আজ ভাই ফোঁটা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০১:১৯:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ নভেম্বর ২০২১
  • / ২৩৯ Time View

পাপ্পু কুমার:

ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা, যমের দুয়ারে পড়ল কাঁটা।

যমুনা দেয় যমকে ফোঁটা, আমি দিই আমার ভাইকে ফোঁটা। যম যেমন হয় চিরজীবী, তেমন আমার ভাই যেন হয় চিরজীবী।’

সারাবছর ভাইবোনের খুনসুটি এইদিনে পরিপূন্ হয়।ভাই বোনের ভালোবাসা অটুর থাকে। সব বোনেরা ভাইয়ের দীর্ঘ পরমায়ু কামনার উদ্দেশ্যে এবং ভাই বোনের প্রীতির সম্পর্ক দৃঢ় করা রীতি এই ভাইফোঁটা। ভাইয়ের কপালে বোনের ফোঁটা, ধান দূর্বা-সহ শ্রদ্ধা এবং আশীর্বাদ বিনিময়, মিষ্টি মুখ এবং উপহার বিনিময়ের মধ্যে দিয়ে ভাই এবং বোন উভয়েরই দীর্ঘ আয়ু এবং মঙ্গল কামনাই এই উৎসবের মূল উদ্দেশ্য।

পুরানে সূর্য ও সংজ্ঞার সন্তান যম ও যমুনা। যমুনা নিজের ভাইয়ের কপালে ফোঁটা দিয়েছিলেন, তার পর থেকে এই উৎসব পালিত হতে শুরু করে।

কথিত আছে, যমুনা নিজের ভাই যমকে একাধিক বার নিজের বাড়িতে আমন্ত্রণ জানান। কিন্তু ব্যস্ততার কারণে ধর্মরাজ যম নিজের বোনের আমন্ত্রণ রক্ষার্থে যেতে পারতেন না। কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে বাড়ির দ্বারে নিজের ভাই যমকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে, খুশিতে আত্মহারা হয়ে যান যমুনা। প্রসন্নতা ও স্নেহের সঙ্গে সেই তিথিতে নিজের ভাইকে ফোঁটা দেন ও ভোজন করান যমুনা। এর পর যম যমুনাকে বর চাইতে বলেন। তখন, যমুনা ভাইয়ের কাছ থেকে প্রতিজ্ঞা নেন যে, প্রতি বছর তিনি কার্তিক শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়ায় যমীর বাড়িতে ভোজন গ্রহণ করতে আসবেন। পাশাপাশি এ-ও বর চান যে, এই তিথিতে যে বোন নিজের ভাইকে ফোঁটা দিয়ে ভোজন করাবে, তাঁর কখনও যমের ভয় থাকবে না। তার পর থেকেই ভাই ফোঁটার রীতি পালিত হয়ে আসছে।

আবার অন্য এক প্রচলিত পৌরাণিক ব্যাখ্যা অনুযায়ী, নরকাসুর দৈত্য বধের পর কৃষ্ণ গৃহে ফিরলে, বোন সুভদ্রা প্রদীপ জ্বেলে, ফুল, ফল, মিষ্টি দিয়ে তাঁকে অভ্যর্থনা জানান। এর পর কৃষ্ণের কপালে ফোঁটা দিয়ে তাঁকে মিষ্টি খেতে দেন সুভদ্রা।পাশাপাশি কৃষ্ণের আরও সহস্র বছর বেঁচে থাকার কামনা করেন। মনে করা হয়, তখন থেকেই ভাই ফোঁটার সূচনা।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

আজ ভাই ফোঁটা

Update Time : ০১:১৯:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ নভেম্বর ২০২১

পাপ্পু কুমার:

ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা, যমের দুয়ারে পড়ল কাঁটা।

যমুনা দেয় যমকে ফোঁটা, আমি দিই আমার ভাইকে ফোঁটা। যম যেমন হয় চিরজীবী, তেমন আমার ভাই যেন হয় চিরজীবী।’

সারাবছর ভাইবোনের খুনসুটি এইদিনে পরিপূন্ হয়।ভাই বোনের ভালোবাসা অটুর থাকে। সব বোনেরা ভাইয়ের দীর্ঘ পরমায়ু কামনার উদ্দেশ্যে এবং ভাই বোনের প্রীতির সম্পর্ক দৃঢ় করা রীতি এই ভাইফোঁটা। ভাইয়ের কপালে বোনের ফোঁটা, ধান দূর্বা-সহ শ্রদ্ধা এবং আশীর্বাদ বিনিময়, মিষ্টি মুখ এবং উপহার বিনিময়ের মধ্যে দিয়ে ভাই এবং বোন উভয়েরই দীর্ঘ আয়ু এবং মঙ্গল কামনাই এই উৎসবের মূল উদ্দেশ্য।

পুরানে সূর্য ও সংজ্ঞার সন্তান যম ও যমুনা। যমুনা নিজের ভাইয়ের কপালে ফোঁটা দিয়েছিলেন, তার পর থেকে এই উৎসব পালিত হতে শুরু করে।

কথিত আছে, যমুনা নিজের ভাই যমকে একাধিক বার নিজের বাড়িতে আমন্ত্রণ জানান। কিন্তু ব্যস্ততার কারণে ধর্মরাজ যম নিজের বোনের আমন্ত্রণ রক্ষার্থে যেতে পারতেন না। কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে বাড়ির দ্বারে নিজের ভাই যমকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে, খুশিতে আত্মহারা হয়ে যান যমুনা। প্রসন্নতা ও স্নেহের সঙ্গে সেই তিথিতে নিজের ভাইকে ফোঁটা দেন ও ভোজন করান যমুনা। এর পর যম যমুনাকে বর চাইতে বলেন। তখন, যমুনা ভাইয়ের কাছ থেকে প্রতিজ্ঞা নেন যে, প্রতি বছর তিনি কার্তিক শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়ায় যমীর বাড়িতে ভোজন গ্রহণ করতে আসবেন। পাশাপাশি এ-ও বর চান যে, এই তিথিতে যে বোন নিজের ভাইকে ফোঁটা দিয়ে ভোজন করাবে, তাঁর কখনও যমের ভয় থাকবে না। তার পর থেকেই ভাই ফোঁটার রীতি পালিত হয়ে আসছে।

আবার অন্য এক প্রচলিত পৌরাণিক ব্যাখ্যা অনুযায়ী, নরকাসুর দৈত্য বধের পর কৃষ্ণ গৃহে ফিরলে, বোন সুভদ্রা প্রদীপ জ্বেলে, ফুল, ফল, মিষ্টি দিয়ে তাঁকে অভ্যর্থনা জানান। এর পর কৃষ্ণের কপালে ফোঁটা দিয়ে তাঁকে মিষ্টি খেতে দেন সুভদ্রা।পাশাপাশি কৃষ্ণের আরও সহস্র বছর বেঁচে থাকার কামনা করেন। মনে করা হয়, তখন থেকেই ভাই ফোঁটার সূচনা।