সকল বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত ঢাবির হল, বিলুপ্ত হয়নি গণরুম

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৭:২০:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ অক্টোবর ২০২১
  • / ১৫৫ Time View

জাননাহ,ঢাবি প্রতিনিধি:

আজ, ১০ অক্টোবর (রবিবার) থেকে অন্য তিনবর্ষের (প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয়) শিক্ষার্থীদের জন্যও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে, হলে উঠতে শিক্ষার্থীদের তেমন ভিড় পরিলক্ষিত হয় নি আজ ।

হলে উঠতে ভিড় না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে, দুটি প্রধান কারণের কথা উল্লেখ করেন শিক্ষার্থীরা। একটি হলো শিক্ষার্থীদের বড় অংশ আগেই হলে উঠে গেছে। আরেকটি হলো সশরীরে ক্লাস-পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ১৭ অক্টোবর থেকে । যার ফলে ফিরছেন না কনিষ্ঠ শিক্ষার্থীরা। বিশেষ করে কক্ষ বরাদ্দ না থাকায় প্রথম বর্ষের সবার ও দ্বিতীয় বর্ষের অনেক শিক্ষার্থীকে গণরুমে থাকতে হবে। এই দুটি কারণে আজ শিক্ষার্থীদের ভিড় ছিল না বলেই মনে করছেন শিক্ষার্থীরা।

উল্লেখ্য, করোনা পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘ দেড় বছর বন্ধ থাকার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো শুধু স্নাতক চতুর্থ বর্ষ ও স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য গত ৫ অক্টোবর থেকে খুলে দেওয়া হয়।

এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো খুলে দেওয়ার পর দেখা যাচ্ছে, ছাত্রীদের ৫ টি হলে সিট বণ্টনসহ প্রায় সব ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণ থাকলেও ছাত্রদের ১৩টি হলে কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণ আগের মতোই শূন্য।

ঢাবি সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ৫ অক্টোবর থেকে অন্তত এক ডোজ টিকা নেওয়ার প্রমাণপত্র থাকা সাপেক্ষে স্নাতক চতুর্থ বর্ষ ও স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীদের হলে তোলার কথা ছিল।

কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অন্যান্য বর্ষের শিক্ষার্থীরাও সেদিন বিকেলের পর থেকে হলে উঠতে থাকেন। ইতিমধ্যে ছাত্রদের প্রতিটি হলে অছাত্ররাও উঠে পড়েছেন। স্বাস্থ্যবিধির বিষয়েও নেই কোনো নজরদারি। হলে হলে কক্ষ দখল ও আধিপত্য বিস্তারের পুরোনো প্রবণতা আবারও ফিরে আসছে। প্রথম দিন সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিজেদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে তোড়জোড় দেখালেও পরে আর তা দেখা যায়নি।

একারনে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের পূর্বের মতো ”গণরুমে”ই থাকতে হচ্ছে। তবে সবাই না আসার কারনে বেশির ভাগ হলের গণরুমগুলো এখন পর্যন্ত ফাঁকা রয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে আজ(১০ অক্টোবর) থেকে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের আনুষ্ঠানিকভাবে হলে ওঠার অনুমতি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সকালে কয়েকটি আবাসিক হলের ফটকে গিয়ে ‘বিরল’ দৃশ্য চোখে পড়ে। দেখা যায়, ইতিমধ্যেই হলে ওঠা শিক্ষার্থীদের সকাল আটটা থেকে হলের বাইরে নিয়ে আবার ফুল-চকলেট ইত্যাদি দিয়ে ওই শিক্ষার্থীদের ‘বরণ’ করে হলে তোলা হচ্ছে । তবে অল্প কিছু শিক্ষার্থী ঢাকার বাইরে থেকে এসে হলে উঠেছেন আজ ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের বাইরে কিংবা অছাত্ররা হলে উঠেছেন—এমন কোনো অভিযোগ থাকলে হল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দেখবে। শিক্ষার্থীরা হলে ওঠার পর সবকিছু স্বাভাবিকভাবেই চলছে বলে জানান প্রক্টর।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান সকাল ১০টায় ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল ও রোকেয়া হল পরিদর্শন করেন। উপাচার্য সাংবাদিকদের বলেন, ‘সব শিক্ষার্থীকে হলে ওঠানোর ক্ষেত্রে আমাদের করোনা সংক্রমণের হার ও শিক্ষার্থীদের টিকার অগ্রগতি মাথায় রাখতে হয়েছে। দুটিই এখন আশাব্যঞ্জক। যাঁরা এখনো নেননি, তাঁদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মোহাম্মদ মোর্তজা চিকিৎসাকেন্দ্রে অস্থায়ী টিকাকেন্দ্র করা হয়েছে। এনআইডির জন্য যাঁরা টিকা নিতে পারছেন না, তাঁদের জন্য টিএসসিতে এনআইডি নিবন্ধনের বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ১৭ অক্টোবর সশরীর ক্লাস-পরীক্ষা শুরুর আগেই শিক্ষার্থীরা সবাই যাতে অন্তত এক ডোজ টিকা নিতে পারেন, তার জন্য সব ব্যবস্থা করা হবে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

সকল বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত ঢাবির হল, বিলুপ্ত হয়নি গণরুম

Update Time : ০৭:২০:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ অক্টোবর ২০২১

জাননাহ,ঢাবি প্রতিনিধি:

আজ, ১০ অক্টোবর (রবিবার) থেকে অন্য তিনবর্ষের (প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয়) শিক্ষার্থীদের জন্যও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে, হলে উঠতে শিক্ষার্থীদের তেমন ভিড় পরিলক্ষিত হয় নি আজ ।

হলে উঠতে ভিড় না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে, দুটি প্রধান কারণের কথা উল্লেখ করেন শিক্ষার্থীরা। একটি হলো শিক্ষার্থীদের বড় অংশ আগেই হলে উঠে গেছে। আরেকটি হলো সশরীরে ক্লাস-পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ১৭ অক্টোবর থেকে । যার ফলে ফিরছেন না কনিষ্ঠ শিক্ষার্থীরা। বিশেষ করে কক্ষ বরাদ্দ না থাকায় প্রথম বর্ষের সবার ও দ্বিতীয় বর্ষের অনেক শিক্ষার্থীকে গণরুমে থাকতে হবে। এই দুটি কারণে আজ শিক্ষার্থীদের ভিড় ছিল না বলেই মনে করছেন শিক্ষার্থীরা।

উল্লেখ্য, করোনা পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘ দেড় বছর বন্ধ থাকার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো শুধু স্নাতক চতুর্থ বর্ষ ও স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য গত ৫ অক্টোবর থেকে খুলে দেওয়া হয়।

এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো খুলে দেওয়ার পর দেখা যাচ্ছে, ছাত্রীদের ৫ টি হলে সিট বণ্টনসহ প্রায় সব ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণ থাকলেও ছাত্রদের ১৩টি হলে কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণ আগের মতোই শূন্য।

ঢাবি সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ৫ অক্টোবর থেকে অন্তত এক ডোজ টিকা নেওয়ার প্রমাণপত্র থাকা সাপেক্ষে স্নাতক চতুর্থ বর্ষ ও স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীদের হলে তোলার কথা ছিল।

কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অন্যান্য বর্ষের শিক্ষার্থীরাও সেদিন বিকেলের পর থেকে হলে উঠতে থাকেন। ইতিমধ্যে ছাত্রদের প্রতিটি হলে অছাত্ররাও উঠে পড়েছেন। স্বাস্থ্যবিধির বিষয়েও নেই কোনো নজরদারি। হলে হলে কক্ষ দখল ও আধিপত্য বিস্তারের পুরোনো প্রবণতা আবারও ফিরে আসছে। প্রথম দিন সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিজেদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে তোড়জোড় দেখালেও পরে আর তা দেখা যায়নি।

একারনে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের পূর্বের মতো ”গণরুমে”ই থাকতে হচ্ছে। তবে সবাই না আসার কারনে বেশির ভাগ হলের গণরুমগুলো এখন পর্যন্ত ফাঁকা রয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে আজ(১০ অক্টোবর) থেকে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের আনুষ্ঠানিকভাবে হলে ওঠার অনুমতি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সকালে কয়েকটি আবাসিক হলের ফটকে গিয়ে ‘বিরল’ দৃশ্য চোখে পড়ে। দেখা যায়, ইতিমধ্যেই হলে ওঠা শিক্ষার্থীদের সকাল আটটা থেকে হলের বাইরে নিয়ে আবার ফুল-চকলেট ইত্যাদি দিয়ে ওই শিক্ষার্থীদের ‘বরণ’ করে হলে তোলা হচ্ছে । তবে অল্প কিছু শিক্ষার্থী ঢাকার বাইরে থেকে এসে হলে উঠেছেন আজ ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের বাইরে কিংবা অছাত্ররা হলে উঠেছেন—এমন কোনো অভিযোগ থাকলে হল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দেখবে। শিক্ষার্থীরা হলে ওঠার পর সবকিছু স্বাভাবিকভাবেই চলছে বলে জানান প্রক্টর।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান সকাল ১০টায় ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল ও রোকেয়া হল পরিদর্শন করেন। উপাচার্য সাংবাদিকদের বলেন, ‘সব শিক্ষার্থীকে হলে ওঠানোর ক্ষেত্রে আমাদের করোনা সংক্রমণের হার ও শিক্ষার্থীদের টিকার অগ্রগতি মাথায় রাখতে হয়েছে। দুটিই এখন আশাব্যঞ্জক। যাঁরা এখনো নেননি, তাঁদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মোহাম্মদ মোর্তজা চিকিৎসাকেন্দ্রে অস্থায়ী টিকাকেন্দ্র করা হয়েছে। এনআইডির জন্য যাঁরা টিকা নিতে পারছেন না, তাঁদের জন্য টিএসসিতে এনআইডি নিবন্ধনের বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ১৭ অক্টোবর সশরীর ক্লাস-পরীক্ষা শুরুর আগেই শিক্ষার্থীরা সবাই যাতে অন্তত এক ডোজ টিকা নিতে পারেন, তার জন্য সব ব্যবস্থা করা হবে।