিয়ে নেওয়ার জন্য অনেকেই এগিয়ে আসেন।

বিডি সমাচার: আপনার জীবনের প্রতিবন্ধকতা ছিল কি-না?
মেহেদী হাসান মুন্না: তেমন বড় প্রতিবন্ধকতা ছিল না। তবে দারিদ্র্য একটা প্রতিবন্ধকতা বলতে পারি। কারন আমার বাবা কৃষক ছিলেন। তিনি আমাকে খুব বেশি আর্থিক সাপোর্ট দিতে পারতেন না। তবে আমার মানসিক ও ইচ্ছে শক্তির অভাব ছিলনা। সবার সহযোগিতা ও বাবা-মার অক্লান্ত প্রচেষ্টায় এগিয়ে গিয়েছি। স্কুল জীবন থেকে স্বপ্ন ছিল মেডিকেলে পড়ার। এইচএসসিতে ৪.৬০ পেয়েছিলাম। পরে মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পাইনি। অবশেষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনে ভর্তি হই।

বিডি সমাচার: ব্যাংকে চাকুরির স্বপ্ন দেখেছিলেন কখন থেকে?
মেহেদী হাসান মুন্না: যখন মনে হল বাংলাদেশ ভবিষ্যতে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে জায়ান্ট হতে চলছে তখন ব্যাংক নিয়ে মনে ভাবনা আসে। অর্নাস চলাকালীন ক্যারিয়ার ও জব নিয়ে যখন ভাবি তখন থেকে ব্যাংক চাকুরির ভাবনা মাথাই ঘুরপাক খেত। ডিপার্টমেন্টের ফলাফলে টপে আসতে পারিনি তবে রেজাল্টটা ধরে রাখতে চেষ্টা করেছি।

বিডি সমাচার: ব্যাংকে চাকুরি পাবার গল্প শুনতে চাই, প্রস্তুতি কিভাবে নিয়েছেন?
মেহেদী হাসান মুন্না: প্রথম যখন ঢাকায় আসি আমাকে সাপোর্ট করার মতো তেমন কেউ ছিলনা। কিছুদিন মামার বাসায় ছিলাম। স্কুল জীবন থেকেই টিউশনি করতাম। ভার্সিটিতেও টিউশনি করিয়ে নিজের সব খরচ চালিয়েছি ও পরিবারকে সাহায্য করার চেষ্টা করেছি। টিউশনি করাটা আমার চাকরির প্রস্তুতিতে সাহায্য করেছে। গণিত, ইংরেজি ও বিজ্ঞানের বিষয়গুলো পড়াতাম। ব্যাংক জবে গণিতের দক্ষতাটা কাজে লেগেছে। সবসময় চেষ্টা করতাম ইনফরমেশনে আপডেট থাকতে। পত্রিকা বেশী পড়া হত। তাছাড়া নিজের ব্যক্তিগত কিছু দক্ষতা অর্জনের চেষ্টা করেছি। ভাষাগত সমস্যা ও মানুষের সাথে যোগাযোগের দক্ষতা; এগুলো উন্নয়নে কাজ করেছি। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরু থেকেই চাকরির পরীক্ষার জন্য বিশেষ কিছু পড়তাম না তবে নিজে রুটিন করে বেসিক ম্যাথ ও ইংরেজি নিয়ে কাজ করেছি। একাডেমিক পড়াশোনা শেষ করে প্রিলির জন্য বেশ কয়েকদিন সময় পেয়েছি। তখন সাম্প্রতিক বিষয়গুলো, সাধারণ গণিত ও পুরনো প্রশ্নগুলো পড়ার চেষ্টা করেছি। প্রিলির একমাস পর রিটেন পরীক্ষা হয়েছিল। রিটেনের ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক বিষয়গুলো নিয়ে ফোকাস রাইটিং কিভাবে হতে পারে তা নিজের মতো গুছিয়ে নিয়েছি। এই বিষয়গুলো নিজে নোট করে রাখতাম। এটা অনেক কাজে দিয়েছে। এভাবে প্রস্তুতি নেওয়াতে রিটেন অনেক ভালো হয়েছে। এরপর ভাইবার জন্য পড়াশোনা করেছি। ব্যাংকিংর সাথে ‘আইন’ এর সর্ম্পক ও নিজের একাডেমির বিষয় গুলো পড়ার চেষ্টা করেছি। পাশাপাশি কিছু টেকনিক্যাল প্রশ্ন যেগুলো দিয়ে সাধারণ বুদ্ধিমত্তা যাচাই করা হয় তা দেখেছি। আমার জবটা খুব তাড়াতাড়ি হয়েছিল। মাস্টার্স শেষ হবার সাথে সাথেই চাকরি হয়েছিল। এর আগে আমি কখনো রিটেন বা ভাইবা দেইনি। দুই-একটা প্রিলি দিয়েছিলাম তবে পাশ করিনি। এটাই প্রথম প্রিলি, রিটেন ও ভাইবা পাশ ছিল।

বিডি সমাচার: বাংলাদেশ ব্যাংকে অফিসার (জেনারেল) পদে চাকুরি পেয়েছেন। বিষয়টি জানার পর আপনার প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল?
মেহেদী হাসান মুন্না: রেজাল্ট শুনার পর কান্না করে দিয়েছিলাম। আমার চাকুরির তিনমাস আগে বাবা মারা যায়। তখন মানসিক চাপ ও হতাশায় ছিলাম। চাকরির সংবাদ জানানোর জন্য মাকে ফোন করে কেঁদে দেই , মা আমাকে সান্ত্বনা দেন। মুলত কান্নার বিষয়টা তখন বেশি ছিল।

বিডি সমাচার: পর্দার আড়াল থেকে কেউ অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে?
মেহেদী হাসান মুন্না: আমার মা আমাকে অনেক অনুপ্রেরণা দিয়েছে।তাছাড়া পরিবারের বাইরে শিক্ষকগণ, এলাকার বিশেষ কিছু মানুষ এবং আমার বন্ধুরা সবসময় সহযোগিতা ও সাহস দিয়েছেন।

বিডি সমাচার: নতুন যারা ব্যাংক চাকুরিতে আসতে চায় তাদের জন্য কি পরামর্শ থাকবে?
মেহেদী হাসান মুন্না: ব্যাংকের জবের ক্ষেত্রে প্রতিদিনের তথ্যগুলোতে আপডেট থাকতে হবে। একাডেমি পড়াশোনা ভালো ভাবে চালিয়ে যেতে হবে। ডিপার্টমেন্টের পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে শুরুতেই জবের প্রস্তুতি নেওয়ার প্রয়োজন নেই। নিয়মিত পত্রিকা পড়ার অভ্যাস করতে হবে। প্রিলি ও রিটেনের জন্য ক্লাস সিক্স থেকে টেন পর্যন্ত বেসিক ইংরেজি ও ম্যাথ গুলো করতে হবে। অর্নাস পড়াকালীন বেসিক সমস্যাগুলোর সমাধান করতে হবে।

বিডি সমাচার: ভাইভার প্রস্তুতি কেমন হতে হয়?
মেহেদী হাসান মুন্না: নিজের সম্পর্কে জানতে হবে। অর্নাসের শুরুতেই ভাষাগত এবং যোগাযোগ এর দক্ষতার বিকাশ করতে হবে। নিজের পঠিত বিষয়ের সাথে ব্যাংকিং এর সংশ্লিষ্টতা, এ সম্পর্কিত খুঁটিনাটি সব কিছু জানা থাকা জরুরি। সমসাময়িক বিষয়াবলী সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখতে হবে। ব্যাংকিং এর মৌলিক জ্ঞান জানা। নিজেকে সাবলীলভাবে উপস্থাপন এবং মার্জিত আচরণ করতে হবে। আত্নবিশ্বাস নিয়ে ভাইবা বোর্ডের মুখোমুখি হতে হবে এবং জড়তা রাখা যাবে না।

বিডি সমাচার: আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?
মেহেদী হাসান মুন্না: যেহেতু আমি আইনে পড়েছি, আইন বিষয়ে নিজেকে আরো দক্ষ এবং জ্ঞান অর্জন করে ব্যাংকি পেশায় কাজে লাগাতে চাই। পাশাপাশি দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে চাই।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

টিউশনি চাকুরির প্রস্তুতিতে সাহায্য করেছে

Update Time : ০৩:৪৭:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ অক্টোবর ২০২১

মেহেদী হাসান মুন্না ব্যাংক চাকুরির পরীক্ষায় বাংলাদেশ ব্যাংকে উত্তীর্ণ হন। তিনি পিরোজপুর সদর উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। বাবা মৃত রুস্তম আলী বেপারী পেশায় কৃষক ছিলেন ও মা মনোয়ারা বেগম গৃহিণী। তিনি ২০১০ সালে জুজখোলা সম্মিলিত মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ২০১২ সালে আমানউল্লাহ কলেজ থেকে বিজ্ঞানে এইচএসসি পাস করেন। পরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।

বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকে অফিসার(জেনারেল) পদে কর্মরত। সম্প্রতি তার ব্যাংক চাকুরি, ভবিষ্যৎ স্বপ্ন, ব্যর্থতা ও সফলতার গল্প শুনিয়েছেন বিডি সমাচারকে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আনিসুল ইসলাম নাঈম-

বিডি সমাচার: আপনার শৈশবের গল্প দিয়ে শুরু করতে চাই
মেহেদী হাসান মুন্না: আমি এমন একটা এলাকা থেকে উঠে এসেছি যেখানে শিক্ষার জন্য একটু সংগ্রাম করতে হয়। তখন গ্রাম অঞ্চলে শিক্ষার সুযোগ খুব সহজ ছিলনা। অধিকাংশ শিক্ষার্থীর খাবার ও শিক্ষা একই সাথে পেতে সংগ্রাম করতে হত। ছোট থেকেই চ্যালেন্জ নিয়ে পড়াশোনা করেছি। আমি ২/১ টা ক্লাস ছাড়া সবসময় ক্লাসের প্রথম হতাম। এজন্য স্যাররা আমাকে পছন্দ করতেন। সকল প্রয়োজনে শিক্ষকদের পাশে পেতাম। স্কুলে থাকতেই বির্তক করতাম। ক্লাস ফাইভে স্কুল থেকে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেলাম। তারপর এসএসসিতে আমাদের স্কুল থেকে প্রথম বারের মতো গোল্ডেন এ+ পেলাম। প্রথম আলোতে আমাকে নিয়ে “আঁধার ফুরে আলোর পানে যাত্রা” শিরোনামে একটা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটা অনেকের নজর কেড়েছে। তখন আমার পড়াশোনা এগিয়ে নেওয়ার জন্য অনেকেই এগিয়ে আসেন।

বিডি সমাচার: আপনার জীবনের প্রতিবন্ধকতা ছিল কি-না?
মেহেদী হাসান মুন্না: তেমন বড় প্রতিবন্ধকতা ছিল না। তবে দারিদ্র্য একটা প্রতিবন্ধকতা বলতে পারি। কারন আমার বাবা কৃষক ছিলেন। তিনি আমাকে খুব বেশি আর্থিক সাপোর্ট দিতে পারতেন না। তবে আমার মানসিক ও ইচ্ছে শক্তির অভাব ছিলনা। সবার সহযোগিতা ও বাবা-মার অক্লান্ত প্রচেষ্টায় এগিয়ে গিয়েছি। স্কুল জীবন থেকে স্বপ্ন ছিল মেডিকেলে পড়ার। এইচএসসিতে ৪.৬০ পেয়েছিলাম। পরে মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পাইনি। অবশেষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনে ভর্তি হই।

বিডি সমাচার: ব্যাংকে চাকুরির স্বপ্ন দেখেছিলেন কখন থেকে?
মেহেদী হাসান মুন্না: যখন মনে হল বাংলাদেশ ভবিষ্যতে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে জায়ান্ট হতে চলছে তখন ব্যাংক নিয়ে মনে ভাবনা আসে। অর্নাস চলাকালীন ক্যারিয়ার ও জব নিয়ে যখন ভাবি তখন থেকে ব্যাংক চাকুরির ভাবনা মাথাই ঘুরপাক খেত। ডিপার্টমেন্টের ফলাফলে টপে আসতে পারিনি তবে রেজাল্টটা ধরে রাখতে চেষ্টা করেছি।

বিডি সমাচার: ব্যাংকে চাকুরি পাবার গল্প শুনতে চাই, প্রস্তুতি কিভাবে নিয়েছেন?
মেহেদী হাসান মুন্না: প্রথম যখন ঢাকায় আসি আমাকে সাপোর্ট করার মতো তেমন কেউ ছিলনা। কিছুদিন মামার বাসায় ছিলাম। স্কুল জীবন থেকেই টিউশনি করতাম। ভার্সিটিতেও টিউশনি করিয়ে নিজের সব খরচ চালিয়েছি ও পরিবারকে সাহায্য করার চেষ্টা করেছি। টিউশনি করাটা আমার চাকরির প্রস্তুতিতে সাহায্য করেছে। গণিত, ইংরেজি ও বিজ্ঞানের বিষয়গুলো পড়াতাম। ব্যাংক জবে গণিতের দক্ষতাটা কাজে লেগেছে। সবসময় চেষ্টা করতাম ইনফরমেশনে আপডেট থাকতে। পত্রিকা বেশী পড়া হত। তাছাড়া নিজের ব্যক্তিগত কিছু দক্ষতা অর্জনের চেষ্টা করেছি। ভাষাগত সমস্যা ও মানুষের সাথে যোগাযোগের দক্ষতা; এগুলো উন্নয়নে কাজ করেছি। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরু থেকেই চাকরির পরীক্ষার জন্য বিশেষ কিছু পড়তাম না তবে নিজে রুটিন করে বেসিক ম্যাথ ও ইংরেজি নিয়ে কাজ করেছি। একাডেমিক পড়াশোনা শেষ করে প্রিলির জন্য বেশ কয়েকদিন সময় পেয়েছি। তখন সাম্প্রতিক বিষয়গুলো, সাধারণ গণিত ও পুরনো প্রশ্নগুলো পড়ার চেষ্টা করেছি। প্রিলির একমাস পর রিটেন পরীক্ষা হয়েছিল। রিটেনের ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক বিষয়গুলো নিয়ে ফোকাস রাইটিং কিভাবে হতে পারে তা নিজের মতো গুছিয়ে নিয়েছি। এই বিষয়গুলো নিজে নোট করে রাখতাম। এটা অনেক কাজে দিয়েছে। এভাবে প্রস্তুতি নেওয়াতে রিটেন অনেক ভালো হয়েছে। এরপর ভাইবার জন্য পড়াশোনা করেছি। ব্যাংকিংর সাথে ‘আইন’ এর সর্ম্পক ও নিজের একাডেমির বিষয় গুলো পড়ার চেষ্টা করেছি। পাশাপাশি কিছু টেকনিক্যাল প্রশ্ন যেগুলো দিয়ে সাধারণ বুদ্ধিমত্তা যাচাই করা হয় তা দেখেছি। আমার জবটা খুব তাড়াতাড়ি হয়েছিল। মাস্টার্স শেষ হবার সাথে সাথেই চাকরি হয়েছিল। এর আগে আমি কখনো রিটেন বা ভাইবা দেইনি। দুই-একটা প্রিলি দিয়েছিলাম তবে পাশ করিনি। এটাই প্রথম প্রিলি, রিটেন ও ভাইবা পাশ ছিল।

বিডি সমাচার: বাংলাদেশ ব্যাংকে অফিসার (জেনারেল) পদে চাকুরি পেয়েছেন। বিষয়টি জানার পর আপনার প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল?
মেহেদী হাসান মুন্না: রেজাল্ট শুনার পর কান্না করে দিয়েছিলাম। আমার চাকুরির তিনমাস আগে বাবা মারা যায়। তখন মানসিক চাপ ও হতাশায় ছিলাম। চাকরির সংবাদ জানানোর জন্য মাকে ফোন করে কেঁদে দেই , মা আমাকে সান্ত্বনা দেন। মুলত কান্নার বিষয়টা তখন বেশি ছিল।

বিডি সমাচার: পর্দার আড়াল থেকে কেউ অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে?
মেহেদী হাসান মুন্না: আমার মা আমাকে অনেক অনুপ্রেরণা দিয়েছে।তাছাড়া পরিবারের বাইরে শিক্ষকগণ, এলাকার বিশেষ কিছু মানুষ এবং আমার বন্ধুরা সবসময় সহযোগিতা ও সাহস দিয়েছেন।

বিডি সমাচার: নতুন যারা ব্যাংক চাকুরিতে আসতে চায় তাদের জন্য কি পরামর্শ থাকবে?
মেহেদী হাসান মুন্না: ব্যাংকের জবের ক্ষেত্রে প্রতিদিনের তথ্যগুলোতে আপডেট থাকতে হবে। একাডেমি পড়াশোনা ভালো ভাবে চালিয়ে যেতে হবে। ডিপার্টমেন্টের পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে শুরুতেই জবের প্রস্তুতি নেওয়ার প্রয়োজন নেই। নিয়মিত পত্রিকা পড়ার অভ্যাস করতে হবে। প্রিলি ও রিটেনের জন্য ক্লাস সিক্স থেকে টেন পর্যন্ত বেসিক ইংরেজি ও ম্যাথ গুলো করতে হবে। অর্নাস পড়াকালীন বেসিক সমস্যাগুলোর সমাধান করতে হবে।

বিডি সমাচার: ভাইভার প্রস্তুতি কেমন হতে হয়?
মেহেদী হাসান মুন্না: নিজের সম্পর্কে জানতে হবে। অর্নাসের শুরুতেই ভাষাগত এবং যোগাযোগ এর দক্ষতার বিকাশ করতে হবে। নিজের পঠিত বিষয়ের সাথে ব্যাংকিং এর সংশ্লিষ্টতা, এ সম্পর্কিত খুঁটিনাটি সব কিছু জানা থাকা জরুরি। সমসাময়িক বিষয়াবলী সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখতে হবে। ব্যাংকিং এর মৌলিক জ্ঞান জানা। নিজেকে সাবলীলভাবে উপস্থাপন এবং মার্জিত আচরণ করতে হবে। আত্নবিশ্বাস নিয়ে ভাইবা বোর্ডের মুখোমুখি হতে হবে এবং জড়তা রাখা যাবে না।

বিডি সমাচার: আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?
মেহেদী হাসান মুন্না: যেহেতু আমি আইনে পড়েছি, আইন বিষয়ে নিজেকে আরো দক্ষ এবং জ্ঞান অর্জন করে ব্যাংকি পেশায় কাজে লাগাতে চাই। পাশাপাশি দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে চাই।