যবিপ্রবির মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবি বিক্ষোভ
- Update Time : ০৭:০৩:২৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৪
- / 39
যবিপ্রবি প্রতিনিধি
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান ড মোঃ মেহেদি হাসানের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা চেয়ারম্যানের পদত্যাগের জন্য ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন।
শনিবার (২৪ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের সামনে বিক্ষোভ করে উক্ত বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এই সময় চেয়ারম্যান ড. মো. মেহেদী হাসান স্যারের চেয়ারম্যান পদ থেকে অব্যাহতি এবং মার্কেটিং ডিপার্টমেন্টের সকল কোর্স থেকে তাকে অপসারণের দাবি জানান তারা।
শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, নিয়ম বহির্ভূতভাবে ড মোঃ মেহেদী হাসান মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক না হওয়া শর্তেও মাননীয় উপাচার্য মহোদয়ের মদদে বেআইনিভাবে দীর্ঘ ৫ বছর মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান হিসাবে জোরপূর্বক ভাবে ক্ষমতা ধরে বসে আছেন। এছাড়াও তাদের দাবিসমূহঃ
১. শিক্ষার্থীদের পাশে না থাকা: সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর সরকারের অত্যাচারী পদক্ষেপের সময় ড. মো. মেহেদী হাসান স্যার শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াননি, বরং পরোক্ষভাবে সরকারের পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন। এর ফলে শিক্ষার্থীরা হতাশা ও নিরাপত্তাহীনতার শিকার হয়েছে।
২. শিক্ষার্থীদের প্রতি উদাসীনতা: করো না মহামারি, শিক্ষার্থীদের দুর্ঘটনা ও অসুস্থতা, সরকারের অত্যাচারের সময় সহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সময়ে ড. মো. মেহেদী হাসান স্যার শিক্ষার্থীদের খোঁজখবর নেননি। তার এই উদাসীনতা শিক্ষার্থীদের মানসিক ও শারীরিক দুরাবস্থা আরও প্রকট করেছে এবং তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা থেকে বঞ্চিত করেছে।
৩. শিক্ষা কার্যক্রমের অবহেলা: স্যারের শিক্ষা কার্যক্রমের প্রতি উদাসীনতা এবং অবহেলা স্পষ্ট। যেমন: সিটি ও অ্যাসাইনমেন্ট যথাযথভাবে না নেওয়া, ইন্টার্নাল ইভালেশনের প্রাপ্ত নম্বর প্রকাশ না করা, শ্রেণীকক্ষে সময়মত উপস্থিত না হওয়া, এবং রুটিন অনুযায়ী ক্লাস না নেওয়া। এসব কারণে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক পারফরম্যান্স ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
৪. এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিতে সহায়তা না করা: ড. মো. মেহেদী হাসান স্যার শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিক্ষা সফর ইত্যাদি এক্সট্রা কারিকুলার কার্যক্রমে বিভিন্ন সময়ে কোনো ধরনের সহায়তা বা উৎসাহ প্রদান করেননি। এর ফলে শিক্ষার্থীরা তাদের ব্যক্তিগত ও পেশাগত উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ হারিয়েছে।
৫. মার্কেটিং ক্লাব পুনর্গঠনে বাধা: শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে মার্কেটিং ক্লাব পুনর্গঠনের প্রচেষ্টা স্যারের অসহযোগিতার কারণে ব্যর্থ হয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির সুযোগ হারানোর কারণ হয়েছে।
৬. শিক্ষাদানে ব্যর্থতা: শিক্ষাদানে ব্যর্থতার কারণে সকল শিক্ষার্থীদের ড. মো. মেহেদী হাসান স্যারের সকল কোর্সে আশানুরূপ ফলাফল অর্জিত হয়নি, যা তাদের শিক্ষাজীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে এবং ক্যারিয়ারে উল্লেখযোগ্য নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
৭. ডিপার্টমেন্টের সম্পদের অব্যবস্থাপনা: ডিপার্টমেন্টের সম্পদগুলো যথাযথভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে না। উদাহরণস্বরূপ, শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য ক্রয়কৃত ফেস রিকগনিশন ক্যামেরা ব্যবহৃত হয়নি, কম্পিউটার ল্যাবে দীর্ঘদিন ধরে কারিগরি সমস্যা রয়েছে, এবং লক্ষাধিক টাকার ডিজিটাল বোর্ডে প্রথম বছরই ত্রুটি দেখা দিয়েছে। এগুলোসহ আর অন্যান্য সম্পদের অব্যবস্থাপনার কারণে ডিপার্টমেন্টের তহবিল অপচয় হচ্ছে।
৮. স্বৈরাচারী মনোভাব: ড. মো. মেহেদী হাসান স্যারের স্বৈরাচারী মনোভাবের কারণে বিভাগের প্রশাসনিক কার্যক্রম এবং একাডেমিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়েছে। এর ফলে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক এবং পেশাগত উন্নয়নে বড় ধরনের বাধা সৃষ্টি হয়েছে।
৯.পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক নিয়োজিত কর্মচারীরা থাকলেও তিনি ছাত্র ছাত্রীদের দিয়ে ডিপার্টমেন্টের পরিষ্কার, টয়লেট পরিষ্কার, ক্লাশ ঝাড়ু দেওয়া যেখানে সেখানে পরেথাকা ময়লা আবর্জনা শিক্ষার্থীদের দিয়ে পরিষ্কার করানো ধরনের কাজ করিয়ে থাকেন।
১০.উন্নয়ন ফী নামক প্রত্যেক সেমিস্টারে ৫০০ টাকা করে নেওয়া যার ন্যূনতম খরচ ছাত্র ছাত্রীদের স্বার্থে ব্যবহার করতে দেখা মেলেনি এবং সেই টাকার যৌক্তিকতা তুলে ধরতে পারেননি বরং টাকা অপরিশোধে ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন রকম হুমকি সহ এডমিট কার্ড আটকে দেওয়া, পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করতে দেওয়া ইত্যাদি অনেক টাকা আত্নস্বাৎ করেছেন।
শিক্ষার্থীদের ২৪ ঘন্টার আলটিমেটামের বিষয়ে মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো মেহেদী হাসান বলেন, আমার কাছে মনে হয়েছে আমার বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা আমাকে চান না তাই আমি অব্যাহতি নিব। আমার কারো প্রতি কোন অভিযোগ নেই।