অনন্য উচ্চতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ১০:৫৫:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২১
  • / ১৩৬ Time View

শ ম রেজাউল করিম:

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশ্বের জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত দেশসমূহের সোচ্চার কণ্ঠ। সম্প্রতি স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত কপ-২৬ জলবায়ু আলোচনায় প্রভাব বিস্তারকারী পাঁচ বিশ্ব নেতার একজন হিসেবে শেখ হাসিনাকে অভিহিত করেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমটি জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় শেখ হাসিনাকে বলছে ‘দুর্গতদের কণ্ঠস্বর’। ঠিক যেমন করে তাঁর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বলা হতো সারা বিশ্বের ‘শোষিতের কণ্ঠস্বর’। জোট নিরপেক্ষ সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘বিশ্ব আজ দুই ভাগে বিভক্ত। শাসক আর শোষিত। আমি শোষিতের পক্ষে।’ বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাও দুস্থ-অসহায়দের অবলম্বন আর বিশ্ব মানবতার অগ্রদূত হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। জলবায়ু সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা ৪৮টি দেশের সংগঠন ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) নেতৃত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

যুক্তরাজ্যের কার্ডিফ ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশ্লেষক জেন এ্যালানের মতে ‘শেখ হাসিনার মতো একজন মানুষ যখন জলবায়ু সম্মেলনে কথা বলেন এবং মানবিকভাবে নিজের অভিজ্ঞতার কথা শোনান, তখন বিশ্ব নেতাদের জলবায়ু পরিবর্তনের আসল চিত্র সম্পর্কে জানার সুযোগ তৈরি হয়।’ বিশ্ব ফোরামে নেতৃত্বের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গ্রহণযোগ্যতা ঈর্ষণীয়। তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকার দেশে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে জলবায়ুর দুর্বলতাসমূহকে জলবায়ু সমৃদ্ধিতে রূপান্তর করতে ‘মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা’ গ্রহণ করেছে। এবারের বিশ্ব জলবায়ু ফোরামে থাকা ৩৭টি দেশ মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনার আদলে নিজ নিজ দেশে পরিকল্পনা গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় দূরদর্শী পদক্ষেপের কারণে তিনি বিশ্বের পরিবেশ বিষয়ক সর্বোচ্চ স্বীকৃতি ‘চ্যাম্পিয়নস অব দ্য আর্থ’ অর্জন করেছেন। মিয়ানমারের বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ায় বিশ্ব নেতৃত্ব তাঁকে ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ সম্মানে ভূষিত করেছে। নারী শিক্ষায় অবদানের স্বীকৃতি ‘ট্রি অব পিস’, স্বাস্থ্য খাতে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাস এবং ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি ‘সাউথ-সাউথ’ পুরস্কার, নারীর ক্ষমতায়নে অসামান্য অবদানের জন্য ইউএন উইমেন প্রদত্ত ‘এজেন্ট অব চেঞ্জ’ পুরস্কার ও ‘প্লানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন’ অ্যাওয়ার্ড রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার অর্জনের মুকুটে এক একটি অসাধারণ পালক। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা, সামাজিক নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক উন্নয়নে তিনি রাষ্ট্রনায়কোচিত ভূমিকা রেখে হয়ে উঠেছেন ‘স্টেট ম্যান’। বিশ্ব নেতৃত্ব শেখ হাসিনাকে আজ ‘স্টার অব ইস্ট’ বলছেন। করোনা মোকাবেলায় বিশ্বে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে তিনি হয়েছেন ‘ভ্যাকসিন হিরো’। এ বছর দারিদ্র্য দূরীকরণ, বিশ্বের সুরক্ষা এবং সবার জন্য শান্তি ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ গ্রহণের সর্বজনীন আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশের সঠিক পথে অগ্রসরের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সম্প্রতি ‘এসডিজি অগ্রগতি পুরস্কার’ প্রদান করেছে জাতিসংঘের সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সলিউশনস নেটওয়ার্ক (এসডিএসএন)। এসডিএসএন তাঁকে ‘ক্রাউন জুয়েল’ বা ‘মুকুট মণি’ অভিধায় ভূষিত করেছে।

সাম্প্রতিককালে করোনা মহামারী মোকাবেলায় তাঁর নেতৃত্ব জাতিসংঘ, বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাময়িকী ফোর্বসসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশংসিত হয়েছে। করোনাকালে মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা থেকে শুরু করে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন তিনি। তাঁর সময়োচিত ও দূরদর্শী পদক্ষেপের কারণে অনেক উন্নত দেশের তুলনায় বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ এবং সংক্রমণজনিত মৃত্যুর হার অপেক্ষাকৃত কম হয়েছে। সম্প্রতি মৃত্যুর হার শূন্যতেও নেমেছে। একই সঙ্গে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত দেশের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষকে সহায়তায় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ত্রাণ সহযোগিতার পাশাপাশি জীবন, জীবিকা ও অর্থনীতি বাঁচাতে তিনি নিয়েছেন কার্যকরী পদক্ষেপ। দেশের অর্থনৈতিক গতিশীলতা ধরে রাখতে কৃষি, শিল্পসহ অর্থনৈতিক খাতগুলোয় সময়োপযোগী ২৮টি প্রণোদনা প্যাকেজের মাধ্যমে প্রায় এক হাজার ৪৬০ কোটি মার্কিন ডলার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, যা জিডিপির ৪.৪৪ শতাংশ এবং তা বিশ্ব অর্থনীতিতে একটি রোল মডেল হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। এ উদ্যোগের কারণে বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি শক্তিশালী অবস্থানে ছিল বলে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে। সবার জন্য বিনা মূল্যে করোনার টিকাপ্রাপ্তি নিশ্চিত করছেন।

দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশের সাফল্যের অতীত রেকর্ডের উদাহরণ টেনে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘কোন ঝুঁকি নিরসনের বৈশ্বিক নেতৃত্বে বাংলাদেশ সর্বদাই শীর্ষস্থানীয়, তাই কোভিড অতিমারী মোকাবেলায় বাংলাদেশের এ ধরনের সাফল্য দেখে আমি মোটেও অবাক হইনি।’ এ কৃতিত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।

বর্তমান সময়ে বিশ্বমানবতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সমগ্র বিশ্বের শরণার্থী ও বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের জন্য যে মানবিকতা তিনি দেখিয়েছেন তা বিশ্ববাসীর কাছে একটি অনন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে। রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনসহ এর স্থায়ী সমাধানে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭২তম অধিবেশনে পাঁচ দফা এবং ৭৪তম অধিবেশনে চার দফা প্রস্তাব রেখেছেন। বিশ্বমানবতার জন্য যেমন তিনি উদার ও মানবিক, ঠিক তেমনি দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনেও তাঁর উদারতা ও সহনশীলতা সর্বমহলে প্রশংসিত। যার স্বাক্ষর তিনি রেখেছেন ফৌজদারি অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে তাকে চিকিৎসার সুযোগ করে দেয়ায়। বেগম খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের উদ্যোগ নিয়ে তিনি প্রজ্ঞা, অভিজ্ঞতা, দূরদর্শী নেতৃত্ব ও উদারনৈতিক মানবিকতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তিনি চেয়েছেন বলেই খালেদা জিয়াকে সাজা স্থগিত করে বাসায় থাকার সুযোগ দেয়া হয়েছে। গৃহপরিচারিকা ফাতেমাকেও থাকার সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। এ ধরনের দৃষ্টান্ত বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে দ্বিতীয়টি নেই। এসবই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মহানুভবতা ও উদারতার অনন্য বহিঃপ্রকাশ ।

বঙ্গবন্ধুকন্যার দূরদর্শী নেতৃত্বে জাতি হিসেবে আমরা এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত অতিক্রম করছি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর সোপান বেয়ে আমরা পৌঁছে গিয়েছি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর স্বর্ণতোরণে। সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর নির্মাণ এখন সমাপ্তির পথে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় মনোবল ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণে নিজস্ব অর্থে পদ্মা সেতুর বাস্তবায়ন হয়েছে। এটি জাতি হিসেবে আমাদের স্বকীয়তা, সম্পদ ব্যবস্থাপনা, স্বচ্ছতা, সক্ষমতা, জবাবদিহি, দক্ষতা এবং আত্মবিশ্বাসের প্রতীকস্বরূপ মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সাহস দিয়েছে। চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। সমগ্র দেশে রেল যোগাযোগ সম্প্রসারণ হচ্ছে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে বিজয় দিবসের উপহার হিসেবে দেশের জনগণ প্রথম মেট্রোরেলে চলাচল করতে পারবে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্রের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। এসব মেগা প্রকল্প সমাপ্ত হলে দেশের অর্থনীতির পালে নতুন করে লাগবে সমৃদ্ধির বাতাস। আর এসবই দূরদর্শী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার অভূতপূর্ব সাফল্যের নিদর্শন।

রাষ্ট্র পরিচালনায় জননেত্রী শেখ হাসিনা যেমন সফল প্রধানমন্ত্রী, তেমনি পারিবারিক জীবনেও তিনি একজন সার্থক মা। তাঁর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় বিশ্বখ্যাত আইসিটি বিশেষজ্ঞ। বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে পরিবর্তন ও অবদানের জন্য সম্প্রতি তিনি এশিয়ান-ওশেনিয়ান অঞ্চলের ২৪টি দেশের সংস্থা এশিয়ান-ওশেনিয়ান কম্পিউটিং ইন্ডাস্ট্রি অর্গানাইজেশনের (এ্যাসোসিও) লিডারশিপ পুরস্কার অর্জন করেছেন। তাঁর কন্য সায়মা ওয়াজেদ পুতুল একজন বিশ্বখ্যাত মনোবিজ্ঞানী। তিনি বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সদস্য। একই সঙ্গে তিনি সারাবিশ্বে অটিস্টিক শিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠার অন্যতম সারথি। অপরদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দুই পুত্র তারেক রহমান ও প্রয়াত আরাফাত রহমান দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত আসামি। এক্ষেত্রেও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার অবস্থান দুই বিপরীত মেরুতে।

২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ইশতেহার ‘দিন বদলের সনদ’ ঘোষণা করেছিল। সে ইশতেহারে ২০২১ সালের মধ্যে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত মধ্যম আয়ের দেশ গড়ার স্বপ্ন ‘রূপকল্প ২০২১’ ঘোষণা করা হয়েছিল। এটি এখন আর স্বপ্ন নয়। কারণ, ২০২১ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ পেয়েছে এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের মর্যাদা। সম্প্রতি স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের চূড়ান্ত সুপারিশ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ অনুমোদন করেছে। ফলে বাংলাদেশ এলডিসি ক্যাটাগরি থেকে পরবর্তী ধাপে উত্তরণের সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে সফলভাবে। জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি বা ইউএন-সিডিপি এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। ১৯৭৫ সাল থেকে স্বল্পোন্নত দেশের কাতারে থাকা বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে সিডিপির সব শর্ত পূরণ করেছে। সিডিপি তিনটি সূচকের ভিত্তিতে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের বিষয়টি পর্যালোচনা করে। তিনটি সূচকেই বাংলাদেশ শর্ত পূরণ করে অনেক এগিয়ে গেছে। এ সাফল্য সফল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর নেতৃত্বাধীন সরকারের। শুধু এখানেই থেমে যাননি ভিশনারি লিডার শেখ হাসিনা। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা এবং ২১০০ সালের মধ্যে ব-দ্বীপ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন অদম্য প্রত্যয়ী নেতা শেখ হাসিনা। তাই তিনি অনন্যসাধারণ।

সমসাময়িককালে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতির অঙ্গনের অন্যতম অভিজ্ঞ ও প্রভাবশালী রাজনীতিকের নাম শেখ হাসিনা। একটি রাজনৈতিক দলের প্রধান হিসেবে টানা চল্লিশ বছরের পথচলার পাশাপাশি প্রায় দুই দশকের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার শীর্ষে থেকে দেশ পরিচালনার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে শেখ হাসিনা পৃথিবীর অন্যতম শীর্ষ নেতৃত্বের আসনে অধিষ্ঠিত। তিনি শুধু এই উপমহাদেশে একজন সিনিয়র রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বা প্রধানমন্ত্রীই নন, তিনি সমগ্র বিশ্বের দুর্গতদের কণ্ঠস্বর হিসেবে নিজেকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন। রাজনীতির পরিপক্বতা, নেতৃত্বের সৌকর্য, রাষ্ট্র পরিচালনার মুন্সিয়ানা, সংগ্রামের আপোসহীনতা, মানবিকতার অপূর্ব সৌন্দর্য, দৃঢ়তার মূর্ত প্রতিচ্ছবি আর বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার অসাধারণ অবদানের জন্য তিনি আজ অনন্য শিখরে সমাসীন। যে উচ্চতায় ইতোপূর্বে কেউ পৌঁছাতে পারেননি। আর কেউ কোনদিন পৌঁছতে পারবেন বলেও মনে হয় না।

লেখক :  মন্ত্রী, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

Please Share This Post in Your Social Media

অনন্য উচ্চতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

Update Time : ১০:৫৫:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২১

শ ম রেজাউল করিম:

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশ্বের জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত দেশসমূহের সোচ্চার কণ্ঠ। সম্প্রতি স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত কপ-২৬ জলবায়ু আলোচনায় প্রভাব বিস্তারকারী পাঁচ বিশ্ব নেতার একজন হিসেবে শেখ হাসিনাকে অভিহিত করেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমটি জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় শেখ হাসিনাকে বলছে ‘দুর্গতদের কণ্ঠস্বর’। ঠিক যেমন করে তাঁর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বলা হতো সারা বিশ্বের ‘শোষিতের কণ্ঠস্বর’। জোট নিরপেক্ষ সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘বিশ্ব আজ দুই ভাগে বিভক্ত। শাসক আর শোষিত। আমি শোষিতের পক্ষে।’ বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাও দুস্থ-অসহায়দের অবলম্বন আর বিশ্ব মানবতার অগ্রদূত হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। জলবায়ু সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা ৪৮টি দেশের সংগঠন ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) নেতৃত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

যুক্তরাজ্যের কার্ডিফ ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশ্লেষক জেন এ্যালানের মতে ‘শেখ হাসিনার মতো একজন মানুষ যখন জলবায়ু সম্মেলনে কথা বলেন এবং মানবিকভাবে নিজের অভিজ্ঞতার কথা শোনান, তখন বিশ্ব নেতাদের জলবায়ু পরিবর্তনের আসল চিত্র সম্পর্কে জানার সুযোগ তৈরি হয়।’ বিশ্ব ফোরামে নেতৃত্বের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গ্রহণযোগ্যতা ঈর্ষণীয়। তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকার দেশে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে জলবায়ুর দুর্বলতাসমূহকে জলবায়ু সমৃদ্ধিতে রূপান্তর করতে ‘মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা’ গ্রহণ করেছে। এবারের বিশ্ব জলবায়ু ফোরামে থাকা ৩৭টি দেশ মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনার আদলে নিজ নিজ দেশে পরিকল্পনা গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় দূরদর্শী পদক্ষেপের কারণে তিনি বিশ্বের পরিবেশ বিষয়ক সর্বোচ্চ স্বীকৃতি ‘চ্যাম্পিয়নস অব দ্য আর্থ’ অর্জন করেছেন। মিয়ানমারের বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ায় বিশ্ব নেতৃত্ব তাঁকে ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ সম্মানে ভূষিত করেছে। নারী শিক্ষায় অবদানের স্বীকৃতি ‘ট্রি অব পিস’, স্বাস্থ্য খাতে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাস এবং ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি ‘সাউথ-সাউথ’ পুরস্কার, নারীর ক্ষমতায়নে অসামান্য অবদানের জন্য ইউএন উইমেন প্রদত্ত ‘এজেন্ট অব চেঞ্জ’ পুরস্কার ও ‘প্লানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন’ অ্যাওয়ার্ড রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার অর্জনের মুকুটে এক একটি অসাধারণ পালক। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা, সামাজিক নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক উন্নয়নে তিনি রাষ্ট্রনায়কোচিত ভূমিকা রেখে হয়ে উঠেছেন ‘স্টেট ম্যান’। বিশ্ব নেতৃত্ব শেখ হাসিনাকে আজ ‘স্টার অব ইস্ট’ বলছেন। করোনা মোকাবেলায় বিশ্বে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে তিনি হয়েছেন ‘ভ্যাকসিন হিরো’। এ বছর দারিদ্র্য দূরীকরণ, বিশ্বের সুরক্ষা এবং সবার জন্য শান্তি ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ গ্রহণের সর্বজনীন আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশের সঠিক পথে অগ্রসরের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সম্প্রতি ‘এসডিজি অগ্রগতি পুরস্কার’ প্রদান করেছে জাতিসংঘের সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সলিউশনস নেটওয়ার্ক (এসডিএসএন)। এসডিএসএন তাঁকে ‘ক্রাউন জুয়েল’ বা ‘মুকুট মণি’ অভিধায় ভূষিত করেছে।

সাম্প্রতিককালে করোনা মহামারী মোকাবেলায় তাঁর নেতৃত্ব জাতিসংঘ, বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাময়িকী ফোর্বসসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশংসিত হয়েছে। করোনাকালে মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা থেকে শুরু করে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন তিনি। তাঁর সময়োচিত ও দূরদর্শী পদক্ষেপের কারণে অনেক উন্নত দেশের তুলনায় বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ এবং সংক্রমণজনিত মৃত্যুর হার অপেক্ষাকৃত কম হয়েছে। সম্প্রতি মৃত্যুর হার শূন্যতেও নেমেছে। একই সঙ্গে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত দেশের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষকে সহায়তায় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ত্রাণ সহযোগিতার পাশাপাশি জীবন, জীবিকা ও অর্থনীতি বাঁচাতে তিনি নিয়েছেন কার্যকরী পদক্ষেপ। দেশের অর্থনৈতিক গতিশীলতা ধরে রাখতে কৃষি, শিল্পসহ অর্থনৈতিক খাতগুলোয় সময়োপযোগী ২৮টি প্রণোদনা প্যাকেজের মাধ্যমে প্রায় এক হাজার ৪৬০ কোটি মার্কিন ডলার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, যা জিডিপির ৪.৪৪ শতাংশ এবং তা বিশ্ব অর্থনীতিতে একটি রোল মডেল হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। এ উদ্যোগের কারণে বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি শক্তিশালী অবস্থানে ছিল বলে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে। সবার জন্য বিনা মূল্যে করোনার টিকাপ্রাপ্তি নিশ্চিত করছেন।

দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশের সাফল্যের অতীত রেকর্ডের উদাহরণ টেনে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘কোন ঝুঁকি নিরসনের বৈশ্বিক নেতৃত্বে বাংলাদেশ সর্বদাই শীর্ষস্থানীয়, তাই কোভিড অতিমারী মোকাবেলায় বাংলাদেশের এ ধরনের সাফল্য দেখে আমি মোটেও অবাক হইনি।’ এ কৃতিত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।

বর্তমান সময়ে বিশ্বমানবতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সমগ্র বিশ্বের শরণার্থী ও বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের জন্য যে মানবিকতা তিনি দেখিয়েছেন তা বিশ্ববাসীর কাছে একটি অনন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে। রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনসহ এর স্থায়ী সমাধানে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭২তম অধিবেশনে পাঁচ দফা এবং ৭৪তম অধিবেশনে চার দফা প্রস্তাব রেখেছেন। বিশ্বমানবতার জন্য যেমন তিনি উদার ও মানবিক, ঠিক তেমনি দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনেও তাঁর উদারতা ও সহনশীলতা সর্বমহলে প্রশংসিত। যার স্বাক্ষর তিনি রেখেছেন ফৌজদারি অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে তাকে চিকিৎসার সুযোগ করে দেয়ায়। বেগম খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের উদ্যোগ নিয়ে তিনি প্রজ্ঞা, অভিজ্ঞতা, দূরদর্শী নেতৃত্ব ও উদারনৈতিক মানবিকতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তিনি চেয়েছেন বলেই খালেদা জিয়াকে সাজা স্থগিত করে বাসায় থাকার সুযোগ দেয়া হয়েছে। গৃহপরিচারিকা ফাতেমাকেও থাকার সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। এ ধরনের দৃষ্টান্ত বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে দ্বিতীয়টি নেই। এসবই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মহানুভবতা ও উদারতার অনন্য বহিঃপ্রকাশ ।

বঙ্গবন্ধুকন্যার দূরদর্শী নেতৃত্বে জাতি হিসেবে আমরা এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত অতিক্রম করছি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর সোপান বেয়ে আমরা পৌঁছে গিয়েছি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর স্বর্ণতোরণে। সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর নির্মাণ এখন সমাপ্তির পথে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় মনোবল ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণে নিজস্ব অর্থে পদ্মা সেতুর বাস্তবায়ন হয়েছে। এটি জাতি হিসেবে আমাদের স্বকীয়তা, সম্পদ ব্যবস্থাপনা, স্বচ্ছতা, সক্ষমতা, জবাবদিহি, দক্ষতা এবং আত্মবিশ্বাসের প্রতীকস্বরূপ মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সাহস দিয়েছে। চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। সমগ্র দেশে রেল যোগাযোগ সম্প্রসারণ হচ্ছে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে বিজয় দিবসের উপহার হিসেবে দেশের জনগণ প্রথম মেট্রোরেলে চলাচল করতে পারবে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্রের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। এসব মেগা প্রকল্প সমাপ্ত হলে দেশের অর্থনীতির পালে নতুন করে লাগবে সমৃদ্ধির বাতাস। আর এসবই দূরদর্শী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার অভূতপূর্ব সাফল্যের নিদর্শন।

রাষ্ট্র পরিচালনায় জননেত্রী শেখ হাসিনা যেমন সফল প্রধানমন্ত্রী, তেমনি পারিবারিক জীবনেও তিনি একজন সার্থক মা। তাঁর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় বিশ্বখ্যাত আইসিটি বিশেষজ্ঞ। বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে পরিবর্তন ও অবদানের জন্য সম্প্রতি তিনি এশিয়ান-ওশেনিয়ান অঞ্চলের ২৪টি দেশের সংস্থা এশিয়ান-ওশেনিয়ান কম্পিউটিং ইন্ডাস্ট্রি অর্গানাইজেশনের (এ্যাসোসিও) লিডারশিপ পুরস্কার অর্জন করেছেন। তাঁর কন্য সায়মা ওয়াজেদ পুতুল একজন বিশ্বখ্যাত মনোবিজ্ঞানী। তিনি বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সদস্য। একই সঙ্গে তিনি সারাবিশ্বে অটিস্টিক শিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠার অন্যতম সারথি। অপরদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দুই পুত্র তারেক রহমান ও প্রয়াত আরাফাত রহমান দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত আসামি। এক্ষেত্রেও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার অবস্থান দুই বিপরীত মেরুতে।

২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ইশতেহার ‘দিন বদলের সনদ’ ঘোষণা করেছিল। সে ইশতেহারে ২০২১ সালের মধ্যে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত মধ্যম আয়ের দেশ গড়ার স্বপ্ন ‘রূপকল্প ২০২১’ ঘোষণা করা হয়েছিল। এটি এখন আর স্বপ্ন নয়। কারণ, ২০২১ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ পেয়েছে এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের মর্যাদা। সম্প্রতি স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের চূড়ান্ত সুপারিশ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ অনুমোদন করেছে। ফলে বাংলাদেশ এলডিসি ক্যাটাগরি থেকে পরবর্তী ধাপে উত্তরণের সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে সফলভাবে। জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি বা ইউএন-সিডিপি এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। ১৯৭৫ সাল থেকে স্বল্পোন্নত দেশের কাতারে থাকা বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে সিডিপির সব শর্ত পূরণ করেছে। সিডিপি তিনটি সূচকের ভিত্তিতে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের বিষয়টি পর্যালোচনা করে। তিনটি সূচকেই বাংলাদেশ শর্ত পূরণ করে অনেক এগিয়ে গেছে। এ সাফল্য সফল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর নেতৃত্বাধীন সরকারের। শুধু এখানেই থেমে যাননি ভিশনারি লিডার শেখ হাসিনা। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা এবং ২১০০ সালের মধ্যে ব-দ্বীপ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন অদম্য প্রত্যয়ী নেতা শেখ হাসিনা। তাই তিনি অনন্যসাধারণ।

সমসাময়িককালে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতির অঙ্গনের অন্যতম অভিজ্ঞ ও প্রভাবশালী রাজনীতিকের নাম শেখ হাসিনা। একটি রাজনৈতিক দলের প্রধান হিসেবে টানা চল্লিশ বছরের পথচলার পাশাপাশি প্রায় দুই দশকের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার শীর্ষে থেকে দেশ পরিচালনার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে শেখ হাসিনা পৃথিবীর অন্যতম শীর্ষ নেতৃত্বের আসনে অধিষ্ঠিত। তিনি শুধু এই উপমহাদেশে একজন সিনিয়র রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বা প্রধানমন্ত্রীই নন, তিনি সমগ্র বিশ্বের দুর্গতদের কণ্ঠস্বর হিসেবে নিজেকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন। রাজনীতির পরিপক্বতা, নেতৃত্বের সৌকর্য, রাষ্ট্র পরিচালনার মুন্সিয়ানা, সংগ্রামের আপোসহীনতা, মানবিকতার অপূর্ব সৌন্দর্য, দৃঢ়তার মূর্ত প্রতিচ্ছবি আর বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার অসাধারণ অবদানের জন্য তিনি আজ অনন্য শিখরে সমাসীন। যে উচ্চতায় ইতোপূর্বে কেউ পৌঁছাতে পারেননি। আর কেউ কোনদিন পৌঁছতে পারবেন বলেও মনে হয় না।

লেখক :  মন্ত্রী, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।