ইউক্রেনের ৪ অঞ্চলে ‘গণভোট’ শুরু হচ্ছে আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ১০:২৯:৫১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • / ১৭৮ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

রাশিয়া-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী ও মস্কোর নিয়ন্ত্রণে থাকা ইউক্রেনের চারটি অঞ্চলে গণভোটের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হতে এই কথিত ভোটের আয়োজন। পশ্চিমা দেশগুলো বিষয়টির তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ইউক্রেনে রাশিয়া-সমর্থিত নেতারা ভোটের পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। এটি পশ্চিমাদের কাছে একটি বড় চ্যালেঞ্জ যা যুদ্ধকে আরও ভয়াবহ করে তুলতে পারে। তবে এই গণভোট প্রত্যাখ্যান করছে ইউক্রেন। এই ভোটের ফলাফলকে কখনোই তারা স্বীকৃতি দেবে না বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।

এর আগে রাশিয়া-সমর্থিতরা শুক্রবার থেকে মঙ্গলবার (২৩ থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর) লুহানস্ক, দোনেৎস্ক, খেরসন এবং জাপোরিঝিয়া প্রদেশে গণভোটের ঘোষণা করে। যা ইউক্রেনের প্রায় ১৫ শতাংশ ভূখণ্ড বা হাঙ্গেরির আয়তনের সমান এলাকার প্রতিনিধিত্ব করছে।

সম্প্রতি কয়েক মাস ধরে রাশিয়ার আগ্রাসন কিছুটা ধীর গতির এবং ইউক্রেন উত্তর-পূর্বের কিছু অংশ পুনরুদ্ধার করেছে। এখন পূর্ব ও দক্ষিণে রাশিয়ার সমর্থিত কর্মকর্তারা বলছেন যে তারা রাশিয়ায় যোগদানের বিষয়ে ভোট চান।

ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনে গত ৭ মাস ধরে যুদ্ধ চলছে। দু’দেশের তীব্র লড়াইয়ে অনেক বেসামরিক লোকের প্রাণ গেছে। নিহত হয়েছেন নারী ও শিশুরাও। লাখ লাখ ঘরবাড়ি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসন আর পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার ফলে বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক গোলযোগ শুরু হয়েছে। বেড়েছে সব খাদ্যপণ্যের দাম।

গণভোটের জন্য কয়েক মাস ধরে মস্কোপন্থি কর্তৃপক্ষের মধ্যে আলোচনা হচ্ছিল। কিন্তু ইউক্রেনের সম্প্রতি বেশ কয়েকটি এলাকা পুনর্দখলের জন্য তাদের এই আয়োজন দ্রুত হচ্ছে।

এদিকে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন চলতি সপ্তাহে ইউক্রেনে যুদ্ধের মাঠে আরও ৩ লাখ সেনা নামানোর ঘোষণা দিয়েছেন।

এই গণভোটের পক্ষে রাশিয়ার যুক্তি যে এটি এই অঞ্চলের মানুষের জন্য তাদের মতামত প্রকাশের একটি বড় সুযোগ।

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ এর আগে বলেন, ‘অপারেশনের শুরু থেকেই … আমরা বলছিলাম যে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের জনগণকে তাদের ভাগ্য নির্ধারণ করা উচিত’।

এর আগে ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখলের জন্য গণভোটের আয়োজন করে সমালোচনার মধ্যে পড়ে রাশিয়া।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বুধবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বলেন, রাশিয়ার ‘ভৌগোলিক অখণ্ডতা’ রক্ষায় প্রয়োজনে হাতে থাকা সব ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করবে।

রাশিয়ার ভূখণ্ড দখল করা একটি অপরাধ যার কারণে আত্মরক্ষার জন্য ইউক্রেনে নিজেদের দখলে থাকা এলাকাগুলো রক্ষায় মস্কো পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতেও পিছপা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ। টেলিগ্রামে এ হুঁশিয়ারি দেন তিনি। দিমিত্রি মেদভেদেভ ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি আরও বলেন, এই গণভোটকে কিয়েভ ও পশ্চিমারা ভয় পায়।

শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া ভোটে রাশিয়ার পক্ষে ফলাফল অনিবার্য বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০১৪ সালে ক্রিমিয়ার গণভোটে কারচুপি হয় বলে বিষয়টি আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচিত। সেখানে আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়ার সঙ্গে সংযুক্তির পক্ষে ৯৭ শতাংশ ভোট পড়েছিল।

সূত্র: রয়টার্স

Please Share This Post in Your Social Media

ইউক্রেনের ৪ অঞ্চলে ‘গণভোট’ শুরু হচ্ছে আজ

Update Time : ১০:২৯:৫১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

রাশিয়া-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী ও মস্কোর নিয়ন্ত্রণে থাকা ইউক্রেনের চারটি অঞ্চলে গণভোটের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হতে এই কথিত ভোটের আয়োজন। পশ্চিমা দেশগুলো বিষয়টির তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ইউক্রেনে রাশিয়া-সমর্থিত নেতারা ভোটের পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। এটি পশ্চিমাদের কাছে একটি বড় চ্যালেঞ্জ যা যুদ্ধকে আরও ভয়াবহ করে তুলতে পারে। তবে এই গণভোট প্রত্যাখ্যান করছে ইউক্রেন। এই ভোটের ফলাফলকে কখনোই তারা স্বীকৃতি দেবে না বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।

এর আগে রাশিয়া-সমর্থিতরা শুক্রবার থেকে মঙ্গলবার (২৩ থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর) লুহানস্ক, দোনেৎস্ক, খেরসন এবং জাপোরিঝিয়া প্রদেশে গণভোটের ঘোষণা করে। যা ইউক্রেনের প্রায় ১৫ শতাংশ ভূখণ্ড বা হাঙ্গেরির আয়তনের সমান এলাকার প্রতিনিধিত্ব করছে।

সম্প্রতি কয়েক মাস ধরে রাশিয়ার আগ্রাসন কিছুটা ধীর গতির এবং ইউক্রেন উত্তর-পূর্বের কিছু অংশ পুনরুদ্ধার করেছে। এখন পূর্ব ও দক্ষিণে রাশিয়ার সমর্থিত কর্মকর্তারা বলছেন যে তারা রাশিয়ায় যোগদানের বিষয়ে ভোট চান।

ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনে গত ৭ মাস ধরে যুদ্ধ চলছে। দু’দেশের তীব্র লড়াইয়ে অনেক বেসামরিক লোকের প্রাণ গেছে। নিহত হয়েছেন নারী ও শিশুরাও। লাখ লাখ ঘরবাড়ি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসন আর পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার ফলে বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক গোলযোগ শুরু হয়েছে। বেড়েছে সব খাদ্যপণ্যের দাম।

গণভোটের জন্য কয়েক মাস ধরে মস্কোপন্থি কর্তৃপক্ষের মধ্যে আলোচনা হচ্ছিল। কিন্তু ইউক্রেনের সম্প্রতি বেশ কয়েকটি এলাকা পুনর্দখলের জন্য তাদের এই আয়োজন দ্রুত হচ্ছে।

এদিকে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন চলতি সপ্তাহে ইউক্রেনে যুদ্ধের মাঠে আরও ৩ লাখ সেনা নামানোর ঘোষণা দিয়েছেন।

এই গণভোটের পক্ষে রাশিয়ার যুক্তি যে এটি এই অঞ্চলের মানুষের জন্য তাদের মতামত প্রকাশের একটি বড় সুযোগ।

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ এর আগে বলেন, ‘অপারেশনের শুরু থেকেই … আমরা বলছিলাম যে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের জনগণকে তাদের ভাগ্য নির্ধারণ করা উচিত’।

এর আগে ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখলের জন্য গণভোটের আয়োজন করে সমালোচনার মধ্যে পড়ে রাশিয়া।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বুধবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বলেন, রাশিয়ার ‘ভৌগোলিক অখণ্ডতা’ রক্ষায় প্রয়োজনে হাতে থাকা সব ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করবে।

রাশিয়ার ভূখণ্ড দখল করা একটি অপরাধ যার কারণে আত্মরক্ষার জন্য ইউক্রেনে নিজেদের দখলে থাকা এলাকাগুলো রক্ষায় মস্কো পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতেও পিছপা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ। টেলিগ্রামে এ হুঁশিয়ারি দেন তিনি। দিমিত্রি মেদভেদেভ ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি আরও বলেন, এই গণভোটকে কিয়েভ ও পশ্চিমারা ভয় পায়।

শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া ভোটে রাশিয়ার পক্ষে ফলাফল অনিবার্য বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০১৪ সালে ক্রিমিয়ার গণভোটে কারচুপি হয় বলে বিষয়টি আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচিত। সেখানে আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়ার সঙ্গে সংযুক্তির পক্ষে ৯৭ শতাংশ ভোট পড়েছিল।

সূত্র: রয়টার্স