এমসি কলেজে ধর্ষণ : ১৬৭ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন, শুনানি ১ নভেম্বর

  • Update Time : ০৭:৪৬:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ অক্টোবর ২০২০
  • / 161

নিজস্ব প্রতিবেদক:

সিলেটের এমসি কলেজে গৃহবধূকে গণধর্ষণের ঘটনায় হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত যৌথ অনুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদন নিয়ে শুনানির জন্য ১ নভেম্বর দিন নির্ধারণ করেছেন আদালত।

মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে ১৬৭ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হয়। এরপর আদালত পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক করে আদেশ দেন।

এ সময় সংশ্লিষ্ট আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

আজ আদালত বলেছেন, ‘আমরা প্রতিবেদনটি সকাল ১১টায় হাতে পেয়েছি। ১৬৭ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন সম্পূর্ণ দেখার সুযোগ বা পড়ে শেষ করা যায়নি। তাই এ বিষয়ে আগামী ১ নভেম্বর শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।’

এর আগে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হাফিজ মোহাম্মদ মেসবাহ উদ্দিন গণধর্ষণের ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষের গাফিলতি আছে কি-না, তা খুঁজে বের করতে বা জানতে একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করার আরজি জানান। পরে গত ২৯ সেপ্টেম্বর গণধর্ষণের ঘটনা অনুসন্ধানে যৌথ কমিটি গঠন করে আদেশ দেন হাইকোর্ট।

কমিটিতে সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এবং অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনারকে এই অনুসন্ধানের নির্দেশ দেয়া হয়। একই সঙ্গে, এ বিষয়ে অনুসন্ধান শেষ করে ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য বলা হয়। পাশাপাশি অনুসন্ধানকালে কমিটির সদস্যদের নিরাপত্তা ও তাদের সহযোগিতা করতে পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দেয়া হয়।

এছাড়া গৃহবধূ গণধর্ষণের ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে তাদের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

সিলেটের এমসি কলেজে স্বামীর কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গৃহবধূ গণধর্ষণের ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় ব্যবস্থা চেয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন হাইকোর্টের নজরে আনেন আইনজীবী মোহাম্মদ মেসবাহ উদ্দিন। আদালত এ বিষয়ে আইনজীবীকে আবেদন দাখিল করতে বলেন। পরে এ ঘটনায় তিনি প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে আদালতে আবেদন জানান এবং এর শুনানি করেন।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে এমসি কলেজে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হন এক গৃহবধূ। রাত সাড়ে ৮টার দিকে স্বামীর কাছ থেকে ওই গৃহবধূকে জোর করে তুলে নিয়ে ছাত্রাবাসের সামনে প্রাইভেটকারের মধ্যেই পালাক্রমে ধর্ষণ করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় কলেজের সামনে তার স্বামীকে আটকে রাখেন দুজন।

এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে শাহপরান থানায় মামলা করেন। মামলায় ছাত্রলীগের ছয় নেতাকর্মীসহ অজ্ঞাত তিনজনকে আসামি করা হয়।

গণধর্ষণে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীরা সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক রণজিৎ সরকারের অনুসারী।

এ ঘটনায় র‌্যাব ও পুলিশ এজাহারভুক্ত ছয় আসামিসহ সন্দেহভাজন আরও দুজনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার মোট আটজনের সবাইকে ধাপে ধাপে পাঁচদিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। পরে রিমান্ড শেষে আটজনই ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

এমসি কলেজে ধর্ষণ : ১৬৭ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন, শুনানি ১ নভেম্বর

Update Time : ০৭:৪৬:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ অক্টোবর ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক:

সিলেটের এমসি কলেজে গৃহবধূকে গণধর্ষণের ঘটনায় হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত যৌথ অনুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদন নিয়ে শুনানির জন্য ১ নভেম্বর দিন নির্ধারণ করেছেন আদালত।

মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে ১৬৭ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হয়। এরপর আদালত পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক করে আদেশ দেন।

এ সময় সংশ্লিষ্ট আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

আজ আদালত বলেছেন, ‘আমরা প্রতিবেদনটি সকাল ১১টায় হাতে পেয়েছি। ১৬৭ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন সম্পূর্ণ দেখার সুযোগ বা পড়ে শেষ করা যায়নি। তাই এ বিষয়ে আগামী ১ নভেম্বর শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।’

এর আগে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হাফিজ মোহাম্মদ মেসবাহ উদ্দিন গণধর্ষণের ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষের গাফিলতি আছে কি-না, তা খুঁজে বের করতে বা জানতে একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করার আরজি জানান। পরে গত ২৯ সেপ্টেম্বর গণধর্ষণের ঘটনা অনুসন্ধানে যৌথ কমিটি গঠন করে আদেশ দেন হাইকোর্ট।

কমিটিতে সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এবং অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনারকে এই অনুসন্ধানের নির্দেশ দেয়া হয়। একই সঙ্গে, এ বিষয়ে অনুসন্ধান শেষ করে ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য বলা হয়। পাশাপাশি অনুসন্ধানকালে কমিটির সদস্যদের নিরাপত্তা ও তাদের সহযোগিতা করতে পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দেয়া হয়।

এছাড়া গৃহবধূ গণধর্ষণের ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে তাদের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

সিলেটের এমসি কলেজে স্বামীর কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গৃহবধূ গণধর্ষণের ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় ব্যবস্থা চেয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন হাইকোর্টের নজরে আনেন আইনজীবী মোহাম্মদ মেসবাহ উদ্দিন। আদালত এ বিষয়ে আইনজীবীকে আবেদন দাখিল করতে বলেন। পরে এ ঘটনায় তিনি প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে আদালতে আবেদন জানান এবং এর শুনানি করেন।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে এমসি কলেজে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হন এক গৃহবধূ। রাত সাড়ে ৮টার দিকে স্বামীর কাছ থেকে ওই গৃহবধূকে জোর করে তুলে নিয়ে ছাত্রাবাসের সামনে প্রাইভেটকারের মধ্যেই পালাক্রমে ধর্ষণ করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় কলেজের সামনে তার স্বামীকে আটকে রাখেন দুজন।

এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে শাহপরান থানায় মামলা করেন। মামলায় ছাত্রলীগের ছয় নেতাকর্মীসহ অজ্ঞাত তিনজনকে আসামি করা হয়।

গণধর্ষণে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীরা সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক রণজিৎ সরকারের অনুসারী।

এ ঘটনায় র‌্যাব ও পুলিশ এজাহারভুক্ত ছয় আসামিসহ সন্দেহভাজন আরও দুজনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার মোট আটজনের সবাইকে ধাপে ধাপে পাঁচদিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। পরে রিমান্ড শেষে আটজনই ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।