এসেনশিয়ালের ৪৭৭ কোটি টাকা লোপাট, অনুসন্ধানের নির্দেশ
- Update Time : ০৫:০৪:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ মার্চ ২০২৩
- / 146
নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশের একমাত্র সরকারি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড (ইডিসিএল) থেকে ৪৭৭ কোটি টাকা লোপাটের ঘটনা অনুসন্ধান করতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। দুই মাসের মধ্যে সংস্থাটিকে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে আসার পর আজ রোববার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াত সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত রুলসহ এই আদেশ দেন।
‘দুর্নীতির আখড়া এসেনশিয়াল ড্রাগস: সরকারি অডিটে ৩২ অনিয়ম, ৪৭৭ কোটি টাকা লোপাট’ শিরোনামে শনিবার প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়। আদালতে প্রতিবেদনটি পড়ে শোনান ডেপুটি এটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান।
আদালত বলেন, অনৈতিক পন্থায় বড় ধরনের অনিয়ম দেখা যাচ্ছে। দুর্নীতিবাজ কিছু লোক সিন্ডিকেট তৈরি করে দুর্নীতি করেছে। অবৈধভাবে অর্থ আত্মসাৎ করেছে। ৪৭৭ কোটি টাকা আত্মসাতের বিষয়টি সরকারি নিরীক্ষায় চিহ্নিত করা হয়েছে। ৩২ ধরনের অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে।
পরে আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে রুলসহ আদেশ দেন। অনৈতিক পন্থায় ও বড় ধরনের অনিয়মের মাধ্যমে এসেনশিয়াল ড্রাগস থেকে বিপুল অর্থ আত্মসাতে জড়িত ব্যক্তি বা সত্তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা-ব্যর্থতা কেন বেআইনি হবে না- রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
অর্থ আত্মসাতের মাধ্যমে দুর্নীতির অপরাধ সংঘটনে জড়িত ব্যক্তি ও সত্ত্বার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপসহ কার্যক্রম শুরু করতে কেন প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হবে না, রুলে তাও জানতে চেয়েছে আদালত।
আদালত বলেন, কোনো ব্যক্তি ও সত্ত্বার বিরুদ্ধে এই দুর্নীতিতে জড়িত থাকার প্রাথমিক সত্যতা পেলে তাদের বিরুদ্ধে যেকোনো আইনি পদক্ষেপ নেয়ার ক্ষেত্রে বিবাদীদের স্বাধীনতা থাকবে।
দুদক, এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, স্বাস্থ্যসচিব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আগামী ১৪ মে পরবর্তী শুনানির জন্য তারিখ ধার্য রেখেছেন আদালত।
প্রকাশিত প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড (ইডিসিএল) শতভাগ সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান। রাজধানীর তেজগাঁওয়ে অবস্থিত প্রতিষ্ঠানটিতে সরকারি অডিটেই আর্থিক বড় দুর্নীতির চিত্র উঠে এসেছে। ২০২০-২১ অর্থবছরের অডিট প্রতিবেদনে ৩২টি গুরুতর অনিয়মে সরকারি ৪৭৭ কোটি ৪১ লাখ ৯১ হাজার ৩৭৮ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে প্রতিষ্ঠানটিতে।
স্বাস্থ্য অডিট অধিদপ্তরের নিরীক্ষায় যেসব অনিয়ম ধরা পড়েছে- তার মধ্যে আছে নিয়োগ-বাণিজ্য, টেন্ডার-বাণিজ্য, ব্যবহৃত কাঁচামালের চেয়ে ওষুধ উৎপাদন কম দেখানো, উৎপাদিত ওষুধে সঠিক মাত্রায় কাঁচামাল ব্যবহার না করে গুণগত মানের ওষুধ উৎপাদন না করা, কনডম প্রস্তুতে কাঁচামালের ঘাটতি, বনভোজনের নামে ভ্রমণ ভাতা ও করোনাকালে ক্যান্টিন বন্ধ থাকলেও প্রাপ্যতা না হওয়া সত্ত্বেও কর্মকর্তা-কর্মচারী-শ্রমিকদের অনিয়মিতভাবে ক্যান্টিনে সাবসিডি প্রদানের নামে টাকা আত্মসাৎ। (বাসস)