তুরস্কে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হতে যাচ্ছে?
- Update Time : ০১:৫৮:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ মে ২০২৩
- / 93
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
দুই সপ্তাহের অপেক্ষা শেষ। রোববার (২৮ মে) তুরস্কে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে রান-অফ প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। আর এ নির্বাচনের মাধ্যমেই নির্ধারিত হবে— আরও পাঁচ বছর তুরস্কের প্রেসিডেন্ট হিসেবে রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান থাকতে পারবেন কিনা।
এরদোয়ানের বিপক্ষে কোনো দল এখন পর্যন্ত জয় পায়নি। ফলে রোববারের ভোটে কিলিচদারোগলু যদি জিততে পারেন, তুরস্কের ইতিহাসে নতুন করে লেখা হবে তাঁর নাম।
নির্বাচনে এরদোয়ানের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে রয়েছেন কেমাল কিলিচদারোগলু। স্থানীয় সময় রোববার (২৮ মে) সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হবে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে তুরস্কের বার্তাসংস্থা আনাদোলু এজেন্সি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১৪ মে অনুষ্ঠিত প্রথম রাউন্ডের নির্বাচনে কোনও প্রার্থী ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পাওয়ায় রোববার তুরস্কে দ্বিতীয় দফার ভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে। রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় (বাংলাদেশ সময় বেলা ১১টা) ভোটগ্রহণ শুরু হবে এবং বিকেল ৫টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায়)শেষ হবে।
প্রথম পর্বের ভোটে সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়ে এগিয়ে থাকলেও নির্বাচিত হতে পারেননি তুরস্কের বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। তুরস্কের নির্বাচনের নিয়ম অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট পদে জয়ী হতে হলে কোনও প্রার্থীকে কমপক্ষে ৫০ শতাংশ ভোট পেতে হয়।
গত ১৪ মে অনুষ্ঠিত তুরস্কের প্রথম দফা নির্বাচনে এরদোয়ান পেয়েছিলেন ৪৯ দশমিক ৫২ শতাংশ ভোট। এ কারণে অল্পের জন্য ঝুলে যায় তার ভাগ্য। অন্যদিকে ওই নির্বাচনে এরদোয়ানের প্রধান প্রতিপক্ষ কেমাল কিলিচদারোগলু পেয়েছিলেন ৪৪ দশমিক ৮৮ শতাংশ ভোট। ফলে দেশটির নিয়ম অনুযায়ী ফের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হচ্ছে।
ওই একই ভোটে তৃতীয় স্থান পেয়েছিলেন সিনান ওগান। তিনি পেয়েছিলেন পাঁচ দশমিক ২০ ভাগ ভোট। গত ২২ মে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দ্বিতীয় দফা ভোটে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানকে সমর্থন করার কথা জানিয়েছেন তিনি।
আনাদোলু এজেন্সি বলছে, এবারের নির্বাচনে ৬০ মিলিয়নেরও বেশি লোক ভোট দেওয়ার জন্য নিবন্ধিত হয়েছেন। যার মধ্যে ৪৯ লাখ মানুষ প্রথমবার ভোটার হয়েছেন। রোববারের এই ভোটের জন্য তুরস্কে মোট ১ লাখ ৯১ হাজার ৮৮৫টি ব্যালট বাক্স স্থাপন করা হয়েছে।
তুরস্কের সুপ্রিম ইলেকশন কাউন্সিলের মতে, গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টা পর্যন্ত ১৮ লাখ ৯৫ হাজার ৪৩০ জন ভোটার ইতোমধ্যেই তুরস্কের বিদেশি মিশন এবং শুল্ক গেটগুলোতে তাদের ভোট দিয়েছেন।
আনাদোলু বলছে, কূটনৈতিক মিশনে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে গত বুধবার। তবে শুল্ক গেটগুলোতে স্থানীয় সময় রোববার বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোট দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
গত ১৪ মে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিদেশে বসবাসকারী মোট ১৮ লাখ ৩৯ হাজার ৪৭০ জন তুর্কি নাগরিক প্রেসিডেন্ট এবং পার্লামেন্ট উভয় নির্বাচনে ভোট দিয়েছিলেন। তবে যারা তাদের বসবাসের দেশে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তাদের ভোট দিতে পারেননি তারা সংশ্লিষ্ট দেশের কাস্টমস গেটে রোববার বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোট দিতে পারবেন।
এদিকে রান-অফ নির্বাচনকে সামনে রেখে শনিবার তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান জনগণকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। টুইটারে এরদোয়ান বলেছেন, ‘তুরস্কের মহান বিজয়ের জন্য আসুন আমরা আগামীকাল একসাথে ভোট দিতে যাই। পার্লামেন্ট নির্বাচনে গত ১৪ মে ভোটাররা যে রায় দিয়েছেন, আসুন এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও সেই রায়কে আমরা আরও জোরালো ভাবে সামনে আনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আসুন, আমাদের ভোট দিয়ে আমরা তুরস্কের শতবর্ষ শুরু করি।’
উল্লেখ্য, প্রথম পর্বের ভোটে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের দল তুরস্কের পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। আর প্রথম ধাপে যেহেতু এরদোয়ান ও কেমালের কেউই এককভাবে ৫০ শতাংশ বা তার বেশি ভোট পাননি ফলে এ নির্বাচন রান-অফে গড়িয়েছে। রান-অফে যিনি সর্বোচ্চ ভোট পাবেন তিনিই আগামী ৫ বছর তুরস্ক শাসন করবেন।