শাওন পাটওয়ারী, চাঁদপুর:

কখনও সিনিয়র-জুনিয়র, কখনও খেলাধুলা, কখনও মেয়ে সংক্রান্ত বিষয় অথবা আধিপত্য বিস্তার নিয়ে চাঁদপুরের শান্ত শহরকে আবারও অশান্ত করে তুলছে কথিত কিশোর গ্যাং।

পুলিশের জোড়ালো ভূমিকার কারনে বেশকিছু দিন বন্ধ থাকার পর গত দুই দিন ধরে হঠাৎ করে সক্রিয় হয়ে উঠেছে তারা। তবে পুলিশের অভিযানে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের আটক করে থানায় নিয়ে আসা হলে অভিভাবক ও রাজনৈতিক নেতাদের তদবিরে বিপাকে পড়তে হয় বলে অভিযোগ করেন এক পুলিশ কর্মকর্তা।

উঠতি বয়সের তরুণরা স্বল্পমূল্যে দোকান থেকে অস্ত্র ক্রয় করে নিজেদের প্রয়োজনে ব্যবহার করছে বলে জানান ভুক্তভোগী পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা।

সোমবার সন্ধ্যায় শহরের মেথা রোড বিএনপি দলীয় কার্যালয়ের সামনে ২ শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে রক্তাক্ত যখম করা হয়েছে।

আহতরা হলেন, শহরের জোড়পুকুর পাড় এলাকার খালিদুর রহমানের ছেলে ফাহিম (১৭) ও অপর সহপাঠি সিয়াম (১৭)। তারা দুই জনেই চাঁদপুর আল-আমিন একাডেমী স্কুল এন্ড কলেজের একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী। ফাহিম চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আর সিয়াম প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে চলে যায়।

জানা যায়, সিনিয়র-জুনিয়র নিয়ে চাঁদপুর শহরের প্রেস ক্লাব ঘাটের ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে ২০ মার্চ রোববার দুপুরে মোরছালিন নামের এক যুবককে কুপিয়ে রক্তাক্ত যখম করা হয়। পরের দিন সোমবার সন্ধ্যায় একই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফাহিম (১৭) ও সিয়াম নামের দুই যুবককে কুপিয়ে রক্তাক্ত যখম করা হয়। ফাহিমের পিঠে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কয়েকটি কোপ দেওয়ায় তার অবস্থা বেগতিক।

কয়েকজন অভিভাবকের সাথে কথা হলে তারা জানায়, শহরের ১ থেকে ৯৯ টাকার, ৩০০ টাকার মার্কেটসহ বিভিন্ন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে উঠতি বয়সের যুবকদের কাছে স্বল্পদামে দেশীয় ধারালো অস্ত্র বিক্রয় করা হচ্ছে। চাঁদপুরের সাবেক এসপি শামসুন্নাহার দায়িত্ব থাকাকালীন সময়ে কয়েকটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করে ও কিছু দেশীয় অস্ত্র জব্দ করার পর দোকানীদের সর্তক করে দেন। তখন কিছুদিন দেশীয় অস্ত্রের প্রভাব হ্রাস পেলেও বর্তমানে তা আবার বেড়ে গেছে। প্রশাসনের পুনঃরায় নজরদারি করার প্রয়োজন বলে মনে করছেন ভুক্তভোগীরা।

চাঁদপুর সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ আবদুর রশিদ জানায়, সন্তানরা কোথায় কার কাছে, কার সাথে মেলামেশা করছে অভিভাবকরা খেয়াল রাখুন। কোন ধরনের আবেগী কান্না গ্রহণযোগ্য হবে না। কিশোর গ্যাং নির্মূলে পুলিশের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

প্রতিদিনই শহরের প্রেস ক্লাব ঘাট, ওয়ান মিনিটের নামরে,জোরপুকুর পাড়,রেলস্টেশান,আলআমিন স্কুলের সামনে,ম্যাথা রোডে এক ঝাক উঠতি বয়সি কিশোর ধারালো অস্ত্র নিয়ে এক পক্ষ আরেক পক্ষকে আঘাত করতে উৎ পেতে বসে থাকে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর এদের আনাগোনা বেশি দেখা যায়।

অতি দ্রুত এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে বলে আশংকা করছেন ভুক্তভোগীরা।