উৎসবমুখর পরিবেশে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০২:৫১:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ নভেম্বর ২০২২
  • / ২০১ Time View

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনায় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন করা হয়েছে।

শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) এ বছর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাকার্যক্রমের ৩২ বছর পূর্ণ করে ৩৩ বছরে পদার্পণ করেছে।

উৎসবমুখর পরিবেশে সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে এ উপলক্ষে প্রথমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল কালজয়ী মুজিব ও পরে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়। এরপর হাদী চত্বরে আনুষ্ঠানিকভাবে বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন।

শোভাযাত্রা শুরুর প্রাক্কালে এক শুভেচ্ছা বক্তব্যে তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আন্দোলন-সংগ্রাম থেকে শুরু করে এ বিশ্ববিদ্যালয় বিকাশে নানাভাবে যারা অবদান রেখেছেন তাদের প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।

উপাচার্য বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরলস প্রচেষ্টায় দেশ-বিদেশে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সাফল্যগাঁথা তৈরিতে সক্ষম হয়েছে। তিনি তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।

তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন স্লোগান নির্ধারিত হয়েছে। নতুন স্লোগানের ধারায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বমানে উন্নীত করতে বেশকিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে বিশ্বমানের ওবিই কারিকুলায় নিজেদের মানিয়ে নেওয়া, সব বিষয়ে গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি করা, ই-নথি চালু করা, বিশ্ববিদ্যালয়কে ডিজিটাইজেশনের আওতায় আনা। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়কে গ্রিন ক্যাম্পাসে পরিণত করতে নানা উদ্যোগ বাস্তবায়িত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি এ কাজে সফলতার জন্য সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।

উপাচার্য বলেন, দেশে বধ্যভূমির ওপর স্থাপিত একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ১৯৯১ সালে শিক্ষা কার্যক্রমের শুরুতে প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা এ ক্যাম্পাসকে ছাত্ররাজনীতিমুক্ত রাখার যে অঙ্গীকার হয়েছিল তা গত ৩২ বছর ধরে পালিত হচ্ছে। এটা অনন্য নজির। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার মান বিশ্বমানে পৌঁছানো, আন্তর্জাতিক র‌্যাংকিংয়ে মর্যাদাপূর্ণ অবস্থান তৈরি এবং নতুন নতুন উদ্ভাবনার মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় নতুন লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এর মধ্যে গবেষণায় সবিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। তিনি আজকের এ উৎসবমুখর পরিবেশে উপস্থিত সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান এবং ভবিষ্যতেও সহযোগিতা কামনা করেন।

পরে শোভাযাত্রাটি হাদী চত্বর থেকে শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ প্রশাসন ভবন ঘুরে পুনরায় হাদী চত্বর হয়ে কটকা স্মৃতিস্তম্ভ, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি ভবনের সামনে দিয়ে অদম্য বাংলা হয়ে হাদী চত্বরে এসে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা, ট্রেজারার অধ্যক্ষ অমিত রায় চৌধুরী, বিভিন্ন স্কুলের ডিন, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত), ডিসিপ্লিন প্রধান, বিভাগীয় প্রধান, প্রভোস্ট, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করেন।

পরে বর্তমান মেডিকেল সেন্টার সংলগ্ন স্থানে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে গ্রিন ক্যাম্পাসে পরিণত করতে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্পের উদ্বোধন করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন। এ সময় তিনি বলেন, আমরা যেমন নিজেদের বাড়িতে থাকার যেভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখি সেই মানসিকতা নিয়ে আমাদের কর্মস্থল এবং বিশেষ করে এ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে যেন আমরা সবাই পরিচ্ছন্ন রাখি। তিনি এ সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প বাস্তবায়নে স্থাপত্য ডিসিপ্লিনের নকশা, প্রকল্পের কনসালটেন্ট এবং বাস্তবায়নে প্রকৌশল ও এস্টেট শাখাকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান। সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্পের ডাস্টবিনসহ নকশা প্রণয়ন করেছেন স্থাপত্য ডিসিপ্লিনের শিক্ষক অন্তু দাশ।

এরপর উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার্স কল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে কেক কাটেন। তিনি উৎসবমুখর পরিবেশে কেক কাটা অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় পরিষদকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানান। এ সময় উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা, পরিষদের সভাপতি এস এম মনিরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক দীপক চন্দ্র মণ্ডল বক্তব্য দেন।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে দোয়া মাহফিল ও মন্দিরে প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। দিনের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল- মুক্তমঞ্চে বিভাগ/ডিসিপ্লিনসমূহের গত বছরের অর্জন ও আগামী বছরের পরিকল্পনা উপস্থাপন, বিগত বছরের কৃতিত্ব অর্জনকারী শিক্ষার্থী ও সংগঠনমূহকে সম্মাননা দেওয়া, স্মরণিকা প্রকাশ, বিকেল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দিবসটি উপলক্ষে ক্যাম্পাসের মেইন গেট, রাস্তা, শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ ভবন, উপাচার্যের বাসভবন, ক্যাফেটেরিয়া, একাডেমিক ভবন ও হলসমূহ আলোকসজ্জা করা হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

উৎসবমুখর পরিবেশে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন

Update Time : ০২:৫১:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ নভেম্বর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনায় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন করা হয়েছে।

শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) এ বছর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাকার্যক্রমের ৩২ বছর পূর্ণ করে ৩৩ বছরে পদার্পণ করেছে।

উৎসবমুখর পরিবেশে সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে এ উপলক্ষে প্রথমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল কালজয়ী মুজিব ও পরে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়। এরপর হাদী চত্বরে আনুষ্ঠানিকভাবে বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন।

শোভাযাত্রা শুরুর প্রাক্কালে এক শুভেচ্ছা বক্তব্যে তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আন্দোলন-সংগ্রাম থেকে শুরু করে এ বিশ্ববিদ্যালয় বিকাশে নানাভাবে যারা অবদান রেখেছেন তাদের প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।

উপাচার্য বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরলস প্রচেষ্টায় দেশ-বিদেশে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সাফল্যগাঁথা তৈরিতে সক্ষম হয়েছে। তিনি তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।

তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন স্লোগান নির্ধারিত হয়েছে। নতুন স্লোগানের ধারায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বমানে উন্নীত করতে বেশকিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে বিশ্বমানের ওবিই কারিকুলায় নিজেদের মানিয়ে নেওয়া, সব বিষয়ে গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি করা, ই-নথি চালু করা, বিশ্ববিদ্যালয়কে ডিজিটাইজেশনের আওতায় আনা। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়কে গ্রিন ক্যাম্পাসে পরিণত করতে নানা উদ্যোগ বাস্তবায়িত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি এ কাজে সফলতার জন্য সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।

উপাচার্য বলেন, দেশে বধ্যভূমির ওপর স্থাপিত একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ১৯৯১ সালে শিক্ষা কার্যক্রমের শুরুতে প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা এ ক্যাম্পাসকে ছাত্ররাজনীতিমুক্ত রাখার যে অঙ্গীকার হয়েছিল তা গত ৩২ বছর ধরে পালিত হচ্ছে। এটা অনন্য নজির। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার মান বিশ্বমানে পৌঁছানো, আন্তর্জাতিক র‌্যাংকিংয়ে মর্যাদাপূর্ণ অবস্থান তৈরি এবং নতুন নতুন উদ্ভাবনার মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় নতুন লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এর মধ্যে গবেষণায় সবিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। তিনি আজকের এ উৎসবমুখর পরিবেশে উপস্থিত সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান এবং ভবিষ্যতেও সহযোগিতা কামনা করেন।

পরে শোভাযাত্রাটি হাদী চত্বর থেকে শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ প্রশাসন ভবন ঘুরে পুনরায় হাদী চত্বর হয়ে কটকা স্মৃতিস্তম্ভ, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি ভবনের সামনে দিয়ে অদম্য বাংলা হয়ে হাদী চত্বরে এসে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা, ট্রেজারার অধ্যক্ষ অমিত রায় চৌধুরী, বিভিন্ন স্কুলের ডিন, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত), ডিসিপ্লিন প্রধান, বিভাগীয় প্রধান, প্রভোস্ট, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করেন।

পরে বর্তমান মেডিকেল সেন্টার সংলগ্ন স্থানে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে গ্রিন ক্যাম্পাসে পরিণত করতে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্পের উদ্বোধন করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন। এ সময় তিনি বলেন, আমরা যেমন নিজেদের বাড়িতে থাকার যেভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখি সেই মানসিকতা নিয়ে আমাদের কর্মস্থল এবং বিশেষ করে এ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে যেন আমরা সবাই পরিচ্ছন্ন রাখি। তিনি এ সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প বাস্তবায়নে স্থাপত্য ডিসিপ্লিনের নকশা, প্রকল্পের কনসালটেন্ট এবং বাস্তবায়নে প্রকৌশল ও এস্টেট শাখাকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান। সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্পের ডাস্টবিনসহ নকশা প্রণয়ন করেছেন স্থাপত্য ডিসিপ্লিনের শিক্ষক অন্তু দাশ।

এরপর উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার্স কল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে কেক কাটেন। তিনি উৎসবমুখর পরিবেশে কেক কাটা অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় পরিষদকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানান। এ সময় উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা, পরিষদের সভাপতি এস এম মনিরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক দীপক চন্দ্র মণ্ডল বক্তব্য দেন।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে দোয়া মাহফিল ও মন্দিরে প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। দিনের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল- মুক্তমঞ্চে বিভাগ/ডিসিপ্লিনসমূহের গত বছরের অর্জন ও আগামী বছরের পরিকল্পনা উপস্থাপন, বিগত বছরের কৃতিত্ব অর্জনকারী শিক্ষার্থী ও সংগঠনমূহকে সম্মাননা দেওয়া, স্মরণিকা প্রকাশ, বিকেল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দিবসটি উপলক্ষে ক্যাম্পাসের মেইন গেট, রাস্তা, শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ ভবন, উপাচার্যের বাসভবন, ক্যাফেটেরিয়া, একাডেমিক ভবন ও হলসমূহ আলোকসজ্জা করা হয়।