মাঠে মাঠে আগাম শীতকালীন সবজি

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৯:২৯:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • / ১৬১ Time View

শরীফ মোঃ মাছুম বিল্লাহ:

আগাম শীতকালীন শাক-সবজি চাষে মাঠে নেমেছে চাষিরা। ভোর থেকে শুরু করে থেমে থেমে বিকাল অবদি সবজির মাঠে সময় দিচ্ছেন তারা। আগাম শীত সবজি বাজারে নিতে পারলে ভালো দাম পাওয়া যায়। সে কারণে সবার আগে সব সবজি বাজারে নিয়ে আসতে হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করে যাচ্ছে হাইমচরের চাষিরা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে প্রায় সাড়ে ১৫ হাজার মেট্রিক টন সবজির ফলন পাওয়া যাবে হাইমচরে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্র বলছে, হাইমচর উপজেলায় বরাবরের মত সবজি ভালো চাষ হয়ে থাকে। গত বছর মাত্রাতিরিক্ত বৃষ্টি আর মেঘনায় অনাকাঙ্ক্ষিত জোয়ার থাকার পরেও ভালো সবজি চাষ হয়েছে। এবছরও ভালো সবজি পাওয়ার আশায় চাষি ও কৃষি কর্মকর্তারা কাজ করছেন। উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের মাঠে মাঠে সবজি চাষে মাঠে নেমেছে চাষিরা। এবছর ৬৩৫ হেক্টর জমিতে সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর বিপরীতে ফলন ধরা হয়েছে সাড়ে ১৫ হাজার মেট্রিক টন। আর গত বছর সবজির ফলন হয়েছিল ১২ হাজার মেট্রিক টন। যা চাষ হয়েছিল ৬০০ হেক্টর জমিতে।

No description available.

যদিও জমি তৈরী করতে গিয়ে করোনার প্রভাব আর বৃষ্টিতে সবজির জমি নিয়ে কিছুটা বেগ পেতে হয়। তবুও উপজেলার চরাঞ্চলের চাষিরা শীত আসবার আগেই বাজারে সবজি নিয়ে আসে। উপজেলার ইশানবালা, সাহেবগঞ্জ, মাঝির বাজার, ও চরপোড়ামূখি অঞ্চল শাক-সবজি চাষের প্রধান এলাকা হিসেবে পরিচিত।

এছাড়া বিভিন্ন ধরনের শাক ও টমেটো চাষে চরভাঙ্গা, ভিঙ্গুলিয়া, নয়ানীসহ অন্যান্য এলাকা পরিচিত।

বাজারে আগাম টমেটো আনতে চরভাঙ্গা থেকে দক্ষিণ আলগী এলাকার কৃষক মাচা তৈরি করে ও খুটি গেড়ে টমেটো চাষ করছে। শিমও উপজেলার বেশ কয়েক যায়গায় চাষ হয়ে থাকে। শিমের আগাম জাতের মাচায় কিছুটা ফুল ধরেছে। ৩নং আলগী দক্ষিণ ইউনিয়নসহ প্রায় সব জায়গায় কম-বেশি শীতকালীল সবজি মুলা, বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, শীম, লালশাক, পালংশাক, পুঁইশাক ও পেঁয়াজের চাষ হয়।

হাইমচর উপজেলার উত্তর ও দক্ষিণ ইউনিয়নের কয়েকটি মাঠ ঘুরে দেখা যায়, চাষিরা শীতের আগাম সবজির চারা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কেউ কেউ সবজির চারা জমিতে লাগাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ জমিতে আগাছামুক্ত করতে নিড়ানি দিচ্ছেন।

দক্ষিণ ইউনিয়ন চরভাঙ্গা গ্রামের চাষি মোস্তফা গাজী বলেন, তার ৬০ শতক জমিতে মুলার সঙ্গে লালশাক চাষ করেছেন। ফসলের মাঠে শ্রমিকের মজুরি বেশি, তাই মহিলা কিষাণী দিয়ে জমিতে আগাছামুক্ত করছি।

মাঝের চরের বেগুন চাষি রায়হান উদ্দিন জানান, এ বছর ২ বিঘা জমিতে বেগুন চাষ করেছেন। বৃষ্টিতে গাছের বৃদ্ধি কম হলেও, এখন বেগুন গাছগুলো স্বাভাবিক আছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আগামী মাসে ভালো ফলন পাওয়া যাবে।

হাইমচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ দেবব্রত সরকার জানান, শীতকালীন সবজির দিকে উপজেলার কৃষকদের বিশেষ নজর থাকে। এবছর ৬৩৫ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি চাষাবাদ হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারও বাম্পার ফলনের আশা করছি। কৃষি বিভাগ তাদের পরিকল্পনা প্রনয়ণ করেছেন। মৌসুম শুরুর সাথে সাথেই কার্যক্রম শুরু করা হবে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

মাঠে মাঠে আগাম শীতকালীন সবজি

Update Time : ০৯:২৯:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১

শরীফ মোঃ মাছুম বিল্লাহ:

আগাম শীতকালীন শাক-সবজি চাষে মাঠে নেমেছে চাষিরা। ভোর থেকে শুরু করে থেমে থেমে বিকাল অবদি সবজির মাঠে সময় দিচ্ছেন তারা। আগাম শীত সবজি বাজারে নিতে পারলে ভালো দাম পাওয়া যায়। সে কারণে সবার আগে সব সবজি বাজারে নিয়ে আসতে হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করে যাচ্ছে হাইমচরের চাষিরা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে প্রায় সাড়ে ১৫ হাজার মেট্রিক টন সবজির ফলন পাওয়া যাবে হাইমচরে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্র বলছে, হাইমচর উপজেলায় বরাবরের মত সবজি ভালো চাষ হয়ে থাকে। গত বছর মাত্রাতিরিক্ত বৃষ্টি আর মেঘনায় অনাকাঙ্ক্ষিত জোয়ার থাকার পরেও ভালো সবজি চাষ হয়েছে। এবছরও ভালো সবজি পাওয়ার আশায় চাষি ও কৃষি কর্মকর্তারা কাজ করছেন। উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের মাঠে মাঠে সবজি চাষে মাঠে নেমেছে চাষিরা। এবছর ৬৩৫ হেক্টর জমিতে সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর বিপরীতে ফলন ধরা হয়েছে সাড়ে ১৫ হাজার মেট্রিক টন। আর গত বছর সবজির ফলন হয়েছিল ১২ হাজার মেট্রিক টন। যা চাষ হয়েছিল ৬০০ হেক্টর জমিতে।

No description available.

যদিও জমি তৈরী করতে গিয়ে করোনার প্রভাব আর বৃষ্টিতে সবজির জমি নিয়ে কিছুটা বেগ পেতে হয়। তবুও উপজেলার চরাঞ্চলের চাষিরা শীত আসবার আগেই বাজারে সবজি নিয়ে আসে। উপজেলার ইশানবালা, সাহেবগঞ্জ, মাঝির বাজার, ও চরপোড়ামূখি অঞ্চল শাক-সবজি চাষের প্রধান এলাকা হিসেবে পরিচিত।

এছাড়া বিভিন্ন ধরনের শাক ও টমেটো চাষে চরভাঙ্গা, ভিঙ্গুলিয়া, নয়ানীসহ অন্যান্য এলাকা পরিচিত।

বাজারে আগাম টমেটো আনতে চরভাঙ্গা থেকে দক্ষিণ আলগী এলাকার কৃষক মাচা তৈরি করে ও খুটি গেড়ে টমেটো চাষ করছে। শিমও উপজেলার বেশ কয়েক যায়গায় চাষ হয়ে থাকে। শিমের আগাম জাতের মাচায় কিছুটা ফুল ধরেছে। ৩নং আলগী দক্ষিণ ইউনিয়নসহ প্রায় সব জায়গায় কম-বেশি শীতকালীল সবজি মুলা, বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, শীম, লালশাক, পালংশাক, পুঁইশাক ও পেঁয়াজের চাষ হয়।

হাইমচর উপজেলার উত্তর ও দক্ষিণ ইউনিয়নের কয়েকটি মাঠ ঘুরে দেখা যায়, চাষিরা শীতের আগাম সবজির চারা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কেউ কেউ সবজির চারা জমিতে লাগাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ জমিতে আগাছামুক্ত করতে নিড়ানি দিচ্ছেন।

দক্ষিণ ইউনিয়ন চরভাঙ্গা গ্রামের চাষি মোস্তফা গাজী বলেন, তার ৬০ শতক জমিতে মুলার সঙ্গে লালশাক চাষ করেছেন। ফসলের মাঠে শ্রমিকের মজুরি বেশি, তাই মহিলা কিষাণী দিয়ে জমিতে আগাছামুক্ত করছি।

মাঝের চরের বেগুন চাষি রায়হান উদ্দিন জানান, এ বছর ২ বিঘা জমিতে বেগুন চাষ করেছেন। বৃষ্টিতে গাছের বৃদ্ধি কম হলেও, এখন বেগুন গাছগুলো স্বাভাবিক আছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আগামী মাসে ভালো ফলন পাওয়া যাবে।

হাইমচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ দেবব্রত সরকার জানান, শীতকালীন সবজির দিকে উপজেলার কৃষকদের বিশেষ নজর থাকে। এবছর ৬৩৫ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি চাষাবাদ হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারও বাম্পার ফলনের আশা করছি। কৃষি বিভাগ তাদের পরিকল্পনা প্রনয়ণ করেছেন। মৌসুম শুরুর সাথে সাথেই কার্যক্রম শুরু করা হবে।