গোটা বাঙালি জাতির জন্যই আগস্ট শোকের মাস

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ১২:১৯:২৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • / ৫৭২ Time View

কাজল দাস:

বছর ঘুরে আরও একটি আগস্ট মাস পেরিয়ে যাচ্ছে। সেই আগস্ট, যা বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে বিশ্বাসী প্রতিটি মানুষের কাছেই একটি নিদারুণ শোক ও বেদনার মাস। শুধু শোক আর বেদনাই নয়, আগস্ট মৌলবাদ আর সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের আস্ফালন, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় মুক্তচিন্তায় বিশ্বাসী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ওপর নজিরবিহীন নৃশংসতার মাস।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে ঘটে ইতিহাসের ঘৃণ্যতম হত্যাযজ্ঞ। দেশী-বিদেশী কুশীলবদের প্ররোচনা আর সক্রিয় সহযোগিতায় সেনাবাহিনীর একদল বহিষ্কৃত ও বিপথগামী সদস্য এই নৃশংস হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত করে। তবে মধ্যমসারীর এই ঘাতকদের নেপথ্যে কলকাঠি নেড়েছিল অনেকেই। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সামরিক বাহিনীর প্রথার ব্যতিক্রম ঘটিয়ে যার জন্য সেনাবাহিনীর উপ-প্রধান পদটি সৃষ্টি করেছিলেন, সেই জেনারেল জিয়াই এই হত্যাযজ্ঞে খুনি চক্রের অন্যতম সহায় হয়েছিলেন, ‘ক্যারি অন’ বলে দিয়েছিলেন চক্রান্তের নীলনকশায় গোপন অনুমোদন। বস্তুত বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের প্রধান বেনিফিশিয়ারিই ছিলেন এই ঘাতক জিয়া, যিনি পরবর্তীতে অবৈধভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে বাংলাদেশকে ইতিহাসের বিপরীত পথে, পাকিস্তানি ভাবধারায় পরিচালিত করেছিলেন।

সেদিনের সেই কাল রাতে ঘাতকের নির্মম বুলেটে বিদ্ধ হয় বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রবাদপুরুষ, স্বাধীনতার মহান স্থপতি, বাঙালির রাখাল রাজা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বক্ষ। সেদিনের সেই নির্মম হত্যাযজ্ঞে আরও নিহত হন বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনের প্রেরণার বাতিঘর বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, তার স্ত্রী ক্রীড়াবিদ সুলতানা কামাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ জামাল, তার স্ত্রী পারভীন জামাল রোজী, বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ পুত্র শিশু শেখ রাসেল, বঙ্গবন্ধুর সহোদর শেখ নাসেরসহ বঙ্গবন্ধু পরিবারের সকল উপস্থিত সদস্য। ঘাতকদের আক্রমণে শহীদ হন বঙ্গবন্ধুর ভগ্নীপতি ও মন্ত্রী আব্দুর রব সেরনিয়াবাত এবং বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে যুবনেতা শেখ ফজলুল হক মনি ও তার স্ত্রী বেগম আরজু মনি।

শোকাবহ-আগস্ট

বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা সেদিন জার্মানিতে অবস্থানের কারণে প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন। রক্ষা পেয়েছিল জাতির পিতার রক্তের আদর্শিক উত্তরাধিকার।আজ সেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পতাকাকে সমুন্নত রেখে বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে এশিয়ার উদীয়মান সিংহ রূপে প্রতিষ্ঠিত করে দেশকে দক্ষ হাতে নেতৃত্ব দিয়ে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর নেতৃত্বেই স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের বিচার হয়েছে, তাদের কয়েকজনকে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝোলানো হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে আদালতের রায় কার্যকর করতেও বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে সরকার কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবর্তমানে তাঁর আদর্শিক রাজনীতির উত্তরাধিকার বহন করে চলেছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। আর তাই মৌলবাদী দেশবিরোধী অপশক্তি বারংবার চেষ্টা করেছে তাঁর কণ্ঠকে স্তব্ধ করে দিতে। ১৯৮১ সালে দেশরত্নের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ২২বার তাঁকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে।

২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে খালেদা-নিজামীর নেতৃত্বাধীন চার দলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসে। নির্বাচনের অব্যবহিত পরেই দেশের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর ওপর নেমে আসে নির্মম নিষ্পেষণ। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় ঘটে মৌলবাদ-জঙ্গিবাদের নগ্ন উল্লম্ফন। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট বিএনপি-জামায়াত জোটের মদতপুষ্ট জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) জঙ্গিগোষ্ঠী একদিনে সারাদেশের ৬৩ জেলায় ৫০০ স্থানে বোমা ফাটিয়ে নিজের অস্তিত্ব জানান দেয়। জনমানসে ছড়িয়ে পড়ে আতংকের বাতাবরণ, বাংলাদেশ হয়ে ওঠে এক আতংকের জনপদ।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশ (হুজি-বি) জঙ্গিগোষ্ঠী এক নারকীয় হামলা চালায়৷ সামরিক যুদ্ধাস্ত্র গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয় নিরস্ত্র রাজনৈতিক কর্মীদের ওপর। প্রাণ হারান আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদিকা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভী রহমানসহ ২৪জন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী। কেন্দ্রীয় নেতারা মানববর্ম তৈরি করে জননেত্রীর প্রাণ রক্ষা করলেও তাঁর কানের পর্দা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

খালেদা-নিজামী জোট সরকার এই বর্বরতম হত্যাকাণ্ডের কোনো বিচার তো করেইনি, বরং এ ঘটনার তদন্তকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে ন্যক্কারজনক জজ মিয়া নাটক সাজায়। পরবর্তীতে হুজিবি’র নেতা মুফতি হান্নান আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক হলে তার জবানবন্দিতে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সাথে হাওয়া ভবন ও সন্ত্রাস-দুর্নীতির বরপুত্র তারেক রহমানের সরাসরি সংযোগের বিষয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়।

আগস্ট শুধু একাত্তরের পরাজিত শক্তি ও তাদের আদর্শিক উত্তরসূরি বিএনপি-জামায়াত-জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর সহিংসতার বেদনায়ই ক্লিষ্ট নয়, এই মাসেই বাঙালি হারিয়েছে অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও মানবিক মূল্যবোধের ধারক ও বাহক বাঙালি সংস্কৃতির একাধিক রত্নকে।এই মাসেই আমাদের মধ্যে থেকে চিরবিদায় নিয়েছেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, যিনি বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিকে বিশ্বসভায় আসীন করেছেন মর্যাদার আসনে।এ মাসেই বিদায় নিয়েছেন দ্রোহ-প্রেম ও মানবতার কবি, আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম।

আগস্ট তাই সর্বতোভাবেই বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি তথা বাঙালি জাতীয়তাবাদের জন্য এক শোকের মাস। এই মাসের সকল শহীদদের প্রতি জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা ও গভীর ভালোবাসা।

লেখক: সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, জগন্নাথ হল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

Please Share This Post in Your Social Media

গোটা বাঙালি জাতির জন্যই আগস্ট শোকের মাস

Update Time : ১২:১৯:২৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২২

কাজল দাস:

বছর ঘুরে আরও একটি আগস্ট মাস পেরিয়ে যাচ্ছে। সেই আগস্ট, যা বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে বিশ্বাসী প্রতিটি মানুষের কাছেই একটি নিদারুণ শোক ও বেদনার মাস। শুধু শোক আর বেদনাই নয়, আগস্ট মৌলবাদ আর সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের আস্ফালন, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় মুক্তচিন্তায় বিশ্বাসী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ওপর নজিরবিহীন নৃশংসতার মাস।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে ঘটে ইতিহাসের ঘৃণ্যতম হত্যাযজ্ঞ। দেশী-বিদেশী কুশীলবদের প্ররোচনা আর সক্রিয় সহযোগিতায় সেনাবাহিনীর একদল বহিষ্কৃত ও বিপথগামী সদস্য এই নৃশংস হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত করে। তবে মধ্যমসারীর এই ঘাতকদের নেপথ্যে কলকাঠি নেড়েছিল অনেকেই। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সামরিক বাহিনীর প্রথার ব্যতিক্রম ঘটিয়ে যার জন্য সেনাবাহিনীর উপ-প্রধান পদটি সৃষ্টি করেছিলেন, সেই জেনারেল জিয়াই এই হত্যাযজ্ঞে খুনি চক্রের অন্যতম সহায় হয়েছিলেন, ‘ক্যারি অন’ বলে দিয়েছিলেন চক্রান্তের নীলনকশায় গোপন অনুমোদন। বস্তুত বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের প্রধান বেনিফিশিয়ারিই ছিলেন এই ঘাতক জিয়া, যিনি পরবর্তীতে অবৈধভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে বাংলাদেশকে ইতিহাসের বিপরীত পথে, পাকিস্তানি ভাবধারায় পরিচালিত করেছিলেন।

সেদিনের সেই কাল রাতে ঘাতকের নির্মম বুলেটে বিদ্ধ হয় বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রবাদপুরুষ, স্বাধীনতার মহান স্থপতি, বাঙালির রাখাল রাজা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বক্ষ। সেদিনের সেই নির্মম হত্যাযজ্ঞে আরও নিহত হন বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনের প্রেরণার বাতিঘর বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, তার স্ত্রী ক্রীড়াবিদ সুলতানা কামাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ জামাল, তার স্ত্রী পারভীন জামাল রোজী, বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ পুত্র শিশু শেখ রাসেল, বঙ্গবন্ধুর সহোদর শেখ নাসেরসহ বঙ্গবন্ধু পরিবারের সকল উপস্থিত সদস্য। ঘাতকদের আক্রমণে শহীদ হন বঙ্গবন্ধুর ভগ্নীপতি ও মন্ত্রী আব্দুর রব সেরনিয়াবাত এবং বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে যুবনেতা শেখ ফজলুল হক মনি ও তার স্ত্রী বেগম আরজু মনি।

শোকাবহ-আগস্ট

বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা সেদিন জার্মানিতে অবস্থানের কারণে প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন। রক্ষা পেয়েছিল জাতির পিতার রক্তের আদর্শিক উত্তরাধিকার।আজ সেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পতাকাকে সমুন্নত রেখে বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে এশিয়ার উদীয়মান সিংহ রূপে প্রতিষ্ঠিত করে দেশকে দক্ষ হাতে নেতৃত্ব দিয়ে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর নেতৃত্বেই স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের বিচার হয়েছে, তাদের কয়েকজনকে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝোলানো হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে আদালতের রায় কার্যকর করতেও বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে সরকার কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবর্তমানে তাঁর আদর্শিক রাজনীতির উত্তরাধিকার বহন করে চলেছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। আর তাই মৌলবাদী দেশবিরোধী অপশক্তি বারংবার চেষ্টা করেছে তাঁর কণ্ঠকে স্তব্ধ করে দিতে। ১৯৮১ সালে দেশরত্নের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ২২বার তাঁকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে।

২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে খালেদা-নিজামীর নেতৃত্বাধীন চার দলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসে। নির্বাচনের অব্যবহিত পরেই দেশের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর ওপর নেমে আসে নির্মম নিষ্পেষণ। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় ঘটে মৌলবাদ-জঙ্গিবাদের নগ্ন উল্লম্ফন। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট বিএনপি-জামায়াত জোটের মদতপুষ্ট জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) জঙ্গিগোষ্ঠী একদিনে সারাদেশের ৬৩ জেলায় ৫০০ স্থানে বোমা ফাটিয়ে নিজের অস্তিত্ব জানান দেয়। জনমানসে ছড়িয়ে পড়ে আতংকের বাতাবরণ, বাংলাদেশ হয়ে ওঠে এক আতংকের জনপদ।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশ (হুজি-বি) জঙ্গিগোষ্ঠী এক নারকীয় হামলা চালায়৷ সামরিক যুদ্ধাস্ত্র গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয় নিরস্ত্র রাজনৈতিক কর্মীদের ওপর। প্রাণ হারান আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদিকা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভী রহমানসহ ২৪জন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী। কেন্দ্রীয় নেতারা মানববর্ম তৈরি করে জননেত্রীর প্রাণ রক্ষা করলেও তাঁর কানের পর্দা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

খালেদা-নিজামী জোট সরকার এই বর্বরতম হত্যাকাণ্ডের কোনো বিচার তো করেইনি, বরং এ ঘটনার তদন্তকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে ন্যক্কারজনক জজ মিয়া নাটক সাজায়। পরবর্তীতে হুজিবি’র নেতা মুফতি হান্নান আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক হলে তার জবানবন্দিতে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সাথে হাওয়া ভবন ও সন্ত্রাস-দুর্নীতির বরপুত্র তারেক রহমানের সরাসরি সংযোগের বিষয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়।

আগস্ট শুধু একাত্তরের পরাজিত শক্তি ও তাদের আদর্শিক উত্তরসূরি বিএনপি-জামায়াত-জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর সহিংসতার বেদনায়ই ক্লিষ্ট নয়, এই মাসেই বাঙালি হারিয়েছে অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও মানবিক মূল্যবোধের ধারক ও বাহক বাঙালি সংস্কৃতির একাধিক রত্নকে।এই মাসেই আমাদের মধ্যে থেকে চিরবিদায় নিয়েছেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, যিনি বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিকে বিশ্বসভায় আসীন করেছেন মর্যাদার আসনে।এ মাসেই বিদায় নিয়েছেন দ্রোহ-প্রেম ও মানবতার কবি, আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম।

আগস্ট তাই সর্বতোভাবেই বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি তথা বাঙালি জাতীয়তাবাদের জন্য এক শোকের মাস। এই মাসের সকল শহীদদের প্রতি জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা ও গভীর ভালোবাসা।

লেখক: সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, জগন্নাথ হল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।