আবরারের মৃত্যুবার্ষিকীতে ছোট ভাইয়ের আবেগঘন স্ট্যাটাস

  • Update Time : ০২:৫৯:২০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ অক্টোবর ২০২৪
  • / 14

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) তড়িৎ প্রকৌশলী বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে তাকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভারতবিরোধী স্ট্যাটাস দেওয়ায় তাকে খুন করা হয়।

আবরার ফাহাদের মৃত্যুবার্ষিকীতে ফেসবুকে একটি আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন তার ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ।

বিজ্ঞাপন
রোববার রাতে নিজের ফেসবুক ওয়ালে তিনি লেখেন, ২০১৯ সালের আজ অর্থাৎ ৬ অক্টোবর ভাইয়া ঢাকাতে যায়। ২৬ সেপ্টেম্বরে কুষ্টিয়াতে আসার পরই ইলিশ আর ভারতের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে দুটি পোস্ট দিয়েছিল। সেদিন আম্মু নিজে ভাইয়াকে গাড়িতে তুলে দিয়ে আসছিল। এরপর মাত্র ১৩-১৪ ঘণ্টার মধ্যে ওকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করা হয়। আর ২০ ঘণ্টা পরই বাসায় আসে মৃত্যুর সংবাদ।

সেদিন সকালে যাওয়ার আগে ৯টার দিকে আম্মু আমাকে ডেকেছিল। ‘ভাইয়া চলে যাচ্ছে, ওঠ’। কিন্তু ভাইয়া বলে, ‘না থাক, অনেক রাতে ঘুমাইছে ঘুমাতে দাও। আমি চলে গেলাম। তুই বেশিদিন থাকিস না, তাড়াতাড়ি ঢাকা চলে আসিস’।

যাওয়ার আগের রাতে আম্মুকে ভাইয়া বলেছিল, ‘আম্মু অনেক ছারপোকা কামড়ায়। পিঠে একটু হাত বুলিয়ে দাও তো। কোনো দাগ হয়ে গেছে নাকি? আচ্ছা, তোমার কাছে কি এমন কোনো ওষুধ আছে, যা লাগালে আর কামড়াবে না আমাকে’।

আবরারের মা রোকেয়া খাতুন আবরারের বিভিন্ন স্মৃতিচারণ করে বলেন, যেদিন আমার ছেলে বাড়ি থেকে গিয়েছিলো সেদিন ছিল ৬ অক্টোবর (রোববার)। ৫ বছর পরে আজকে ঠিক সেই দিন। আজকের এই দিনেই সকালে বাসে উঠিয়ে দিয়ে এসেছিলাম। হয়তো এটাই ছিল ওর জীবনে শেষ যাত্রা।

তিনি জানান, আমার ছেলে দেশের মানুষের জন্য ফেসবুকে ইলিশ মাছ নিয়ে লিখেছিলো। পানি চুক্তির অসমতা নিয়ে লিখেছিলো ও দেশকে অনেক ভালোবাসতো। ও কোনো দল বা রাজনীতির কারণে ফেসবুকে লিখে নাই। আমরা সবাই চাই দেশের সাধারণ মানুষগুলো ভালো থাক।

তিনি কোটা আন্দোলনে নিহত সবার প্রতি দোয়া এবং আবরারের জন্য দোয়া প্রার্থনা করেন। কারণ ২০১৮ সালে প্রথম কোটাবিরোধী আন্দোলনে আবরারও ছিল রাজপথে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

আবরারের মৃত্যুবার্ষিকীতে ছোট ভাইয়ের আবেগঘন স্ট্যাটাস

Update Time : ০২:৫৯:২০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ অক্টোবর ২০২৪

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) তড়িৎ প্রকৌশলী বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে তাকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভারতবিরোধী স্ট্যাটাস দেওয়ায় তাকে খুন করা হয়।

আবরার ফাহাদের মৃত্যুবার্ষিকীতে ফেসবুকে একটি আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন তার ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ।

বিজ্ঞাপন
রোববার রাতে নিজের ফেসবুক ওয়ালে তিনি লেখেন, ২০১৯ সালের আজ অর্থাৎ ৬ অক্টোবর ভাইয়া ঢাকাতে যায়। ২৬ সেপ্টেম্বরে কুষ্টিয়াতে আসার পরই ইলিশ আর ভারতের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে দুটি পোস্ট দিয়েছিল। সেদিন আম্মু নিজে ভাইয়াকে গাড়িতে তুলে দিয়ে আসছিল। এরপর মাত্র ১৩-১৪ ঘণ্টার মধ্যে ওকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করা হয়। আর ২০ ঘণ্টা পরই বাসায় আসে মৃত্যুর সংবাদ।

সেদিন সকালে যাওয়ার আগে ৯টার দিকে আম্মু আমাকে ডেকেছিল। ‘ভাইয়া চলে যাচ্ছে, ওঠ’। কিন্তু ভাইয়া বলে, ‘না থাক, অনেক রাতে ঘুমাইছে ঘুমাতে দাও। আমি চলে গেলাম। তুই বেশিদিন থাকিস না, তাড়াতাড়ি ঢাকা চলে আসিস’।

যাওয়ার আগের রাতে আম্মুকে ভাইয়া বলেছিল, ‘আম্মু অনেক ছারপোকা কামড়ায়। পিঠে একটু হাত বুলিয়ে দাও তো। কোনো দাগ হয়ে গেছে নাকি? আচ্ছা, তোমার কাছে কি এমন কোনো ওষুধ আছে, যা লাগালে আর কামড়াবে না আমাকে’।

আবরারের মা রোকেয়া খাতুন আবরারের বিভিন্ন স্মৃতিচারণ করে বলেন, যেদিন আমার ছেলে বাড়ি থেকে গিয়েছিলো সেদিন ছিল ৬ অক্টোবর (রোববার)। ৫ বছর পরে আজকে ঠিক সেই দিন। আজকের এই দিনেই সকালে বাসে উঠিয়ে দিয়ে এসেছিলাম। হয়তো এটাই ছিল ওর জীবনে শেষ যাত্রা।

তিনি জানান, আমার ছেলে দেশের মানুষের জন্য ফেসবুকে ইলিশ মাছ নিয়ে লিখেছিলো। পানি চুক্তির অসমতা নিয়ে লিখেছিলো ও দেশকে অনেক ভালোবাসতো। ও কোনো দল বা রাজনীতির কারণে ফেসবুকে লিখে নাই। আমরা সবাই চাই দেশের সাধারণ মানুষগুলো ভালো থাক।

তিনি কোটা আন্দোলনে নিহত সবার প্রতি দোয়া এবং আবরারের জন্য দোয়া প্রার্থনা করেন। কারণ ২০১৮ সালে প্রথম কোটাবিরোধী আন্দোলনে আবরারও ছিল রাজপথে।