বিক্রি হচ্ছে না আমদানি করা পেঁয়াজ

  • Update Time : ০৩:০১:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪
  • / 44

আট দিন পেরিয়ে গেলেও বিক্রি হয়নি দিনাজপুর হাকিমপুর উপজেলার হিলি স্থলবন্দরে দিয়ে ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ। পেঁয়াজ বিক্রি না হওয়ায় বিপাকে পড়েছে আমদানিকারকরা। বড় ধরনের লোকসানের আশঙ্কায় রয়েছেন তারা।

হিলি আরএসবি এন্টারপ্রাইজের আমদানিকারকের গুদামে গিয়ে দেখা যায়, গত ১৪ মে ভারত থেকে একটি ট্রাকে ৩০ টন পেঁয়াজ আমদানি করেন এই প্রতিষ্ঠান। আমদানিকৃত পেঁয়াজ রাখা হয়েছে গুদামে। গুদামে ফ্যান চালিয়ে ঠান্ডা রাখা হচ্ছে। তবে এসব পেঁয়াজ খুব কম সময়ের মধ্যে বিক্রি না হলে নষ্ট হয়ে যাবে। এতে বড় ধরনের লোকসানে পড়বেন অনেকে।

হিলি আরএসবি এন্টারপ্রাইজের আমদানিকারক আহম্মেদ সরকার বলেন, ১৪ মে ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার পতিরাম থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে একটি ট্রাকে নাসিক জাতের ৩০ টন পেঁয়াজ আমদানি করি। পেঁয়াজ আমদানি করতে ভারত সরকারের বেধে দেয়া শুল্কের ৪০ শতাংশ হারে ৫ লাখ ৪৬ হাজার ১৬০ রুপি পরিশোধ করতে হয়েছে। বাংলাদেশি টাকায় যা প্রতি কেজিতে প্রায় ২৫ টাকা। এছাড়া পেঁয়াজ আমদানিতে বাংলাদেশে প্রতি কেজিতে ৬ টাকা ৩৪ পয়সা শুল্ক দিতে হয়েছে। আর ভারতে প্রতি কেজি পেঁয়াজ কেনা পড়েছে প্রায় ৩০ টাকা। সেই হিসাবে সব খরচ মিলিয়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজ আমদানিতে প্রায় ৬২ টাকা খরচ পড়েছে। আর বাংলাদেশে স্থানীয় বাজারে দেশি জাতের পেঁয়াজ এখন ৬০ টাকা কেজি পাইকারি দরে বিক্রি হচ্ছে। বেশি দামে পেঁয়াজ আমদানি করে এখন কেনা দামে পেঁয়াজ বিক্রির ক্রেতাও পাচ্ছি না। দেশি পেঁয়াজ খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা কেজি দরে। দেশি ও ভারতীয় পেঁয়াজের দাম সমান থাকায় ভারতীয় পেঁয়াজের চাহিদা কমে গেছে। আট দিন ধরে গুদামে পেঁয়াজ পড়ে আছে। ফ্যানের বাতাস দিয়ে বাঁচানোর চেষ্টা করছি।

হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সহসভাপতি শাহীনুর রেজা গণমাধ্যমকে বলেন, ভারত সরকার যদি পেঁয়াজ রপ্তানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহার না করে অথবা শুল্কের পরিমাণ না কমায়, তাহলে পেঁয়াজ আমদানিকারকেরা কেউই লোকসানের ভয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করবেন না। এখন পেঁয়াজ আমদানি করলে আমদানিকারকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। ভারতে পেঁয়াজ রপ্তানিতে শুল্ক কমানোর জন্য ভারত সরকারের কাছে আবেদন পাঠাতে দুই দেশের আমদানি ও রপ্তানিকারকদের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের জন্য একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

হিলি স্থলবন্দরের পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেড সূত্রে জানা যায়, সবশেষ গত ৯ ডিসেম্বর হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ২টি ট্রাকে ৫৯ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছিল। পরে ভারত সরকার পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করে দেয়।

হিলি স্থলবন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপসহকারী কর্মকর্তা ইউসুফ আলী বলেন, গত ১৪ মে ভারত থেকে একটি ট্রাকে ৩০ টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করার জন্য ৪০টি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে ৪৭ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি (আইপি) দিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

বিক্রি হচ্ছে না আমদানি করা পেঁয়াজ

Update Time : ০৩:০১:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪

আট দিন পেরিয়ে গেলেও বিক্রি হয়নি দিনাজপুর হাকিমপুর উপজেলার হিলি স্থলবন্দরে দিয়ে ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ। পেঁয়াজ বিক্রি না হওয়ায় বিপাকে পড়েছে আমদানিকারকরা। বড় ধরনের লোকসানের আশঙ্কায় রয়েছেন তারা।

হিলি আরএসবি এন্টারপ্রাইজের আমদানিকারকের গুদামে গিয়ে দেখা যায়, গত ১৪ মে ভারত থেকে একটি ট্রাকে ৩০ টন পেঁয়াজ আমদানি করেন এই প্রতিষ্ঠান। আমদানিকৃত পেঁয়াজ রাখা হয়েছে গুদামে। গুদামে ফ্যান চালিয়ে ঠান্ডা রাখা হচ্ছে। তবে এসব পেঁয়াজ খুব কম সময়ের মধ্যে বিক্রি না হলে নষ্ট হয়ে যাবে। এতে বড় ধরনের লোকসানে পড়বেন অনেকে।

হিলি আরএসবি এন্টারপ্রাইজের আমদানিকারক আহম্মেদ সরকার বলেন, ১৪ মে ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার পতিরাম থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে একটি ট্রাকে নাসিক জাতের ৩০ টন পেঁয়াজ আমদানি করি। পেঁয়াজ আমদানি করতে ভারত সরকারের বেধে দেয়া শুল্কের ৪০ শতাংশ হারে ৫ লাখ ৪৬ হাজার ১৬০ রুপি পরিশোধ করতে হয়েছে। বাংলাদেশি টাকায় যা প্রতি কেজিতে প্রায় ২৫ টাকা। এছাড়া পেঁয়াজ আমদানিতে বাংলাদেশে প্রতি কেজিতে ৬ টাকা ৩৪ পয়সা শুল্ক দিতে হয়েছে। আর ভারতে প্রতি কেজি পেঁয়াজ কেনা পড়েছে প্রায় ৩০ টাকা। সেই হিসাবে সব খরচ মিলিয়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজ আমদানিতে প্রায় ৬২ টাকা খরচ পড়েছে। আর বাংলাদেশে স্থানীয় বাজারে দেশি জাতের পেঁয়াজ এখন ৬০ টাকা কেজি পাইকারি দরে বিক্রি হচ্ছে। বেশি দামে পেঁয়াজ আমদানি করে এখন কেনা দামে পেঁয়াজ বিক্রির ক্রেতাও পাচ্ছি না। দেশি পেঁয়াজ খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা কেজি দরে। দেশি ও ভারতীয় পেঁয়াজের দাম সমান থাকায় ভারতীয় পেঁয়াজের চাহিদা কমে গেছে। আট দিন ধরে গুদামে পেঁয়াজ পড়ে আছে। ফ্যানের বাতাস দিয়ে বাঁচানোর চেষ্টা করছি।

হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সহসভাপতি শাহীনুর রেজা গণমাধ্যমকে বলেন, ভারত সরকার যদি পেঁয়াজ রপ্তানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহার না করে অথবা শুল্কের পরিমাণ না কমায়, তাহলে পেঁয়াজ আমদানিকারকেরা কেউই লোকসানের ভয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করবেন না। এখন পেঁয়াজ আমদানি করলে আমদানিকারকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। ভারতে পেঁয়াজ রপ্তানিতে শুল্ক কমানোর জন্য ভারত সরকারের কাছে আবেদন পাঠাতে দুই দেশের আমদানি ও রপ্তানিকারকদের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের জন্য একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

হিলি স্থলবন্দরের পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেড সূত্রে জানা যায়, সবশেষ গত ৯ ডিসেম্বর হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ২টি ট্রাকে ৫৯ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছিল। পরে ভারত সরকার পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করে দেয়।

হিলি স্থলবন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপসহকারী কর্মকর্তা ইউসুফ আলী বলেন, গত ১৪ মে ভারত থেকে একটি ট্রাকে ৩০ টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করার জন্য ৪০টি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে ৪৭ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি (আইপি) দিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়।