অবশেষে জামিন পেলেন ঝুমন দাস

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ১২:০৮:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • / ১৩৮ Time View

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

হেফাজত নেতা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ফেসবুকে পোস্ট দেয়ার অভিযোগে করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় অবশেষে গ্রেপ্তারের প্রায় সাত মাস পর জামিন পেলেন সুনামগঞ্জের শাল্লার ঝুমন দাস।

বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ তার জামিন আদেশ দেন।

আদালত আদেশে বলেন, সংবিধান অনুযায়ী মতপ্রকাশের অধিকার সবারই আছে। আদালতের অনুমতি ছাড়া সুনামগঞ্জের বাইরে যেতে পারবেননা ঝুমন।

এর আগে কারাগারে থাকা ঝুমন সাতবারের চেষ্টায়ও জামিন পাননি। অথচ সংখ্যালঘুদের পল্লীতে হামলার অভিযোগে গ্রেপ্তার ৫২ জনের সবাই আগেই জামিনে মুক্তি পায়।

গত ১৫ মার্চ সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে শানে রিসালাত সম্মেলন নামে একটি সমাবেশের আয়োজন করে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। এতে হেফাজতের তৎকালীন আমির জুনায়েদ বাবুনগরী ও যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক বক্তব্য দেন।

ওই সমাবেশের পরদিন ১৬ মার্চ মামুনুল হকের সমালোচনা করে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন দিরাইয়ের পার্শ্ববর্তী উপজেলা শাল্লার নোয়াগাঁওয়ের যুবক ঝুমন দাস। তিনি স্ট্যাটাসে মামুনুলের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের অভিযোগ আনেন।

তবে, এই সমালোচনাকে ইসলামের সমালোচনা বলে এলাকায় অপপ্রচার চালাতে থাকে মামুনুলের অনুসারীরা। এতে এলাকাজুড়ে উত্তেজনা দেখা দেয়ায় নোয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দারা ১৬ মার্চ রাতে ঝুমনকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। তখন থানা পুলিশ ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা গ্রামের বাসিন্দাদের নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছিলেন।

পরদিন কয়েক হাজার লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে মিছিল করে গ্রামের সংখ্যালঘুদের ঘরবাড়িতে হামলা চালায়। হামলাকারীরা ঝুমন দাসের বাড়িসহ হাওরপাড়ের হিন্দু গ্রামের প্রায় ৯০টি বাড়ি ও মন্দিরে ভাঙচুর-লুটপাট করে। হামলার ঘটনায় শাল্লা থানায় অজ্ঞাত পরিচয়সহ মোট দেড় হাজার লোকের বিরুদ্ধে মামলা হয়।

এদিকে, গ্রেপ্তারের পাঁচ দিন পর ২২ মার্চ ঝুমন দাসের বিরুদ্ধে জিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়। মামলায় কয়েক দফায় জামিন আবেদন খারিজের পর ঝুমন দাসের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে জামিন আবেদন করা হয়। এ মামলায় এখনও কোনো তদন্ত প্রতিবেদন বা চার্জশিট দেয়া হয়নি।

আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না, নাহিদ সুলাতানা যুথি ও মো. আশরাফ আলী। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মিজানুর রহমান।

Please Share This Post in Your Social Media

অবশেষে জামিন পেলেন ঝুমন দাস

Update Time : ১২:০৮:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

হেফাজত নেতা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ফেসবুকে পোস্ট দেয়ার অভিযোগে করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় অবশেষে গ্রেপ্তারের প্রায় সাত মাস পর জামিন পেলেন সুনামগঞ্জের শাল্লার ঝুমন দাস।

বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ তার জামিন আদেশ দেন।

আদালত আদেশে বলেন, সংবিধান অনুযায়ী মতপ্রকাশের অধিকার সবারই আছে। আদালতের অনুমতি ছাড়া সুনামগঞ্জের বাইরে যেতে পারবেননা ঝুমন।

এর আগে কারাগারে থাকা ঝুমন সাতবারের চেষ্টায়ও জামিন পাননি। অথচ সংখ্যালঘুদের পল্লীতে হামলার অভিযোগে গ্রেপ্তার ৫২ জনের সবাই আগেই জামিনে মুক্তি পায়।

গত ১৫ মার্চ সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে শানে রিসালাত সম্মেলন নামে একটি সমাবেশের আয়োজন করে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। এতে হেফাজতের তৎকালীন আমির জুনায়েদ বাবুনগরী ও যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক বক্তব্য দেন।

ওই সমাবেশের পরদিন ১৬ মার্চ মামুনুল হকের সমালোচনা করে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন দিরাইয়ের পার্শ্ববর্তী উপজেলা শাল্লার নোয়াগাঁওয়ের যুবক ঝুমন দাস। তিনি স্ট্যাটাসে মামুনুলের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের অভিযোগ আনেন।

তবে, এই সমালোচনাকে ইসলামের সমালোচনা বলে এলাকায় অপপ্রচার চালাতে থাকে মামুনুলের অনুসারীরা। এতে এলাকাজুড়ে উত্তেজনা দেখা দেয়ায় নোয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দারা ১৬ মার্চ রাতে ঝুমনকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। তখন থানা পুলিশ ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা গ্রামের বাসিন্দাদের নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছিলেন।

পরদিন কয়েক হাজার লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে মিছিল করে গ্রামের সংখ্যালঘুদের ঘরবাড়িতে হামলা চালায়। হামলাকারীরা ঝুমন দাসের বাড়িসহ হাওরপাড়ের হিন্দু গ্রামের প্রায় ৯০টি বাড়ি ও মন্দিরে ভাঙচুর-লুটপাট করে। হামলার ঘটনায় শাল্লা থানায় অজ্ঞাত পরিচয়সহ মোট দেড় হাজার লোকের বিরুদ্ধে মামলা হয়।

এদিকে, গ্রেপ্তারের পাঁচ দিন পর ২২ মার্চ ঝুমন দাসের বিরুদ্ধে জিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়। মামলায় কয়েক দফায় জামিন আবেদন খারিজের পর ঝুমন দাসের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে জামিন আবেদন করা হয়। এ মামলায় এখনও কোনো তদন্ত প্রতিবেদন বা চার্জশিট দেয়া হয়নি।

আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না, নাহিদ সুলাতানা যুথি ও মো. আশরাফ আলী। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মিজানুর রহমান।