চাঁদপুরে টানা বৃষ্টিতে জনজীবনে ভোগান্তি

ফখরুল ইসলাম, চাঁদপুর
  • Update Time : ০৪:২০:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / 14

টানা দুই দিনের বৃষ্টিতে চাঁদপুরের কয়েকটি উপজেলায় বেড়েছে জলাবদ্ধতা। এতে বন্যাকবলিত শাহরাস্তি, হাজীগঞ্জ ও ফরিদগঞ্জ উপজেলায় জলাবদ্ধতার শিকার বাসিন্দাদের বেড়েছে দুর্ভোগ। দুই দিন ধরে চাঁদপুর-নারায়ণগঞ্জ-মুন্সিগঞ্জ-মতলব রুটের যাত্রীবাহী ছোট নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) কর্তৃপক্ষ। স্বাভাবিক রয়েছে ঢাকাগামী যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল। তবে যাত্রী অনেক কম।

চাঁদপুর আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক শাহ মো. শোয়েব বলেন, রোববার সকাল ৯টা পর্যন্ত ৫৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

শাহরাস্তি উপজেলার বাসিন্দা মাঈনুল ইসলাম কাজল জানান, বন্যাকবলিত এই উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখন আবার টানা দুই দিন বৃষ্টিপাত। উপজেলায় এখনও পাঁচ শতাধিক মানুষ গবাদিপশু নিয়ে রয়েছেন আশ্রয়কেন্দ্রে। নবাগত জেলা প্রশাসক বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। বৃষ্টিতে আবারও পনিবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ।

ফরিদগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা জাকির হোসেন সৈকত বলেন, ফরিদগঞ্জ উপজেলা বাসিন্দারা আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরলেও আবারও পড়েছে জলাবদ্ধতার কবলে।পানিবাহিত রোগে হাসপাতালে ছুটছেন কেউ কেউ।তবে বৃষ্টি উপেক্ষা করে ঘর থেকে বের হয়েছে হকার, রিকশাচালক ও শ্রমিকেরা।

সদরের অটোরিকশাচালক নুরুল ইসলাম বলেন, সকালে ভাড়া নিয়ে রামপুর ইউনিয়নের রাড়িচর এসেছি। এখন বৃষ্টির কারণে কোনো দিকে যেতে পারছি না। অনেক অটোরিকশাচালক বৃষ্টির কারণে ঘর থেকেও বের হতে পারছে না।

সদরের বাগাদি ইউনিয়নের বাসিন্দা আলম মিয়া বলেন, চাঁদপুর সেচ প্রকল্প এলাকায় এর আগের টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। কিছুদিন বৃষ্টি কম থাকায় পানি বাড়ি ঘর থেকে নেমে যায়। এখন আবার আগের অবস্থা তৈরি হচ্ছে। আগের বার ফসল ও মাছের খামারের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

শহরের পুরাণ বাজার বাণিজ্যিক এলাকার বাসিন্দা মাহমুদুল আহসান বলেন, সকাল থেকে মুষলধারে বৃষ্টি। টানা বৃষ্টিতে জনজীবন অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছে। সড়কও অনেকটা ফাঁকা। রিকশা ও অটোবাইকের সংখ্যা খুবই কম।

চাঁদপুর পল্লী বিদুৎ সমিতি-১ ও ২ এর কর্তৃপক্ষ বলছেন, জেলায় প্রায় আট লাখ গ্রাহকের জন্য ১৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন। সেই তুলনায় মিলছে ৮০০ থেকে ১০০ মেগাওয়াট। গত এক সপ্তাহ ধরে চাঁদপুরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। জেলায় চাহিদা মেটাতে পারছে না পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। গ্রামাঞ্চলে সারা দিনে বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকে সাত থেকে আট ঘণ্টা।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

চাঁদপুরে টানা বৃষ্টিতে জনজীবনে ভোগান্তি

Update Time : ০৪:২০:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

টানা দুই দিনের বৃষ্টিতে চাঁদপুরের কয়েকটি উপজেলায় বেড়েছে জলাবদ্ধতা। এতে বন্যাকবলিত শাহরাস্তি, হাজীগঞ্জ ও ফরিদগঞ্জ উপজেলায় জলাবদ্ধতার শিকার বাসিন্দাদের বেড়েছে দুর্ভোগ। দুই দিন ধরে চাঁদপুর-নারায়ণগঞ্জ-মুন্সিগঞ্জ-মতলব রুটের যাত্রীবাহী ছোট নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) কর্তৃপক্ষ। স্বাভাবিক রয়েছে ঢাকাগামী যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল। তবে যাত্রী অনেক কম।

চাঁদপুর আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক শাহ মো. শোয়েব বলেন, রোববার সকাল ৯টা পর্যন্ত ৫৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

শাহরাস্তি উপজেলার বাসিন্দা মাঈনুল ইসলাম কাজল জানান, বন্যাকবলিত এই উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখন আবার টানা দুই দিন বৃষ্টিপাত। উপজেলায় এখনও পাঁচ শতাধিক মানুষ গবাদিপশু নিয়ে রয়েছেন আশ্রয়কেন্দ্রে। নবাগত জেলা প্রশাসক বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। বৃষ্টিতে আবারও পনিবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ।

ফরিদগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা জাকির হোসেন সৈকত বলেন, ফরিদগঞ্জ উপজেলা বাসিন্দারা আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরলেও আবারও পড়েছে জলাবদ্ধতার কবলে।পানিবাহিত রোগে হাসপাতালে ছুটছেন কেউ কেউ।তবে বৃষ্টি উপেক্ষা করে ঘর থেকে বের হয়েছে হকার, রিকশাচালক ও শ্রমিকেরা।

সদরের অটোরিকশাচালক নুরুল ইসলাম বলেন, সকালে ভাড়া নিয়ে রামপুর ইউনিয়নের রাড়িচর এসেছি। এখন বৃষ্টির কারণে কোনো দিকে যেতে পারছি না। অনেক অটোরিকশাচালক বৃষ্টির কারণে ঘর থেকেও বের হতে পারছে না।

সদরের বাগাদি ইউনিয়নের বাসিন্দা আলম মিয়া বলেন, চাঁদপুর সেচ প্রকল্প এলাকায় এর আগের টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। কিছুদিন বৃষ্টি কম থাকায় পানি বাড়ি ঘর থেকে নেমে যায়। এখন আবার আগের অবস্থা তৈরি হচ্ছে। আগের বার ফসল ও মাছের খামারের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

শহরের পুরাণ বাজার বাণিজ্যিক এলাকার বাসিন্দা মাহমুদুল আহসান বলেন, সকাল থেকে মুষলধারে বৃষ্টি। টানা বৃষ্টিতে জনজীবন অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছে। সড়কও অনেকটা ফাঁকা। রিকশা ও অটোবাইকের সংখ্যা খুবই কম।

চাঁদপুর পল্লী বিদুৎ সমিতি-১ ও ২ এর কর্তৃপক্ষ বলছেন, জেলায় প্রায় আট লাখ গ্রাহকের জন্য ১৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন। সেই তুলনায় মিলছে ৮০০ থেকে ১০০ মেগাওয়াট। গত এক সপ্তাহ ধরে চাঁদপুরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। জেলায় চাহিদা মেটাতে পারছে না পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। গ্রামাঞ্চলে সারা দিনে বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকে সাত থেকে আট ঘণ্টা।