কুবিতে ‘আজকের নৃবিজ্ঞান’ শীর্ষক সেমিনার

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৯:৩৩:১২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • / ২২৯ Time View

সাঈদ হাসান, কুবি:

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) এনথ্রোপলজি সোসাইটির উদ্যোগে আজকের নৃবিজ্ঞান: বাংলাদেশের জন্য পথ, প্রতিশ্রুতি এবং প্রস্তাবনা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সামাজিক বিজ্ঞান ও কলা ও মানবিক অনুষদের ৫০১ নম্বর রুমে সোসাইটির মডারেটর ও ছাত্র উপদেষ্টা ফরিদ উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক আহমেদের সঞ্চালনায় আলোচনাটি অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক হাসান আল শাফি ও আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, একই বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. এস এম আরিফ মাহমুদ।

অনুষ্ঠানে আলোচকবৃন্দরা বাংলাদেশে নৃবিজ্ঞান চর্চার শুরুর দিককার ইতিহাস তুলে ধরেন পাশাপাশি বাংলাদেশে নৃবিজ্ঞানের কর্মক্ষেত্র ও ভবিষ্যত নিয়ে কথা বলেন।

এসময় প্রধান আলোচক অধ্যাপক শাফি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের প্রথম চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে নাজমুল করীমের উদ্ধৃতি দিয়ে বাংলাদেশে নৃবিজ্ঞান চর্চার প্রথম প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ফরাসী নৃবিজ্ঞানী লেভি স্ট্রস ইউনেস্কো বিশেষজ্ঞ হিসেবে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সফরে আসেন। প্রফেসর স্ট্রস দেশের মানব সম্পদ উন্নয়নের লক্ষ্যে, এই অঞ্চলের অপার সম্ভাবনাময় প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহারের জন্য সুষ্ঠু উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণের উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম সফরে যান এবং এই অঞ্চলকে নৃতাত্বিকদের জন্য জীবন্ত স্বর্গ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। একই সাথে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জ্ঞান চর্চার বিষয় হিসেবে নৃবিজ্ঞান বিভাগ খোলার জন্য জোর সুপারিশ করেন। কিন্তু পাকিস্তান সরকার নৃবিজ্ঞান বিভাগ না খুলে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ খোলার অনুমতি প্রদান করেন।

এরপর স্বতন্ত্রভাবে নৃবিজ্ঞান বিভাগ খোলার পথচলা কিছু কাল থেমে থাকলেও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৮৫ সালে পূর্ণাঙ্গ বিভাগ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় যা বর্তমানে বিভিন্ন পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো হয়।

সেমিনারে এ অধ্যাপক বাংলাদেশে নৃবিজ্ঞান চর্চার ইতিহাসের পাশাপাশি গ্রাজুয়েটদের গবেষণা ও কর্মক্ষেত্রের বৈচিত্রতা, বাংলাদেশের মানুষের কর্মক্ষেত্রের পরিবর্তন, সরকারের উন্নয়ন বাজেট, উন্নয়ন সংস্থাগুলোর পরিবর্তিত মনোভাবসহ ভবিষ্যতে নৃবিজ্ঞানের পাঠ্যসূচি কেমন হওয়া উচিত সেসব বিষয়েও কথা বলেন।

এসময় অধ্যাপক ড. এস এম আরিফ মাহমুদ শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্যের পাশাপাশি ইউজিসি প্রণীত নতুন পাঠ্যসূচির কথা বলেন, যেখানে ৭০ শতাংশ একাডেমিক ২০ শতাংশ মার্কেট বিষয়ক ও ১০ শতাংশ অন্যান্য বিষয় যুক্ত থাকবে।

অনুষ্ঠানে এছাড়াও নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হীরামনি আক্তার, প্রভাষক সালমা আক্তার উর্মি, তহমিনা খাতুন ও অমিত দত্ত্বসহ বিভাগের বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

Please Share This Post in Your Social Media

কুবিতে ‘আজকের নৃবিজ্ঞান’ শীর্ষক সেমিনার

Update Time : ০৯:৩৩:১২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২

সাঈদ হাসান, কুবি:

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) এনথ্রোপলজি সোসাইটির উদ্যোগে আজকের নৃবিজ্ঞান: বাংলাদেশের জন্য পথ, প্রতিশ্রুতি এবং প্রস্তাবনা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সামাজিক বিজ্ঞান ও কলা ও মানবিক অনুষদের ৫০১ নম্বর রুমে সোসাইটির মডারেটর ও ছাত্র উপদেষ্টা ফরিদ উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক আহমেদের সঞ্চালনায় আলোচনাটি অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক হাসান আল শাফি ও আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, একই বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. এস এম আরিফ মাহমুদ।

অনুষ্ঠানে আলোচকবৃন্দরা বাংলাদেশে নৃবিজ্ঞান চর্চার শুরুর দিককার ইতিহাস তুলে ধরেন পাশাপাশি বাংলাদেশে নৃবিজ্ঞানের কর্মক্ষেত্র ও ভবিষ্যত নিয়ে কথা বলেন।

এসময় প্রধান আলোচক অধ্যাপক শাফি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের প্রথম চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে নাজমুল করীমের উদ্ধৃতি দিয়ে বাংলাদেশে নৃবিজ্ঞান চর্চার প্রথম প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ফরাসী নৃবিজ্ঞানী লেভি স্ট্রস ইউনেস্কো বিশেষজ্ঞ হিসেবে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সফরে আসেন। প্রফেসর স্ট্রস দেশের মানব সম্পদ উন্নয়নের লক্ষ্যে, এই অঞ্চলের অপার সম্ভাবনাময় প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহারের জন্য সুষ্ঠু উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণের উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম সফরে যান এবং এই অঞ্চলকে নৃতাত্বিকদের জন্য জীবন্ত স্বর্গ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। একই সাথে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জ্ঞান চর্চার বিষয় হিসেবে নৃবিজ্ঞান বিভাগ খোলার জন্য জোর সুপারিশ করেন। কিন্তু পাকিস্তান সরকার নৃবিজ্ঞান বিভাগ না খুলে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ খোলার অনুমতি প্রদান করেন।

এরপর স্বতন্ত্রভাবে নৃবিজ্ঞান বিভাগ খোলার পথচলা কিছু কাল থেমে থাকলেও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৮৫ সালে পূর্ণাঙ্গ বিভাগ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় যা বর্তমানে বিভিন্ন পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো হয়।

সেমিনারে এ অধ্যাপক বাংলাদেশে নৃবিজ্ঞান চর্চার ইতিহাসের পাশাপাশি গ্রাজুয়েটদের গবেষণা ও কর্মক্ষেত্রের বৈচিত্রতা, বাংলাদেশের মানুষের কর্মক্ষেত্রের পরিবর্তন, সরকারের উন্নয়ন বাজেট, উন্নয়ন সংস্থাগুলোর পরিবর্তিত মনোভাবসহ ভবিষ্যতে নৃবিজ্ঞানের পাঠ্যসূচি কেমন হওয়া উচিত সেসব বিষয়েও কথা বলেন।

এসময় অধ্যাপক ড. এস এম আরিফ মাহমুদ শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্যের পাশাপাশি ইউজিসি প্রণীত নতুন পাঠ্যসূচির কথা বলেন, যেখানে ৭০ শতাংশ একাডেমিক ২০ শতাংশ মার্কেট বিষয়ক ও ১০ শতাংশ অন্যান্য বিষয় যুক্ত থাকবে।

অনুষ্ঠানে এছাড়াও নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হীরামনি আক্তার, প্রভাষক সালমা আক্তার উর্মি, তহমিনা খাতুন ও অমিত দত্ত্বসহ বিভাগের বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।