কুমেক হাসপাতালের চিত্র পাল্টে দেওয়ার নায়ক কে এই ডাঃ মহিউদ্দিন!

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৬:২০:৩৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ১০১৪ Time View

সোহাইবুল ইসলাম সোহাগ,কুমিল্লা

দুই বছর খানেক আগের কথা! ময়লা-আবর্জনা ও বর্জ্যের দুর্গন্ধে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটিতে টেকা যেত না।আর সেই পরিবেশ মাত্র ২ বছরে বদলে গেছে।

ঝকঝকে হয়ে উঠেছে হাসপাতালের ভেতর-বাহির। সবুজ ফুল-ফলের বাগান ও ৫৫টির অধিক ঔষধি গাছে ছেয়ে গেছে চারপাশ।বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তাব্যবস্থা।বসেছে সিসিটিভি ক্যামেরা।সেবা ভালো পাওয়া যায় বলে দূরদূরান্ত থেকে রোগী আসা বেড়েছে।যেখানে রুগীদের জন্য রয়েছে মাত্র ৫০০ সিট সেখানে রুগীর সংখ্যা দৈনিক রয়েছে ২ হাজারের অধিক।

স্বাভাবিকভাবেই কুমিল্লার রুগীদের ও উর্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে সুনাম কুড়িয়েছে হাসপাতালটি।এই চিত্র বলদে দেওয়ার নায়ক ডাঃ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন।

সেবার মান বৃদ্ধির অঙ্গিকারে গত ১৬ই জানুয়ারি ২০২১ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক পদে ডাঃ মোহাম্মদ মহিউদ্দীন যোগদান করেন।এরপর থেকে তিনি কুমিল্লা মেডিকেল হাসপাতালের চিত্র পাল্টে দিতে বেশী সময় ব্যয় করেননি।বছর খানেকের মধ্যে হাসপাতালের দালাল থেকে শুরু করে সেবার মান বৃদ্ধির জন্য কঠোর ভূমিকা পালন করতে দেন একেক বিচক্ষণতামূলক নির্দেশনা।

বিশেষ করে ডাঃ মোহাম্মদ মহিউদ্দিনের কঠোর নির্দেশনার কারনে বহির বিভাগের ডাক্তার থেকে শুরু করে সকল নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সময় মতো ডিউটি পালন করতে প্রস্তুত থাকতো।আর যার যার বিভাগের ডাক্তার,নার্স,কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সময় মতো তাদের কাজ সঠিকভাবে আঞ্জাম দিয়ে যেতো।

এমন ভূমিকা পালনে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্হ্য বিভাগের আস্থাভাজন ও সুদক্ষ- কর্মঠ,কর্মকর্তা হিসেবে সকলের নজরে আসেন।তিনি স্বাস্থ্যখাতে বিশেষ অবদানের জন্য ইন্দোনেশিয়া,সিঙ্গাপুর,তাঞ্জানিয়া সহ বিভিন্ন দেশে সরকারীভাবে সফর করার সুযোগসুবিধা লাভ করেন।

গত সোমবার (২৩ শে জানুয়ারি) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে ও রাষ্ট্রপতির আদেশে তিনি চট্রগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক পদে পদন্নোতি পান।

জানা যায়,ডাঃ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদানের মধ্য দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন।এরপর একেএকে তিনি পদায়ন পান।তিনি কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলা স্বাস্হ্য ও পরিবার পরিকল্পনার কর্মকর্তা,এরপর স্বাস্হ্য অধিদপ্তরের ঔষুধ প্রশাসনের পরিচালক,জেলা সদর কক্সবাজার হাসপাতালের পরিচালক ও কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক থেকে সবে পদন্নোতি পেয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে রাষ্ট্রপতির আদেশে তিনি চট্রগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক হন।

ডাঃ মোহাম্মদ মহিউদ্দীন চট্রগ্রাম জেলার সাতকানিয়ার পিতা মরুহুম আবুল হোসেন ও মাতা আনোয়ারা বেগমের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন।পারিবারিক জীবনে স্ত্রী ও ২ ছেলেকে নিয়ে সংসারজীবন অতিবাহিত করছেন।তিনি চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজের ২৫ তম ব্যাচ ও ১৩ তম বিসিএস।তিনি চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হতে এমপিএইচ ডিগ্রী অর্জন করেন।

কুমেক হাসপাতালের নতুন পরিচালক ডাঃ মোহাম্মদ আজিজুর রহমান সিদ্দিকী বলেন,আমি আরো কিছুদিন পর হাসপাতালে যোগদান দিবো।আমি যখন চট্টগ্রামে সিভিল সার্জনের দায়িত্বে ছিলাম তখন থেকে ওনার সাথে আমার খুব ভালো সম্পর্ক ছিলো।তখন থেকে দেখতাম ওনি হাসপাতালকে রাঙ্গিয়ে তুলতে দারুন দারুন উদ্যোগ গ্রহন করতো।ওনার মাঝে ওই পলিসিটি আছে।আর তিনি কুমিল্লা মেডিকেল হাসপাতালে আসার পর হাসপাতালকে সুন্দর একটি অবস্থানে নিয়ে গেছে।যার কারনে হাসপাতালে আমার তেমন কষ্ট করতে হবেনা।আমি ওনার প্রতি কৃতজ্ঞ।

ডাঃ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন,এই হাসপাতালের জন্য সত্যি সত্যিই কষ্ট হচ্ছে।সকলে হাসপাতালটাকে আলোকিত করে রেখেছিলো।সবাই যেন একটা পরিবার ছিলাম। মনে হচ্ছে পরিবারটা ভেঙে গেল।আমার মতো অনেকে বিভিন্ন পদায়নে ও বদলী জনিত কারনে এই হাসপাতাল থেকে একেএকে চলে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন,আমি কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে দালাল মুক্ত করে রুগীদের সকল প্রকার সেবা দেওয়ার জন্য যা যা প্রয়োজন তাই করেছি।বিশেষ করে রুগীরা সকল সেবা কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে যাতে পায় তার জন্য আমি কাজ করেছি।আরেকটি সংবাদ দিতে চাই সেটা হলো মাননীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি আমাকে আশ্বস্ত করেছেন যে, এই হাসপাতাল শীগ্রই ১ হাজার বেডের হাসপাতালে রুপান্তরিত হবে।

কুমেক হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও কুমিল্লা সদর আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য হাজী আকম বাহাউদ্দীন বাহার বলেন,আমি কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উন্নয়নের জন্য অনেক কাজ করেছি।ডাঃ মহিউদ্দিন আসার পর হাসপাতালের রক্ষণাবেক্ষণ অনেকদূর এগিয়ে গেছে।কুমিল্লার মানুষ এখন আর প্রাইভেট হাসপাতালে দৌড়াতে হয়না।কুমেক হাসপাতালে সব পাওয়া যায়।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

কুমেক হাসপাতালের চিত্র পাল্টে দেওয়ার নায়ক কে এই ডাঃ মহিউদ্দিন!

Update Time : ০৬:২০:৩৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৩

সোহাইবুল ইসলাম সোহাগ,কুমিল্লা

দুই বছর খানেক আগের কথা! ময়লা-আবর্জনা ও বর্জ্যের দুর্গন্ধে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটিতে টেকা যেত না।আর সেই পরিবেশ মাত্র ২ বছরে বদলে গেছে।

ঝকঝকে হয়ে উঠেছে হাসপাতালের ভেতর-বাহির। সবুজ ফুল-ফলের বাগান ও ৫৫টির অধিক ঔষধি গাছে ছেয়ে গেছে চারপাশ।বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তাব্যবস্থা।বসেছে সিসিটিভি ক্যামেরা।সেবা ভালো পাওয়া যায় বলে দূরদূরান্ত থেকে রোগী আসা বেড়েছে।যেখানে রুগীদের জন্য রয়েছে মাত্র ৫০০ সিট সেখানে রুগীর সংখ্যা দৈনিক রয়েছে ২ হাজারের অধিক।

স্বাভাবিকভাবেই কুমিল্লার রুগীদের ও উর্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে সুনাম কুড়িয়েছে হাসপাতালটি।এই চিত্র বলদে দেওয়ার নায়ক ডাঃ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন।

সেবার মান বৃদ্ধির অঙ্গিকারে গত ১৬ই জানুয়ারি ২০২১ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক পদে ডাঃ মোহাম্মদ মহিউদ্দীন যোগদান করেন।এরপর থেকে তিনি কুমিল্লা মেডিকেল হাসপাতালের চিত্র পাল্টে দিতে বেশী সময় ব্যয় করেননি।বছর খানেকের মধ্যে হাসপাতালের দালাল থেকে শুরু করে সেবার মান বৃদ্ধির জন্য কঠোর ভূমিকা পালন করতে দেন একেক বিচক্ষণতামূলক নির্দেশনা।

বিশেষ করে ডাঃ মোহাম্মদ মহিউদ্দিনের কঠোর নির্দেশনার কারনে বহির বিভাগের ডাক্তার থেকে শুরু করে সকল নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সময় মতো ডিউটি পালন করতে প্রস্তুত থাকতো।আর যার যার বিভাগের ডাক্তার,নার্স,কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সময় মতো তাদের কাজ সঠিকভাবে আঞ্জাম দিয়ে যেতো।

এমন ভূমিকা পালনে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্হ্য বিভাগের আস্থাভাজন ও সুদক্ষ- কর্মঠ,কর্মকর্তা হিসেবে সকলের নজরে আসেন।তিনি স্বাস্থ্যখাতে বিশেষ অবদানের জন্য ইন্দোনেশিয়া,সিঙ্গাপুর,তাঞ্জানিয়া সহ বিভিন্ন দেশে সরকারীভাবে সফর করার সুযোগসুবিধা লাভ করেন।

গত সোমবার (২৩ শে জানুয়ারি) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে ও রাষ্ট্রপতির আদেশে তিনি চট্রগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক পদে পদন্নোতি পান।

জানা যায়,ডাঃ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদানের মধ্য দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন।এরপর একেএকে তিনি পদায়ন পান।তিনি কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলা স্বাস্হ্য ও পরিবার পরিকল্পনার কর্মকর্তা,এরপর স্বাস্হ্য অধিদপ্তরের ঔষুধ প্রশাসনের পরিচালক,জেলা সদর কক্সবাজার হাসপাতালের পরিচালক ও কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক থেকে সবে পদন্নোতি পেয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে রাষ্ট্রপতির আদেশে তিনি চট্রগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক হন।

ডাঃ মোহাম্মদ মহিউদ্দীন চট্রগ্রাম জেলার সাতকানিয়ার পিতা মরুহুম আবুল হোসেন ও মাতা আনোয়ারা বেগমের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন।পারিবারিক জীবনে স্ত্রী ও ২ ছেলেকে নিয়ে সংসারজীবন অতিবাহিত করছেন।তিনি চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজের ২৫ তম ব্যাচ ও ১৩ তম বিসিএস।তিনি চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হতে এমপিএইচ ডিগ্রী অর্জন করেন।

কুমেক হাসপাতালের নতুন পরিচালক ডাঃ মোহাম্মদ আজিজুর রহমান সিদ্দিকী বলেন,আমি আরো কিছুদিন পর হাসপাতালে যোগদান দিবো।আমি যখন চট্টগ্রামে সিভিল সার্জনের দায়িত্বে ছিলাম তখন থেকে ওনার সাথে আমার খুব ভালো সম্পর্ক ছিলো।তখন থেকে দেখতাম ওনি হাসপাতালকে রাঙ্গিয়ে তুলতে দারুন দারুন উদ্যোগ গ্রহন করতো।ওনার মাঝে ওই পলিসিটি আছে।আর তিনি কুমিল্লা মেডিকেল হাসপাতালে আসার পর হাসপাতালকে সুন্দর একটি অবস্থানে নিয়ে গেছে।যার কারনে হাসপাতালে আমার তেমন কষ্ট করতে হবেনা।আমি ওনার প্রতি কৃতজ্ঞ।

ডাঃ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন,এই হাসপাতালের জন্য সত্যি সত্যিই কষ্ট হচ্ছে।সকলে হাসপাতালটাকে আলোকিত করে রেখেছিলো।সবাই যেন একটা পরিবার ছিলাম। মনে হচ্ছে পরিবারটা ভেঙে গেল।আমার মতো অনেকে বিভিন্ন পদায়নে ও বদলী জনিত কারনে এই হাসপাতাল থেকে একেএকে চলে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন,আমি কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে দালাল মুক্ত করে রুগীদের সকল প্রকার সেবা দেওয়ার জন্য যা যা প্রয়োজন তাই করেছি।বিশেষ করে রুগীরা সকল সেবা কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে যাতে পায় তার জন্য আমি কাজ করেছি।আরেকটি সংবাদ দিতে চাই সেটা হলো মাননীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি আমাকে আশ্বস্ত করেছেন যে, এই হাসপাতাল শীগ্রই ১ হাজার বেডের হাসপাতালে রুপান্তরিত হবে।

কুমেক হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও কুমিল্লা সদর আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য হাজী আকম বাহাউদ্দীন বাহার বলেন,আমি কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উন্নয়নের জন্য অনেক কাজ করেছি।ডাঃ মহিউদ্দিন আসার পর হাসপাতালের রক্ষণাবেক্ষণ অনেকদূর এগিয়ে গেছে।কুমিল্লার মানুষ এখন আর প্রাইভেট হাসপাতালে দৌড়াতে হয়না।কুমেক হাসপাতালে সব পাওয়া যায়।