ঝড়-বৃষ্টিতে আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি; কৃষকের সোনালী স্বপ্ন নষ্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ১১:৪৫:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ অক্টোবর ২০২১
  • / ১৩৬ Time View

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:

ধানের মাঠে সকল পরিচর্চা শেষ। এবার সোনালী ধান ঘরে নিয়ে আসা হবে আর মাত্র কয়েকদিন বাকী। সেই স্বপ্ন দেখছিলেন কৃষকেরা। কিন্তু তাদের সেই সোনালী স্বপ্ন নষ্ট হয়েছে চলমান কার্তিকের ঝড়বৃষ্টিতে।পাশাপাশি ক্ষতি হয়েছে আগাম শীতকালীন সবজির ফসল, বাদ পড়েননি আলু চাষিরাও।

গত সোমবার(১৮ অক্টোবর) বিকেল থেকে শুরু হয়ে বুধবার ২০ অক্টোবর পর্যন্ত চলমান বৃষ্টি ও দমকা বাতাসে ঘরবাড়ি,গাছপালার ক্ষয়ক্ষতি না হলেও ঠাকুরগাঁও জেলার প্রায় সহস্র হেক্টর জমির আমন ধানের ক্ষেত মাটিতে নুয়ে পড়েছে। এতে কৃষকের বুক ভরা সোনালী স্বপ্ন এক নিমেশেই ভেঙ্গে গেছে। যার ফলে চলতি আমন মৌসুমে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়বেন বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।

সরেজমিনে রাজাগাঁও,পাটিয়াডাংগী, ঢোলার হাট, ঘনিমহেশপুর ও কশালগাঁওসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, বৃষ্টির কারণে অনেক কৃষকের আমন ধান নষ্ট হয়েছে। অনেক কৃষক তাঁদের ফসল বাঁচাতে ক্ষেতের জমে থাকা পানির নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করছেন। আবার কেউ কেউ মাটিতে নু‌য়ে যাওয়া ধানগাছ বেঁধে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।

No description available.

হর দেব রায় নামে একজন কৃষক বিডি সমাচার কে বলেন, মাঠে আধা পাকা ধান দোল খাচ্ছিল। আর মাত্র ১৫-২০দিন পরই ধানক্ষেত থেকে ধান সংগ্রহ শুরু হতো। কিন্তু হঠাৎ এই বৃষ্টি ও দমকা বাতাসে আমার ৫০ শতাংশ জমির আমন ধানের মাটিতে হেলে পড়েছে।

রাজাগাঁওয়ের তরিকুল ইসলাম বিডি সমাচার কে জানান, তার ৬৩শতাংশ জমির ধান মাটিতে নুয়ে পড়ছে। নিজেই বৃষ্টিতে ভিজে আংশিক জমির ধান বেঁধে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু তুলে দেওয়া ধানে পোকা ও পচনের জন্য ভরসা পাইনা।

আব্দুল মান্নান নামে আরেক কৃষক বিডি সমাচার কে জানান, চলতি মৌসুম ১১৭ শতাংশ জমিতে ধান চাষ করেছি। কিন্তু ৫৫ শতাংশ জমি ধান মাটিতে নুয়ে পড়ছে। নুয়ে পড়া ধানের তিন ভাগেই পাতনা(চিঠা) পড়ে যায়, সেই সাথে গুনগত মান ঠিক থাকেনা। তাই এবার ১৪-১৫ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হবে । আর এই ক্ষতি পুষিয়ে উঠা সম্ভব না বলেও জানান তিনি।

ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো.আবু হোসেন বিডি সমাচার কে বলেন, চলতি মৌসুমে জেলায় ১ লাখ ৩৭হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদ হয়েছে। কয়েকদিন বৃষ্টির কারণে ধানের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখন পর্যন্ত প্রাথমিকভাবে নির্ধারণ করা হয়নি। এই নিয়ে কাজ চলছে। তবে পাকা ধানের তেমন ক্ষতি হবে না। বৃষ্টি কমলে কৃষকরা ফসল কেটে ঘরে তুলতে পারবেন।

অন্যদিকে যে সব জমির ধানে সবে মাত্র শীষ এসেছে বা বের হয়নি ঐ জমির ধানের কিছুটা ক্ষতি হতে পারে। এর পাশাপাশি আলু খেতেও পানি জমে থাকায় আলু চাষিরা সামান্য ক্ষয়- ক্ষতির সম্মক্ষিন হবে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

ঝড়-বৃষ্টিতে আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি; কৃষকের সোনালী স্বপ্ন নষ্ট

Update Time : ১১:৪৫:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ অক্টোবর ২০২১

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:

ধানের মাঠে সকল পরিচর্চা শেষ। এবার সোনালী ধান ঘরে নিয়ে আসা হবে আর মাত্র কয়েকদিন বাকী। সেই স্বপ্ন দেখছিলেন কৃষকেরা। কিন্তু তাদের সেই সোনালী স্বপ্ন নষ্ট হয়েছে চলমান কার্তিকের ঝড়বৃষ্টিতে।পাশাপাশি ক্ষতি হয়েছে আগাম শীতকালীন সবজির ফসল, বাদ পড়েননি আলু চাষিরাও।

গত সোমবার(১৮ অক্টোবর) বিকেল থেকে শুরু হয়ে বুধবার ২০ অক্টোবর পর্যন্ত চলমান বৃষ্টি ও দমকা বাতাসে ঘরবাড়ি,গাছপালার ক্ষয়ক্ষতি না হলেও ঠাকুরগাঁও জেলার প্রায় সহস্র হেক্টর জমির আমন ধানের ক্ষেত মাটিতে নুয়ে পড়েছে। এতে কৃষকের বুক ভরা সোনালী স্বপ্ন এক নিমেশেই ভেঙ্গে গেছে। যার ফলে চলতি আমন মৌসুমে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়বেন বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।

সরেজমিনে রাজাগাঁও,পাটিয়াডাংগী, ঢোলার হাট, ঘনিমহেশপুর ও কশালগাঁওসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, বৃষ্টির কারণে অনেক কৃষকের আমন ধান নষ্ট হয়েছে। অনেক কৃষক তাঁদের ফসল বাঁচাতে ক্ষেতের জমে থাকা পানির নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করছেন। আবার কেউ কেউ মাটিতে নু‌য়ে যাওয়া ধানগাছ বেঁধে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।

No description available.

হর দেব রায় নামে একজন কৃষক বিডি সমাচার কে বলেন, মাঠে আধা পাকা ধান দোল খাচ্ছিল। আর মাত্র ১৫-২০দিন পরই ধানক্ষেত থেকে ধান সংগ্রহ শুরু হতো। কিন্তু হঠাৎ এই বৃষ্টি ও দমকা বাতাসে আমার ৫০ শতাংশ জমির আমন ধানের মাটিতে হেলে পড়েছে।

রাজাগাঁওয়ের তরিকুল ইসলাম বিডি সমাচার কে জানান, তার ৬৩শতাংশ জমির ধান মাটিতে নুয়ে পড়ছে। নিজেই বৃষ্টিতে ভিজে আংশিক জমির ধান বেঁধে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু তুলে দেওয়া ধানে পোকা ও পচনের জন্য ভরসা পাইনা।

আব্দুল মান্নান নামে আরেক কৃষক বিডি সমাচার কে জানান, চলতি মৌসুম ১১৭ শতাংশ জমিতে ধান চাষ করেছি। কিন্তু ৫৫ শতাংশ জমি ধান মাটিতে নুয়ে পড়ছে। নুয়ে পড়া ধানের তিন ভাগেই পাতনা(চিঠা) পড়ে যায়, সেই সাথে গুনগত মান ঠিক থাকেনা। তাই এবার ১৪-১৫ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হবে । আর এই ক্ষতি পুষিয়ে উঠা সম্ভব না বলেও জানান তিনি।

ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো.আবু হোসেন বিডি সমাচার কে বলেন, চলতি মৌসুমে জেলায় ১ লাখ ৩৭হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদ হয়েছে। কয়েকদিন বৃষ্টির কারণে ধানের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখন পর্যন্ত প্রাথমিকভাবে নির্ধারণ করা হয়নি। এই নিয়ে কাজ চলছে। তবে পাকা ধানের তেমন ক্ষতি হবে না। বৃষ্টি কমলে কৃষকরা ফসল কেটে ঘরে তুলতে পারবেন।

অন্যদিকে যে সব জমির ধানে সবে মাত্র শীষ এসেছে বা বের হয়নি ঐ জমির ধানের কিছুটা ক্ষতি হতে পারে। এর পাশাপাশি আলু খেতেও পানি জমে থাকায় আলু চাষিরা সামান্য ক্ষয়- ক্ষতির সম্মক্ষিন হবে।