পর্যটকদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে মিরসরাইয়ের মহামায়া লেক

  • Update Time : ১২:৫২:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২১
  • / 205

কমল পাটোয়ারী,মিরসরাই:

মহামায়া যেমনি নাম তেমনি তার সুন্দর্য, যেন মায়ার আবেশে আটকে যাবেন,শীতল জলরাশিতে নৌকা ও কায়াকে ঘুরার আনন্দ আপনাকে কংক্রিটের বদ্ধ দালান থেকে মুক্তি পেয়ে দিবে শীতল পরশ।

মহামায়া বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম লেক। এটি মূলত এলাকার জলাবদ্ধতা ও পাহাড়ি ঢল নিরসন এবং শুষ্ক মৌসুমে কৃষিখাতে সেচ সুবিধার লক্ষ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড মহামায়া সেচ প্রকল্পের অংশ হিসেবে ১৯৯৯ সালে উক্ত মহামায়া খালের ওপর স্লুইস গেট স্থাপন করে। উদ্বোধনের পর পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং মৎস্য বিভাগ পর্যায়ক্রমে এই হ্রদ প্রায় ৩০ টন পোনা অবমুক্ত করে। একদিকে মানুষের চাষের সুবিধার জন্য পানি ব্যবস্থাপনা,অন্যদিকে মহামায়ার সুন্দর্য দেখার সুযোগ যেন সোনায় সোহাগা।

প্রায় ১১ বর্গ কিলোমিটারের এ মহামায়ায় স্বচ্ছ পানির লেক, ঠান্ডা পানির ঝরনা ,সবুজ পাহাড় আর নীলাকাশসহ সব মায়াই আছে এ লেকে। দেখলে বিশ্বাস ই হবে না এটি কৃত্রিম লেক। লেকটি কেন্দ্র করে গড়ে তোলা হয়েছে ইকোপার্ক। আছে রাবার ড্যাম। পাহাড়ের কোলঘেঁষে আঁকাবাঁকা লেকটি দেখতে অপরূপ সুন্দর।

ছোট বড় অসংখ্যা পাহাড়ের মাঝে অবস্থিত এই মহামায়া লেক। মনে লেকের মাঝে ছোট ছোট দ্বীপ।এই লেকের অন্যতম আর্কষণ হচ্ছে পাহাড়ি ঝর্ণা এবং এর স্বচ্ছ পানি।

কাজের ব্যস্ততা ভুলে প্রকৃতির সাথে কাটানোর জন্য শান্ত ও জন কোলাহল মুক্ত খুব সুন্দর একটা স্থান। নৌকা দিয়ে লেকে ঘুরাঘুরির পাশাপাশি ,আপনি চাইলে নিরিবিলি স্থানে বসে বর্শি দিয়ে মাছ ধরতে পারবেন । অবশ্য এজন্য আপনাকে বর্শি আগে থেকে নিয়ে যেতে হবে।

মহামায়া লেকের নীল জলরাশিতে আপনি ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকা বা ইঞ্জিন চালিত নৌকা দেখতে পাবেন। এই নৌকায় পরিবার পরিজন নিয়ে আপনি লেকের স্বচ্ছ পানিতে ঘুরতে পারেন এবং হারিয়ে যেতে পারেন লেকের অপরূপ সৌন্দর্যের মাঝে।

বন বিভাগের ইজারা দেওয়ায় মহামায়া পার্কে ঢোকার টিকেটের দাম জনপ্রতি ২০ টাকা। ইতিমধ্যে প্রশাসন মহামায়কে আকর্ষণীয় করার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহন করেছেন।

এই নৌকা ভ্রমণে খরচ হতে পারে ৫০০-১০০০ টাকা এবং জনপ্রতি প্রায় ৪০ টাকা।নৌকাতে বসে মহামায়া লেকের চারপাশের পাহাড় ও বিশাল জলরাশি আপনাদের মুগ্ধ করে তুলবে।

পরিবার-পরিজন বা বন্ধুবান্ধব নিয়ে পিকনিকের জন্য মহামায়া লেক দারুণ একটি স্থান। আপনি চাইলে এখানে রান্নাবান্না করেও খেতে পারবেন। লেকের পাড়ের বিশাল ভূমিতে চাইলে ছোট বড় সবাই মিলে বিভিন্ন খেলারও আয়োজন করতে পারেন।

ঢাকা থেকে মিরসরাই মহামায়াতে বেড়াতে আসা হামিদুর রহমান বলেন, মহাময়া লেকে ঘুরে আমি অভিভূত, এখানে কায়াকে চড়ে আমি থাইল্যান্ডের ভ্রমনের স্বাদ নিচ্ছি। তবে পাহাড়ে কিছু ক্যাবল কার থাকে দারুন হতো।আর আবাসন ব্যবস্থা উন্নত করলে ভালোহয়।

মহামায়ায় থাকতে হলে আপনাকে একটু দূরে বারৈয়ারহাট বাজারে আবাসিক হোটেল ভাড়া করতে হবে,না হয় মিরসরাই সদরে আবাসিক হোটেলে রাত কাটাতে হবে। খাওয়া দাওয়ার জন্য মহামায়ার গেইটের সামনে কিছু হোটেল আছে।আরো ভালো খাবারের জন্য মিরসরাই বা বারৈয়ারহাটে ভালো মানের হোটেল পাবেন।

মহামায়ায় যেভাবে যাবেন ঢাকা হতে চ্ট্টগ্রামের কোন গাড়ীতে মিরসরাই উপজেলার ঠাকুরদিঘি বাজার নামবেন,সেখান থেকে অটোরিকশা যোগে ১৫ টাকা জনপ্রতি ভাড়ায় মহামায়ায় পৌছাবে। যদি রিজার্ভ গাড়ী নিয়ে আসলে মহামায়ার গেইটে গাড়ী রাখার যথেষ্ট জায়গা আছে।

শীতের মৌসুমে মহামায়া থেকে আশেপাশে ঘুরে আসতে পারেন মুহুরী প্রজেক্ট বা আরশিনগর ফিউচার পার্কে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

পর্যটকদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে মিরসরাইয়ের মহামায়া লেক

Update Time : ১২:৫২:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২১

কমল পাটোয়ারী,মিরসরাই:

মহামায়া যেমনি নাম তেমনি তার সুন্দর্য, যেন মায়ার আবেশে আটকে যাবেন,শীতল জলরাশিতে নৌকা ও কায়াকে ঘুরার আনন্দ আপনাকে কংক্রিটের বদ্ধ দালান থেকে মুক্তি পেয়ে দিবে শীতল পরশ।

মহামায়া বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম লেক। এটি মূলত এলাকার জলাবদ্ধতা ও পাহাড়ি ঢল নিরসন এবং শুষ্ক মৌসুমে কৃষিখাতে সেচ সুবিধার লক্ষ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড মহামায়া সেচ প্রকল্পের অংশ হিসেবে ১৯৯৯ সালে উক্ত মহামায়া খালের ওপর স্লুইস গেট স্থাপন করে। উদ্বোধনের পর পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং মৎস্য বিভাগ পর্যায়ক্রমে এই হ্রদ প্রায় ৩০ টন পোনা অবমুক্ত করে। একদিকে মানুষের চাষের সুবিধার জন্য পানি ব্যবস্থাপনা,অন্যদিকে মহামায়ার সুন্দর্য দেখার সুযোগ যেন সোনায় সোহাগা।

প্রায় ১১ বর্গ কিলোমিটারের এ মহামায়ায় স্বচ্ছ পানির লেক, ঠান্ডা পানির ঝরনা ,সবুজ পাহাড় আর নীলাকাশসহ সব মায়াই আছে এ লেকে। দেখলে বিশ্বাস ই হবে না এটি কৃত্রিম লেক। লেকটি কেন্দ্র করে গড়ে তোলা হয়েছে ইকোপার্ক। আছে রাবার ড্যাম। পাহাড়ের কোলঘেঁষে আঁকাবাঁকা লেকটি দেখতে অপরূপ সুন্দর।

ছোট বড় অসংখ্যা পাহাড়ের মাঝে অবস্থিত এই মহামায়া লেক। মনে লেকের মাঝে ছোট ছোট দ্বীপ।এই লেকের অন্যতম আর্কষণ হচ্ছে পাহাড়ি ঝর্ণা এবং এর স্বচ্ছ পানি।

কাজের ব্যস্ততা ভুলে প্রকৃতির সাথে কাটানোর জন্য শান্ত ও জন কোলাহল মুক্ত খুব সুন্দর একটা স্থান। নৌকা দিয়ে লেকে ঘুরাঘুরির পাশাপাশি ,আপনি চাইলে নিরিবিলি স্থানে বসে বর্শি দিয়ে মাছ ধরতে পারবেন । অবশ্য এজন্য আপনাকে বর্শি আগে থেকে নিয়ে যেতে হবে।

মহামায়া লেকের নীল জলরাশিতে আপনি ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকা বা ইঞ্জিন চালিত নৌকা দেখতে পাবেন। এই নৌকায় পরিবার পরিজন নিয়ে আপনি লেকের স্বচ্ছ পানিতে ঘুরতে পারেন এবং হারিয়ে যেতে পারেন লেকের অপরূপ সৌন্দর্যের মাঝে।

বন বিভাগের ইজারা দেওয়ায় মহামায়া পার্কে ঢোকার টিকেটের দাম জনপ্রতি ২০ টাকা। ইতিমধ্যে প্রশাসন মহামায়কে আকর্ষণীয় করার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহন করেছেন।

এই নৌকা ভ্রমণে খরচ হতে পারে ৫০০-১০০০ টাকা এবং জনপ্রতি প্রায় ৪০ টাকা।নৌকাতে বসে মহামায়া লেকের চারপাশের পাহাড় ও বিশাল জলরাশি আপনাদের মুগ্ধ করে তুলবে।

পরিবার-পরিজন বা বন্ধুবান্ধব নিয়ে পিকনিকের জন্য মহামায়া লেক দারুণ একটি স্থান। আপনি চাইলে এখানে রান্নাবান্না করেও খেতে পারবেন। লেকের পাড়ের বিশাল ভূমিতে চাইলে ছোট বড় সবাই মিলে বিভিন্ন খেলারও আয়োজন করতে পারেন।

ঢাকা থেকে মিরসরাই মহামায়াতে বেড়াতে আসা হামিদুর রহমান বলেন, মহাময়া লেকে ঘুরে আমি অভিভূত, এখানে কায়াকে চড়ে আমি থাইল্যান্ডের ভ্রমনের স্বাদ নিচ্ছি। তবে পাহাড়ে কিছু ক্যাবল কার থাকে দারুন হতো।আর আবাসন ব্যবস্থা উন্নত করলে ভালোহয়।

মহামায়ায় থাকতে হলে আপনাকে একটু দূরে বারৈয়ারহাট বাজারে আবাসিক হোটেল ভাড়া করতে হবে,না হয় মিরসরাই সদরে আবাসিক হোটেলে রাত কাটাতে হবে। খাওয়া দাওয়ার জন্য মহামায়ার গেইটের সামনে কিছু হোটেল আছে।আরো ভালো খাবারের জন্য মিরসরাই বা বারৈয়ারহাটে ভালো মানের হোটেল পাবেন।

মহামায়ায় যেভাবে যাবেন ঢাকা হতে চ্ট্টগ্রামের কোন গাড়ীতে মিরসরাই উপজেলার ঠাকুরদিঘি বাজার নামবেন,সেখান থেকে অটোরিকশা যোগে ১৫ টাকা জনপ্রতি ভাড়ায় মহামায়ায় পৌছাবে। যদি রিজার্ভ গাড়ী নিয়ে আসলে মহামায়ার গেইটে গাড়ী রাখার যথেষ্ট জায়গা আছে।

শীতের মৌসুমে মহামায়া থেকে আশেপাশে ঘুরে আসতে পারেন মুহুরী প্রজেক্ট বা আরশিনগর ফিউচার পার্কে।