চীনা নাগরিকদের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৯:২৩:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ মে ২০২২
  • / ১৩৬ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ

বেশ কড়াকড়ির মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে চীনা নাগরিকদের। দেশটিতে সম্প্রতি করোনার প্রকোপ বেড়ে গেছে। ফলে সরকার শূন্য-কোভিড নীতি কার্যকর করার চেষ্টা করছে। নতুন করে নাগরিকদের ওপর চাপানো হয়েছে আন্তর্জাতিক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা। ‘অপ্রয়োজনীয়’ কারণে দেশের বাইরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১২ মে) এক বিবৃতিতে চীনা জাতীয় অভিবাসন প্রশাসন জানায়, পাসপোর্টের মতো ভ্রমণ নথি প্রদানের বিষয়ে পর্যালোচনা প্রক্রিয়া কঠোর করা হবে। যারা বিদেশ যেতে ইচ্ছুক, তাদের ভ্রমণ কঠোরভাবে সীমাবদ্ধ করা হবে।

চীন সরকার বলছে, দেশ থেকে বের ও প্রবেশের ফলে করোনার সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। ঝুঁকি এড়াতে দেশে প্রবেশ ও বাইরে যাওয়া বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। ‘প্রয়োজনীয়’ উদ্দেশ্যে যারা ভ্রমণে যেতে চান, শুধু তাদের অনুমতি দেওয়া হবে। বিশেষ করে অনুমতির আওতায় রয়েছেন, যারা পড়াশোনা, ব্যবসা, গবেষণা ও চিকিৎসার কাজে দেশের বাইরে যেতে চান।

ঘোষণা অনুসারে, যারা মহামারির বিরুদ্ধে লড়াই করতে ও দুর্যোগে ত্রাণ সংস্থার পরিবহনে সহায়তা করার জন্য বিদেশে যাবেন, তাদের আবেদন ত্বরান্বিত করা হবে। তবে নতুন বিধিনিষেধ প্রয়োগের বিষয় স্পষ্ট করেননি কর্মকর্তারা।

নতুন পদক্ষেপ কয়েক দশকের মধ্যে বহির্গামী ভ্রমণের ওপর চীনের সবচেয়ে কঠোর বিধিনিষেধ। শহরব্যাপী লকডাউন, গণপরীক্ষা ও বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনসহ দুই বছরেরও বেশি কঠোর নিয়ন্ত্রণ সহ্য করা জনসংখ্যার ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করবে।

সাম্প্রতিক সময়ে কঠোর বিধিনিষেধে ক্ষিপ্ত হয়ে আছেন চীনের নাগরিকরা। নতুন নিষেধাজ্ঞার পরে অনেকেই নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। টুইটারের মতো দেশটির নিজস্ব প্ল্যাটফর্ম ওয়েইবোতে সরকারের সমালোচনা করে নাগরিকরা বলছেন, “প্রয়োজন না হলে বাইরে যাবেন না; প্রয়োজন না হলে দেশ ছেড়ে যাবেন না, প্রয়োজন না হলে জন্ম নেবেন না।”

সাধারণ চীনাদের মধ্যে বহির্গামী ভ্রমণ বিশ শতকের গোড়ার দিকেও ব্যাপকভাবে সীমিত ছিল। কিন্তু আয় বেড়ে যাওয়ায় ও সরকার নিয়ম শিথিল করায় চীনের মধ্যে ভ্রমণ বৃদ্ধি পায়।

দেশটির অভিবাসী অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অনুসারে, ২০১৯ সালে চীনা নাগরিকরা ৬৭০ মিলিয়ন বার বিদেশ ভ্রমণ করেছে। যা ছিল মহামারির আগে শেষ স্বাভাবিক ভ্রমণ বছর। কিন্তু ২০২১ সালে মাত্র ৭৩ মিলিয়ন ভ্রমণ হয়।

গত কয়েক মাস ধরে জনসাধারণের হতাশা ক্রমাগত বাড়ছে।কারণ দেশজুড়ে কর্তৃপক্ষ লকডাউন ব্যবস্থা আরোপ করেছে। করোনার প্রকোপ থেকে বাঁচতে শূন্য কোভিড-নীতি অনুসরণ করছে চীনের কর্তৃপক্ষ।

সিএনএনের হিসাবে, চীনজুড়ে কমপক্ষে ৩২টি শহর এখন সম্পূর্ণ বা আংশিক লকডাউনের অধীন। যা ২২০ মিলিয়ন মানুষকে প্রভাবিত করছে।

এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো সাংহাই, যা দেশটির শীর্ষ আর্থিক কেন্দ্র। এই প্রদেশ মার্চের শেষ থেকে লকডাউনের অধীন। এই অঞ্চলে এপ্রিলুড়ে বাড়িতে আটকে থাকা বাসিন্দারা খাবার, ওষুধ বা অন্যান্য প্রয়োজনীয় সরবরাহ পাননি বলে অভিযোগ করেছেন।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

চীনা নাগরিকদের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা

Update Time : ০৯:২৩:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ মে ২০২২

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ

বেশ কড়াকড়ির মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে চীনা নাগরিকদের। দেশটিতে সম্প্রতি করোনার প্রকোপ বেড়ে গেছে। ফলে সরকার শূন্য-কোভিড নীতি কার্যকর করার চেষ্টা করছে। নতুন করে নাগরিকদের ওপর চাপানো হয়েছে আন্তর্জাতিক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা। ‘অপ্রয়োজনীয়’ কারণে দেশের বাইরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১২ মে) এক বিবৃতিতে চীনা জাতীয় অভিবাসন প্রশাসন জানায়, পাসপোর্টের মতো ভ্রমণ নথি প্রদানের বিষয়ে পর্যালোচনা প্রক্রিয়া কঠোর করা হবে। যারা বিদেশ যেতে ইচ্ছুক, তাদের ভ্রমণ কঠোরভাবে সীমাবদ্ধ করা হবে।

চীন সরকার বলছে, দেশ থেকে বের ও প্রবেশের ফলে করোনার সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। ঝুঁকি এড়াতে দেশে প্রবেশ ও বাইরে যাওয়া বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। ‘প্রয়োজনীয়’ উদ্দেশ্যে যারা ভ্রমণে যেতে চান, শুধু তাদের অনুমতি দেওয়া হবে। বিশেষ করে অনুমতির আওতায় রয়েছেন, যারা পড়াশোনা, ব্যবসা, গবেষণা ও চিকিৎসার কাজে দেশের বাইরে যেতে চান।

ঘোষণা অনুসারে, যারা মহামারির বিরুদ্ধে লড়াই করতে ও দুর্যোগে ত্রাণ সংস্থার পরিবহনে সহায়তা করার জন্য বিদেশে যাবেন, তাদের আবেদন ত্বরান্বিত করা হবে। তবে নতুন বিধিনিষেধ প্রয়োগের বিষয় স্পষ্ট করেননি কর্মকর্তারা।

নতুন পদক্ষেপ কয়েক দশকের মধ্যে বহির্গামী ভ্রমণের ওপর চীনের সবচেয়ে কঠোর বিধিনিষেধ। শহরব্যাপী লকডাউন, গণপরীক্ষা ও বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনসহ দুই বছরেরও বেশি কঠোর নিয়ন্ত্রণ সহ্য করা জনসংখ্যার ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করবে।

সাম্প্রতিক সময়ে কঠোর বিধিনিষেধে ক্ষিপ্ত হয়ে আছেন চীনের নাগরিকরা। নতুন নিষেধাজ্ঞার পরে অনেকেই নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। টুইটারের মতো দেশটির নিজস্ব প্ল্যাটফর্ম ওয়েইবোতে সরকারের সমালোচনা করে নাগরিকরা বলছেন, “প্রয়োজন না হলে বাইরে যাবেন না; প্রয়োজন না হলে দেশ ছেড়ে যাবেন না, প্রয়োজন না হলে জন্ম নেবেন না।”

সাধারণ চীনাদের মধ্যে বহির্গামী ভ্রমণ বিশ শতকের গোড়ার দিকেও ব্যাপকভাবে সীমিত ছিল। কিন্তু আয় বেড়ে যাওয়ায় ও সরকার নিয়ম শিথিল করায় চীনের মধ্যে ভ্রমণ বৃদ্ধি পায়।

দেশটির অভিবাসী অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অনুসারে, ২০১৯ সালে চীনা নাগরিকরা ৬৭০ মিলিয়ন বার বিদেশ ভ্রমণ করেছে। যা ছিল মহামারির আগে শেষ স্বাভাবিক ভ্রমণ বছর। কিন্তু ২০২১ সালে মাত্র ৭৩ মিলিয়ন ভ্রমণ হয়।

গত কয়েক মাস ধরে জনসাধারণের হতাশা ক্রমাগত বাড়ছে।কারণ দেশজুড়ে কর্তৃপক্ষ লকডাউন ব্যবস্থা আরোপ করেছে। করোনার প্রকোপ থেকে বাঁচতে শূন্য কোভিড-নীতি অনুসরণ করছে চীনের কর্তৃপক্ষ।

সিএনএনের হিসাবে, চীনজুড়ে কমপক্ষে ৩২টি শহর এখন সম্পূর্ণ বা আংশিক লকডাউনের অধীন। যা ২২০ মিলিয়ন মানুষকে প্রভাবিত করছে।

এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো সাংহাই, যা দেশটির শীর্ষ আর্থিক কেন্দ্র। এই প্রদেশ মার্চের শেষ থেকে লকডাউনের অধীন। এই অঞ্চলে এপ্রিলুড়ে বাড়িতে আটকে থাকা বাসিন্দারা খাবার, ওষুধ বা অন্যান্য প্রয়োজনীয় সরবরাহ পাননি বলে অভিযোগ করেছেন।