চরমোনাই ফাল্গুনের মাহফিল ২৪-২৬ ফেব্রুয়ারি

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ১১:৪৫:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • / ১৫৫৯ Time View
বাংলাদেশের বৃহত্তম ইসলামি গণজমায়েত চরমোনাই বার্ষিক ফাল্গুনের মাহফিল ২৪ ফেব্রুয়ারি বুধবার শুরু হতে যাচ্ছে । ২৭ তারিখ শনিবার আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে মাহফিল শেষ হবে। চরমোনাই পীর মাওলানা সৈয়দ মো. রেজাউল করিম সাহেবের আম বয়ানের মাধ্যমে বুধবার বাদ জোহর মাহফিল শুরু হবে।
.

বরিশালের চরমোনাইতে জামিয়া রশিদিয়া আহসানাবাদ মাদরাসায় আগামী ১১, ১২, ১৩ ফাল্গুন মোতাবেক ২৪, ২৫, ২৬ ফেব্রুয়ারি রোজ বুধ, বৃহস্পতি, শুক্রবার তিনদিনব্যাপী এ মাহফিলের আয়োজন হবে।

মাহফিলে উপস্থিত মুসুল্লিদের জন্য ইতোমধ্যেই প্রায় পাঁচটি মাঠ প্রস্তুত করা হচ্ছে। ব্যপকভাবে চলছে মাহফিল প্রস্তুতি কার্যক্রম।

জানা গেছে,এ বছর প্রস্তুত হওয়া পাঁচটি মাঠের আয়তন প্রায় ৩০০ একর জায়গা। সব মিলিয়ে প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে থাকবে মুসুল্লিরা। দোকানপাট, রাস্তাঘাট বাদ দিলে প্রায় আড়াইশ একর জায়গায় ষাট হাজার খুটির মাধ্যমে মুসুল্লিদের জন্য সামিয়ানা প্রস্তুত করা হচ্ছে।

চরমোনাই মাদরাসা ময়দান প্রথম মাঠ, মাদরাসার অপজিটে পূর্ব দিকে দ্বিতীয় মাঠ, মাদরাসার উত্তর পশ্চিম দিকে তৃতীয় মাঠ, উত্তর পূর্ব দিকে চতুর্থ মাঠ এবং এ বছর নতুন করে চতুর্থ ও দ্বিতীয় মাঠের অপরদিকে বৃহত আকারে পঞ্চম মাঠের ব্যবস্থাপনা হচ্ছে বলে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে।

ইতোমধ্যে পাঁচ মাঠেই বাঁশের খুটি বসানোর কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানিয়েছে মাহফিল ব্যবস্থাপনা সূত্র। দ্রুততম সময়ে সামিয়ানাও টানানো হবে। আগামিকাল (১৭ ফেব্রুয়ারি) থেকে লাইট মাইকের কাজ শুরু হবে বলেও জানিয়েছেন তারা।

মাহফিলে শ্রোতাদের জন্য এ বছর প্রায় চার হাজার মাইক বসানোর ব্যবস্থাও হচ্ছে বলে জানিয়েছেন লাইট মাইক বিভাগের দায়িত্বে থাকা উধ্বর্তন একজন দায়িত্বশীল।

বাংলাদেশে সর্ববৃহত গণজমায়েত হিসেবে চরমোনাই ফাল্গুনের মাহফিলকে অনেকে বিবেচনা করে থাকেন। প্রতিবছর ফাল্গুনে এ মাহফিলটি অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।

মাহফিল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে – আগামি ২৪ ফেব্রুয়ারী বুধবার জোহরের পরে চরমোনাইর বর্তমান পীর সাহেব সৈয়দ রেজাউল করীমের উদ্বোধনী বয়ানের মাধ্যমে শুরু হয়ে ২৭ তারিখ শনিবার আখেরী মুনাজাতের মাধ্যমে এ বছরের মাহফিল কার্যক্রম পরিচালিত হবে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির সেক্রেটারী জেনারেল খন্দকার গোলাম মাওলা এক ভিডিও বার্তায় বলেছিলেন পূর্ব নির্ধারিত তারিখ ১২,১৩,১৪ ফাল্গুন এর পরিবর্তে অনিবার্য কারণবশত এবছরের ফাল্গুনের মাহফিল ১১,১২,১৩ ফাল্গুন মোতাবেক ২৪,২৫,২৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।

তবে সাধারনত ফাল্গুনের মাহফিল শুরু হওয়ার তিন চার দিন আগেই হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয় মাঠে। প্রথম মাঠ তিনচার দিন আগেই পূর্ণ হয়ে যায়। এক্ষেত্রে মুজাহিদ কমিটির সেক্রেটারি জেনারেল খন্দকার গোলাম মাওলা বলেছেন- মাহফিলের মাঠে জায়গা দখলের জন্য আগে কেহ মাঠে আসবেন না।

২২ তারিখের আগে মাঠে কেউ না আসার জোর অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। কারণ প্রথম মাঠে জায়গা দখল নিয়ে একটি ফিতনা সৃষ্টি হয় বলে পূর্ব অভিজ্ঞতায় তারা দেখেছেন বলে জানিয়েছেন। সেক্ষেত্রে ‘আগে আসলে আগে বসবেন’ ভিত্তিতে মাহফিলে উপস্থিতির জন্য সবাইকে অনুরোধ করেছেন তিনি। জায়গা দখল বা একে অপরের জন্য জায়গা রাখা এসব না করার বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। তাছাড়া ২২ ফেব্রুয়ারির আগে মাঠের লাইট মাইক চালু হবে না বলেও জানা গেছে। বরং ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে মাহফিলের অনানুষ্ঠানিক কার্যক্রম চলবে এবং বিভিন্ন ওলামায়ে কেরামগন বয়ান করবেন বলে জানিয়েছেন মাহফিলের একটি সূত্র।

আনুষ্ঠানিকভাবে ২৪ ফেব্রুয়ারি মাহফিলের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর প্রথম দিন সন্ধ্যা ও দ্বিতীয় দিন সকালে চরমোনাই তরিকা সংশ্লিষ্ট বয়ান করবেন চরমোনাই বর্তমান পীর সৈয়দ রেজাউল করীম। দ্বিতীয়দিন সন্ধ্যা ও তৃতীয় দিন সকালে বয়ান করবেন শায়খে চরমোনাই মুফতী সৈয়দ ফয়জুল করীম। তৃতীয়দিন সন্ধ্যা ও পরদিন সকালে আখেরী বয়ান ও আখেরী মুনাজাত পরিচালনা করবেন মুফতী সৈয়দ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই।

এছাড়াও প্রতিদিন সকাল ১১ টা থেকে দুইটা পর্যন্ত চরমোনাই পরিচালিত রাজনৈতিক দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, ইসলামী যুব আন্দোলন, ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন, শ্রমিক আন্দোলনের বিভিন্ন কর্মসূচী পালিত হবে। বিশেষ করে মাহফিলের দ্বিতীয় দিন তথা ২৫ ফেব্রুয়ারি ওলামা-মাশায়েখ সম্মেলনে দেশের প্রতিথযশা আলেমরা বক্তৃতা দেবেন।

অপরদিকে ফজর ও মাগরিবের নামাজের পর ছাড়া অন্যান্য সময়ে দেশের বিভিন্ন ওলামায়ে কেরামগণ ও চরমোনাই মরহুম পীর সাহেব রহ. এর সন্তানরা বয়ান করে থাকেন।

সম্পাদনা ও বিন্যাস : হাছিব আর রহমান

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

চরমোনাই ফাল্গুনের মাহফিল ২৪-২৬ ফেব্রুয়ারি

Update Time : ১১:৪৫:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২১
বাংলাদেশের বৃহত্তম ইসলামি গণজমায়েত চরমোনাই বার্ষিক ফাল্গুনের মাহফিল ২৪ ফেব্রুয়ারি বুধবার শুরু হতে যাচ্ছে । ২৭ তারিখ শনিবার আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে মাহফিল শেষ হবে। চরমোনাই পীর মাওলানা সৈয়দ মো. রেজাউল করিম সাহেবের আম বয়ানের মাধ্যমে বুধবার বাদ জোহর মাহফিল শুরু হবে।
.

বরিশালের চরমোনাইতে জামিয়া রশিদিয়া আহসানাবাদ মাদরাসায় আগামী ১১, ১২, ১৩ ফাল্গুন মোতাবেক ২৪, ২৫, ২৬ ফেব্রুয়ারি রোজ বুধ, বৃহস্পতি, শুক্রবার তিনদিনব্যাপী এ মাহফিলের আয়োজন হবে।

মাহফিলে উপস্থিত মুসুল্লিদের জন্য ইতোমধ্যেই প্রায় পাঁচটি মাঠ প্রস্তুত করা হচ্ছে। ব্যপকভাবে চলছে মাহফিল প্রস্তুতি কার্যক্রম।

জানা গেছে,এ বছর প্রস্তুত হওয়া পাঁচটি মাঠের আয়তন প্রায় ৩০০ একর জায়গা। সব মিলিয়ে প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে থাকবে মুসুল্লিরা। দোকানপাট, রাস্তাঘাট বাদ দিলে প্রায় আড়াইশ একর জায়গায় ষাট হাজার খুটির মাধ্যমে মুসুল্লিদের জন্য সামিয়ানা প্রস্তুত করা হচ্ছে।

চরমোনাই মাদরাসা ময়দান প্রথম মাঠ, মাদরাসার অপজিটে পূর্ব দিকে দ্বিতীয় মাঠ, মাদরাসার উত্তর পশ্চিম দিকে তৃতীয় মাঠ, উত্তর পূর্ব দিকে চতুর্থ মাঠ এবং এ বছর নতুন করে চতুর্থ ও দ্বিতীয় মাঠের অপরদিকে বৃহত আকারে পঞ্চম মাঠের ব্যবস্থাপনা হচ্ছে বলে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে।

ইতোমধ্যে পাঁচ মাঠেই বাঁশের খুটি বসানোর কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানিয়েছে মাহফিল ব্যবস্থাপনা সূত্র। দ্রুততম সময়ে সামিয়ানাও টানানো হবে। আগামিকাল (১৭ ফেব্রুয়ারি) থেকে লাইট মাইকের কাজ শুরু হবে বলেও জানিয়েছেন তারা।

মাহফিলে শ্রোতাদের জন্য এ বছর প্রায় চার হাজার মাইক বসানোর ব্যবস্থাও হচ্ছে বলে জানিয়েছেন লাইট মাইক বিভাগের দায়িত্বে থাকা উধ্বর্তন একজন দায়িত্বশীল।

বাংলাদেশে সর্ববৃহত গণজমায়েত হিসেবে চরমোনাই ফাল্গুনের মাহফিলকে অনেকে বিবেচনা করে থাকেন। প্রতিবছর ফাল্গুনে এ মাহফিলটি অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।

মাহফিল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে – আগামি ২৪ ফেব্রুয়ারী বুধবার জোহরের পরে চরমোনাইর বর্তমান পীর সাহেব সৈয়দ রেজাউল করীমের উদ্বোধনী বয়ানের মাধ্যমে শুরু হয়ে ২৭ তারিখ শনিবার আখেরী মুনাজাতের মাধ্যমে এ বছরের মাহফিল কার্যক্রম পরিচালিত হবে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির সেক্রেটারী জেনারেল খন্দকার গোলাম মাওলা এক ভিডিও বার্তায় বলেছিলেন পূর্ব নির্ধারিত তারিখ ১২,১৩,১৪ ফাল্গুন এর পরিবর্তে অনিবার্য কারণবশত এবছরের ফাল্গুনের মাহফিল ১১,১২,১৩ ফাল্গুন মোতাবেক ২৪,২৫,২৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।

তবে সাধারনত ফাল্গুনের মাহফিল শুরু হওয়ার তিন চার দিন আগেই হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয় মাঠে। প্রথম মাঠ তিনচার দিন আগেই পূর্ণ হয়ে যায়। এক্ষেত্রে মুজাহিদ কমিটির সেক্রেটারি জেনারেল খন্দকার গোলাম মাওলা বলেছেন- মাহফিলের মাঠে জায়গা দখলের জন্য আগে কেহ মাঠে আসবেন না।

২২ তারিখের আগে মাঠে কেউ না আসার জোর অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। কারণ প্রথম মাঠে জায়গা দখল নিয়ে একটি ফিতনা সৃষ্টি হয় বলে পূর্ব অভিজ্ঞতায় তারা দেখেছেন বলে জানিয়েছেন। সেক্ষেত্রে ‘আগে আসলে আগে বসবেন’ ভিত্তিতে মাহফিলে উপস্থিতির জন্য সবাইকে অনুরোধ করেছেন তিনি। জায়গা দখল বা একে অপরের জন্য জায়গা রাখা এসব না করার বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। তাছাড়া ২২ ফেব্রুয়ারির আগে মাঠের লাইট মাইক চালু হবে না বলেও জানা গেছে। বরং ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে মাহফিলের অনানুষ্ঠানিক কার্যক্রম চলবে এবং বিভিন্ন ওলামায়ে কেরামগন বয়ান করবেন বলে জানিয়েছেন মাহফিলের একটি সূত্র।

আনুষ্ঠানিকভাবে ২৪ ফেব্রুয়ারি মাহফিলের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর প্রথম দিন সন্ধ্যা ও দ্বিতীয় দিন সকালে চরমোনাই তরিকা সংশ্লিষ্ট বয়ান করবেন চরমোনাই বর্তমান পীর সৈয়দ রেজাউল করীম। দ্বিতীয়দিন সন্ধ্যা ও তৃতীয় দিন সকালে বয়ান করবেন শায়খে চরমোনাই মুফতী সৈয়দ ফয়জুল করীম। তৃতীয়দিন সন্ধ্যা ও পরদিন সকালে আখেরী বয়ান ও আখেরী মুনাজাত পরিচালনা করবেন মুফতী সৈয়দ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই।

এছাড়াও প্রতিদিন সকাল ১১ টা থেকে দুইটা পর্যন্ত চরমোনাই পরিচালিত রাজনৈতিক দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, ইসলামী যুব আন্দোলন, ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন, শ্রমিক আন্দোলনের বিভিন্ন কর্মসূচী পালিত হবে। বিশেষ করে মাহফিলের দ্বিতীয় দিন তথা ২৫ ফেব্রুয়ারি ওলামা-মাশায়েখ সম্মেলনে দেশের প্রতিথযশা আলেমরা বক্তৃতা দেবেন।

অপরদিকে ফজর ও মাগরিবের নামাজের পর ছাড়া অন্যান্য সময়ে দেশের বিভিন্ন ওলামায়ে কেরামগণ ও চরমোনাই মরহুম পীর সাহেব রহ. এর সন্তানরা বয়ান করে থাকেন।

সম্পাদনা ও বিন্যাস : হাছিব আর রহমান