অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রতিবাদে উত্তাল আর্জেন্টিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৪:৩৭:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ জুন ২০২৪
  • / 15

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

আর্জেন্টিনায় অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রতিবাদে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষের দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত
আর্জেন্টিনায় ডানপন্থি প্রেসিডেন্ট হাভিয়ার মিলেইর প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রতিবাদে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। আর বিক্ষোভ দমাতে কাঁদানে গ্যাস ও পেপার স্প্রে ছুড়েছেন নিরাপত্তাকর্মীরা। এ ঘটনায় অন্তত ১০ জনকে আটক করা হয়েছে। এতে আহত হয়েছেন নয়জন পুলিশ সদস্য।

বুধবার (১২ জুন) রাতে রাজধানী বুয়েন্স আয়ার্সে সংসদের উচ্চকক্ষ সিনেটের সামনে জড়ো হন বিক্ষোভকারীরা। ওই সময় তাদের সরিয়ে দিতে জলকামান এবং কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করা হয়।

হাজীদের সেবায় চালক বিহীন উড়ন্ত ট্যাক্সি চালু
আন্তর্জাতিক বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আর্জেন্টিনার ডানপন্থি প্রেসিডেন্ট হাভিয়ার মিলেই এই সংস্কারের মাধ্যমে দেশটির ভঙ্গুর অর্থনীতিকে জাগ্রত করতে চাচ্ছেন। এই সংস্কারের মাধ্যমে আর্জেন্টিনায় অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থা জারি করা হবে, সরকারি পেনসন ও শ্রম অধিকার কমিয়ে দেয়া হবে। প্রেসিডেন্ট মিলেই-র এই সংস্কার প্রস্তাবের বিরোধীতে করেছে দেশটির বিরোধীদল, শ্রম সংগঠন এবং সামাজিক সংস্থাগুলো।

এতে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে সাধারণ মানুষ। আর্জেন্টিনা সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে কংগ্রেসে বিতর্ক চলার সময় বাইরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় কংগ্রেস ভবনের বাইরে দুটি গাড়িতে আগুন দেন বিক্ষোভকারীরা। বিক্ষোভকারীরা বেড়া টপকে সেখানে ঢোকার চেষ্টা করলে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের ওপর পাথর ছুড়লে তারাও পেপার স্প্রে ছোড়ে বিক্ষোভ প্রতিহতের চেষ্টা চালায়। পেপার স্প্রের কারণে সাতজন বিক্ষোভকারীকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। তাদের মধ্যে পাঁচজনই আইন প্রণেতা। ঘটনাস্থলে আরও বেশ কয়েকজনকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। পরে রাতের বেলা ঢাল বহনকারী নিরাপত্তা কর্মকর্তারা মোটরসাইকেলে থাকা অন্যরা বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেন। এ সময় দুটি গাড়ি উল্টে দিয়ে আগুন দেয়া হয়। এর মধ্যে একটি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের গাড়িও রয়েছে।

এদিকে, প্রেসিডেন্ট হাভিয়ার মিলেইর অর্থনৈতিক সংস্কারের বিল নিয়ে কংগ্রেসের ভেতরে সিনেটররা তুমুল বিতর্ক করেছেন। তারা মূল বিলটি প্রত্যাখ্যান করেছেন। গত এপ্রিলে বিলে বড় পরিবর্তন এনেছিলেন পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের সদস্যরা। সেটার অনুমোদন দিয়েছেন সিনেটররাও।

অন্যদিকে, এক এক্স বার্তায় আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্টের দপ্তর জানিয়েছে, সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো লাঠি, পাথর, এমনকি গ্রেনেড নিয়ে বিক্ষোভে নেমেছেন। তাঁরা অভ্যুত্থান ঘটানোর চেষ্টায় আছেন।

প্রসঙ্গত, প্রেসিডেন্ট হাভিয়ার মিলেইর প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক সংস্কারে রয়েছে এক বছরের জন্য দেশটিতে অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা, কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোর কার্যক্রম গুটিয়ে নিতে প্রেসিডেন্ট মিলেইকে ক্ষমতা দেওয়া, রাষ্ট্রীয় উড়োজাহাজ সংস্থাসহ কয়েক ডজন সরকারি প্রতিষ্ঠানকে বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়া। এছাড়া ন্যূনতম অবসরকালীন ভাতা পাওয়ার সুযোগ সীমিত করা, শিক্ষানবিশকালের মেয়াদ বাড়িয়ে শ্রম অধিকার দুর্বল করা হয়েছে প্রেসিডেন্ট হাভিয়ার মিলেইর প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক সংস্কারে এমনটাই দাবি বামপন্থীদের। তবে সিনেটের আলোচনায় বিরোধী আইন প্রণেতারা দাবি করেছেন, এ সংস্কার কার্যক্রম আর্জেন্টিনার অগ্রগতিকে কয়েক দশক পিছিয়ে দিতে পারে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রতিবাদে উত্তাল আর্জেন্টিনা

Update Time : ০৪:৩৭:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ জুন ২০২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

আর্জেন্টিনায় অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রতিবাদে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষের দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত
আর্জেন্টিনায় ডানপন্থি প্রেসিডেন্ট হাভিয়ার মিলেইর প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রতিবাদে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। আর বিক্ষোভ দমাতে কাঁদানে গ্যাস ও পেপার স্প্রে ছুড়েছেন নিরাপত্তাকর্মীরা। এ ঘটনায় অন্তত ১০ জনকে আটক করা হয়েছে। এতে আহত হয়েছেন নয়জন পুলিশ সদস্য।

বুধবার (১২ জুন) রাতে রাজধানী বুয়েন্স আয়ার্সে সংসদের উচ্চকক্ষ সিনেটের সামনে জড়ো হন বিক্ষোভকারীরা। ওই সময় তাদের সরিয়ে দিতে জলকামান এবং কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করা হয়।

হাজীদের সেবায় চালক বিহীন উড়ন্ত ট্যাক্সি চালু
আন্তর্জাতিক বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আর্জেন্টিনার ডানপন্থি প্রেসিডেন্ট হাভিয়ার মিলেই এই সংস্কারের মাধ্যমে দেশটির ভঙ্গুর অর্থনীতিকে জাগ্রত করতে চাচ্ছেন। এই সংস্কারের মাধ্যমে আর্জেন্টিনায় অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থা জারি করা হবে, সরকারি পেনসন ও শ্রম অধিকার কমিয়ে দেয়া হবে। প্রেসিডেন্ট মিলেই-র এই সংস্কার প্রস্তাবের বিরোধীতে করেছে দেশটির বিরোধীদল, শ্রম সংগঠন এবং সামাজিক সংস্থাগুলো।

এতে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে সাধারণ মানুষ। আর্জেন্টিনা সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে কংগ্রেসে বিতর্ক চলার সময় বাইরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় কংগ্রেস ভবনের বাইরে দুটি গাড়িতে আগুন দেন বিক্ষোভকারীরা। বিক্ষোভকারীরা বেড়া টপকে সেখানে ঢোকার চেষ্টা করলে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের ওপর পাথর ছুড়লে তারাও পেপার স্প্রে ছোড়ে বিক্ষোভ প্রতিহতের চেষ্টা চালায়। পেপার স্প্রের কারণে সাতজন বিক্ষোভকারীকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। তাদের মধ্যে পাঁচজনই আইন প্রণেতা। ঘটনাস্থলে আরও বেশ কয়েকজনকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। পরে রাতের বেলা ঢাল বহনকারী নিরাপত্তা কর্মকর্তারা মোটরসাইকেলে থাকা অন্যরা বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেন। এ সময় দুটি গাড়ি উল্টে দিয়ে আগুন দেয়া হয়। এর মধ্যে একটি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের গাড়িও রয়েছে।

এদিকে, প্রেসিডেন্ট হাভিয়ার মিলেইর অর্থনৈতিক সংস্কারের বিল নিয়ে কংগ্রেসের ভেতরে সিনেটররা তুমুল বিতর্ক করেছেন। তারা মূল বিলটি প্রত্যাখ্যান করেছেন। গত এপ্রিলে বিলে বড় পরিবর্তন এনেছিলেন পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের সদস্যরা। সেটার অনুমোদন দিয়েছেন সিনেটররাও।

অন্যদিকে, এক এক্স বার্তায় আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্টের দপ্তর জানিয়েছে, সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো লাঠি, পাথর, এমনকি গ্রেনেড নিয়ে বিক্ষোভে নেমেছেন। তাঁরা অভ্যুত্থান ঘটানোর চেষ্টায় আছেন।

প্রসঙ্গত, প্রেসিডেন্ট হাভিয়ার মিলেইর প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক সংস্কারে রয়েছে এক বছরের জন্য দেশটিতে অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা, কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোর কার্যক্রম গুটিয়ে নিতে প্রেসিডেন্ট মিলেইকে ক্ষমতা দেওয়া, রাষ্ট্রীয় উড়োজাহাজ সংস্থাসহ কয়েক ডজন সরকারি প্রতিষ্ঠানকে বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়া। এছাড়া ন্যূনতম অবসরকালীন ভাতা পাওয়ার সুযোগ সীমিত করা, শিক্ষানবিশকালের মেয়াদ বাড়িয়ে শ্রম অধিকার দুর্বল করা হয়েছে প্রেসিডেন্ট হাভিয়ার মিলেইর প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক সংস্কারে এমনটাই দাবি বামপন্থীদের। তবে সিনেটের আলোচনায় বিরোধী আইন প্রণেতারা দাবি করেছেন, এ সংস্কার কার্যক্রম আর্জেন্টিনার অগ্রগতিকে কয়েক দশক পিছিয়ে দিতে পারে।