গো-খাদ্যের তীব্র সংকটে গরু খামারীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৫:২২:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ অক্টোবর ২০২০
  • / ২২৫ Time View

 

মোসাদ্দেকুর রহমান সাজু, ডোমার (নীলফামারী):

নীলফামারীর ডোমার সদর ইউনিয়ন সহ গোটা উপজেলায় দেখা দিয়েছে গো-খাদ্যের তীব্র সংকট। এতে করে বিপাকে পড়েছে গো-খামারীরা। যেসব জমিতে গো-খামারীরা তাদের গৃহপালিত পশুকে ঘাস খাওয়াত সে জমি প্রায় দুই সপ্তাহের টানা ভারি বর্ষনে পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ার ফলে গো-খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে ।

যানা যায় ডোমার পৌরসভাসহ ১০টি ইউনিয়নে ছোট বড় মিলে প্রায় ১ হাজার গো-খামার রয়েছে। গত বোরো মৌসুমে যে খড় উৎপাদন হয়েছে তা কয়েক দিনের টানা বর্ষনে বৃষ্টির পানিতে ভিজে বেশীর ভাগেই নষ্ট হয়ে গেছে। তাছাড়া বোরো ধানের খড় বেশীদিন পানিতে ভিজলে তা পঁচে নষ্ট হয়ে যায়।

উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখাযায় প্রতিমন বোরো ধানের খড় ৫শ থেকে ৬শত টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।এতে করে খামারীরা গো-খাদ্যের সংকটে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। মধ্যবিত্ত গো- খামারীরা নিজেদের গবাদি পশু বাঁচাতে দূর-দূরান্ত থেকে ভ্যানে করে বেশী দামে খড় কিনে মওজুদ করে রাখছেন। নি¤œবিত্ত খামারীরা বিভিন্ন এলাকা থেকে ঘাস কেটে অনেকে আবার পাসুন(নিড়ানী যন্ত্র) দিয়ে ঘাস তুলে গবাদি পশুকে খাইয়ে কোন রকমে বাঁচিয়ে রাখছেন।

এ বিষয়ে উপজেলার হরিণচড়া ইউনিয়নের গো-খামারী মৃত হোসেন আলীর ছেলে বেলাল হোসেন ও নজরুলের ছেলে আব্দুর রহিমের সাথে কথা হলে তারা বলেন, আমরা ৮ থেকে ১০টি করে গরু পালছি গরুর দুধ বিক্রি করে সংসার চালাই, বর্তমানে গরুকে সঠিক পরিমান খাদ্য খাওয়াতে না পাওয়ায় ঠিকমত দুধ দিচ্ছেনা, বর্তমানে গরু ও সংসার পরিচালনা করতে গিয়ে আমরা চরম বিপাকে পড়েছি।

একই এলাকার আরেক গরু পালনকারী আবু তালেব জানান, বন্যার পানিতে ঘাস ডুবে যাওয়ায় গরুর খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে,খড় খুজে পাওয়া যাচ্ছেনা। যদিও খড় মিলছে তা অধিক দামে কিনতে হচ্ছে। এক শ্রেনীর মুনাফালোভী বোরো ধানের খড় সযতেœ রেখে দেয় এবং বর্ষা মৌসুমে তারা অধিক মুনাফা লাভের আশায় বিক্রি করে। তিনি আরও বলেন একটি গরুকে প্রতিদিন পাঁচ কেজি খড়, চালের গুড়ো ও ভুট্টারগুড়া দিয়ে মিশ্রিত করে খাওয়ালে তার শরীর স্বাস্থ্য ভালো থাকে, বর্তমানে গরুকে দুই কেজি খড় ও ঠিকমত খেতে দিতে পারছিনা।

আন্ধারুর মোড়ের খড় বিক্রেতা হরেন বাবু বলেন, গবাদি গশুর খাদ্য সংকট দেখা দেওয়ায় আমি পঞ্চগড় জেলার বোদা, শাকোয়া থেকে খড় এনে বিক্রি করছি,৫শ থেকে ৬শ টাকা মন হিসেবে। দূর-দূরান্ত থেকে খড় এনে বিক্রি করছি তাই দামটা খুব বেশী নয়।

গরু পালনকারী বিপ্লব বলেন,গো-খাদ্যের সংকট হওয়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে পতিত জমি থেকে ঘাস কেঁটে গরুকে খাইয়ে কোন রকম বাঁচিয়ে রেখেছি। আমন ধান মাড়াই-কাটাই না হওয়া পর্যন্ত গো-খাদ্যের সংকটের সমাধান হবে না,ততদিন আমাদের অপেক্ষার প্রহর গুনতে হবে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

গো-খাদ্যের তীব্র সংকটে গরু খামারীরা

Update Time : ০৫:২২:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ অক্টোবর ২০২০

 

মোসাদ্দেকুর রহমান সাজু, ডোমার (নীলফামারী):

নীলফামারীর ডোমার সদর ইউনিয়ন সহ গোটা উপজেলায় দেখা দিয়েছে গো-খাদ্যের তীব্র সংকট। এতে করে বিপাকে পড়েছে গো-খামারীরা। যেসব জমিতে গো-খামারীরা তাদের গৃহপালিত পশুকে ঘাস খাওয়াত সে জমি প্রায় দুই সপ্তাহের টানা ভারি বর্ষনে পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ার ফলে গো-খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে ।

যানা যায় ডোমার পৌরসভাসহ ১০টি ইউনিয়নে ছোট বড় মিলে প্রায় ১ হাজার গো-খামার রয়েছে। গত বোরো মৌসুমে যে খড় উৎপাদন হয়েছে তা কয়েক দিনের টানা বর্ষনে বৃষ্টির পানিতে ভিজে বেশীর ভাগেই নষ্ট হয়ে গেছে। তাছাড়া বোরো ধানের খড় বেশীদিন পানিতে ভিজলে তা পঁচে নষ্ট হয়ে যায়।

উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখাযায় প্রতিমন বোরো ধানের খড় ৫শ থেকে ৬শত টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।এতে করে খামারীরা গো-খাদ্যের সংকটে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। মধ্যবিত্ত গো- খামারীরা নিজেদের গবাদি পশু বাঁচাতে দূর-দূরান্ত থেকে ভ্যানে করে বেশী দামে খড় কিনে মওজুদ করে রাখছেন। নি¤œবিত্ত খামারীরা বিভিন্ন এলাকা থেকে ঘাস কেটে অনেকে আবার পাসুন(নিড়ানী যন্ত্র) দিয়ে ঘাস তুলে গবাদি পশুকে খাইয়ে কোন রকমে বাঁচিয়ে রাখছেন।

এ বিষয়ে উপজেলার হরিণচড়া ইউনিয়নের গো-খামারী মৃত হোসেন আলীর ছেলে বেলাল হোসেন ও নজরুলের ছেলে আব্দুর রহিমের সাথে কথা হলে তারা বলেন, আমরা ৮ থেকে ১০টি করে গরু পালছি গরুর দুধ বিক্রি করে সংসার চালাই, বর্তমানে গরুকে সঠিক পরিমান খাদ্য খাওয়াতে না পাওয়ায় ঠিকমত দুধ দিচ্ছেনা, বর্তমানে গরু ও সংসার পরিচালনা করতে গিয়ে আমরা চরম বিপাকে পড়েছি।

একই এলাকার আরেক গরু পালনকারী আবু তালেব জানান, বন্যার পানিতে ঘাস ডুবে যাওয়ায় গরুর খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে,খড় খুজে পাওয়া যাচ্ছেনা। যদিও খড় মিলছে তা অধিক দামে কিনতে হচ্ছে। এক শ্রেনীর মুনাফালোভী বোরো ধানের খড় সযতেœ রেখে দেয় এবং বর্ষা মৌসুমে তারা অধিক মুনাফা লাভের আশায় বিক্রি করে। তিনি আরও বলেন একটি গরুকে প্রতিদিন পাঁচ কেজি খড়, চালের গুড়ো ও ভুট্টারগুড়া দিয়ে মিশ্রিত করে খাওয়ালে তার শরীর স্বাস্থ্য ভালো থাকে, বর্তমানে গরুকে দুই কেজি খড় ও ঠিকমত খেতে দিতে পারছিনা।

আন্ধারুর মোড়ের খড় বিক্রেতা হরেন বাবু বলেন, গবাদি গশুর খাদ্য সংকট দেখা দেওয়ায় আমি পঞ্চগড় জেলার বোদা, শাকোয়া থেকে খড় এনে বিক্রি করছি,৫শ থেকে ৬শ টাকা মন হিসেবে। দূর-দূরান্ত থেকে খড় এনে বিক্রি করছি তাই দামটা খুব বেশী নয়।

গরু পালনকারী বিপ্লব বলেন,গো-খাদ্যের সংকট হওয়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে পতিত জমি থেকে ঘাস কেঁটে গরুকে খাইয়ে কোন রকম বাঁচিয়ে রেখেছি। আমন ধান মাড়াই-কাটাই না হওয়া পর্যন্ত গো-খাদ্যের সংকটের সমাধান হবে না,ততদিন আমাদের অপেক্ষার প্রহর গুনতে হবে।